মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শুধু ‘মা’ই নয় তিনি একজন মেয়েও বটে।

সংখ্যা: ২০০তম সংখ্যা | বিভাগ:

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শুধু ‘মা’ই নয় তিনি একজন মেয়েও বটে। রুনা-রতœা-আসমার প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাতৃসুলভ যে দরদী ভূমিকা পালন করেছেন- একই দয়ার হাত তাকে বিস্তার করতে হবে দেশের কোটি কোটি অন্যান্য মেয়ের ক্ষেত্রেও। যুগপৎভাবে প্রধানমন্ত্রীকে পালন করতে হবে

সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীল মেয়ের ভূমিকাও।  প্রবীণ নিবাসে যারা সন্তানের অভাবে চোখের নদী বহায় তাদেরসহ সব

দুঃখী বাবা-মার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে দায়িত্বের হাত প্রসারিত করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের প্রবাহমান সব অনৈসলামী অনুষঙ্গ শক্ত হাতে বন্ধ করে ইসলামী মূল্যবোধ উজ্জীবিত ও প্রতিফলিত করতে হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেই।

পত্রিকান্তরে খবর হেডিং হয়েছে, শেখ হাসিনার তিন কন্যার ঈদ। শেখ হাসিনার এ তিন কন্যা যে নিমতলী অগ্নিকা-ে স্বজন হারানো তিন কন্যা তা ইতোমধ্যে গোটা দেশবাসী ভালভাবে অবগত। শুধু অবগতই নয়; বরং আলোড়িত এজন্য যে, এই তিন কন্যার বিয়ে চূড়ান্ত থাকলেও ওই অগ্নিকা-ের কারণে নস্যাৎ হয়েছিলো। এবং স্বজন হারানো এ কন্যাদের নতুন করে বিয়ে হওয়া ছিলো বড় কঠিন ব্যাপার।

কিন্তু এক্ষেত্রে এগিয়ে আসেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর পরিচয়ের অন্তরালে অবতীর্ণ হন চিরন্তন মমতাময়ী মায়ের ভূমিকায়। তিন কন্যার ভাষায়, “….. মায়ের মুখচ্ছবির ওপর মাঝে মাঝে প্রধানমন্ত্রীর

জীবন্ত ছবিটি আবিষ্ট করে মায়াময় ছায়া দেন নিমতলী ট্র্যাজেডির সেই তিন কন্যার জীবনে। রতœা, রুনা আর আসমা। গর্ভধারিণী মা বাগদান করে গেছেন। কিন্তু ভয়াবহ আগুন পুড়ে খাক করে দিয়েছেন স্বপ্নে বিভোর সেই মায়েদের। ‘ঘনঘোর হতাশা যখন মাথা তোলার শক্তিটুকু নিয়ে যেতে যেতে শেষ করছিল, ঠিক তখন, হ্যাঁ একেবারে

শেষে সময়টা, মনে নেই। হঠাৎ মা এসে হাত বাড়িয়ে দিলেন। অবিশ্বাসে ভয়ে মাথা গুঁজে হাতটা একটু উঁচু করি আশা-নিরাশার

দোলাচলে। আঙুলের স্পর্শ পেতেই চেনা চেনা মনে হয়। সেই ছোট্ট খুকিটি যেন। ঘুটঘুটে অন্ধকারে কিংবা গভীর ঘুমেও যে হাতের স্পর্শ টের পেতাম সেই হাত। বিভ্রান্তি লাগে। মাকে তো আগুন

ধকধক করে খেয়েছে। সে কিভাবে এত জীবন্ত হয়ে এল। ভ্রম নয় তো। ভয়ে মাথা তুলে তাকাই চোখের দিকে। তাকাতেই ধাঁ ধাঁ লেগে যায়। মা-ই তো, অন্য কেউ নয়। যাকে সংসদে বক্তৃতা দিতে দেখি, যিনি এ দেশের প্রধানমন্ত্রী, তিনি আমাদের মা। আমাদের হারিয়ে যাওয়া মা।’

নিমতলীর আগুনের উদ্ধারকাজ শেষ হতেই হঠাৎ ৭ তারিখে ঘোষণা এল রতœা ও রুনার বিয়ে হবে গণভবনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে হবে। সাধারণ পরিবারের সন্তান রতœা, রুনা ও আসমা এবং

তাদের হবু স্বামীরাও। মুহূর্তে বিহ্বল হয়ে পড়লেন তারা। এও কি

সম্ভব? ভেবেছিলেন হয়তো সেখানে খুব সাধারণভাবে কাজি ও হুজুর ডেকে বিয়ে হবে।

কিন্তু ৯ জুন এই তিন দম্পতির জন্য ছিল অবিশ্বাস্য দিন। গণভবন সেজেছিল বিয়ের সাজে। এই তিন কন্যা আর তিন বর পেলেন অন্য রকম শেখ হাসিনাকে। সেদিন পুরোটা সময় তাকে একবারের জন্যও প্রধানমন্ত্রী মনে হয়নি। মনে হয়েছিল শুধুই মা, মা এবং মা। নিজ হাতে

তিন কন্যাকে গয়না পরিয়ে দিয়েছিলেন। বারবার আমাদের মায়ের (প্রধানমন্ত্রী) ছলছল চোখের মুখ ভেসে উঠছে। কানে বাজে, তোরা সুখী হ, আজ থেকে আমি তোদের মা।…”

বলাবাহুল্য, মাতৃরূপে প্রধানমন্ত্রীর এ ভূমিকা ব্যতিক্রম হলেও আশাতীত নয়। বরং শতকরা ৯৫ ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠীর এদেশে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের এদেশে একান্তই আশাপ্রদ। কারণ ইসলামের মূল শিক্ষাও যে তাই।

ইসলামের প্রখ্যাত খলীফা মুজাদ্দিদে যামান হযরত উমর বিন আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি যখন মসনদে বসলেন তখন তিনি হক্কানী-রব্বানী ওলীআল্লাহগণ উনাদের কাছে নছীহত আবেদন করলেন। উনারা নছীহত করলেন- মুরুব্বীদের নিজের পিতা-মাতার মত মনে করবেন, সমবয়স্কদের নিজ ভাই-বোনের মত মনে করবেন এবং কমবয়স্কদের নিজের সন্তান-সন্ততিদের মত মনে করবেন।

বলাবাহুল্য, নিমতলীর অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত রুনা, রতœা ও আসমাকে প্রধানমন্ত্রী মোটামুটিভাবে নিজ কন্যার মতই দেখেছেন।

কিন্তু প্রসঙ্গত: যে কথাটি অনিবার্যভাবে এসে যায় তাহলো, এই তিন কন্যা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর আরো কোটি কোটি কন্যা রয়েছে।

হাজার হাজার কন্যা রয়েছে আইলা দুর্গতদের মাঝে।

লাখ লাখ কন্যা রয়েছে মঙ্গাপীড়িতদের মাঝে।

লাখ লাখ দুস্থ কন্যা রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে, পার্বত্যাঞ্চলে, হাওরাঞ্চলে এবং দূরবর্তী অন্যান্য অঞ্চলে।

এমনকি প্রধামন্ত্রীর গণভবনের নিকটবর্তী ঢাকা শহরের ফুটপাতে তথা মানবেতর ও পশুবৎ জীবন-যাপনকারী প্রায় পঞ্চাশ লাখ বস্তিবাসীতে।

তাই শুধু রুনা, রতœা আর আসমার জন্যই মায়ের ভূমিকায় নয় বরং প্রধানমন্ত্রীকে উল্লিখিত সবার ক্ষেত্রেই মায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।

‘মা, মাটি ও মানুষ’- একথার সাথে অঙ্গীভূত হতে হবে। শুধু রুনা, রতনা আর আসমা এই তিনজনের মা নয় বরং দুস্থা, অবলা, দ্বীনহীন,

দরিদ্র, আর্তপীড়িত কোটি কোটি গোটা দেশব্যাপী সব মেয়ের ক্ষেত্রেই মায়ের ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীকে অবতীর্ণ হতে হবে।

***********

অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী নিজেও একজন মেয়ে। একজন মায়ের মেয়ে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাকে সেখানেই গ-িভুক্ত থাকলে চলবে না। প্রধানমন্ত্রী শুধু একজন মায়ের মেয়ে নন; তিনি দেশব্যাপী কোটি কোটি মায়ের মেয়ে।

সেক্ষেত্রে সব দুস্থা মায়েদের চাহিদা পূরণেই প্রধানমন্ত্রীকে অগ্রগামী হলে চলবে না, সব দুঃখী মায়েদের দুঃখ দূরীকরণেও প্রধানমন্ত্রীকে সংবেদনশীল ও সক্রিয় হতে হবে।

বলাবাহুল্য, এই দুঃখী মায়েদের একটা যৎকিঞ্চিত আশ্রয়স্থল ঢাকা শহরের প্রবীন নিবাস। সেখানকার মায়েদের মর্মস্পর্শী, মহা করুণ আর্তনাদও প্রধানমন্ত্রীকে জানতে হবে। কেবল পত্রিকার কার্টিং নয় স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই প্রধানমন্ত্রীকে এসব হৃদয়গ্রাহী, স্পর্শকাতর বিষয়গুলো আমলে নিতে হবে।

পত্রিকার পাতায় যা আসে তা খুব নগণ্য। তারপরও উদাহরণত ‘আল ইহসান’-এর ডেস্কের বরাতে এখানে উল্লেখ করা গেলোঃ

‘ভাতের লোকমা মুখে নিতেই চোখে ভাসে সন্তানের মুখ’

নিবাসে চার দেয়ালের মাঝে কাটবে তাদের ঈদ

সরকারি বাসাসহ নিজের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন, ছেলেমেয়েদের বন্ধু ও পুলিশের লোকজনরা প্রায়ই আসা-যাওয়া করত। খাওয়া-দাওয়ার ধুম লেগে থাকত সব সময়। ফ্রিজ ভরা থাকত ফলমূলে। বিভিন্ন লোকের সঙ্গে দেখা হতো। আর এখন কোন কাজ নেই। লোক নেই। নেই ভালো খাবারও। সময় কাটতে চায় না একদমই এ প্রবীণ নিবাসে। ঈদের দিন নাড়িছেঁড়া প্রিয় সন্তানদের জন্য বেশি বেশি কাঁদি। কাঁদলে নাকি স্বস্তি মেলে। এ জন্য কাঁদি। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের প্রবীণ নিবাসে থাকা নার্গিস সুফিয়া (৬৬) ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে বলছিলেন এ কথাগুলো। এ প্রবীণ নিবাসে রাতে তেমন ঘুমাতে পারি না। ঘুমের ঘরে ‘ও’ আসে। আমাকে বলে, আমাকে ফেলে একা

একা ঘুমুচ্ছ। এই ‘ও’ হলেন পুলিশের সাবেক এসপি মৃত ফজলুল হক বসুনিয়া। তিনি ১৯৯৮ সালে মারা যান। প্রায় ৩ বছর ধরে প্রবীণ নিবাসে আছেন নার্গিস সুফিয়া। তিনি জানালেন, তাদের ৩ মেয়ে বিয়ে করে সুখেই আছে। একমাত্র ছেলে আমেরিকায় থাকে। ছেলেমেয়ের নাম জানতে চাইলে তিনি তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, তাদের অসম্মান হবে! তারা আমার সন্তান। মায়েরা সব সময় সন্তানদের ছাড় দিয়ে যায়। ভুলতে পারে না মুহূর্তের জন্যও। এক মেয়ে ঈদের কাপড় দিয়ে গেছে। ঈদ চারদেয়ালের ভেতরেই করতে হবে বললেন নার্গিস সুফিয়া। নার্গিস সুফিয়ার এক মেয়ে তার মায়ের জন্য কাপড় দিয়ে গেলেও প্রবীণ নিবাসে এমন অনেকেই আছেন, যাদের খবর

সন্তানরা নেয় না। অথচ ভাতের লোকমা মুখে নিতেই তাদের চোখে ভাসে প্রিয় সন্তানের মুখ।

মিলা চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। প্রায় সাড়ে ৭ বছর ধরে প্রবীণ নিবাসে থাকছেন। বিছানার পাশের দেয়ালে দুটি ছবি বাঁধিয়ে রেখেছেন তিনি। একটি স্বামী জোসেদ

চৌধুরী ও অপরটি নিজের। তার ছবিটি এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তোলা। বর্তমানের সঙ্গে ওই ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। স্বামী জেনেভায় চাকরি করতেন। একমাত্র ছেলে অপূর্ব হাসান চৌধুরী আমেরিকায় থাকেন। ছেলে ঈদে তাকে দেখতে আসবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ছেলে ভালো থাকুক এটাই চাই। দোয়া করি বড় হোক। আমাদের জীবন তো শেষই। তাদের এখন শুরু। তিনি সন্তানদের জন্য দোয়া করেন। বিকাল সাড়ে ৫টা। ৭২ বছর বয়সী জাহাঙ্গীর জানালার শিক ধরে বাইরের দিকে তাকিয়েছিলেন। চাচা কেমন আছেন বলতেই নির্বাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। চোখ উপচে পড়ছে পানি। জানালেন, তিনি

পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের প্রকৌশলী ছিলেন। জীবনে যা কিছু গড়েছেন সবই স্ত্রী-সন্তানদের দিয়েছেন। এখন তিনি খুবই একা। ঈদ প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইলে, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে বললেনÑ তাদের ঈদ থাকতে নেই। তাদের শক্তি-সামর্থ্য কিছুই নেই। স্ত্রী-সন্তান থেকে দূরে প্রায় ৮ বছর ধরে। থাকছেন এ প্রবীণ নিবাসে। জীবনে যা গড়েছেন সবই স্ত্রীর নামে। অর্থ-সম্পদ সবই রয়েছে স্ত্রীর নামে। তিনি জানান, এখন তার নিজের বলতে কিছুই নেই। স্ত্রী-ছেলেমেয়ে কেউই খোঁজ নেয় না। প্রায় ৫ বছর ধরে কেউই আসেননি একটিবারের জন্য দেখতে। এক ছেলে দুই মেয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে চাকরি করছে। ছেলে সরকারি কলেজের অধ্যাপক। মেয়েরা ডাক্তার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইডেন কলেজের সাবেক অধ্যাপিকা জানালেন, অসুস্থ স্বামী নিয়ে তিনি এ প্রবীণ নিবাসে থাকেন।

ছেলেমেয়েরা চাকরি করছে। ঈদের কেনাকাটা করেছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নিজের জন্য কিছুই কেনেননি। তবে কিছু কাপড় কিনেছেন। এগুলো নিবাসে কাজ করেন এমন কাউকে দেবেন বলে জানান। বললেন, ঈদ ভালো লাগে না। সন্তান ছাড়া ঈদ হয় না। ভাতের লোকমা মুখের কাছে নিতেই সন্তানদের মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তখন ভেতরে খাবার যায় না।

এদিকে এ প্রবীণ নিবাসের অনেকেই কথা বলতে চাইলেন না। তারা বললেন, সাংবাদিকদের জন্য তাদের

বকা শুনতে হয়। সন্তানরা রাগ করে। সন্তানরা নিষেধ করে দিয়েছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কোন কথা না বলতে।”

বলাবাহুল্য, প্রবীণ-প্রবীণা এসব বাবা-মায়ের অন্তঃহীন মর্মান্তিক এসব দুঃখ দূরীকরণেও প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে।

রুনা, রতনা, আসমার মায়ের ভূমিকায় কেবল নয়; ওইসব প্রবীণ-প্রবীণাদের মেয়ের দায়িত্ব পালনও প্রধানমন্ত্রীকে করতে হবে।

এ হৃদয়হীনতার, মর্মন্তুদ ঘটনার গভীরে প্রধানমন্ত্রীকে অনুভবের জাল বিস্তার করতে হবে।

মনস্তাত্মিক বিশ্লেষণ করতে হবে।

আসল কারণ খুঁজতে হবে।

প্রবাহমান জীবন-অনুভূতির কলুষময় দিকটার অন্তর্ঘাত আমলে নিতে হবে।

সামাজিক জটিলতার ব্যাপকতার কারণ নির্ণয় করতে হবে।

সামাজিক অবক্ষয়ের কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে।

সবার উপরে মনুষ্যত্বকে স্থান দিতে হবে।

পারিবারিক বন্ধন অটুট রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

সঙ্গতকারণেই এক্ষেত্রে ইসলামের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের দিকটির মূল্যায়ন করতে হবে।

রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের এদেশে শতকরা ৯৫ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের এদেশে যুগপৎভাবে ইসলামের প্রয়োজনীয়তা ও শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিফলন ঘটাতে হবে।

***********

বলাবাহুল্য, ভোগবাদী জীবনদর্শনই পারিবারিক বন্ধনকে আলাদা করে দেয়। ইসলাম বহির্ভূত আচরণ, জীবন দর্শন, সংস্কৃতিই ভোগবাদী মানসিকতাকে বিস্তৃত করে। মনুষত্বকে বিসর্জন দিয়ে পশুতে

পরিণত করে।

ভোগবাদী জীবন দর্শনই একদিকে সন্তানকে ডে-কেয়ারে পাঠাতে অপরদিকে বাবা-মাকে ওল্ডহোমে পাঠাতে প্ররোচিত করে।

যা আবহমানকালের বাঙালি সংস্কৃতি তথা ইসলামী মূল্যবোধের সাথে চরম সাংঘর্ষিক ও পরম বৈপরীত্য।

তাতে ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’- এ বাঙালি সংস্কৃতির যেমন প্রতিফলন হয় না; তেমনি সন্তানের হক্ব, বাবা মায়ের হক্ব- এ ইসলামী অনুভূতিরও চর্চা হয় না।

বলাবাহুল্য, পিতা-মাতার হক্ব আদায়ে ইসলাম বড়ই সংবেদনশীল, সক্রিয় ও পরিপূর্ণ।

কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তোমাদের বাবা-মা

একজন অথবা দু’জন যখন বয়োঃবৃদ্ধা হয় তখন তোমাদের সেবার ও সাহায্যের হাত বিস্তার করে দাও যেন তারা উঁহ-আহ  না বলে। এবং তাদের জন্য দোয়া করো, আয় আল্লাহ পাক! তাদের প্রতি ওইরকম দয়া করুন যেমনটি তারা আমাদের শিশুকালে দয়া করেছেন।”

আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি।”

“মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।”

কিন্তু এসব ইসলামী অনুভূতি আজ কেন ৯৫ ভাগ মুসলিম জনগোষ্ঠীর এদেশে নেই। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের এদেশে নেই।

যা রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের প্রধানমন্ত্রীকে বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে।

বলাবাহুল্য, এ বিষয়ে ইতোমধ্যে ‘আল বাইয়্যিনাত’ ও ‘দৈনিক আল ইহসান’-এ লেখালেখি হয়েছে।

বর্তমান দেশে যেভাবে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির বিপণন ও বপন তথা অনুশীলন ও অনুসরণ চলছে তার কুফলেই এভাবে পারিবারিক বন্ধন আলগা হচ্ছে, বাড়ছে কথিত ইভটিজিং, বাড়ছে সন্ত্রাস, বাড়ছে মাদক, বাড়ছে দুর্নীতি, বাড়ছে নারী নির্যাতন, বাড়ছে পরকীয়া, বাড়ছে ধর্ষণ।

বলাবাহুল্য, রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপে এর প্রশমন সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে শতকরা ৯৫ ভাগ জনগোষ্ঠীর এদেশে ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিফলন তথা ছবি, গান-বাজনা, অনৈসলামিক সংস্কৃতিক কর্মকা- বন্ধ করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গতকারণেই বলিষ্ঠ ও সক্রিয় হতে হবে। এক্ষেত্রে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের কোনো অবকাশ নেই।

কেননা, পশ্চিমা সংস্কৃতি সয়লাব হলে এদেশবাসী পশ্চিমা মানসিকতায় হাবুডুবু খাবে। পশ্চিমা শাসককে স্বাগত জানাবে। তাতে এদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করার পাঁয়তারা হালে পানি পাবে। নব্য রাজাকারদের উত্থান হবে।

বিপরীত দিকে ইসলামী মূল্যবোধের প্রতিফলন হলে প্রথমত দু’চারজন প্রতিক্রিয়া দেখালেও পরিণতিতে সুফলে সবাই সমৃদ্ধ ও সিক্ত হবে।

সুতরাং বিশ্ববাসীর মাঝে সত্যিকার মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনিবার্যভাবে সে পথেই চলার জন্য আগ্রহী হতে হবে।

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।