যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬০

সংখ্যা: ১৮৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

মূলতঃ যুগে যুগে মিথ্যাবাদী আর মুনাফিকরাই হক্বের বিরোধিতা করেছে, হক্বের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। তাই মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ মুনাফিকদেরকে ‘কায্যাব’ বা মিথ্যাবাদী বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন- পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ পাক সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরাই মিথ্যাবাদী।” (সূরা মুনাফিকুন-১)

উক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, যারা মুনাফিক তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। আবার যারা মিথ্যাবাদী তারাই মুনাফিক। কেননা হাদীছ শরীফ-এ মুনাফিকের যে আলামত বা লক্ষণ উল্লেখ করা হয়েছে তন্মধ্যে একটি হলো মিথ্যা কথা বলা।

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর যারা বিরোধিতাকারী তারা উক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এরই পূর্ণ মিছদাক। অর্থাৎ তারা একই সাথে মুনাফিক ও কাট্টা মিথ্যাবাদী, তাই তারা মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্যে স্মরণীকা- বার্ষিকী, পত্র-পত্রিকা ও বক্তৃতার মাধ্যমে মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়। যেমন, যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সুলূলের বংশধর ও দাজ্জালে কায্যাব, খারিজীপন্থী ওহাবীদের আরেকটি মিথ্যা অপপ্রচার হচ্ছে,

(১৮)

‘বাংলা ভাষায় কুরআন শরীফ’

সম্পর্কিত মিথ্যাচারিতা

কায্যাবুদ্দীন তার উক্ত মন্তব্যে সর্বশেষ যা লিখেছে তা হলো, “…… আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় উলামায়ে কিরাম সম্পর্কে এমন সব গালি-গালাজ লিখা হয় যা কোন ভদ্রতা ও শালীনতার আওতায় পড়ে না।

“মিথ্যাচারিতার খণ্ডনমূলক জবাব”

কায্যাবুদ্দীন আল বাইয়্যিনাত-এর প্রতি দ্বিতীয় যে অপবাদ বা তোহমত দিয়েছে তা হলো “আল বাইয়্যিনাত-এ উলামায়ে কিরাম বা নায়িবে নবীগণকে গালি-গালাজ করা হয়।” (নাঊযুবিল্লাহ)

কায্যাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্যের জবাবে প্রথমত: বলতে হয় যে, কায্যাবুদ্দীনের একথাও ডাহা মিথ্যা। কারণ কায্যাবুদ্দীন যাদেরকে উলামায়ে কিরাম বা নায়েবে নবী বলে দাবী করছে, তারা কস্মিনকালেও হক্কানী আলিম বা নায়িবে নবী নয়। কায্যাবুদ্দীন যেহেতু আশাদ্দুদ্ দরজার জাহিল, তাই সে জানেনা যে কে হক্কানী আলিম, কে নায়িবে নবী। কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর দৃষ্টিতে হক্কানী আলিম বা নায়িবে নবীর সঠিক পরিচয় বা সংজ্ঞা তুলে ধরলেই সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হবে যে, কায্যাবুদ্দীনের দাবী সম্পূর্ণই মিথ্যা। অর্থাৎ তার উল্লিখিত ব্যক্তিরা আসলে হক্কানী আলিম বা সত্যিকার নায়িবে নবী নয়।  তাই নিম্নে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর দৃষ্টিতে হক্কানী আলিম বা সত্যিকার নায়িবে নবী-এর পরিচয় তুলে ধরা হলো-

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

আলিম কাকে বলে?

তৃতীয়তঃ ঐ ব্যক্তিই হাক্বীক্বী আলিম যিনি অর্জিত ইল্ম অনুযায়ী পরিপূর্ণ আমল করেন। যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে-

من ارباب العلم؟ الذين يعملون بما يعلمون قال فما اخرج العلم من قلوب العلماء؟ قال الطمع.

অর্থঃ “(আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত কা’ব ইবনুল আহ্বার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে জিজ্ঞাসা করলেন) আলিম বা ইল্মের অধিকারী কে? তিনি উত্তরে বললেন, যাঁরা ইল্ম অনুযায়ী আমল করেন। হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পুনরায় জিজ্ঞেসা করলেন, কোন্ জিনিস আলিমদের অন্তর থেকে ইল্মকে বের করে দেয়? তিনি উত্তরে বললেন, লোভ অর্থাৎ দুনিয়ার সম্পদ, সম্মান ইত্যাদি হাছিলের আকাঙ্খা।” (দারিমী, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ্)

বিশিষ্ট তাবিয়ী, আমীরুশ্ শরীয়ত ওয়াত্ব তরীক্বত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করা হলো- আলিম কে? তিনি জবাবে বলেন,

انما الفقيه الزاهد فى الدنيا والراغب فى الاخرة والبصير بذنبه والمداوم على عبادة ربه والوارع والكاف عن اعراض المسلمين والعفيف عن اموالهم والناصح لجماعتهم.

অর্থঃ “ফক্বীহ্ বা আলিম হলেন ঐ ব্যক্তি, যিনি দুনিয়া হতে বিরাগ, পরকালের প্রতি ঝুঁকে আছেন গুনাহের প্রতি সতর্ক, মহান আল্লাহ পাক-এর ইবাদতে মশগুল, পরহিযগার বা সুন্নতের পাবন্দ, মুসলমানের মান-সম্মান নষ্ট করেন না, তাদের সম্পদের প্রতি লোভ করেন না এবং তাঁর অধীনস্থদের নছীহত করেন।”

উপরোক্ত দলীলভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, হক্কানী আলিম বা সত্যিকার নায়িবে নবী তিনিই (১) যিনি দ্বীন ইসলামের প্রতিটি বিষয়েই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করেন, (২) ইল্মে ফিক্বাহ অর্জন করার সাথে সাথে একজন হক্কানী পীর ছাহেবের নিকট বাইয়াত হয়ে ইল্মে তাছাউফ চর্চা করতঃ অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে আল্লাহভীতি বা তাক্বওয়া অর্জন করেছেন, (৩) অর্জিত ইল্ম অনুযায়ী আমল করেন। অর্থাৎ নাজায়িয ও শরীয়তবিরোধী কাজে লিপ্ত হননা। কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফের দৃষ্টিতে তারাই হক্কানী আলিম বা নায়িবে নবী।

কায্যাবুদ্দীন যাদেরকে উলামায়ে কিরাম বা নায়িবে নবী বলে মুখে ফেনা তুলছে তাদের মধ্যে উল্লিখিত গুণাবলী আছে কি? মূলতঃ তাদের কারো মধ্যেই উল্লিখিত গুণাবলীর কোনটাই নেই। যেমন প্রথমতঃ তারা অনেক বিষয়েই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের খিলাফ আক্বীদা পোষণ করে থাকে। তারা বিশ্বাস ও প্রচার করে থাকে যে, (১) আল্লাহ পাক নূর বা আলো, (২) হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরি নন বরং মাটির তৈরি, (৩) হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম গন্দম খেয়ে ভুল বা লগজেশ করেছন। (৪) হযরত ইউনুস আলাইহিস্ সালাম দাওয়াতের কাজ বন্ধ করে আল্লাহ পাক-এর গজবে পড়েছেন, (৫) হযরত ছাহাবায়ে কিরাম-এর ইজতিহাদ ভুল ছিল, (৬) আল্লাহ পাক-এর হবীব আমাদের মতই সাধারণ মানুষ, (৭) নিয়ত করে মাযার শরীফ যিয়ারত করা শিরক, (৮) মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম করা বিদয়াত ও শিরক, (৯ ফরয নামাযের পর মুনাযাত করা বিদয়াত, (১০) ইসলামের গণতন্ত্র করা, ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া জায়িয এবং এ ধরনের আরো বহু কুরআন সুন্নাহ তথা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত বিরোধী আক্বীদায় তারা বিশ্বাসী। যাদের আক্বীদা বিশুদ্ধ নয়, তারা আলিম বা নায়িবে নবী হওয়া তো দূরের কথা তাদের জন্য মু’মিন-মুসলমান থাকাই তো দুষ্কর।

দ্বিতীয়তঃ তারা কেউ ইছলাহপ্রাপ্ত নয় । যার কারণে তাদের মধ্যে খোদাভীতি বা তাক্বওয়াও নেই কারণ তারা যৎসামান্য ইলমে জাহির বা ইলমে ফিক্বাহের অধিকারী হলেও তারা মূলতঃ ইল্মে তাছাউফ থেকে পরিপূর্ণরূপেই শূন্য। তাই তারা আল্লাহ পাক-এর ভয়ে হারাম নাজায়িয বা শরীয়তবিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকতে পারেনা, বরং অহরহ হারাম, নাজায়িয ও শরীয়তবিরোধী কাজে মশগুল থাকে। যেমন- বেপর্দা হওয়া, ছবি তোলা কুশপুত্তলিকা দাহ করা, ইসলামের নামে গণতন্ত্র করা ইত্যাদি। যাদের মধ্যে তাক্বওয়া বা খোদাভীতি নেই, তারা কি করে আলিম বা নায়িবে নবী হতে পারে?

তৃতীয়তঃ তাদের অধিকাংশ আমলগুলোই শরীয়ত ও সুন্নতের খিলাফ। অর্থাৎ সর্বদাই তারা হারাম, নাজায়িয ও বিদয়াত বা সুন্নত পরিপন্থী কাজে মশগুল। যেমন- পর্দা করা ফরয, তারা বেপর্দা হয়, নারী নেতৃত্ব মানা হারাম, তারা নারী নেতৃত্ব মেনে চলে। কুশপুত্তলিকা দাহ করা বা মূর্তি বানানো হারাম, তারা তা করে অনুরূপভাবে তাদের টুপি থেকে শুরু করে সেন্ডেল, পোশাক-পরিচ্ছদ, চলা-ফেরা, উঠাবসা, কথা-বার্তা চাল-চলন সবই সুন্নতের খিলাফ। অতএব, যারা ইল্ম অনুযায়ী আমল করেনা অর্থাৎ শরীয়তবিরোধী বা হারাম কাজে মশগুল এবং সুন্নতের পায়রবী করেনা তারা কি করে হক্কানী আলিম বা নায়িবে নবী হতে পারে?

আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের খিলাফ তথা কুফরী আক্বীদা পোষণ করার পরও শরীয়তবিরোধী তথা হারাম নাজায়িয কাজে প্রকাশ্যে মশগুল থাকার পরও সুন্নতের খিলাফ আমল করার পরও যদি তারা হক্কানী আলিম বা নায়িবে নবী হয়, তবে ৭২টি বাতিল ফিরক্বা, কাদিয়ানী, বাহাই কি দোষ করেছে? এরা কেন কুরআন ও হাদীছের দৃষ্টিতে বাতিল? এত সব হারাম ও শরীয়তবিরোধী কাজ প্রকাশ্য করার পরও যদি কায্যাবুদ্দীনের দৃষ্টিতে তারা আলিম ও নায়িবে নবী থেকে যায়, তবে হাদীছ শরীফে যাদেরকে উলামায়ে ‘ছূ’ বা ভ- আলিম বলা হয়েছে তারা কারা? এর কোন জবাব কায্যাবুদ্দীনের নিকট আছে কি? মূলতঃ এর কোন জবাবই কায্যাবুদ্দীনের নিকট নেই। কারণ উলামায়ে ‘ছূ’দের পরিচয় তুলে ধরলেই কায্যাবুদ্দীন নিজ ফাঁদে নিজে আটকা পড়ে যাবে।

– মুফতী মুহম্মদ ইবনে ইছহাক, বাসাবো, ঢাকা।

“কুরআন সুন্নাহ’র বিরুদ্ধে কোন আইন পাশ হবে না” -এটি শুধু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অথবা নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণাই নয় বরং এটা অত্যন্ত সংবেদনশীল ও সাক্ষাত ওয়াদা ইসলামের দৃষ্টিতে যার গুরুত্ব ও গভীরতা চরম-পরম ও ভীষণ স্পর্শকাতর

আল্লাহ পাক, আল্লাহ পাক-এর আইন, আল্লাহ পাক-এর মালিকানা ও সার্বভৌমত্ব, আল্লাহ পাক-এর দ্বীন, ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ইত্যাদি ঈমানী বিষয় নির্বাচনের জন্য কমমূল্যে বিক্রি করে ধর্মব্যবসায়ী জামাতীরা ইতিহাসের নিকৃষ্ট ও কলঙ্কিত অধ্যায় রচনা করেছে  ইসলামের নামে ধর্মব্যবসা করে তারা দ্বীন ও দুনিয়া দুটোই হারিয়েছে

আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইসলাম নয় জামাতে ইসলামী চায়- মওদুদীর ইসলাম

৩৭ বছরে বিচার হয়নি বলে এখনো বিচার করা যাবে না- এ কথা ভুয়া। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করলে মুক্তিযোদ্ধাই নয় গোটা দেশের প্রতিই সম্মান প্রদর্শন করা হবে॥ এর  জন্য ৭২-এর সংবিধান পুনঃজীবিত করার প্রয়োজন নেই। প্রচলিত আইনে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হক্কুল ইবাদের অন্তর্ভুক্ত।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫৮