সম্পাদকীয়

সংখ্যা: ২১৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

ফল ব্যবসায়ীদের মানুষখেকোদের সাথে তুলনা করেছে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী। কথিত সুশীল সমাজ ফল ব্যবসায়ীদের ক্রসফায়ারে দেয়ার মত অপরাধী বলেছে। কিন্তু তারপরেও ফল ব্যবসায়ীদের ফরমালিনসহ বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো বন্ধ নেই। গাছ থেকে পাড়ার পর ৫ বারেরও বেশী মেশানো হচ্ছে কেমিক্যাল।

আর এ বিষাক্ত ফল খাওয়ার পর নানা জটিল রোগের পাশাপাশি হচ্ছে মানুষের মৃত্যুও।

দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা ষাট লাখ অতিক্রম করেছে। দশ হাজার কোটি টাকারও বেশী চলে যাচ্ছে মাদক-সেবনে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অসহায়ত্ব স্বীকার করে বলেছে আইন করে আর পুলিশ দিয়ে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন আদর্শিক চেতনা।

নিজ দাম্পত্য জীবনের একান্তবাসের ছবিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিচ্ছে বিকৃতরুচির পুরুষ। আপন বাবার বিরুদ্ধে গত ২৪শে জুন সম্ভ্রমহরণের অভিযোগ এনেছে নারায়ণগঞ্জের মাহমুদপুর ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের এক কিশোরী। পরকীয়ার জন্য আপন মেয়েকে গলা টিপে মেরেছে মা। সাইবার ক্রাইম, পর্নোগ্রাফিতে রসাতলে যাচ্ছে দেশ। (নাঊযুবিল্লাহ)

জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। দিনের পর দিন তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তবে আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে পুলিশি আইনে সাজা হচ্ছে। প্রতি মাসে এক হাজারের বেশি পুলিশ সদস্যের শাস্তি হচ্ছে। এ হিসেবে গত ১৬ মাসে ১৭ হাজারের বেশি পুলিশের শাস্তি হয়েছে।

মানুষের জীবন নিয়ে জঘন্য বাণিজ্যে মেতে উঠেছে চিকিৎসকরা। ভালো কিডনী কেটে রেখে দিচ্ছে। কারণ ছাড়াই হর-হামেশা করছে সিজার। ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে নিচ্ছে অনৈতিক উচ্চহারে কমিশন।

এদিকে মন্ত্রী-এমপি সচিব ইত্যাদির দুর্নীতি সম্পর্কে পেপার পত্রিকায় হর-হামেশাই লেখা হচ্ছে। দুর্নীতির দায়ে মহিলা রাষ্ট্রদূতকেও পর্যন্ত দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সঙ্গত কারণেই তাই প্রশ্ন উঠে-

প্রান্তিক কৃষক থেকে নির্বাহী প্রধান পর্যন্ত; কোথায় নেই দুর্নীতি?

কোথায় নেই ঘুষ?

কোথায় নেই সুদ?

কোথায় নেই অনৈতিকতা?

কোথায় নেই মনস্তাত্ত্বিক সম্ভ্রমহরণ?

এই যখন অবস্থা তখন রাষ্ট্রযন্ত্র কত অসহায়?

আইনের শাসন কতো অর্থহীন?

নৈরাজ্য-ব্যভিচার কতো বিস্তৃত তা কী ভাবা যায়?

এতদ্বপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রযন্ত্র যে সম্পূর্ণই ব্যর্থ তা কী বলার অপেক্ষা রাখে?

এসবের বিপরীতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে যদি টিকতে হয় তা হলে অনিবার্যভাবে প্রয়োজন নাগরিকদের মাঝে আদর্শের প্রতিফলন।

নাগরিকদের মধ্যে আদর্শের উজ্জীবন। কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্র সে আদর্শ পাবে কোথায়? সংবিধান থেকে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ উঠানো হয়েছে। ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ ঢোকানো হয়েছে। ‘মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ নেই- যে প্রান্তিক কৃষক, অথবা মন্ত্রী, এমপি, বিচারক, চিকিৎসকদের,

তারা দ্বিধাহীনচিত্তে কী না অপরাধ করতে পারে? তারা কত বল্গাহারা হতে পারে? তারা খুব সহজেই কত সীমালঙ্ঘন করতে পারে?

তা অনুধাবন করতে,

উপলব্ধি করতে

বুঝতে কী খুব কষ্ট হয়?

রাষ্ট্রযন্ত্র নাগরিকদের কোন আদর্শিক শিক্ষা দেয়? রাষ্ট্রযন্ত্রের সংবিধানে আদর্শিক শিক্ষা নৈতিকতা শিক্ষার কোনো সিলেবাস আছে কী? রাষ্ট্রযন্ত্র কী মনে করে যে তার পেটোয়া পুলিশ বাহিনী দিয়ে সব নিয়ন্ত্রণ করবে? রাষ্ট্রযন্ত্র এ যাবত তা পেরেছে কী?

দেশের পনের কোটি মানুষের জন্য রয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৬৬ জন পুলিশ। অর্থাৎ ১ হাজার ১২৫ জন মানুষ জন্য ১ জন পুলিশ। রাষ্ট্রযন্ত্র কী মনে করে পুলিশ দিয়ে সে অপরাধীদের দমন করবে?

কিন্তু সে কথা যে সবৈব মিথ্যা তা রাষ্ট্রযন্ত্র হারে হারে টের পাচ্ছে। দিন দিন অপরাধের সংখ্যা ও মাত্রা বহুগুণ বিস্তার লাভ করছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রযন্ত্রের আদর্শমুখী হওয়ার কোন বিকল্প নেই। আর ৯৭ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত, রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম-এর এদেশে ইসলামী আদর্শ ব্যতীত অন্য কিছু সামনে আসতে পারেনা, আলোচিত হতে পারেনা, গৃহীত হতে পারেনা। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন তর্জ-তরীকা গ্রহণ করবে তার থেকে তা গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” অন্যত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদাররা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর।”

কাজেই রাষ্ট্রদ্বীন ইসলামের দেশে, নাগরিকদের জন্য দ্বীন ইসলাম শিক্ষা দেয়া যেমন প্রয়োজনীয় তেমনি দ্বীন ইসলামীভাবে নাগরিক থেকে রাষ্ট্রীয় আচার সব কিছুতেই চলতে দেয়া এবং তার জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা করা জরুরী।

মূলতঃ এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়