সম্পাদকীয়

সংখ্যা: ২০৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সমুন্নত, সুমহান আল্লাহ পাক উনার জন্যই সকল প্রশংসা। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্যই সকল ছানা-ছিফত।

কুরআন শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসামস, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে ইরশাদ ফরমান, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার আলোচনাকে, সম্মানকে বলুন্দ করেছি।” কতুটুকু? এতটা যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক-এর সাথে সংযুক্ত করেছেন। খোদ কালেমা শরীফ-এর সাথে সম্পৃক্ত করেছেন- ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’।

কোনো ব্যক্তি যদি কিয়ামত পর্যন্ত শুধু ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ পড়ে তারপরেও ওই ব্যক্তি মুসলমান হতে পারবে না, যতক্ষণ ওই ব্যক্তি ‘মুহাম্মদুর রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ না পড়বে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে আরো বলেন, “তোমরা মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং উনার খিদমত ও সম্মান কর।” (সূরা ফাতহ: আয়াত শরীফ ৯)

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হলেন মু’মিন-মুসলমানগণের ঈমান।

বলাবাহুল্য, ঈমান হলো নূর। আর কুফরী হলো জুলমাত বা অন্ধকার। যালিম কাফির-মুশরিকরা তাই সবসময় ঈমানের বিরোধিতা করে। কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “কাফির-মুশরিকরা চায় যে, মুসলমানগণ ঈমান আনার পরেও পুনরায় কুফরী করুক বা কাফির হয়ে যাক”। নাঊযুবিল্লাহ!

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুশরিক হিন্দুরা অদ্যাবধি মুসলমানদের ভারত উপমহাদেশে বা এদেশে অন্তর থেকে মেনে নেয়নি। শিবাজী থেকে আরম্ভ করে এখনো প্রায় প্রত্যেক হিন্দুই মনে করে মুসলমান এ ভূমিতে পরগাছা। তারা অন্তরে অন্তরে এ স্বপ্ন গভীরভাবে লালন করে যে, স্পেনের মতো ভারতভূমি থেকে সব মুসলমানগণকে বিতারণ করা হবে। নাঊযুবিল্লাহ! বাংলাদেশের হিন্দুরাও এ দিবাস্বপ্ন থেকে পিছিয়ে নেই।

এর জাজ্বল্যপ্রমাণ হলো- যখনই সংবিধান সংশোধনের নামে ধর্মনিরপেক্ষতা অন্তর্ভুক্তির আলোচনা উঠেছে, তখন থেকেই এদেশের হিন্দুরা একের পর এক মুসলমানগণের ঈমান- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি চরম বেয়াদবী, ঔদ্ধত্যমূলক ও মহাস্পর্ধাজনিত বক্তব্য দেয়া শুরু করেছে। আর ৩০শে জুন (২০১১ ঈ.) ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির পর মুশরিক হিন্দুদের এই হঠকারিতামূলক মহাস্পর্ধা আরো চরমভাবে বেড়েছে। নাঊযুবিল্লাহ!

 গত ১৬ মার্চ ২০১১ তারিখে মানিকগঞ্জের ঘিওরের উত্তর তরা জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ মজুমদার ধর্ম ক্লাসে বলে যে, ‘হযরত মুহাম্মদ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি) একজন অপবিত্র মানুষ। উনার মায়ের বিয়ের ৬ মাস আগেই উনার জন্ম হয়।’ নাঊযুবিল্লাহ!  এরপর ঢাকার ধানমণ্ডি বয়েজ হাই স্কুলের সহকারী প্রধানশিক্ষক মদন মোহন দাস গত ২৬ জুলাই ২০১১ ঈসায়ী শিক্ষক কমনরুমে শাফিউল মুজনিবীন, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিবাহ এবং হজ্জ প্রসঙ্গে কটূক্তি করে। নাঊযুবিল্লাহ!  এরপর গত ১৪ই জুন ২০১১ তারিখে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া উপজেলার জিটি হাই স্কুলের শিক্ষক শংকর বিশ্বাস ছাগল বলে কটূক্তি করে। নাঊযুবিল্লাহ!  এরপর গত ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে এবং জান্নাত-জাহান্নাম নিয়ে চরম অবমাননাকর উক্তি করে নড়াইলের সরকারি বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষিকা নুপুর রায় বলে যে, “মহানবী কা’বা ঘর থেকে মূর্তি ভাঙার কারণে মূর্তির অভিশাপে তার বংশ নির্বংশ হয়ে গেছে।” নাঊযুবিল্লাহ!  গত ১৯ অক্টোবর ২০১১ ঈসায়ী তারিখে সাতক্ষীরা কালীগঞ্জের নলতা আহছানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক সুশান্ত কুমার ঢালী বলে যে, “মুসলমানদের নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি  রাম ছাগল।” নাঊযুবিল্লাহ!   এই ধারাবাহিকতায় গত ১২ অক্টোবর ২০১১ তারিখে খুলনার পাইকগাছা কপিলমুনি ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি প্রভাষক অরুণ কুমার সরকার বলেছে যে, “আল্লাহকে পিঠ মোড়া দিয়ে বেঁধে বলবে তুই আমাদের অনেক জ্বালিয়েছিস”। নাঊযুবিল্লাহ!

লক্ষণীয় যে, অতি সম্প্রতি আমাদের প্রিয় নবী, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে এদেশে যতজন মুশরিক হিন্দু চরম বেয়াদবীমূলক উক্তি তথা মহামিথ্যা মন্তব্য করেছে তারা সবাই স্কুল, কলেজের শিক্ষক। এর দ্বারা প্রতিভাত হয়, আসলে ৯৭ ভাগ মুসলমানের এদেশেও হিন্দুরা একাট্টা। তারা এক হয়ে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে সুগভীর ও চরম ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, সংবিধান থেকে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দেয়ার’ পর এবং সেই সাথে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ অন্তর্ভুক্তির পরই মুশরিক হিন্দুদের এতো বাড় বেড়েছে।

বলাবাহুল্য, কথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভারতে কখনই মুসলমানরা নিরপেক্ষতা পায় না। আর বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে মুশরিক হিন্দুরা এতোটা সুযোগ নেয় ও পায় যে, হরহামেশা তারা ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে। অথচ ৯৭ ভাগ মুসলমানের এদেশে মাত্র ২ ভাগের কম মুশরিক হিন্দু কখনোই ধর্মনিরপেক্ষতা দাবি করতে পারে না। বরং সঙ্গতকারণেই এদেশে ইসলাম ও মুসলমানের প্রাধান্য অনস্বীকার্য।

উল্লেখ্য, মুসলমান কখনও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দের অধীনে বাস করতে পারে না।

তাতে মুসলমানের ‘ঈমান’ রক্ষা হয় না।

তাতে মুসলমান ‘ইসলাম’ পালন করতে পারে না।

কারণ ইসলাম পরিপূর্ণ দ্বীন। ইসলাম ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতি, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা সমর্থন করে না। কাজেই ধর্মনিরপেক্ষতার প্রেক্ষিতে মূলত এদেশে ২ ভাগের কম জনগোষ্ঠী মুশরিক হিন্দুদেরকে ৯৭ ভাগ মুসলমানের দ্বীন ইসলামের বিরোধিতা করে বল্গাহীন উচ্ছৃঙ্খলতার উচ্ছ্বাস প্রকাশের সুযোগ দেয়া হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ!

আর মুসলমানদের ইসলাম পালনে পদে পদে বাধা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতার বেনিফেসিয়ারী এদেশের ২ ভাগের কম জনগোষ্ঠী মুশরিক হিন্দু। আর ৯৭ ভাগ মুসলমান নিজের দেশেই, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশেই বঞ্চিত, উপেক্ষিত, শোষিত। সঙ্গতকারণেই এর অবসান হওয়া দরকার।

মূলত, ধর্মনিরপেক্ষতা তথা মুশরিক হিন্দুদের ঔদ্ধত্যমূলক ও ইসলাম অবমাননাকর ফিতনা নিরসনে চাই রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ তথা তায়াল্লুক মায়াল্লা। কেবলমাত্র মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ছোহবতের মাধ্যমেই কেবলমাত্র তা প্রাপ্তি সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে তা নছীব করুন। আমীন।

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়