হরতাল, অবরোধ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে হারাম। হরতাল, অবরোধ শুধু দুনিয়াবী ক্ষতিই নয়; ঈমানী ক্ষতিরও কারণ। ৯৭ ভাগ মুসলমান উনাদের দেশে হরতাল, অবরোধ চলতে পারে না।

সংখ্যা: ২৩১তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

সাংঘর্ষিক রাজনীতির নির্মম দায় সরাসরি এসে পড়ছে ব্যবসায়ীদের কাঁধে। প্রতিদিনই নগদ লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। এতে ভ্রুক্ষেপ নেই রাজনীতিবিদদের। কারণ মাস শেষে শ্রমিকের মজুরি তাদের গুনতে হয় না। ঋণের কিস্তি পরিশোধের দায়ও নেই তাদের। ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির দায় একই সঙ্গে পড়ছে সাধারণ মানুষের উপরও। হরতাল-অবরোধে পুঁজি হারাতে বসা ব্যবসায়ীরা বারবার ধরনা দিয়েছেন রাজনীতিবিদদের দুয়ারে। সাদা পতাকা মিছিল, মানববন্ধন করলেন; কিন্তু কোনো ফল হলো না। নিরাপত্তা নিয়ে হরতাল-অবরোধে একদিকে যেমন যান চলছে না, অন্যদিকে জরুরি প্রয়োজনে কোথাও যেতে কয়েক গুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে প্রত্যেককে। বড় চাকরিজীবী থেকে শুরু করে দিনমজুর প্রত্যেককেই নিতে হচ্ছে এই সহিংস রাজনীতির দায়।

২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত ৭০ দিন হরতাল-অবরোধ হয়েছে দেশে। এ হিসাব তুলে ধরে দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই বলেছে, এতে লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বিভিন্ন খাতে। ২১ ডিসেম্বরের পরও সরকার ও বিরোধী দল মিলে গতকাল পর্যন্ত আরো ১১ দিন অঘোষিত ও ঘোষিত অবরোধ পালন করেছে। ফলে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বেড়েছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় বিনিয়োগ কমেছে। ব্যাংকগুলোতে অলস টাকা জমছে। আর ব্যবসা-বাণিজ্যের সব খাতই এখন কঠিন লোকসানে রয়েছে। সার্বিকভাবে বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানি, উৎপাদন-বিপণন কমায় রাজস¦ আদায় পরিস্থিতিও মুখ থুবড়ে পড়ছে।

এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে ঢাকা চেম্বার ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের হিসাব অনুযায়ী, এক দিনের হরতালে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি খাতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১৫৪০ কোটি থেকে ১৬০০ কোটি টাকা। এ হিসাবে ৭২ দিনের হরতাল-অবরোধে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ এক লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার মতো। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্ষয়ক্ষতির যে পরিসংখ্যান সংগঠনগুলো করেছে, তা আগের হরতালগুলো বিবেচনায় নিয়ে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের হরতাল ও অবরোধগুলোতে অর্থনৈতিক কর্মকা- অনেক বেশি স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে ব্যবসা খাতে ক্ষতি আরো বেড়েছে।

উল্লেখ্য, হরতাল গুজরাটি শব্দ। ‘হর’ অর্থ প্রত্যেক। ‘তাল’ অর্থ তালা। অর্থাৎ প্রতি দরজায় তালা।

ভারত উপমহাদেশে গান্ধী, ব্রিটিশদের রাউলাট আইন বাতিল করার জন্য তার প্রতিবাদে যে পদ্ধতি অবলম্বন করে, তার নাম দেয়া হয় হরতাল। এ হরতাল পালিত হওয়ার কথা ছিল ১৯১৮ সালের ৩০শে মার্চ। পরে এ তারিখ পিছিয়ে ৬ই এপ্রিল করা হয়। ফলে কোন স্থানে ৩০শে মার্চ আবার কোন স্থানে ৬ই এপ্রিল সর্বপ্রথম হরতাল পালিত হয়।

বলাবাহুল্য, হরতাল ‘গুজরাটি’ শব্দ। পাপাত্মা গান্ধী কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী হিন্দু, সে দাবি আদায়ের পদ্ধতির নামকরণ করে হরতাল।

মূলত স্ট্রাইক শব্দের প্রবর্তক হলো, ইহুদী-নাছারা। আর হরতাল শব্দের প্রবর্তক হলো, মুশরিক পাপাত্মা গান্ধী।

হরতাল অবরোধ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে হারাম। কারণ হরতাল হচ্ছে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার রীতিনীতি বহির্ভূত গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি বিজাতীয় ধ্যান-ধারণা ও অপকৌশল। যাতে শান্তি তো না-ই বরং অশান্তির পথকে প্রশস্ত করে। তাই এটি কোন মুসলমানের জন্য অনুসরণীয় নয়। মুসলমানের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় হচ্ছেন, æমহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে মনোনীত ও নাযিলকৃত পবিত্র দ্বীন ইসলাম।”

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, æযে ব্যক্তি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে ছাড়া অন্য কোন দ্বীন (নিয়ম-নীতি, অন্য ধর্ম) তালাশ করে, তা কখনোই তার থেকে গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)

হরতাল হারাম হওয়ার আর একটি কারণ হলো, এটা মানুষের স¦াভাবিক কাজ-কর্মকে ব্যাহত করে, জনজীবনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, æতোমরা যমীনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করোনা।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, æফিৎনা-ফাসাদ ক্বতলের চেয়েও ভয়াবহ।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯১)

হরতালের ফলে যারা দিনমজুর, রোজ কামাই করে রোজ খায়, তাদের কষ্ট হয়। মু’মিন মুসলমান না নিরাপদ থাকে, না শান্তিতে থাকে। বরং কষ্টে দিনাতিপাত করে, রোগীদের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে যায়।

পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, æকোন মুসলমানকে কষ্ট দেয়া কুফরী।”

হরতাল এক ধরনের জুলুম, যা শুধু ব্যক্তি পর্যায়েই নয় বরং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও হয়।

অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, æমহান আল্লাহ পাক তিনি জালিমদেরকে পছন্দ করেন না।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪০)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, æতোমরা অত্যাচার করোনা এবং অত্যাচারিতও হয়োনা।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৭৯)

যে সমস্ত জালিমরা গোমরাহীর মধ্যে দৃঢ়, তাদের প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, æআর মহান আল্লাহ পাক তিনি জালিমদেরকে হিদায়েত দেন না।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৬)

অর্থাৎ যে সমস্ত জালিম সম্প্রদায় তাদের জুলুমের মধ্যে দৃঢ় থাকে, তারা কখনো মহান আল্লাহ পাক উনার হিদায়েত লাভ করতে পারবে না।

মূলত হরতাল-অবরোধ আর জুলুম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কাজেই যেখানে হরতাল-অবরোধ হবে, সেখানেই জুলুম হবে। জুলুম ব্যতীত কোন হরতাল-অবরোধ সংঘটিত হতে পারেনা। কাজেই হরতাল-অবরোধ করা জায়িয নেই, তা সম্পূর্ণরূপে হারাম।

হরতাল যে কারণে করা হয়, অর্থাৎ অপরাধীকে শাস্তি দেয়া; তা মোটেই হয়না। বরং অপরাধী অর্থনৈতিক ও মানবিক সব দিক থেকেই বহাল তবিয়তে অবস্থান করে থাকে। কিন্তু শাস্তি ভোগ করে শুধু জনসাধারণ, যারা অপরাধী নয়। অথচ হরতালের ফলে একজনের অপরাধের শাস্তি অন্যজনকে চাপিয়ে দেয়া হয়, এটা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিধান নয়। বরং মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম হলো, একজনের গুনাহর বোঝা অন্যজন বহন করবে না।” (পবিত্র সূরা আনয়াম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬৪)

উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের বহু দলীল রয়েছে যে, হরতাল করা জায়িয নেই। কিন্তু ৯৭ ভাগ মুসলমানের খুব কম সংখ্যকই একথা জানেন ও মানেন। অথচ হরতাল শুধু দুনিয়াবী ক্ষতিই নয় হরতাল ঈমানী ক্ষতিরও কারণ। কাজেই ৯৭ ভাগ মুসলমান উনাদের দেশে হারাম হরতাল ও অবরোধ চলতে পারেনা।

মূলতঃ এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬২

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২০ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল