মাওলানা যে এম.পি হতে পারে না সে কথা খোদ মওদুদীই স্বীকার করেছে। কিন্তু জন্মদাতা মওদুদীকে অমান?করে এ পর্যš?তথাকথিত জামাতে ইসলামীর অনেকেই এম.পি এমনকি মন্ত্রী পর্যš?হয়েছে। সে মন্ত্রীত?ওদের কথিত তাগুতী সরকারের মন্ত্রীত্ব। সে এম.পি তাগুতী সরকারের এম.পি।
এরূপ এমপি হারাম এমপি। এরূপ নির্বাচন হারাম। এসব ফতওয়া মাওলানা মওদুদী তার ‘রাসায়েল ও মাসায়েল?নামক কিতাবে লিখেছে।
উল্লেখ করার মত বিষয় হচ্ছে যে, মাওলানা মওদুদী কখনো তার পরবতী?কোনো কিতাবে ঐসব ফতওয়া যে ভুল ছিল তা স্বীকার করে নাই। এমনকি আজকের জামাতী মন্ত্রী এমপিরাও মওদুদীর দেয়া ঐ সব ফতওয়া যে ভুল তা আজ পর্যš?প্রচার করে নাই। অর্থাৎ তারা যে তাদের কথিত তাগুতী সরকারের এমপি ও মন্ত্রীত?গ্রহন করে তাদের নীতির সাথে বেঈমানী করেছে, প্রতারণা ও মুনাফিকী করেছে তা সর্বোতই প্রমাণিত হয়।
মূলতঃ ইসলাম কখনও এদের কাঙ্খিত নয়। ইসলাম এদের চর্চার বিষয়ও নয়। কিন্তু ইসলামের নামে ফায়দা হাছিলই উহাদের লক্ষ?এবং সে উদ্দেশ্যেই উহাদের যাবতীয় কর্মতৎপরতা ও প্রচারণা। এ বিষয়ে মাসিক আল বাইয়্যিনাতে ইতোমধে?অনেক দলীল-আদিল্লা দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত সাম্প্রতিক আরো একটি বিষয় নিয়ে এ লেখার অবকাশ।
তথাকথিত জামাতে ইসলামীর মুখপ?দৈনিক সংগ্রাম এ গত ১৯শে মাচ?০৭ একটি খবর পত্র¯?হয়।
আমীরে জামায়াতের অভিনন্দন
গত ১৭ মাচ?অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলায় বালাদেশ দল ভারতকে ৫ উইকেটে পরাজিত করায় বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন জানিয়ে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমীর ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী। গত ১৯ মাচ?০৭ ঈসায়ী রোববার প্রদ?বিবৃতিতে বলেছেন, “বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টাইগারদের নিকট ভারতীয় ক্রিকেট দলের পরাজয় বাংলাদেশের ১৪ কোটি মানুষ আনন্দিত ও গর্বিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এ বিজয় আমাদের দেশের ক্রিকেট দলের সোনার ছেলেদের ক্রীড়া নৈপুনে?বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃ?িপেয়েছে।
তাদের এ সাফলে?আমরা আনন্দিত যে, বাংলাদেশ দলও একদিন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার মর্যাদা লাভ করতে সক্ষম হবে। বিশ্বকাপের এ খেলায় মাঠে নেমেই বাংলাদেশ দল অপ্রতিরোধ?হয়েছে। ব্যাটে ও বলে দুর্দান্ত খেলে অনায়াসেই বাংলাদেশ দল হারিয়েছে বিশ?ক্রিকেটের অন্যতম সেরা দল ভারতকে। বাংলাদেশ দলের দামাল ক্রিকেটারদের অবিস্মরনীয় ক্রীড়া শৈলীতে আমরা গর্বিত। বাংলাদেশ এ বিশ্বকাপকে স্মরনীয় করে রাখবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
আমরা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উত্তরোত্তর সাফল?ও উন্নতি কামনা করছি। তারা ক্রিকেট খেলায় নৈপুণ? সাফল?অর্জন করে দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করুক আজকের দিনে এ কামনাই করছি এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সার্বিক সাফল? উন্নতি ও সমৃ?িকামনা করছি।?
(দৈনিক সংগ্রাম, ১৯ মাচ?০৭ ঈসায়ী)
উল্লেখ? প্রদ?প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কয়েকটি শ?ও বাক?যু?হয়েছে। জামাতে ইসলামী বা ইসলামের জামাত, আমীর, মাওলানা ইত্যাদি। বলাবাহুল?একটি ইসলামী গোষ্ঠীর প্রধানকেই আমীর বলা হয়। আর কুরআন সুন্নাহর ইলমে পারদশী?ব্যক্তিকেই মাওলানা বলা হয়।
অর্থাৎ যিনি আমীর বা মাওলানা দাবী করবেন তিনি অবশ্যই কুরআন সুন্নাহর ইলমের কাছে দায়ব?ও জিজ্ঞাসিত হবেন।
এ?ত্রে উল্লেখ?তথাকথিত জামাতে ইসলামীর আমীর মাওলানা নিজামী বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের বিজয়ে উল্লোসিত, আনন্দিত ও গর্বিত হয়েছেন।
কিন্তু যে কুরআন সুন্নাহর ইলমের প্রেক্ষিতে তিনি মাওলানা হয়েছেন সে ইলম কি বলে?
শরীয়তে পুরুষ-মহিলা সকলের জন?সর্বপ্রকার খেলাধুলাই হারাম। কেননা হাদীছ শরীফে স্পষ্টই ইরশাদ হয়েছে যে, “সর্বপ্রকার খেলাধুলাই হারাম।?
আর যে খেলা বিধর্মীদের সাথে তাশাব্বুহ্ বা সাদৃশ?রাখে অথবা দ্বীন ইসলাম থেকে সরিয়ে দেয় বা কুফরীতে নিমজ্জিত করে তা সম্পূণ?কুফরী।
আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাকে ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহুদী-নাছারাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধে?যে ব্য?িতাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক যালিমদেরকে হিদায়েত দান করেন না।?(সূরা মায়িদা- ৫১)
অর্থাৎ কোন মুসলমানের জন?ইহুদী-নাছারা তথা কোন বিধমী?বিজাতীয়দের নিয়মনীতি, তজ?তরীক্বা, আমল-আখলাক?গ্রহণ করা বা তাদের সাথে সাদৃশ?রাখে এমন কোন বিষয়ও গ্রহণ করা জায়িয নেই। কেউ যদি তা গ্রহণ করে সে যালিমের অন্তর্ভুক্ত হবে।
সে?ত্রে সাধারণ লোক গ্রহণ করুক অথবা নাই করুক উপরো?আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফের আলোকে নিজামী ছাহেব ক্রিকেট খেলার মত একটা বিজাতীয় ও নাজায়িয বিষয় গ্রহণ করে সে হারাম ও কুফরী কাজ করেছে এবং জালিমের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
শুধু তাই নয় এরকম একটা হারাম ও বিজাতীয় কাজে পারদর্শিতার জন?নিজামী আনন্দিত ও গর্বিত বলে ব্যক্ত করেছে।
এ?ত্রে প্রথমতঃ সে তার দাবীকৃত ইসলামী দলের আমীর তথা মাওলানা হবার পরও উ?হারাম কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। কারণ হযরত উরস্ বিন উমাইরা রদ্বিয়াল্লা?তায়ালা আন?বর্ণনা করেন। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লা?আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “যখন পৃথিবীতে কোথাও কোন পাপ কাজ সংঘটিত হয়, তখন যে ব্য?িউ?স্থানে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও উহাকে ঘৃণা করে, সে ব্য?িএরূপ যেন উহা হতে দূরে ছিল। আর যে ব্য?িদূরে থেকেও উ?পাপের প্রতি সন্তু?থাকে, সে এরূপ যেন তথায় উপস্থিত ছিল।?(আবূ দাউদ, মিশকাত)
অর্থাৎ গুনাহ্র কাজ যে স্থানেই সংঘটিত হোক না কেন, তাতে যে ব্য?িসম্মতি পেশ করবে অথবা সমর্থন করবে, সে ব্যক্তিই সেই গুনাহে গুনাহ্গার হবে। সেখানে তার উপস্থিত থাকা বা না থাকা উভয়টাই বরাবর।
আর দ্বিতীয়তঃ তিনি উ?হারাম কাজের প্রশংসা করে এবং গর্ববোধ করে আল্লাহ পাক-এর ক্রোধে পতিত হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লা?তায়ালা আন?হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লা?আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ফাসিকের প্রশংসা করা হলে আল্লাহ পাক গোস্সা করেন এবং সে কারণে আরশ মুবারক কেঁপে উঠে।?(বায়হাক্বী, মিশকাত-১১৪)
“তাবিয়ী হযরত ইব্রাহীম ইবনে মাইসারা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লা?আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্য?িকোন বিদ্য়াতী তথা ফাসিককে সম্মান করলো, সে মূলত: দ্বীন ইসলাম ধ্বংসের কাজে সাহায?করলো।?(বায়হাক্বী, মিশকাত)
আবারো প্রতিভাত হয় যে তথাকথিত জামাতে ইসলাম আসলে ইসলামের জামাত নয় বরং তারা হল বিদয়াতে ইসলাম।
ইসলামের কাজ করার জন?তাদের পদচারণা নয় বরং ইসলাম ধ্বংসের জন?তাদের পাঁয়তারা। (নাউযুবিল্লাহ)
বিশেষতঃ এ?ত্রে বলতে হয় যে, উ?তথাকথিত জামাতে ইসলামের আমীর তথা মাওলানার আসলে ঈমানই নেই। শরীয়তের দৃষ্টিতে তাকে মুসলমান বলারই উপায় নেই।
কেননা শরীয়তের মাসয়ালা হলো- হারামকে হালাল এবং হালালকে হারাম বললে, হারাম কাজে খুশি প্রকাশ করলে, হারাম কাজগুলিকে হালাল মনে করে সাহায?সহযোগিতা ও সমর্থন করলে বা হারাম কাজে বাহবা দিলে বা অভিনন্দন জানালে বা হারাম কাজে উৎসাহিত বা অনুপ্রাণিত করলে কুফরী হয়।
আর শরীয়তের ফতওয়া হল: যারা কুফরী করে তারা মুরতাদ হয়ে যায়। শরীয়তে মুরতাদের ফায়সালা হলো, তার স্ত্রী তালাক হবে যদি বিয়ে করে থাকে এবং এ?ত্রে পুনরায় তওবা না করে, বিয়ে না দোহরানো ব্যতীত তার স্ত্রীর সাথে বসবাস করা বৈধ হবে না। আর এ অবৈধ অবস্থায় সন্তান হলে সে সন্তানও অবৈধ হবে। হ?বাতিল হয়ে যাবে যদি হ?করে থাকে, সমস্ত নেক আমল বরবাদ হয়ে যাবে, তার ওয়ারিশসত?বাতিল হবে। তাকে তিন দিন সময় দেয়া হবে তওবা করার জন?এবং যদি তওবা করে, তবে ক্ষমা করা হবে। অন্যথায় তার একমা?শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কেননা হাদীছ শরীফে রয়েছে, তিন কারণে মৃত্যুদ?দেয়া জায়িয। যথা- ১. ঈমান আনার পর কুফরী করলে অর্থাৎ মুরতাদ হলে। ২. ঐ ব্যভিচারী বা ব্যভিচারিনী, যারা বিবাহিত বা বিবাহিতা। ৩. যে অন্যায়ভাবে কাউকে ক্বতল করে, তাকে।
আর মুরতাদ মারা যাবার পর যারা জানাযার নামায পড়ে বা পড়ায় বা জানাযার নামাযে সাহায?সহযোগিতা করে, তাদের সকলের উপরই মুরতাদের হুকুম বর্তাবে এবং এ সকল মুরতাদ মরলে বা নিহত হলে তাকে মুসলমানগণের কবরস্থানে দাফন করা যাবে না। এমনকি মুসলমানের ন্যায়ও দাফন করা যাবে না। বরং তাকে কুকুরের ন্যায় একটি গর্তের মধে?পুঁতে রাখতে হবে।
নিজামী সাহেব নিজেকে মাওলানা দাবী করেন। মাওলানা হিসেবে থাকতে হলে তার উপরো?ফতওয়া অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
কিন্তু কার্যত যা প্রতিভাত হয় আসলে নিজামী সাহেব নিজের মাওলানা পরিচয়ের পরিমণ্ডলে আদে?নেই। তিনি এম.পি মন্ত্রীত্বের আদলে থাকতে চান। যে কারণেই সাধারণের ভোট বাগাতে তিনি হারাম খেলার প? সমর্থন, আনন্দ ও গব?প্রকাশ করেছেন।
এতে করে শরীয়তের দৃষ্টিতে তিনি ঈমান হারিয়ে কুফরী করেছেন। খেলোয়ার তথা ফাসিকদের প্রশংসা করে আল্লাহ পাক-এর ক্রোধে পড়েছেন। আল্লাহ পাক বলেছেন, “তোমাদের মধে?সেই সম্মানিত যে বেশী মুত্তাক্বী, পরহিযগার।?
আর নিজামী ছাহেব বলেছেন, খেলার মত হারাম দ্বারা দেশের মর্যাদা বৃ?িপায়। এতে করে তিনি হারামের দ্বারা মর্যাদা বৃ?িপায় বলে প্রকাশ?কুফরী করেছেন তথা মুরতাদে পরিণত হয়েছেন।
ইসলামের দৃষ্টিতে যার ফায়সালা পূর্বেই ব্যক্ত হয়েছে। মূলত নিজামী সাহেবরা ইসলাম করেন না। ধর্মপ্রান মুসলমানের কাছে মাওলানা খোলস তার প্রতারণার হাতিয়ার মাত্র। এমপি মন্ত্রী হওয়ার জন?অনেক আগেই তারা ঈমান হারিয়েছে। কাজেই এরকম ঈমান হারা মাওলানা তথা মুরতাদের নেতৃতে?তথাকথিত জামাতী ইসলামী কতটুকু ইসলামের মধে?চালিত হচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়।
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২