গো’আযমের রায়ে দেশবাসী স্তম্ভিত এ রায় রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র ইসলাম উনার উপর আঘাত এ রায় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি তথা ৯৭ ভাগ মুসলমান উনাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও চেতনার মূলে আঘাত

সংখ্যা: ২২৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

সমস্ত প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ মুবারক ও সালাম মুবারক।

মওদুদীবাদী ধর্মব্যবসায়ী দল জামাতের সাবেক নেতা গো’আযমের বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে বাঙালি নিধন পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র, পাক সেনাদের সহযোগিতা করা, উসকানি দেয়া, বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকা-ে নিজেকে স¤পৃক্ত করা ও এসব কাজে অন্যদের বাধা না দেয়া এবং ব্যক্তিগতভাবে বাঙালিদের উপর নির্যাতন চালানোর মতো পাঁচ ধরনের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

একাত্তরে এক বৈঠকে গো’আযম, রাও ফরমান আলী ও এমএ মালেক প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল গো’আযম ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে নাগরিক শান্তি কমিটি গঠনের ষড়যন্ত্র করে।

১ ডিসেম্বর পাকিস্তানে ইয়াহিয়ার সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষকে দমনের জন্য রাজাকার বাহিনীর শক্তি বাড়ানোর পরামর্শ দেয়।

১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল টিক্কা খানের সঙ্গে বৈঠকে সারা দেশে শান্তি কমিটি গঠনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৯ এপ্রিল গো’আযম ও অন্যরা ঢাকায় ১৪০ সদস্যের নাগরিক শান্তি কমিটি গঠন করে।

মানবতাবিরোধী অপরাধে উসকানি দেয়ার ২৮টি ঘটনার কথা বলা হয়েছে প্রসিকিউশনের অভিযোগে।

গো’আযমের বিরুদ্ধে চতুর্থ অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধে সহযোগিতা বা সম্পৃক্ততার ২৩টি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।

গো’আযমের বিরুদ্ধে পঞ্চম অভিযোগে হত্যা ও নির্যাতনের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছে প্রসিকিউশন।

অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত ১৫.০৭.২০১৩ ঈসায়ী তারিখ সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামাতে মওদুদীর সাবেক আমির গো’আযমকে ৯০ বছরের কারাদ-ে দ-িত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে আদালত বলেছে, গো’আযমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা, উসকানি, সংশ্লিষ্টতা এবং হত্যা ও নির্যাতন এই পাঁচ ধরনের অপরাধের অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। সে সবকিছুর জন্য দায়ী। গো’আযম রাজাকার, আল-বাদর, আল-শামস গঠন করেছিল। তাদের সে অপরাধ থেকে বিরত রাখতে পারতো। কিন্তু সজ্ঞানে সে তা করেনি। আদালত বলেছে, গো’আযম মৃত্যুদ- পাওয়ার যোগ্য। শুধু স্বাস্থ্য ও বয়স বিবেচনা করেই তাকে ৯০ বছরের কারাদ- দেয়া হয়েছে। এই রায়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেনি মামলার বাদীপক্ষ এবং একাত্তরে শহীদ এবং নির্যাতিতদের স্বজনরা। তথা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি বা প্রকৃত ইসলাম উনার অনুসারীর। একাত্তরের গণহত্যাসহ সকল মানবতাবিরোধী অপরাধের মাস্টার মাইন্ড, স্বাধীনতা বিরোধিতার প্রতীক গো’আযমের সর্বোচ্চ দণ্ডই প্রত্যাশা ছিল গোটা দেশবাসীর।

স্বাস্থ্য ও বয়স বিবেচনা করে আদালত ৯০ বছর বয়সী যুদ্ধাপরাধী গো’আযমকে সর্বোচ্চ দণ্ড ফাঁসি না দিয়ে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। তবে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে গো’আযমের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় তার সৃষ্ট বাহিনীগুলো এবং তার প্রত্যক্ষ সহায়তায় হানাদার বাহিনী দ্বারা যে নৃশংস গণহত্যা ও জঘন্য অপরাধকর্ম সংঘটিত হয়েছে, সে বিবেচনায় এ রাষ্ট্র ও দেশবাসীর কাছে কোনো ধরনের সহানুভূতি গো’আযম পেতে পারে কিনা সে প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক। বিশেষত গো’আযম যে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নামে ধর্মব্যবসা করে সে ইসলামও মূলত এ ধরনের রায় প্রত্যাখ্যান করে।

পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ উনার ৪৫ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি এ কিতাবে তাদের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ, চক্ষুর বিনিময়ে চক্ষু, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের বিনিময়ে কান, দাঁতের বিনিময়ে দাঁত এবং জখমসমূহের বিনিময় সমান জখম। অতঃপর যে ক্ষতিগ্রস্তদের বিনিময় প্রদান করে সে গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়। যেসব লোক মহান আল্লাহ পাক তিনি যা অবতীর্ণ করেছেন, তদানুযায়ী ফায়ছালা করে না, তারাই যালিম।”

মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক ফরমান, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি নিহতদের ব্যাপারে কিসাস গ্রহণ করা বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তির বদলায়, দাস দাসের বদলায় এবং নারী নারীর বদলায়। অতঃপর তার ভাইয়ের তরফ থেকে যদি কাউকে কিছুটা মাফ করে দেয়া হয়, তবে প্রচলিত নিয়মের অনুসরণ করবে এবং ভালোভাবে তাকে তা প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে সহজ এবং বিশেষ অনুগ্রহ। এরপরও যে ব্যক্তি বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। হে জ্ঞানীগণ! কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পার।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭৮, ১৭৯)

উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফসমূহের আমল করলেও গো’আযমের শাস্তি হয় মৃত্যুদ-। কিন্তু রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র ইসলাম উনার এদেশে এ রায়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে অনুসরণ করা হয়নি। এটা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার উপর আঘাত। দেশের ৯৭ ভাগ মুসলমান উনাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত।

কাজেই শতকরা ৯৭ ভাগ মুসলমান উনাদের দেশ বাংলাদেশের সরকারের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- দেশী-বিদেশী অপশক্তির চাপে নতি স্বীকার না করে এই পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসেই যালিম যুদ্ধাপরাধী ও দেশদ্রোহীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- কার্যকর করে জনগণকে দেয়া ওয়াদা পূরণ করা। অন্যথায় জনসমর্থন হারানোর পাশাপাশি সরকারকে এজন্য বিরাট মাশুলও দিতে হতে পারে।

মূলত সব সমস্যা সমাধানে চাই সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা তথা সততা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন নেক  ছোহবত মুবারক, নেক সংস্পর্শ মুবারক তথা রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা পাওয়া সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ জিসান আরিফ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬০

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৯

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৮

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৯ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

 মতিভ্রমদুষ্ট মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার হতে পারে; কিন্তু রাজাকার কখনও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না।  যেমনটি ইসলামের ইতিহাসে পরবর্তিতে অনেকেই ছাহাবী হয়েছেন।  অনেকে অনেক জিহাদও করেছেন। কিন্তু বদরী ছাহাবী তিনশ’ তের জনই।  ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর কেউ বদরী ছাহাবী হতে পারবে না। সে মর্যাদা পাবে না।  অপরদিকে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীরা স্বাধীনতার সুফল পেতে পারে না।  স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো স্থানে তারা সমাবেশের অনুমতি পেতে পারে না।  মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট কোন অনুষ্ঠান করা, ইসলামের     দৃষ্টিতে বড় ধরনের প্রতারণা, মিথ্যা ও মহা বেঈমানী ও চরম মুনাফিকী।  মুক্তিযোদ্ধার নামে কোনো অনুষ্ঠান করতে চাইলে জামাতীদের আগে প্রকাশ্যে     তওবা করতে হবে।  তার আগ পর্যন্ত রাজাকার জামাতীদের কোনো ধরনের সমাবেশ করার অনুমতি       দেয়া সরকারের উচিত নয়। মুক্তিযোদ্ধা কেনার হাটের অনুমতি দেয়া উচিত নয়।  মুক্তিযোদ্ধা কেনার প্রক্রিয়াও বরদাশত করা উচিত নয়। কারণ তা সংবিধানে     সম্মত নয় এবং ইসলাম সঙ্গত তো নয় আদৌ।