নারী অধিকার প্রসঙ্গে

সংখ্যা: ১৯৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

‘নারী’ বলতে আমরা কি বুঝি? এটাই তো বুঝি সে মা, বোন, স্ত্রী, ভাবী, খালা, ফুফু, নানি, দাদি সবাই একেক জন মহিলা অর্থাৎ নারী। সৃষ্টির শুরুতেই আল্লাহ পাক হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করেন এবং সাথে সাথে উনার আহলিয়া হিসেবে সৃষ্টি করেন- হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ মহান রব্বুল আলামীন আল্লাহ পাক উনার কোন সৃষ্টিই কুদরতের বাইরে নয় এবং হিকমতের বাইরে নয়। পুরুষ এবং নারীকে সৃষ্টি করে একত্রে রেখেছেন যার মাধ্যম দিয়ে ক্রমানুসারে মানুষের বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে। আল্লাহ পাক একজন পুরুষকে শারীরিক, মানসিক বিভিন্ন বিষয়ের যোগ্যতা দিয়ে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। ঠিক তেমনি একজন নারীকেও তার সঙ্গী হিসেবে যতটুকু যোগ্যতা দরকার ততটুকু গুণাবলী দিয়েই পাঠিয়েছেন। অবশ্যই এটা আল্লাহ পাক উনার কুদরতের অন্তভুর্ক্ত। তার একমাত্র কারণ কোন মাখলুকাতই নিজের ইচ্ছায় সৃষ্টি হতে পারেনি আর পারবেও না। অর্থাৎ একজন নারী চাইলেই পুরুষের যোগ্যতা বা গুণাবলী অর্জন করতে পারবে না। আর একজন পুরুষ চাইলেই সে নারীর যোগ্যতা বা গুণাবলী অর্জন করতে পারবে না। আল্লাহ পাক যাকে যে দায়িত্ব দিয়ে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন তাকে সে দায়িত্বই পালন করতে হবে। একজন কৃষক যেমন কৃষি কাজই করতে পারবে, ডাক্তারী করতে পারবে না। আবার একজন শিশু তার আক্বল অনুযায়ী অর্থাৎ শিশুদের মতই কাজ করবে, বড়দের মত কাজ সে করতে পারবে না। বড়রা আবার অবুঝ শিশুদের মত কাজ করতে পারবে না। অর্থাৎ এ উদাহরণ থেকে এটাই বুঝাতে চাচ্ছি- যার যে বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সে যোগ্যতা অনুযায়ী নিজ দায়িত্ব পালন করাই তার উচিত। নিজের দায়িত্ব বাদ দিয়ে পুরুষের দায়িত্ব পালন করা অবশ্যই তার জন্য উচিত হবে না। তবেই একটা পরিবারে, একটা সমাজে সাম্যতা বজায় থাকবে। এটাই স্বাভাবিক অবস্থা। এর বিপরীতে গেলেই সেটা অস্বাভাবিক, অপ্রাসঙ্গিক, অসঙ্গতি বলে মনে হবে।

আজ আমাদের দেশের পরিবারের, সমাজের দিকে দৃষ্টি দিলেই সেই অস্বাভাবিক পরিবেশই পরিলক্ষিত হয়। বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দেশ না হয় বাদই দিলাম; খোদ মুসলিম দেশগুলোর নারী অধিকারের দাবিতে সোচ্চার হওয়া তথাকথিত প্রগতিশীল নারীবাদীদের অসঙ্গতিপূর্ণ জীবনযাপনের দিকে তাকালেই লজ্জায় মাথা হেট হয়ে আসে।

আফসুস! আমরাও নারী, তারাও নারী। আমাদের নারীর  বৈশিষ্ট্য এবং তাদের নারীত্ববাদের মধ্যে পার্থক্য বিশাল, ব্যাপক। নীতিগত বৈষম্যই এখানে ধরা পড়ে একের পর এক। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের নীতি হবে- দ্বীন ইসলাম সেটা যা শিক্ষা দিয়েছে। আল্লাহ পাক- যা আদেশ-নিষেধ করেছেন, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা আদেশ-নিষেধ করেছেন সেগুলো। সেটার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা এবং সে মুতাবিক জীবনযাপন করাই প্রকৃত মু’মিনার পরিচয়। আর একজন নারী যদি পাশ্চাত্যের ধ্যান-ধারণা বাদ দিয়ে, ইহুদী-নাছারাদের রীতি-নীতি গ্রহণ না করে নিজেদেরকে হাক্বীক্বী মুসলিমা রূপে পরিচিত করতে পারে তবেই নারী মুক্তি, নারীর সমঅধিকার, মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হবে।

তা না হলে ‘নারীর অধিকার ও মর্যাদা’ প্রতিষ্ঠা হওয়া কোনদিনই সম্ভব নয়। শুধুমাত্র দ্বীন ইসলামই নারীর পরিপূর্ণ হক্ব, অধিকার ও হাক্বীক্বী মর্যাদা দিয়েছে- যা কোন বাতিল ধর্ম দিতে পারেনি। আর পারবেও না।

আর আমরা সেই চেষ্টাই অব্যাহত রাখতে চাই, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত তথাকথিত প্রগতিশীল নারীবাদীদেরই পক্ষে লেখা তাদেরই উদাহরণ তুলে ধরে নারীদের বিভিন্ন সমস্যা তার সমাধান, নারীদের অধিকার, মর্যাদা আদায়ের ক্ষেত্রে মুসলমান দেশের একজন মুসলিমা নারী হিসেবে কি করণীয় এবং কি করা যেতে পারে সে সব বিষয়?

ইনশাআল্লাহ আমরা পর্যায়ক্রমে আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ইহসানে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ-এর আলোকে এই বিষয়টি ধারাবাহিকভাবে পর্যালোচনা করবো।

প্রথমেই আসা যাক ‘নারী দিবস’ সম্পর্কে যা আন্তর্জাতিকভাবে ৮ই মার্চ পালিত হয়ে থাকে। এই ‘নারী দিবস’ পালিত হওয়ার পেছনে যে ইতিহাস রয়েছে তা সামান্য হলেও আমাদের জানা প্রয়োজন। ১৮৫৭ সালের ৮ই মার্চ আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরের একটি সূচ কারখানায় নারী শ্রমিকগণ বেতন বৃদ্ধি ও কাজের সময় কমানোর দাবিতে আন্দোলন করার সময়ে পুলিশী বর্বরতার শিকার হয় তারা। পরবর্তীতে নারী শ্রমিকরা অধিকার আদায়ে ১৮৬০ সালের ৮ই মার্চ ‘নারী শ্রমিক ইউনিয়ন’ গঠনের মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যায়।

১৯১০ সালের ৮ই মার্চ কোপেনহেগেনে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে জার্মান নারী নেত্রী কমরেড ক্লারা সেৎকিন দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলো। এরপর থেকেই সারাবিশ্বে নারী দিবস পালিত হয়ে আসছে। ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘ এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। একই কারণে আমাদের দেশেও দিবসটি উদযাপিত হয় অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে! নাউজুবিল্লাহ!

উপরের ইতিহাস থেকে যা জানলাম তা হলো প্রথমত মুসলমান নারীদের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। উক্ত ঘটনাগুলো ঘটে বেদ্বীন-বদদ্বীন মহিলাদের ব্যস্ততম জীবন নিয়ে। যা একজন মুসলিম মহিলার জন্য আদর্শ হতে পারে না। একজন মুসলিম মহিলা ও তার পরিবার, সংসারে, সমাজে অবশ্যই ব্যস্ত থাকতে পারে; অবশ্যই বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে।

তবে সেটা হবে তার শরীয়তের গণ্ডির মধ্যে। শরীয়তের বিধি বিধানের বাইরে সে যেতে পারবে না। যদি কেউ শরীয়তের বাইরে চলে যায় তবে তাদের জন্য আল্লাহ পাক এবং আল্লাহ পাক- উনার হাবীব উনার তরফ থেকে কঠিন ফায়সালা রয়ে গেছে।

আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন- “তিনি (আল্লাহ পাক) উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হিদায়েত এবং সত্য দ্বীন সহকারে পাঠিয়েছেন সকল দ্বীনের উপর প্রাধান্য দিয়ে অর্থাৎ পূর্ববর্তী ওহীর দ্বারা নাযিলকৃত সমস্ত দ্বীন এবং পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মানব রচিত সকল মতবাদ বাতিল ঘোষণা করে। আর এ ব্যাপারে সাক্ষী হিসেবে আল্লাহ পাকই যথেষ্ট। আর রসূল হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” (সূরা ফাতাহ ১৮, ২৯)

এই আয়াত শরীফ থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, দ্বীন ইসলাম ছাড়া আর কোন ধর্মের নিয়ম-নীতি গ্রহণ করা যাবে না। ‘নারী দিবস’ যেহেতু খ্রিস্টানরা করেছে। আর ইহুদী, খ্রিস্টান, মুশরিক, মজুসী এরা তো বাতিল হয়ে গেছে- দ্বীন ইসলাম আসার পর। সুতরাং এদেরকে কোনভাবেই মুসলমানরা অনুসরণ করতে পারবে না। আল্লাহ পাক- উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর কুরআন শরীফ অবতীর্ণ হওয়ার পর যারা ইসলাম কবুল করেছে- তারা মুসলমান হয়েছে। আর যারা ইসলাম কবুল করেনি, গ্রহণ করেনি তারা কাফির হয়ে গিয়েছে। এমনকি সকল কাফির স¤প্রদায় আল্লাহ পাক উনার হাবীব উনার প্রতি শত্রুতা পোষণ করেছে এবং আল্লাহ পাক উনার হাবীব উনাকে কষ্ট দিয়েছে। যার জন্যে আল্লাহ পাক অসংখ্য আয়াত শরীফ-এ মুসলমানদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন এবং সকল কাফিররাই যে মুসলমানদের শত্রু তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে বলেছেন। সূরা মায়িদা ৮২ নম্বর আয়াত শরীফ-এ আল্লাহ পাক বলেন- “তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদীদেরকে। অতঃপর যারা মুশরিক তাদেরকে।”

সূরা মুমতাহিনার ১ নম্বর আয়াত শরীফ-এ আল্লাহ পাক বলেন- “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আমার শত্রু এবং তোমাদের শত্রুকে বন্ধু বা ভক্তি বা শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে গ্রহণ করো না।”

এখন এখানে ফিকিরের বিষয় যে, আল্লাহ পাক যেখানে নিষেধ করেছেন ইহুদী-নাছারা, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সাথে বন্ধুত্ব করতে এবং আমরা জানি আল্লাহ পাক আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং এক সময় আল্লাহ পাক উনার কাছেই আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। সেখানে কিভাবে আল্লাহ পাক- উনার এই আদেশ-নিষেধকে তথাকথিত এই নারী জাতি অস্বীকার করতে পারে?

ইবলিস ছয় লক্ষ বছর ইবাদত-বন্দেগী করার পরও আল্লাহ পাক উনার একটা আদেশ অমান্য করার কারণে চির মালউন ‘অভিশপ্ত’ হয়ে আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে চির বিতাড়িত হয়ে গিয়েছে। তাহলে যারা আল্লাহ পাক উনার এই আদেশ নিষেধ মানবে না তাদেরও ইবলিসের মত চির লানতপ্রাপ্ত, অভিশপ্ত ও বিতাড়িত হতে হবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক উনার হাবীব তিনি বলেন, “যে যার সাথে সম্পর্ক রাখবে, তার হাশর-নশর তার সাথেই হবে।”

এখন এই হাদীছ শরীফখানা ফিকির করলে বুঝা যাবে, যারা ইহুদী-নাছারা, তথা বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সাথে উঠাবসা করে থাকে তবে তাদের হাশর-নশর সেই বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সাথেই হবে। আর সেটাই যদি হয়- তাহলে বলতে হয়, তুমি মুসলিম দাবি করো অথচ তোমাদের মুসলমানিত্ব কোথায়?

বেদ্বীন-বদদ্বীনদের ঈঁষঃঁৎব-এর সাথে একাকার হওয়া, ‘নারী দিবসের’ প্রতি আবেগ-আপ্লুত হওয়া।

এ কিসের পরিচয় বহন করে?

কোন মুসলমানের?

কখনই তা নয়।

কোন মু’মিনার?

কখনই নয়।

হাক্বীক্বী মু’মিনা, হাক্বীক্বী মুসলিমা হতে হলে তাকে অবশ্যই আল্লাহ পাক এবং আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ নিষেধ এবং যে কোনো ফায়সালা বিনা-চু-চেরায় মেনে নিতে হবে

-আজিমা ফারহা, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬০

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৯

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৮

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৯ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

 মতিভ্রমদুষ্ট মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার হতে পারে; কিন্তু রাজাকার কখনও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না।  যেমনটি ইসলামের ইতিহাসে পরবর্তিতে অনেকেই ছাহাবী হয়েছেন।  অনেকে অনেক জিহাদও করেছেন। কিন্তু বদরী ছাহাবী তিনশ’ তের জনই।  ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর কেউ বদরী ছাহাবী হতে পারবে না। সে মর্যাদা পাবে না।  অপরদিকে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীরা স্বাধীনতার সুফল পেতে পারে না।  স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো স্থানে তারা সমাবেশের অনুমতি পেতে পারে না।  মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট কোন অনুষ্ঠান করা, ইসলামের     দৃষ্টিতে বড় ধরনের প্রতারণা, মিথ্যা ও মহা বেঈমানী ও চরম মুনাফিকী।  মুক্তিযোদ্ধার নামে কোনো অনুষ্ঠান করতে চাইলে জামাতীদের আগে প্রকাশ্যে     তওবা করতে হবে।  তার আগ পর্যন্ত রাজাকার জামাতীদের কোনো ধরনের সমাবেশ করার অনুমতি       দেয়া সরকারের উচিত নয়। মুক্তিযোদ্ধা কেনার হাটের অনুমতি দেয়া উচিত নয়।  মুক্তিযোদ্ধা কেনার প্রক্রিয়াও বরদাশত করা উচিত নয়। কারণ তা সংবিধানে     সম্মত নয় এবং ইসলাম সঙ্গত তো নয় আদৌ।