(বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে যে ইলিম, আক্বল, সমঝ ও হিকমত মুবারক হাদিয়া করেছেন তা বেমেছাল, তুলনাহীন। উনার মিছাল উনি নিজেই। সুবহানাল্লাহ!
ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ, ইমামুল মুত্তাক্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম বাকির আলাইহিস সালাম তিনি উনার ইলিম, আক্বল, সমঝ ও হিকমতের পরিচয় পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন। উনার কপাল মুবারকে বুছা দিয়ে বলেছিলেন: “আপনার ইলিম, আক্বল, সমঝ ও হিকমত মুবারকই আপনাকে শত্রু বানিয়েছে।” অর্থাৎ আপনার ইলিম, আক্বল, সমঝের মুকাবালা করতে না পারার কারণে প্রতিপক্ষ আপনার সাথে শত্রুতা করে থাকে।
ইমামুল মুসলিমীন, আশিকে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন, ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যদি একটি কাঠের খুঁটিকে স্বর্নের খুঁটি বলতেন, তাহলে আমাদের মাঝে এমন কেউ ছিলেন না যে, উনার বিপরীতে কাঠের খুঁটিকে কাঠ এববং স্বর্নের খুঁটিকে স্বর্ন প্রমান করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনার বর্তমানে কোন ব্যক্তিই কোন বিষয়েই উনার সাথে মুকাবালা করে বিজয় লাভ করতে পারেনি। সকলেই উনার কাছে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়েছিল। কেউই কোন বিষয়ে মুনাযারা বা বাহাছ করে বিজয় হতে পারেনি। আমরা এই শিরোনামে কয়েকটি বাহাছ বা মুনাযারার বিষয় আলোচ করবো ইনাশাল্লাহ।
** ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বয়স মুবারক তখন অল্প। শিশুকালের সেই ঘটনা। কেউ কেউ সাত বছরের কথা উল্লেখ করেছেন। রোমের বাদশাহ এক পাদ্রী বা ধর্মযাজককে অনেক টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, আসবাবপত্র, মাল-সামানা দিয়ে বাগদাদ শরীফে পাঠালো। উদ্দেশ্য মুসলমান আলিম-উলামাগণ উনাদের সাথে মুনাযারা বা বাহাছে লিপ্ত হয়ে খ্রীস্ট ধর্মকে বিজিত করা।
পাদ্রী বাগদাদ শরীফে পৌছে ঘোষনা দিলো যে ব্যক্তি আমার চারটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে আমি তার ধর্ম গ্রহন করবো। আর আমার নিকট রক্ষিত ধনসম্পদগুলো তাকে পুরস্কার স্বরূপ দিয়ে দিবো।
তবে যে আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না তাকে আমাদের ধর্ম গ্রহণ করতে হবে। আর আমাদেরকে ট্যাক্স বা জিজিয়া কর দিয়ে বশ্যতা স্বীকার করতে হবে। তার এই ঘোষণা যেন পুরো বাগদাদ শরীফের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ আকার ধারণ করলো।
সে পাদ্রী একটি প্রশস্ত রাস্তার মাথায় একটি উঁচু মিম্বর বসালো। তার উপর বসে তার বাহাদুরী জাহির করতে লাগলো। আম-খাছ সবধরণের লোকের উপস্থিতি ঘটলো। পাদ্রীদেরও আনাগোনা শুরু হলো। দিনের পর দিন সেই ভীড় বেড়ে যেতে লাগলো। সে তিনদিন ধরে গলা ফাটিয়ে সেই ঘোষণা দিতে লাগলো। প্রতিবাদী কোন লোকের আগমন না দেখে তার বাহাদুরীর পরিধি বেড়ে গেল।
উক্ত মজলিসে ৭/৮ বছরের একজন বালকের উপস্থিতি ঘটলো। যিনি উনার পিতার সাথে উপস্থিত হয়েছিলেন, এতো লোক একসাথে এখানে জমা হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য। বালকটি দেখতে পেলেন পাদ্রী তার কুট কৌশলের দাপট বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাহাদুরী দেখাচ্ছে। কিন্তু কেউ কোন সন্তোষজনক জাওয়াব দিচ্ছে না।
বালক তিনি উনার সম্মানিত পিতা উনার কাছে পাদ্রীর প্রশ্নের জাওয়াব দেয়ার অনুমতি চাইলেন। বললেন, আব্বাজান! আপনি অনুমতি দিলে পাদ্রীর প্রশ্নের সন্তোষজনক জাওয়াব আমি দিতে পারি।
উনার পিতা বললেন, যেখানে অনেক বড় বড় আলিম-উলামাগণ কোন জাওয়াব দিচ্ছেন না, সেখানে আপনি কি জাওয়াব দিবেন? তিনি অনুমতি দিলেন না। পুনরায় বালক সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় পিতার কাছে অনুমতি প্রার্থনা করলেন। পিতা ধমকের সাথে বললেন, আপনি কি প্রলাপ বকছেন? আলিম উলামাদের সামনে আপনার কি বা জাওয়াব দেয়ার প্রমান আছে? (ইনশাআল্লাহ চলবে)