ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-৩৬

সংখ্যা: ২৪৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-৩৬

(বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)


কাযী ইবনে শুবরুমা তিনি লা-জাওয়াব হলেন

 এক ব্যক্তি ইন্তিকালের সময় ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকীমুল হাদীছ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অনুপস্থিতিতে উনাকে ওসীয়ত করলেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি কাযী ইবনে শুবরুমা উনার আদালতে উত্থাপিত হলো।

ইমামুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বাক্ষী পেশ করলেন যে, অমুক ব্যক্তি ইন্তিকালের সময় আমার অনুকুলে ওসীয়ত করেছেন।

তখন কাযী ইবনে শুবরুমা তিনি উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, “হে ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি কি শপথ করবেন যে, আপনার স্বাক্ষী সত্য বলছে?

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আমার উপর কসম আপতিত হচ্ছে না। কেননা আমি সেসময় সেখানে উপস্থিত ছিলাম না।

কাযী ইবনে শুবরুমা বললেন, তাহলে আপনার অনুমান কাজে আসবে না।

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তখন বললেন, ঠিক আছে। বলুন তো, কোন অন্ধ ব্যক্তির মাথা কেউ ফাটিয়ে দিল এবং দুজন সাক্ষি স্বাক্ষ্য দিলো। তবে কি অন্ধ ব্যক্তি শপথ করে বলবে যে, এদের স্বাক্ষ্য সত্য? অথচ সে তো দেখেনি। এতেই কাযী ছাহেব লা-জাওয়াব হলেন এবং ওসীয়ত মেনে নিলেন। (ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি-৯৮)

দাহ্রিয়া সম্প্রদায়ের সাথে মুনাযারা বা বাহাস

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীস, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আযম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মুনাযারা বা বাহাসে ছিলেন যুগের অনন্য ও অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। ছাত্র জীবনের প্রথম থেকেই তিনি গবেষণা, পর্যালোচনা ও মুনাযারা বা বাহাসের প্রতি গভীর অনুরাগী ছিলেন। ইসলামী দল উপদলের কেন্দ্রবিন্দ ছিল বসরা। তিনি প্রায়ই সেখানে যেতেন। সেখানকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সাথে মুনাযারায় লিপ্ত হতেন। তিনি তাদের সাথে চিন্তা-চেতনার বিনিময় করতেন। বর্ণিত আছে যে, তিনি বাইশটি দলের সাথে মুনাযারা করতঃ তাদেরকে পরাজিত করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

একবার তিনি দাহ্রিয়া সম্প্রদায়ের সাথে মুনাযারা বা বাহাস করেছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার উপর ঈমান আনয়নের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছিলেন- সে ব্যক্তি সম্পর্কে আপনাদের অভিমত কি, যে ব্যক্তি বলছে যে, আমি অনেক ধন-সম্পদে ভর্তি একখানা নৌকা দেখলাম। সমুদ্রের তরঙ্গ তাতে আঘাত হানছে। প্রবল বাতাস তাকে প্রতিরোধ করছে। তার গতিরোধ করছে। কিন্তু নৌকাটি কোন মাঝি-মাল্লা ও রক্ষক ছাড়াই সমুদ্রের বুক চিড়ে চলছে। এই কথা কি বুদ্ধি বিবেকের কাছে গ্রহনযোগ্য? উপস্থিত সবাই বললো, না। বুদ্ধি-বিবেক ও চিন্তার কষ্টি পাথরে একথা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়।

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উচ্চস্বরে বললেন, সুবহানাল্লাহ!

যখন একখানা নৌকা মাঝি-মাল্লা ব্যতীত সোজা চলতে পারে না। আর একথা বুদ্ধি, বিবেকের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, তখন ১৮ হাজার মাখলূক্বাত, সাগর, পাহাড়, আসমান, যমিন এতো বিশালতার ব্যাপক বিস্তৃতি হওয়া সত্বেও এই পৃথিবী কোন সৃষ্টিকর্তা ও রক্ষক ব্যতীত কিরূপে স্থায়ী ও প্রতিষ্ঠিত থাকতে পারে?

উনার নাতিদীর্ঘ বক্তব্য শুনে দাহ্রিয়া সম্প্রদায়সহ উপস্থিত সকলেই লা-জাওয়াব হয়ে গেলো। তারা কোন সদুত্তর দিতে পারলোনা। (আল মানাকিব লিল মাক্কী-১/১৭৮, ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি-১২১)

খারিজী দাহ্হাক ইবনে কায়িস লা-জাওয়াব হলো

দাহ্হাক ইবনে কায়িস একজন খারিজী। সে ব্যক্তি উমাইয়া খিলাফতের বিদ্রোহ করেছিল। সে একদিন কুফার মসজিদে আসলো। ইমামুল মুসলিমীন মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে উদ্দেশ্য করে বললো, “আপনি তওবা করুন।”

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, কোন গুনাহ থেকে তওবা করবো?

দাহ্হাক বললো, দু হুকুম সাব্যস্ত করা থেকে।

অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনাকে ফায়সালাকারী মেনে নেয়ার সাথে সাথে মানুষকে ফায়সালাকারী মানা।

উল্লেখ্য যে, খারিজী সম্প্রদায় তারা শুধুমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনাকে ফায়সালাকারী মনে করে। কাজেই, কোন মানুষকে ফায়সালাকারী মানা তাদের দৃষ্টিতে শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, তুমি কি আমার সাথে মুনাযারা করবে, না আমাকে শহীদ করবে? দাহ্হাক বললো, মুনাযারা করবো।

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, যদি আমরা পরষ্পর মতবিরোধে পৌঁছে যাই তাহলে আমাদের মধ্যে কে তৃতীয় ব্যক্তি হবে? কে আমাদের মাঝে ফায়সালা করবে?

দাহ্হাক বললো, যাকে ইচ্ছা তাকেই আপনি তৃতীয় ব্যক্তি তথা ফায়সালাকারী বানিয়ে নিতে পারেন।

তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দাহ্হাক এর পক্ষের একজন লোককে লক্ষ্য করে বললেন, “এখানে আস এবং আমাদের উভয়ের মতবিরোধের ফায়সালা বা মিমাংসা করো।”

তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দাহ্হাককে লক্ষ্য করে বললেন, এতে কি তুমি আমার সাথে একমত? এই ব্যবস্থা কি তুমি পছন্দ করো? সে বললো হ্যাঁ; আমি এতে একমত। ইহা আমি পছন্দ করি।

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, তুমি নিজেই তো ফায়সালা করে দিলে।

দাহ্হাক এই কথা শুনে চুপ হয়ে গেল। কোন প্রতিউত্তর করতে পারলো না। (ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি -৯৯)

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-৩১

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-৩৫

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-২৮

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-১৫ (বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-১৩ (বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)