আদালত অবমাননা আইন কী বাকস্বাধীনতার সাথে সাংঘর্ষিক? যখন কোনো কোনো বিচারকের নামে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে তখন কোনো কোনো বিচারকের ভূমিকা নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করা কী অপরাধ? ‘বিচারক’রা যে অন্যায়ভাবে ‘বিচারপতি’ পরিচয় গ্রহণ করছে, এটা কি অপরাধ নয়? বর্তমান বিচার বিভাগ যে ঐতিহ্য হারিয়েছে- এটা চুপিয়ে রাখা যাবে কী?

সংখ্যা: ২৪০তম সংখ্যা | বিভাগ:

আদালত অবমাননা আইন কী বাকস্বাধীনতার সাথে সাংঘর্ষিক?

যখন কোনো কোনো বিচারকের নামে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে তখন কোনো কোনো বিচারকের ভূমিকা নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করা কী অপরাধ?

‘বিচারক’রা যে অন্যায়ভাবে ‘বিচারপতি’ পরিচয় গ্রহণ করছে, এটা কি অপরাধ নয়?

বর্তমান বিচার বিভাগ যে ঐতিহ্য হারিয়েছে- এটা চুপিয়ে রাখা যাবে কী?


 

সমস্ত প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সব সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, বাংলাদেশে আদালত অবমাননা কথাটি যত বেশি উচ্চারিত হয় অন্য কোনো দেশে তত উচ্চারিত হয় না। প্রয়োগও হয় না। আদালত অবমাননা বিষয়টি অনেকক্ষেত্রে বাকস্বাধীনতার সাথে সাংঘর্ষিক- এ মন্তব্য অভিজ্ঞমহলের।

ব্রিটিশ শাসনামলে অবিভক্ত ভারতে তিনটি ধারা সমন্বয়ে আদালত অবমাননা আইন (কনটেম্পট অব কোর্ট) ১৯২৬ প্রণীত হয়, যা অদ্যাবধি বাংলাদেশে বিদ্যমান রয়েছে। এই আইন ছাড়াও ১৮৬০ সালের দ-বিধি আইনসহ বিভিন্ন বিশেষ আইনেও আদালত অবমাননা সম্পর্কিত বিশেষ বিধান রয়েছে। আদালত অবমাননা বিষয়ে ১৯২৬ সালের এই আইনটি অপর্যাপ্ত এবং অনেকাংশে অস্পষ্ট।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আদালত অবমাননা অধ্যাদেশ-২০০৮ জারি করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত অধ্যাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট পিটিশন নং ৪৩০০/২০০৮ দাখিল করা হয় এবং আদালত এ বিষয়ে সুয়োমটো রুল নং ৫/২০০৮ জারি করে। উভয় মামলা একত্রে শুনানি শেষে বিচারক এবিএম খায়রুল হক ও বিচারক আবু তারিক উক্ত আদালত অবমাননা অধ্যাদেশ বেআইনী ঘোষণা করে। দেখা যাচ্ছে, আদালত অবমাননা আইন প্রয়োগ এবং পালনও অনেক সময় আরেক আদালত বিরোধী হয়। আদালত অবমাননা অধ্যাদেশও পরিবর্তন করে এমনকি বেআইনি ঘোষণা করে খোদ আদালতই।

অপরদিকে সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতা ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুবিধা দিয়ে জাতীয় সংসদে পাস করা আদালত অবমাননা আইন-২০১৩কে সংবিধান পরিপন্থী ও অবৈধ বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।

আদালত অবমাননা আইনের আটটি ধারার {৪, ৫, ৬, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৩(২)} বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় দেয় হাইকোর্ট। এখানে দেখা যাচ্ছে, সার্বভৌম আইনপ্রণেতা প্রতিষ্ঠান সংসদে প্রণীত আইনকেও বেআইনী বলছে আদালত। এবং আদালতের দৃষ্টিতে খোদ স্বাধীন আইনপ্রণেতা প্রতিষ্ঠানটিই সংবিধানের ২৭, ১০৮, ১১২ ধারা ভঙ্গ করেছে। তাহলে কি প্রতিভাত হচ্ছে? আইন প্রণয়নে স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান খোদ সংসদেরও আদালত অবমাননা আইন প্রণয়নে অসঙ্গতি। অথচ এটা প্রণয়নের সময় তখন সংসদে ছিলো ১৫০ জনের অধিক আইনপ্রণেতা এবং আইন ও বিচারকদের প্রতিভু খোদ আইনমন্ত্রী। কিন্তু তারপরেও সেখানে মারাত্মকভাবে সংবিধান লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলো। তাহলে যে আদালত অবমাননা আইন নিয়ে কারো কারো এতো হম্বিতম্বি; সে আদালত অবমাননা আইন যে থিতু আছে বা হবে সে ভরসা কোথায়? এবং যে কোনো চলমান সময়ে এ আইন যে সম্পূর্ণ সঠিক; সে আস্থা রাখা যায় কিভাবে? অপরদিকে যে বিচারক আদালত অবমাননার শাস্তি দেয় সে-ই যে অপরাধের ঊর্ধ্বে- তা কী বলা যায়?

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের “হাইকোর্ট বিভাগ” এবং “আপীল বিভাগ” উভয় বিভাগের ‘বিচারকেরা’ নিজেদের ‘বিচারপতি’ হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করে, ভালোবাসে। কিন্তু প্রণিধানযোগ্য বিষয় হচ্ছে- সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে একজন মাত্র বিচারপতি থাকার কথা! সংবিধানের ৯৪ অনুচ্ছেদে পরিষ্কার বলা আছে- প্রধান বিচারপতি (যিনি “বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি” নামে অভিহিত হইবেন) এবং প্রত্যেক বিভাগে আসন গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতি যেরূপ সংখ্যক ‘বিচারক’ নিয়োগের প্রয়োজন বোধ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য ‘বিচারক’ লইয়া সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হইবে। তারপরও এই অন্যায্য পদবীটাই এখন বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের বিচারকদের অলংকার এবং অহংকার!

সে বা যারা আদালত অবমাননা এবং বিচারবিভাগ অবমাননা নিয়ে এত বেশি অনুভূতিপ্রবণ, তারা নিজেরাই যে নিজেদের নামের পূর্বে, সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারে, বক্তৃতায়, বহনকারী গাড়ির পতাকায়, নিজের পরিচয় দানে এবং এমনকি বাড়ির নাম ফলকে “বিচারপতি” শব্দটি ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত সংবিধান অবমাননা করে চলেছে, এর বিচার কে করবে? সুপ্রিম কোর্টকে বলা হয় সংবিধানের রক্ষক। এক্ষেত্রে কি রক্ষক স্বয়ং ভক্ষক হয়ে যাচ্ছে না?

যে ব্যক্তি দেশের সর্বোচ্চ আইন (সংবিধান)কে অবমাননা করে, অন্য কোনো অবমাননার বিচার করার নৈতিক অধিকার কি তার থাকা উচিত?

দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বিচারক বা আদালত কর্মচারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে অতি সম্প্রতি মন্তব্য করেছে প্রধান বিচারক মোজাম্মেল হোসেন। প্রধান বিচারকের এ কথায় প্রতিভাত হয় যে, বিচারকরাও দুর্নীতিপ্রবণ হতে পারে।

বলাবাহুল্য, বিচারকদের দুর্নীতির খবর ইতোমধ্যে পত্রিকায় বহু প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকায় হেডিং হয়েছে- “টিআইবি’র খানা জরিপ: বিচার বিভাগে সর্বাধিক দুর্নীতি।” শুধু দুর্নীতিই নয়; অভিযুক্ত বিচারকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থপাচারের বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ মিলছে বলেও দুদক সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে গত ৬ ডিসেম্বর-২০১৪, ইয়াওমুস সাব্ত বা শনিবার বিচার বিভাগ পৃথককরণের ৭ বছর উপলক্ষে আয়োজিত মুক্ত আলোচনা সভায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছে, ‘একটি মামলা নিষ্পত্তি করতে যদি ৫০ থেকে ১০০ বছর লেগে যায়, তাহলে এমন বিচার বিভাগ দিয়ে কী লাভ?’ ‘বিচার বিভাগ বর্তমানে দুর্নীতিদের অভরায়ণ্যে পরিণত হচ্ছে। আগে নিম্ন আদালতে জামিন না পেলে মানুষ উচ্চ আদালতে গিয়ে জামিন পেত। কিন্তু বর্তমানে নিম্ন ও উচ্চ আদালতের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই।’

দেখা যাচ্ছে, বিচার বিভাগের অনিয়ম, দুর্নীতি, দক্ষতা সম্পর্কে কিছুদিন পরপরই আলোচনা উঠে। অর্থাৎ আদালত অবমাননার অভিযোগের আশঙ্কা সত্ত্বেও থেকে থেকে অনেকেই বাস্তবতার নিরীখে কথা বলে উঠছে।

প্রসঙ্গত, আমরা মনে করি- ঢালাওভাবে অভিযোগ নয়। তবে বিচার বিভাগ বা বিচারকরা সবাই একেবারেই দুর্নীতিমুক্ত; তাও স্বীকার করার মতো নয়। অভিজ্ঞ মহলের মতে, বর্তমানে উচ্চ আদালত অনেকক্ষেত্রেই ঐতিহ্য হারিয়েছে। এ সত্য আদালত অবমাননার ভয় দেখিয়ে চুপিয়ে রাখা যাবে না। ইতোমধ্যে এক সাবেক জেলা জজ এ তথ্য উচ্চারণ করে আদালত অবমাননার শাস্তি পেয়েছে। কিন্তু তারপরেও গত ৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ঈসায়ী ইয়াওমুস সাব্ত বা শনিবার সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলিও একই কথা আরো জোরালোভাবে বললো। এমন কথা তারা পায় কোথায়? মূলত, জনগণের মুখের ভাষাই তাদের কথা বলতে শক্তি যোগায়। পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক ক’জনের মুখ আটকাবে? মুখ আটকালেও মনের অভিব্যক্তি তো আটকাতে পারবে না। পারবে না সর্বস্তরের জনসাধারণের সাথে। বিচারক হিসেবে তারা নিশ্চয়ই জানে সংবিধানের ৭(১) ও ৭(২)নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে- ‘জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান এবং প্রজাতন্ত্রের সমস্ত ক্ষমতার মালিক জনগণ।’

বিচারকদের মনে রাখতে হবে- তারা জনগণের এবং প্রজাতন্ত্রের অধীন। মালিক নয়। মালিকানা খাটালে তা হবে অন্যায় এবং অবৈধ ও জোর-যুলুম। আকলমন্দের জন্য ইশারাই যথেষ্ট।

মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)


-আল্লামা মুহম্মদ আশরাফুল মাহবূবে রব্বানী।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।