কতিপয় সুবিধাবাদী লোকের উন্নয়ন দেশের উন্নয়ন নয়।মধ্যবিত্তরা দরিদ্র হচ্ছে এবং দরিদ্ররা আরো অতি দরিদ্রে পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশে ধনীরা শুধু ধনীই হচ্ছে; বৈষম্যের শিকার হচ্ছে জনগণ।সরকারের উচিত- মুষ্টিমেয় কিছু লোকের উন্নয়নে বিভোর না থেকে জনসাধারণের সর্বোচ্চ উন্নয়ন করা।

সংখ্যা: ২৭০তম সংখ্যা | বিভাগ:

রাজধানীর বিলবোর্ডে লেখা হচ্ছে- উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে দেশ। বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রচারিত উন্নয়ন নিয়ে মহা বিতর্ক আছে। কারণ দেশের মুষ্টিমেয় মানুষের উন্নতি আসল উন্নয়ন নয় এবং এর ফল কখনো ভালো হয় না। ‘উন্নয়ন’ মানে দেশের সর্বস্তরের জনগণের ‘উন্নয়ন’। ঢাকার অভিজাত এলাকায় বসবাসকারী বিত্তশালী কিছু মানুষ, যারা বিদেশে যায়, বিদেশে বাড়ি কেনে, বিদেশে ছেলেমেয়েদের পড়ায়। সেটা তাদের উন্নতি, দেশের উন্নয়ন নয়। শুধু মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ যদি ভালো থাকে, তার ফল ভবিষ্যতে মোটেই ভালো হবে না।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী বলেছে- ‘দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে’। বাংলাদেশে ২৫ কোটি জনগণ বাস করে। কিন্তু ২৫ কোটি লোক উন্নয়নের মহাসড়কে নেই। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশে শুধু কিছু লোকের শনৈ শনৈ উন্নতি ঘটেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। কিন্তু এর পেছনে যে কৃষকের অবদান, দেশের খাদ্যচাহিদা পূরণ হয় যে কৃষি থেকে- সেই কৃষির নিয়ামক ১ কোটি ৮০ লাখ কৃষক আজো দরিদ্র ও নিপীড়িতই রয়ে গেছে। শত ত্যাগ স্বীকার করে যে কৃষকরা দেশের খাদ্যচাহিদা পূরণ করে তা বিদেশে রফতানীর সুযোগ করে দিচ্ছে, সেই কৃষকরা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। ফড়িয়া ও দালালদের খপ্পড়ে পড়ে প্রতিনিয়ত নিঃস্ব হচ্ছে তারা। এমনো অনেক কৃষক রয়েছে, যাদের পরিবার ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে অনাহারে থাকছে। সেইসাথে মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ চতুর্থ। কিন্তু দেশের জেলে সম্প্রদায় নানা অবহেলার শিকার হচ্ছে। মহাজন দালালদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে। এক হিসেবে দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পেশাজীবি সমাজ দিন দিন বঞ্চনার শিকার হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলো- ‘আমাদের লক্ষ্য দেশের সুষম উন্নয়ন’। কিন্তু আমরা বাস্তবে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের কোনো প্রতিফলন খুঁজে পাই না। ঢাকা শহরে বর্তমানে ৬০ লাখ বস্তিবাসী রয়েছে। যারা প্রতিনিয়ত দারিদ্র্য, অনাহার, অবহেলা এবং বঞ্চিত। সরকার থেকে এর আগে কয়েকবার বস্তিবাসীদের উন্নয়নে ভাষানটেকে ফ্ল্যাট দেয়া, তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ইত্যাদির পদক্ষেপ নিয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেছে, তাদের জন্য যে ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছিলো, সেগুলোতে দুর্নীতি ও অনিয়মের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রভাবশালী ও বিত্তশালীরা সেসব ফ্ল্যাট দখল করে নিয়েছে। সেইসাথে ঢাকা শহরে ১৫ লাখ পথশিশু রয়েছে। তাদের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা বললেও দিন দিন পশশিশু বেড়েই চলেছে। যারা দিন দিন বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সূচনা করে সামাজিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তুলছে। সবচেয়ে বৈষম্যের চিত্র হলো, দেশে এখনো ২ কোটি লোক একবেলা না খেয়ে থাকে।

বলতে হয়, দেশের জনগণের বৃহৎ অংশের কোনো উন্নয়ন সাধন হচ্ছে না। কিন্তু এর বিপরীতে একটি প্রভাবশালী ও অভিজাত মহল নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের ৯০ ভাগ সম্পদ মাত্র ১ ভাগ লোকের হাতে। সেইসাথে দেশে আয় বৈষম্যও প্রকট। ঢাকার মোট আয়ের ৪০ শতাংশের বেশি মাত্র সাড়ে ছয় শতাংশ মানুষের হাতে। এ ধনিক শ্রেণীর মাসিক গড় আয় প্রায় দুই লাখ টাকা। ঢাকার বাইরে ২০ শতাংশের বেশি মানুষের হাতে মোট আয়ের ৫১ শতাংশ অর্থ।

সেইসাথে বাংলাদেশে এস. আলম গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, আড়ং, আনন্দ গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, কনকর্ড গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপসহ প্রায় কয়েকশত কর্পোরেট হাউজ সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে লাখ কোটি টাকার ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করে যাচ্ছে। এমনকি এদের মধ্যে অনেকে ১০/২০ হাজার কোটি টাকার খেলাপী ঋণও মাফ করিয়ে নিচ্ছে। সেইসাথে গ্রামীণফোন, এয়ারটেল, ইউনিলিভার, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো, রেকিট, এইচএসবিসি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকসহ বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সরকারের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। কিন্তু এগুলোর বিপরীতে দেশের সিংহভাগ জনগণের উন্নয়ন হচ্ছে না। ধনীরা শুধু ধনীই হয়ে যাচ্ছে আর দরিদ্ররা অতি দরিদ্রতে পরিণত হচ্ছে।

বলাবাহুল্য, সংবিধানের (১৫) অনুচ্ছেদে রয়েছে- ‘সরকার জনগণের মৌলিকা চাহিদা পূরণের কাজ করবে’। সেইসাথে সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদে আরো বলা হয়েছে- ‘কেবল, ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবে না’। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার নিজেদের রাষ্ট্রের সেবক এবং সংবিধানের বাস্তবায়নকারী হিসেবে দাবি করে থাকে। কিন্তু উপরিক্ত বর্ণিত নানা শোষণের চিত্র সরকারের সেই দাবি ম্লান করে দেয়। একদিকে সালমান এফ রহমানের মতো কতিপয় ব্যক্তিরা ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা আর পরিশোধ করেনি। সেইসাথে এই ঋণ নিয়ে কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি হয়নি। যার কারণে সেই কালো টাকা সে সাদা করে নিয়েছে।

সম্প্রতি ক্রিসেন্ট গ্রুপের মালিক আজিজ ভুয়া নথি তৈরী করে জনতা ব্যাংক থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়ে সেই টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করছে। সেইসাথে দেশের ৫৭ টি ব্যাংকের মধ্যে ৫৬ টি ব্যাংকের পরিচালকরা মিলে ৯০ হাজার কোটি টাকা মিলেমিশে ঋণ নিয়ে সেই অর্থ আর ফেরত আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারী, বেসিক ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক কেলেঙ্কারীর টাকা ফেরতের কোনো চিহ্ন আজো দেখা যায়নি। লাখো কোটি টাকা খেলাপী ঋণ ফিরে পাওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই।

কিন্তু দেশের সাধারণ থেকে মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ী তথা জনগণ ব্যাংক ঋণসহ নানা সরকারি সহায়তা তো পাচ্ছেই না, উল্টো বিবিধ শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। পড়ে পড়ে মার খাচ্ছে। এমনকি অনেকেই দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে।

সঙ্গতকারণেই আমরা বলতে চাই, যদি দেশের সাধারণ জনগণের উন্নয়ন না করা হয় এবং তাদেরকে উপযুক্ত নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগের ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে অবিলম্বে দেশে সামাজিক শৃঙ্খলা ধ্বংস হয়ে যাবে। সত্যিকার অর্থে দেশের উন্নয়ন তো হবেই না, উল্টো দেশ পরিণত হবে একটি ‘ব্যর্থ রাষ্ট্রে’। তাই সরকারের উচিত- জনউন্নয়ন সাধিত করা। জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সমুন্নত করা।

-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা।

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।