গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার ২৪ হাজার কোটি টাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা থেকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বঞ্চিত হচ্ছে। কয়েকটি বিভাগীয় শহর নয় ৬৮ হাজার গ্রামের উন্নয়ন হলেই গোটা দেশের উন্নয়ন হবে।

সংখ্যা: ২৭৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সারাদেশে লকডাউন পরিস্থিতির কুপ্রভাবে দেশে প্রতিদিন বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকাসহ বিভিন্ন শহর থেকে কাজ হারানো মানুষ গ্রামের দিকে ছুটছে। প্রবাসী যারা দেশে ফিরে এসেছেন, তারাও এখন বেকার। লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য এক লাখ তিন হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করা হলেও ব্যাংকগুলোর অনীহায় টাকা ছাড় নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। এক কথায় এটিকে প্রণোদনা নয় বরং ঋণই বলা চলে। এতে করে দিন যত যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে চাপ তত বাড়ছে। এমন বাস্তবতায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আটটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আটটি বিভাগের জন্য তিন হাজার কোটি টাকা করে এসব প্রকল্পে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ২৪ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এসব প্রকল্প অনুমোদন নিয়ে দোলাচল তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান লকডাউন পরিস্থিতির কারণে মানুষ সবাই গ্রামমুখী। এখন সরকার যদি গ্রামভিত্তিক অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারে তাহলে এই বিপুল সংখ্যক ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কিছুটা হলেও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।

উল্লেখ্য, লকডাউনের প্রভাবের কারণেই গ্রাম অর্থনীতির উন্নয়ন নয় বরং বহু আগে থেকেই গ্রাম অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য দৈনিক আল ইহসান শরীফের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আহবান জানানো হচ্ছে। কারণ, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ২১টি ইশতেহার প্রদান করেছিলো। যার মধ্যে অন্যতম ছিলো গ্রামীণ উন্নয়ন। কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে গ্রামীণ কোনো উন্নয়ন দেশবাসীর চোখে পড়েনি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গ্রাম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে; কিন্তু সার্বিকভাবে গ্রামীণ অর্থনীতি জাতীয় অর্থনীতিতে সঠিকভাবে অবদান রাখতে পারছে না। অথচ গ্রামকে উপেক্ষা করে কখনোই দেশের সার্বিক উন্নয়ন আশা করা যায় না। কিন্তু এ সত্যটিই এতদিন উপেক্ষিত হয়ে এসেছে। বর্তমানে দেশে আধুনিকতা তথা ডিজিটালাইজেশন হলেও এখনো দেশে ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। কিন্তু জাতীয় অর্থনীতিতে গ্রামীণ অর্থনীতির অবদান রাখার ক্ষেত্রে বৈষম্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমাদের দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনায় শহরকে যেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়, গ্রামকে তা কখনোই দেয়া হয়নি। অথচ এতদিনে যদি গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা যেতো তাহলে লকডাউন পরিস্থিতিতে গ্রামমুখী হওয়া মানুষগুলো বেকার ও অর্থনৈতিক সঙ্কটে দিশেহারা হয়ে পড়তো না।

উল্লেখ্য, এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের মূল সম্পদের ৯০ ভাগ মাত্র ১ শতাংশ লোক যারা শহুরে তারা কুক্ষিগত করে রেখেছে। বাংলাদেশের জিডিপি ৭ শতাংশ অতিক্রম করে ৮ এর কাছাকাছি পৌছে যাচ্ছে। যা আকারে প্রায় ২২ লাখ কোটি টাকারও বেশি। যার মধ্যে ৯০ শতাংশই কথিত বিত্তশালীদের দখলে। আর বাকী ১০ অংশ সাধারণ মানুষের কাছে রয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও শহর ও গ্রামের বৈষম্য কত প্রবল সেটি এই পরিসংখ্যানে বোঝা যায়। সেইসাথে সরকার প্রতিনিয়ত লাখ কোটি টাকার নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প অনুমোদন দিচ্ছে এবং বাস্তবায়ন করছে, যেগুলো কোনোটিই গ্রামমুখী নয়। দেশের প্রায় সব অবকাঠামোগত প্রকল্পই গ্রামবিমুখ।

আর এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশাল যোগান দিয়েও গ্রামীণ মানুষ দারিদ্রতার শিকার হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, চলমান লকডাউন পরিস্থিতিতে দেশের খাদ্য সরবরাহ চেইন বাধাগ্রস্থ হয়েছে। এতে করে দেশের খাদ্যনিরাপত্তায় বিশাল ঝুঁকি তৈরী হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা যায় তাহলে এই খাদ্যঝুঁকি কাটানো সম্ভব। কারণ গ্রামীণ অর্থনীতির অধিকাংশ খাদ্য উৎপাদনভিত্তিক। গ্রামীণ অর্থনীতির সাথেই মৎস্য উৎপাদন, পোল্ট্রি শিল্প, শাক-সবজি-ফলমুল উৎপাদন ইত্যাদি জড়িত। গ্রামীণ ২ কোটি চাষীরাই দেশের খাদ্যচাহিদার সিংহভাগের যোগান দিয়ে থাকেন, গ্রামীণ ৬০ লাখ জেলে দেশের আমিষের চাহিদার সিংহভাগ পুরন করেন, এছাড়া পোল্ট্রি কিংবা ডেইরি শিল্পের অধিকাংশই গ্রামে গড়ে উঠেছে। সেইসাথে ঢাকা শহরে ৯ লাখ রিক্সাচালক, ৪৫ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক এবং বিভিন্ন পেশার লোক রয়েছে। যারা সবাই গ্রাম থেকে আসা এবং তাদের আয়ের ৩ ভাগের ২ ভাগই যাচ্ছে গ্রামে। এক্ষেত্রে সরকার যদি গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করে, প্রণোদনা দেয় তথা কৃষকদের জন্য, খামারীদের জন্য, জেলেদের জন্য বাজেট বরাদ্দ করে তাহলে লকডাউন পরিস্থিতিতে সৃষ্ট হওয়া দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

অন্যদিকে, সারাদেশের গ্রামপর্যায়ে প্রায় ২০ লাখ মসজিদণ্ডমাদ্রাসা রয়েছে। এই মসজিদ মাদ্রাসাগুলোর কারণে গ্রামীণ পর্যায়ে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শিক্ষা ছড়িয়ে যাচ্ছে। এতে করে গ্রামীণ মানুষ সুযোগ্য নৈতিকতার শিক্ষা লাভ করছে। পাশাপাশি এই মসজিদণ্ডমাদ্রাসাগুলো গ্রামীণ অর্থনীতির সাথে জড়িত। পাশাপাশি গ্রামপর্যায়ে প্রায় ১ লাখ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সরকার যদি এই গ্রামীণ শিক্ষাখাতেও বাজেট বরাদ্দ করে তাহলে যথাযথ শিক্ষা অর্জন করতে পারবে গ্রামীণ মানুষ। দেখা যাচ্ছে, নানা বহুমুখীতায় গ্রামীণ অর্থনীতি একটা বিশাল ফ্যাক্টর। কিন্তু সরকারের বাজেট বরাদ্দহীনতা, উন্নয়ন পরিকল্পনাহীনতা তথা উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে গ্রামীণ অর্থনীতি বিকশিত হচ্ছে না।

বলার অপেক্ষা রাখে না, সরকারের উচিত- দেশের অর্থনীতিকে একতরফা শহরমুখী না করে গ্রামীণমুখী করা। গ্রামগুলোকে দেশের অস্তিত্ব রক্ষার অপার শক্তি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। শুধু এই ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পই নয় পাশাপাশি দেশের উন্নয়নমূলকত প্রকল্পগুলোর সিংহভাগই গ্রামমুখী করা। এতে করে এই প্রকল্পগুলোর কারণে বর্তমানে যারা বেকার হয়ে পড়েছে তাদেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। খাদ্যঝুঁকি তো মিটবেই পাশাপাশি প্রতিবছর যেসকল খাদ্যপণ্যে আমদানিনির্ভরতা রয়েছে তাও বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

সঙ্গতকারণেই আমরা বলতে চাই, চলমান এই লকডাউন পরিস্থিতির কারণে উদ্ভূত সকল সঙ্কট নিরসনে গ্রামীণ অর্থনীতিই একটি বিশাল নিয়ামক। তাই সরকারের উচিত হবে গ্রামীণ অর্থনীতির গতি বাড়াতে, ব্যবসা ও শিল্পের বিকাশ আরো ত্বরান্বিত করতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করতে হবে। আর এগুলো করতে সরকার আরো ব্যাপক ও গভীর এবং ত্বরিৎ মনোযোগ দিবে।

মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।