তাফসীরুল কুরআন

সংখ্যা: ২৩১তম সংখ্যা | বিভাগ:

বদগুমান বা কু-ধারণা থেকে বেঁচে থাকা অপরিহার্য কর্তব্য

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

يايها الذين امنوا اجتنبوا كثيرا من الظن ان بعض الظن اثم

অর্থ : হে মু’মিনগণ! তোমরা অনেক ধারণা হতে বেঁচে থাক। নিশ্চয়ই কোন কোন ধারণা পাপজনক হয়ে থাকে। (পবিত্র সূরা হুজুরাত শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১২)

উদ্ধৃত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে অনেক ধারণা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে অর্থাৎ অনুমান করে ধারণা করা সম্মানিত শরীয়তসম্মত নয়। সেজন্যই বলা হয়েছে যে, কোন কোন ধারণা পাপ বা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত।

যেমন এ প্রসঙ্গে হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اياكم  و الظن فان الظن اكذب الحديث

অর্থ: তোমরা অনুমান করে ধারণা করা থেকে বেঁচে থাক। কেননা, অনুমান করে ধারণা করা মিথ্যা কথার নামান্তর।” (মুয়াত্তা শরীফ, আদাবুল মুফরাদ, আবু দাউদ শরীফ)

এখানে সকলের মতেই ধারণা বলতে প্রমাণ ব্যতিরেকে মুসলমানের প্রতি অনুমান করে ধারণা করাকে বোঝানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একটি ওয়াকিয়া বর্ণিত রয়েছে। তিনি সবসময় নিজেকে ছোট মনে করতেন। একদিন তিনি এক নদীর পাড় দিয়ে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় দেখলেন, এক কাফ্রী লোক সে একজন  মহিলাসহ বসে আছে এবং একটা রঙীন বোতল থেকে পানি পান করছে। হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মনে মনে ধারণা করলেন, এই যে কাফ্রী লোক, সে নিশ্চয়ই খারাপ হবে। একটা মহিলা নিয়ে সে বসে আছে এবং শরাব পান করছে। এটা তিনি মনে মনে ধারণা করছেন। হঠাৎ দেখা গেল সামনে নদীর মধ্যে একটা নৌকা আসছিল, তুফানের কারণে সেই নৌকার মধ্যে সাতজন লোক ছিল সকলেই নৌকা উল্টে গিয়ে নদীতে পড়ে গেল। সাথে সাথে সেই কাফ্রী লোকটি নদীতে ঝাপ দিয়ে সাতজন লোকের মধ্যে ছয়জনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসলো। উদ্ধার করে এনে সে খুব কাহিল হয়ে গেল এবং সে বললো, হে হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি তো মনে করেছেন আপনি আমার থেকে অনেক শ্রেষ্ঠ  ব্যক্তি; আমি ছয়জন লোককে তুলে নিয়ে আসলাম আর একটা লোক আছে, আপনি তাকে তুলে নিয়ে আসেন। হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, বাবা দেখ! আমার পক্ষে এ কাজ কোনদিনই সম্ভব নয়। তুমিই দয়া করে লোকটাকে তুলে নিয়ে আস। সে তুলে নিয়ে আসলো। এরপর সে বললো, হে হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি মনে করেছেন যে, আপনি এদিক দিয়ে আমার থেকে শ্রেষ্ঠ। আমি একজন মহিলা নিয়ে বসে আছি, রঙীন বোতল থেকে পানি পান করছি, শরাব পান করছি। প্রকৃতপক্ষে এসব ধারণা কোনটিই শুদ্ধ নয়। এ বৃদ্ধ মহিলা আমার মা, তিনি হাঁটতে পারেন না। কিছুদূর পর পর উনার বিশ্রাম নিতে হয়। উনার পিপাসা লাগে এবং পানি পান করতে হয়। এই যে রঙীন বোতলটা, এটা শরাবের বোতল নয়। এটার মধ্যে বিশুদ্ধ পানি। আমি উনাকে পানি পান করাই। কাজেই, আপনি যে ধারণা করেছেন আপনার ধারণা শুদ্ধ হয়নি। তখন হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, সত্যিই আমার ধারণা করাটা শুদ্ধ হয়নি। হে ব্যক্তি! তুমি যেমন পানি থেকে লোকদেরকে উদ্ধার করেছ তদ্রুপ আমাকেও আজ তুমি কুধারণা ও ফখরের বুরায়ী থেকে উদ্ধার করলে। সুবহানাল্লাহ!

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী