দুদকের বিরুদ্ধেও যখন দুর্নীতির অভিযোগ উঠে, তখন উপায় কী? ইসলামী আদর্শের প্রতিফলন ব্যতীত কখনোই দুর্নীতি দূর হবার নয়

সংখ্যা: ২৪৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

গত ২৩শে জুলাই-২০১৫ ইয়াওমুল খামীস (বৃহস্পতিবার) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট সংক্রান্ত দুই মামলার শুনানি শেষে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ৩ আগস্ট-২০১৫ নির্ধারিত হয়েছিল।

ওই দিন প্রায় দেড় ঘণ্টা মামলার বাদী, দুদকের জনৈক উপ-পরিচালককে জেরার এক পর্যায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদার আইনজীবী বলে যে, “সরকারি ক্ষমতার প্রভাবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা ১৫টি দুর্নীতি মামলা বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এ মামলাগুলো বাতিলের বিরুদ্ধে দুদক উচ্চ আদালতে আপিলও করেনি। অপরদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে দুদক তা করেনি। খালেদার আইনজীবী জেরায় উল্লেখ করে- বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাকালে মিগ-২৯ জঙ্গিবিমান ক্রয় করা হয়। এই কেসে দেশের সাত বিলিয়ন টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে খরচ করার অভিযোগ করা হয়।

নতুন ফ্রিগেট ক্রয়ের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরাতন ফ্রিগেট ক্রয় করেন। এজন্য দেশের চার দশমিক ৪৭ বিলিয়ন টাকা ক্ষতি হয়েছে।”

এক্ষেত্রে দুদক যখন যে ক্ষমতায় থাকে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী মামলা করে এবং ইচ্ছা অনুযায়ী মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়।”

জেরার এক পর্যায়ে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আপত্তি জানালে  খালেদার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতকে বলে যে, আমি দেখাতে চাচ্ছি কিভাবে একজনকে ভিক্টিমাইজ করা হয়।

দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতি দমন করবে যে দুদক, সে দুদকও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়।

পাশাপাশি লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, দুদকের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার তালিকায় প্রভাবশালী আমলা ও রাজনীতিবিদের সংখ্যাই বেশি।

পর্যবেক্ষক মহল মনে করে যে, দুর্নীতিবিরোধী রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠান জন্মলগ্ন থেকেই আমলাদের করায়ত্তে। নানাভাবে এটিকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। যখনই সক্রিয় হয়, তখন থেকেই এটি পরিণত হয়েছে সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ারে। আইনত স্বাধীন হলেও কার্যক্রমে সরকার ও দুদক ছিল একাট্টা। অতি সম্প্রতি দুদক পরিণত হয় দায়মুক্তি কমিশন-এ। পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলার সব আসামিকে অব্যাহতি, হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে সরকার-ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা, প্রভাবশালী মন্ত্রী-নেতা-আমলাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিত হয়েছে।

অপরদিকে আদালত ও দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মামলা পরিচালনার জন্য দুদককে এখনো সরকারি প্রসিকিউশন ও এটর্নি জেনারেলের দফতরের মুখাপেক্ষী থাকার কারণে তারা বিচার প্রক্রিয়ায় সুবিধা ও ভালো ফল ঘরে তুলতে পারছে না। দুদকের মামলায় এখনো লেখা হচ্ছে ‘আসামি বনাম রাষ্ট্র’। যেখানে হওয়া উচিত ‘আসামি বনাম দুদক’। কারণ দুর্নীতি মামলার বিচারের দায়িত্ব রাষ্ট্রের নয়। দুদকের নিজস্ব প্রসিকিউশন ইউনিট নিরপেক্ষভাবে বিচার পরিচালনা করার কথা। কিন্তু দুদক আইনে সংশোধনী না আনার কারণে রাষ্ট্রের মুখাপেক্ষী থাকতে হচ্ছে দুদককে। সরকার প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার আগে ও পরে বলেছিল- দুদকের ক্ষমতা বাড়াবে। কিন্তু কার্যত দুদককে শক্তিশালী করা বা দুর্নীতির বিচারে রাষ্ট্রপক্ষের নজরদারি বৃদ্ধিসহ সার্বিক সহায়তা করার কোনো নজির নেই। বরং অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাই দুদকের মামলার বিচারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুদকের যে ক’জন প্যানেল আইনজীবী আছে তাদের মধ্যে অনেকেই স্রোতের সাথে গা ভাসিয়ে দিচ্ছে। কেউ কেউ আন্তরিক হলেও দুদক থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই বাস্তবতায় বর্তমান সরকারের আরো দুই বছর মেয়াদকালে দুদক আসলে কার্যকর কিছু করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

বলাবাহুল্য, প্রধানমন্ত্রী থেকে পিওন সবাই মানুষ। কেউ মানুষ তৈরিকারী মহান আল্লাহ পাক তিনি নন। সাধারণ মানুষরা মানুষের অন্তরের গতি-প্রকৃতি উপলব্ধি করতে পারে না। নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাই মানুষের তৈরি আইন কখনো মানুষ শৃঙ্খলিত করতে পারে না। এক মানুষের তৈরি আইনের ফাঁক-ফোকর অন্য মানুষ সহজেই ধরে ফেলতে পারে। আইনের প্যাঁচ গলিয়ে অথবা প্রভাব তৈরি করে সহজেই পার পেয়ে যেতে পারে। জাল কাগজপত্র দিয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন অথবা অনেক বিচারকের দুর্নীতিই এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত উদাহরণ নয়। বরং কোন্টি উদাহরণ নয়- সে প্রশ্নও এখানে সঙ্গত।

অপরদিকে মানুষের কথা মানুষের অন্তরে প্রভাব বিস্তার করতে পারে অতি-অল্প সময়ই। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত এবং অনিবার্য বিষয় হলো- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ওহী মুবারক। মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ। অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ।

যে কারণে দেখা যায়, যত গুনাহগার বা সাধারণ লোকই হোক না কেন সেও যখন রোযা রাখে, তখন প্রচ- গরমের দিনেও পুকুরে ডুব দিয়ে অথবা একাকী বাড়িতে থেকেও সে পানি পান করে না অথবা খাদ্য খায় না। এখানেই ওহীক বোধের সার্থকতা এবং অনবদ্যতা। তার বিপরীতে কোনো সাধারণ মানুষের জন্য মানুষকে হিদায়েত করার যোগ্যতা নেই। কারণ সাধারণ মানুষ নিজেই নিজের অজান্তে অনিয়ম করে থাকে। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা ওই কথা বল কেন- যা তোমরা নিজেরাই করো না।”

বলাবাহুল্য, আদেশ দেয়ার ক্ষমতা মহান আল্লাহ পাক উনার, আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনাদের মনোনীত প্রতিনিধি উলীল আমর তথা মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং যাঁরা উলীল আমর উনাদের হুকুম পালন করো।”

মূলত, এছাড়া যারা আদেশ দিবে, যারা মানুষের আইন প্রয়োগ করতে চাবে তারা যালিম, ফাসিক, কাফির। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যারা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ ব্যতীত আইন প্রয়োগ করে তারা যালিম, ফাসিক ও কাফির।”

বলাবাহুল্য, মহান আল্লাহ পাক উনার আইন প্রয়োগ না করলে শুধু যে যালিম, ফাসিক ও কাফির হবে তাই নয়; বরং প্রচলিত আইনের দ্বারা সমাজে কোনোদিনই শান্তি ও ইনসাফ আসবে না। সবচেয়ে বড় কথা- প্রচলিত আইনেরও শতভাগ প্রয়োগ বাস্তবে কেনোদিনই হবে না।

-আল্লামা মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬০

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৯

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৮

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৯ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

 মতিভ্রমদুষ্ট মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার হতে পারে; কিন্তু রাজাকার কখনও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না।  যেমনটি ইসলামের ইতিহাসে পরবর্তিতে অনেকেই ছাহাবী হয়েছেন।  অনেকে অনেক জিহাদও করেছেন। কিন্তু বদরী ছাহাবী তিনশ’ তের জনই।  ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর কেউ বদরী ছাহাবী হতে পারবে না। সে মর্যাদা পাবে না।  অপরদিকে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীরা স্বাধীনতার সুফল পেতে পারে না।  স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো স্থানে তারা সমাবেশের অনুমতি পেতে পারে না।  মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট কোন অনুষ্ঠান করা, ইসলামের     দৃষ্টিতে বড় ধরনের প্রতারণা, মিথ্যা ও মহা বেঈমানী ও চরম মুনাফিকী।  মুক্তিযোদ্ধার নামে কোনো অনুষ্ঠান করতে চাইলে জামাতীদের আগে প্রকাশ্যে     তওবা করতে হবে।  তার আগ পর্যন্ত রাজাকার জামাতীদের কোনো ধরনের সমাবেশ করার অনুমতি       দেয়া সরকারের উচিত নয়। মুক্তিযোদ্ধা কেনার হাটের অনুমতি দেয়া উচিত নয়।  মুক্তিযোদ্ধা কেনার প্রক্রিয়াও বরদাশত করা উচিত নয়। কারণ তা সংবিধানে     সম্মত নয় এবং ইসলাম সঙ্গত তো নয় আদৌ।