নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক-এ, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক প্রকাশে এবং উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনায় সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যেই সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, কারো পক্ষে এটা সম্ভব হয়নি আর হবেও না।” সুবহানাল্লাহ!

সংখ্যা: ২৬৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

 

তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّـــاۤ اَرْسَلْنٰكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا. لِّــتُؤْمِنُوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِه وَتُعَزِّرُوْهُ وَتُوَقِّرُوْهُ وَتُسَبِّحُوْهُ بُكْرَةً وَّاَصِيْلًا.

অর্থ: “(হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) নিশ্চয়ই আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি, সৃষ্টি মুবারক করেছি শাহিদ তথা সাক্ষ্যদাতা, উপস্থিত, হাযির-নাযির হিসেবে, সুসংবাদদানকারী এবং সতর্ককারীরূপে। যাতে করে তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রতি ঈমান আনতে পারো। তোমরা উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দাও, উনাকে তা’যীম-তাকরীম মুবারক করো এবং উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করো সকাল-সন্ধ্যা তথা অনন্তকালব্যাপী দায়িমীভাবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফাত্হ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮-৯)

এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ হাক্বীক্বী মিছদাক্ব ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ!

এখন উপরোক্ত বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ!।

সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ:

উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

اَوَّلُ مَنْ اَسْلَمَ وَاٰمَنَ فِـىْ خَلْقِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ لَـمْ يَتَقَدَّمْهَا رَجُلٌ وَّلَا امْرَاَةٌ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ الْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ

অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও  সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার পূর্বে কোন পুরুষ মহিলা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেনি এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেনি।” সুবহানাল্লাহ!

এই সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ رَبِيْعَةَ السَّعْدِىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ اَتَيْتُ حَضْرَتْ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ رَضِىَ اللهَ تَعَالـٰى عَنْهُ وَهُوَ فِـىْ مَسْجِدِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَمِعْتُه يَقُوْلُ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ الْكُبْرٰى بِنْتُ خُوَيْلِدٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ سَابِقَةُ نِسَاءِ الْعَالَمِيْنَ اِلَـى الْاِيْـمَانِ بِاللَّهِ وَبِـمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

অর্থ: “হযরত রাবী‘আহ সা’দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। আমি হযরত হুযায়ফাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট আসলাম। তখন তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করতেছিলেন। আমি উনাকে বলতে শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন সকলের অগ্রগামী। অথাৎ তিনি সকলের পূর্বে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৩/২০৩, আল ফাতহুল কাবীর ২/৮০ ইত্যাদি)

সেটাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো সুস্পষ্টভাবে ইরশাদ মুবারক করেছেন-

قَدْ اٰمَنَتْ بِـىْ اِذْ كَفَرَ بِـىَ النَّاسُ

অর্থ: “মানুষ যখন আমাকে অস্বীকার করেছে, ঈমান আনেনি, তখন তিনি সর্বপ্রথম আমার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ)

তিনি সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং কায়িনাতের মাঝে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম ও সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক:

উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন আরবের মধ্যে সবচেয়ে বড় সম্পদশালিনী। উনার মত সম্পদশালিনী আরবে আর কেউ ছিলো না। সমস্ত কুরাইশদের যত সম্পদ ছিলো উনার এককভাবে তার চেয়ে বেশি সম্পদ মুবারক ছিলো। সেই যামানায় উনার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্য ছিলো। কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, যেখানে আযীমুশ শান সম্মানিত ও পবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেখান থেকে সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য প্রতি সম্মানিত ক্বদম মুবারক-এ একটি করে সম্মানিত স্বর্ণের প্লেট মুবারক দেয়া হয়েছিলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বর্ণের প্লেট মুবারক-এ এক এক ক্বদম মুবারক রেখে সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

এখন যদি ১০০টা প্লেট ধরা হয়, আর প্রতিটি প্লেট যদি ৫ কেজি করে ধরা হয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে ৫০০ কেজি স্বর্ণ, যা বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ২২৫ কোটি টাকা। সুবহানাল্লাহ! এই ২২৫ কোটি টাকা আযীমুশ শান সম্মানিত ও পবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ উনার সময় শুধু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ক্বদম মুবারক উনার নীচে তিনি বিছিয়ে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার কতো সম্পদ মুবারক ছিলো এবং কতো বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

যেই সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ আযীমুশ শান সম্মানিত ও পবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো, উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি সেই সম্মানিত হুজরা শরীফ রেখে উনার ভাতিজা হাকীম ইবনে হিজাম উনার থেকে একটা বাড়ী কিনে সেখানে তিনি চলে আসেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে তারশরীফ মুবারক নিয়ে সম্মানিত অবস্থান করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করা পর্যন্ত সেই সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর পূর্বের যেই বাড়ী মুবারক ছিলো, সেইটা বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার আযীমুশ শান সম্মানিত ও পবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ উনার সময় উনাকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত বাড়ী মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম (হযরত আবুল আছ আলাইহিস সালাম) তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!

উনার মত সম্পদশালিনী আরবে কিন্তু আর কেউ ছিলো না। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার সেই সমস্ত সম্পদ মুবারকগুলো সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশের পূর্বে এবং পরে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বিলিয়ে দিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি সম্মানিত ধন-সম্পদ মুবারক দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতটুকু সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন, সেটা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়। মানুষ কখনও সেটা চিন্তা-ফিকির করে মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!

সেটাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-

وَوَاسَتْنِـىْ بـِمَالِـهَا اِذْ حَرَمَنِـىَ النَّاسُ

অর্থ: “মানুষ যখন আমার কোন সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়নি, তখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি উনার সমস্ত মাল-সম্পদ দিয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন এবং আমাকে সান্তনা মুবারক দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ)

সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হওয়ার পূর্বে নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক’-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। তখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি সেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে যেতেন। সুবহানাল্লাহ! ১৯৮৫ সালের কথা তখন এমনিতে স্বাভাবিকভাবে একজন সুস্থ-সবল ও যুবক লোকের জন্য হেরা গুহায় উঠতে প্রায় ২:৩০ থেকে ৩:০০ ঘন্টা সময় লাগতো এবং অনেক কষ্ট হতো। তাহলে ১৪০০ বৎসর আগে কি অবস্থা ছিলো? আর দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক তো তখন অনেক ছিলো, তখন তিনি এই অবস্থায় কিভাবে, কতোটুকু ত্যাগ ও কষ্ট সহ্য করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ খাবার মুবারক নিয়ে গেছেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা চিন্তা ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ! তিনি আরবের মধ্যে সবচেয়ে সম্পদশালিনী ছিলেন। ইচ্ছা করলে অসংখ্য খাদিম নিয়োগ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ সম্মানিত খাবার মুবারক পাঠিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। তিনি উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হওয়া সত্ত্বেও, দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার এতো অধিক সম্মানিত বয়স মুবারক হওয়া সত্ত্বেও, তিনি সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে সেই সুউচ্চ ‘সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ’ উঠে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে গেছেন এবং সেখানে গিয়ে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কতো সীমাহীন মুহব্বত মুবারক করেছেন এবং কতো বেমেছালভাবে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, তা সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! মূলত, তা কায়িনাতের বুকে এক নযীরবিহীন দৃষ্টান্ত মুবারক। কেউ এরূপভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়নি। তিনি ব্যতীত আর কারো পক্ষে এটা সম্ভবও হয়নি। সুবহানাল্লাহ! এক দিনের কথা উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে আসছিলেন, তখন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজে উনার জন্য সুসংবাদ মুবারক প্রেরণ করেন। যেটা সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ اَتٰى حَضْرَتْ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هٰذِه اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ الْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ قَدْ اَتَتْ مَعَهَا اِنَاءٌ فِيْهِ اِدَامٌ وَّطَعَامٌ فَاِذَا اَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنْ رَّبّـِهَا وَمِنِّـىْ وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِـى الْـجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ لَّا صَخَبَ فِيْهِ وَلَا نَصَبَ .

অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই যে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি একটি পাত্র মুবারক নিয়ে আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিচ্ছেন। এই সম্মানিত পাত্র মুবারক-এ তরকারি মুবারক এবং খাদ্য মুবারক রয়েছেন। তিনি যখন আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিবেন, তখন আপনি উনাকে উনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এবং আমার অর্থাৎ আমি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার পক্ষ থেকে সালাম জানাবেন। আর উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে মুক্তাখচিত এমন একটি সম্মানিত প্রাসাদ তথা সম্মানিত বালাখানা মুবারক সম্পর্কে সুসংবাদ মুবারক প্রদান করবেন, যেখানে কোনো শোরগোল নেই, কোনো ক্লান্তি তথা কষ্ট-ক্লেশ নেই।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)

তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি কত বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন যে, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ খুশি হয়ে স্বয়ং যিনি খ্বাালিক্ব রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজে উনাকে সম্মানিত সালাম মুবারক জানিয়েছেন এবং উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

শি‘আবে আবী ত্বালিবের কথা। যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে তাশরীফ মুবারক নেন, তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৬১ বছর। শি‘আবে আবী ত্বালিবে কাফির-মুশরিকরা খাবার পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করে। তাদের বাধার কারণে সেখানে সাধারণত খাবার পৌঁছতো না বিধায় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এরূপ অবস্থা হয়েছিলো যে, উনারা খাদ্য হিসেবে গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল পর্যন্ত খেয়েছিলেন। এমনকি উনারা চামড়ার না’লাঈন শরীফ (জুতা মুবারক) পানিতে সিদ্ধ করে চিবিয়েছেন। গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল খাবার হিসেবে গ্রহণ করার ফলে উনাদের ইস্তিঞ্জা মুবারক বকরীর লেদের মত হয়ে গিয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! ক্ষুধার্ত শিশু উনাদের কান্না মুবারক-এ আশে-পাশের লোকেরা রাতে ঘুমাতে পারতো না। এই কঠিন পরিস্থিতিতেও উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি শি‘আবে আবী ত্বালিবে ৩ বছর সম্মানিত অবস্থান মুবাকর করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি তখন কখনও কখনও সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক (অসুস্থতা মুবারক) প্রকাশ করতেন এবং কখনও কখনও সম্মানিত ছিহ্হাতী শান মুবারক (সুস্থতা মুবারক) প্রকাশ করতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি কিন্তু অনেক সম্পদশালিনী ছিলেন, তিনি ইচ্ছা করলে পারতেন, শি‘আবে আবী ত্বালিবে না যেয়ে সুখণ্ডশান্তিতে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার এতো অধিক বয়স মুবারক হওয়া সত্ত্বেও তিনি শি‘আবে আবী ত্বালিবে দীর্ঘ ৩ বছর সম্মানিত অবস্থান মুবারক করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কতটুকু সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করেছেন, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করেছেন, উনার কতটুকু সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নবী-রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে এবং হাবীবুল্লাহ হিসেবে সৃষ্টি মুবারক হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! দুনিয়াবী দৃষ্টিতে যখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৪০ বছর, তখন আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশ পায়। উনার উপর আনুষ্ঠানিভাবে সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়। মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি (সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক নিয়ে আসেন। সুবহানাল্লাহ! এখন এই বিষয়টা উম্মতকে বুঝানোর জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক থেকে সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ এসে বিষয়টা উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম উনার নিকট প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! এখন বিষয়টি অত্যন্ত কঠিন একটি বিষয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন আর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি একজন উম্মত। এখন বিষয়টা মানুষের জন্য বিশ্বাস করার বিষয় এবং ইস্তিক্বামত থাকার বিষয়। কিন্তু উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বিষয়টা শুনার পর কোন চিন্তিত হননি, বিচলিত হননি, কোন প্রকার ঘাবড়াননি। তিনি অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনাকে এই বলে সান্তনা মুবারক দিলেন যে, চিন্তার কোন কারণ নেই ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই বিষয়টা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আপনার উপর নাযিল করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! কারণ আপনার জন্য কোন দিন কোন খারাপী হবে না। আপনি তো সব সময় মানুষের উপকার করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! ইত্যাদি ইত্যাদি নিজ থেকে বলে উল্টো তিনি সান্তনা মুবারক দিলেন। সুবহানাল্লাহ! এবং তিনি বিষয়টি তাছদীক্ব করার জন্য উনার সম্মানিত চাচাতো ভাই হযরত ওরাক্বাহ ইবনে নাওফিল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু যিনি পূর্ববর্তী সম্মানিত আসমানী কিতাবের উপর অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন উনার কাছে যাওয়ার প্রস্তাব মুবারক দিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি বললেন, চলুন, আমরা সেখানে যাই। মূলত, এটা হচ্ছে উম্মতকে শিক্ষা দেয়ার জন্য। সুবহানাল্লাহ! উনারা সেখানে গেলেন। হযরত ওরাক্বাহ বিন নাওফিল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত যবান মুবারক-এ বিষয়টি শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, “যিনি আপনার নিকট এসেছেন তিনি হচ্ছেন হযরত জিবরাঈল আলাইহিস

সালাম এবং আপনি হচ্ছেন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! কাজেই এটা সম্মানিত ওহী মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক ঘটেছে। আপনার নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বিষয়টা তাছদীক্ব করলেন। তিনি কিন্তু বিচলিত হতে পারতেন, চিন্তিত হতে পারতেন, ভয় পেতে পারতেন, অনেক কিছু করতে পারতেন। কিন্তু তিনি উল্টা বিষয়গুলো এতো স্বাভাবিকভাবের সাথে, ইতমিনানের সাথে তিনি গ্রহণ করলেন এবং জবাব দিলেন, যেটা ঠিক যিনি খ্বাালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার যেন সরাসরি ক্বায়িম-মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! এটা অত্যন্ত সূক্ষ্ম বিষয়, ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ!

তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতো বেমেছালভাবে সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করেছেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করেছেন, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম-কায়িনাবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ بَيْنَا رَأْسُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـىْ حِجْرِىْ فِـىْ لَيْلَةٍ ضَاحِيَةٍ اِذْ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ يَكُوْنُ لِاَحَدٍ مِّنَ الْـحَسَنَاتِ عَدَدُ نُـجُوْمِ السَّمَاءِ قَالَ نَعَمْ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قُلْتُ فَاَيْنَ حَسَنَاتُ حَضْرَتْ اَبِـىْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ اِنَّـمَا جَمِيْعُ حَسَنَاتِ حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَحَسَنَةٍ وَّاحِدَةٍ مِّنْ حَسَنَاتِ حَضْرَتْ اَبِـىْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ.

অর্থ: “উম্মুল মু’মিনী আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক জ্যো¯œার রাতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার সম্মানিত কোল মুবারক-এ সম্মানিত মাথা মুবারক রেখে শুয়ে ছিলেন। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কারো কি আকাশের তারকার সমপরিমাণ নেকী মুবারক রয়েছে? তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যা, হযরত ফারুক্বে আ’যম হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার আকাশের তারকার সমপরিমাণ নেকি মুবারক রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! তখন আমি বললাম, তাহলে ছিদ্দীক্বে আকবর সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নেকী মুবারক উনার পরিমাণ কত? জবাবে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক হচ্ছে, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার একখানা সম্মানিত নেকী মুবারক উনার সমান।” সুবহানাল্লাহ! (রযীন শরীফ, জামিউল উছূল শরীফ লিইবনে আছীর, মিশকাত শরীফ)

আর তাহচ্ছে, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, ছিদ্দীক্বে আকবর সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার সময় সম্মানিত সাওর গুহায় তিন দিন, তিন রাত্রি নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে যেই নেকী মুবারক অর্জন করেছিলেন, সেই সম্মানিত নেকী মুবারক। সেই সম্মানিত খেদমত মুবারকখানা হচ্ছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক উনার সমান। সুবহানাল্লাহ!

এখন বলার বিষয় হচ্ছে যে, যদি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার সময় সম্মানিত সাওর গুহায় তিন দিন তিন রাত্রি নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিয়ে এতো বেমেছাল নেকী মুবারক অর্জন করেন যে, সেই সম্মানিত নেকী মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক উনার সমান হয়। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম তিনি যে, একাধারে ২৪ বছর ৪ মাস ২৫ দিন বেমেছালভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিলেন, যার কোন মেছাল নেই, পৃথিবীর ইতিহাসে কারো পক্ষে এরূপ বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সম্ভব হয়নি। তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নেকী মুবারক উনার পরিমাণ কতো সীমাহীন হবেন, সেটা জিন-ইনসানের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, তা কেউ ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে? কস্মিনকালেও নয়। সুবহানাল্লাহ! সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খ্বাালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত কিছুর অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা  আলাইহাস সালাম উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উপলব্ধি করার মাধ্যমে হাক্বীক্বী মুহব্বত-মা’রিফত, তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার তওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-আল্লামা মুহম্মদ ইবনে মারইয়াম

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং নিজেই সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেন

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুল ফারীক্বাইন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজেই নিজের বিলাদত শরীফ পালন করে খুশি প্রকাশ করেন

হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের খিলাফতকালে নাবিইয়ুর রহমাহ, নাজিইয়ুল্লাহ, নূরুম মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করেছেন এবং এ উপলক্ষে ব্যয় করার ফযীলতও বর্ণনা করেছেন

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেছেন

বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয হওয়ার প্রমাণ