নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীমকারীগণ দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কালেই শাফায়াত মুবারক লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ!

সংখ্যা: ২৫৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَـلِـىٍّ كَرَّمَ الله وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَرْبَعَةٌ اَنَا لَـهُمْ شَفِيْعٌ يَّوْمَ الْقِيَامَةِ الْـمُكْرِمُ لـِذُرِّيَـتِـىْ وَالْقَاضِىْ لَـهُمْ حَوَائِجَهُمْ وَالسَّاعِىْ لَـهُمْ فِـىْ اُمُوْرِهِمْ عِنْدَ اضْطِرَارِهِمْ اِلَيْهِ وَالْمُحِبُّ لَـهُمْ بِقَلْبِهٖ وَلِسَانِهٖ

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি ক্বিয়ামতের দিন চার শ্রেণীর লোকদের সুপারিশ করবো-

এক. যাঁরা আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মান করবে।

দুই. যাঁরা আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মালী তথা আর্থিকভাবে খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিবে।

তিন. যাঁরা আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে জান দিয়ে তথা দৈহিকভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিবে। এবং

চার. যাঁরা আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে অন্তরে মুহব্বত করবে এবং জবানে উনাদের ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করবে। সুবহানাল্লাহ! (জামিউল আহাদীছ ৪/২২৯, জামউল জাওয়ামি’, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৭/১১, দায়লামী শরীফ)

উক্ত চার শ্রেণীর লোককে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবীইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ করবেন। শুধু ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ করবেন তা নয়, বরং সবসময় ইহকাল পরকাল সবকালেই তিনি সুপারিশ করবেন। সুবহানাল্লাহ!

নি¤েœ উল্লিখিত চার শ্রেণীর মধ্যে যারা প্রথম শ্রেণী উনাদের সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।

মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবীইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

الْـمُكْرِمُ لـِذُرِّيَـتِـىْ

অর্থ: “যারা আমার বংশধর আওলাদ, সম্মানিত আহলু পাক আলাইহিমুস সালাম উনাদেকে সম্মান করবে, তা’যীম তাকরীম করবে তাদেরকে আমি শুপারিশ করবো। ক্বিয়ামতের দিন দায়িমীভাবে তথা সবসময়।” সুবহানাল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে একটা ঘটনা কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, পূর্ববর্তী যামানায় একজন প্রতাপশালী বাদশাহ ছিলো। সেই বাদশাহর অধিনে একজন পালোওয়ান বা কুস্তিগীর ছিলো। কুস্তিগীর সে অনেক উঁচু লম্বা অনেক শক্তির অধিকারী ছিলো। সেই বাদশাহ তার তরফ থেকে কুস্তির জন্য নানান দেশ থেকে যারা কুস্তিগীর তাদেরকে আহবান করা হতো, বাদশাহর কুস্তিগীরের সাথে কুস্তি করার জন্য। সেই বাদশাহর কুস্তিগীর কুস্তি করতে করতে পর্যায়ক্রমে সারা পৃথিবীতে যত কুস্তিগীর ছিলো তাদের সবাইকে পরাস্ত করে  ফেললো। এখন সে সবাইকে যখন পরাস্ত করে ফেললো তখন দ্বিতীয় কোন কুস্তিগীর ছিলো না যে বাদশাহর কুস্তিগীরকে পরাস্ত করবে। এমতাবস্তায় বাদশাহ খুশি হয়ে তার কুস্তিগীরের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ঘোষণা দিলো যে, বাদশাহর কুস্তিগীরের সাথে কেউ যদি কুস্তি করে বিজয়ী হতে পারে তাহলে তাকে এক লক্ষ দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) পুরুস্কার দেয়া হবে। সে সময় একলক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা অনেক টাকা। এখন ঘোষণা অনেক দিন চললো দেখা গেলো কোন কুস্তিগীর কুস্তি করতে আসলো না। যদিও কেউ কেউ কখনো কখনো এসেছিল  তারা সকলেই বাদশাহর কুস্তিগীর পালোওয়ানের  সাথে চোখের পলকে পরাস্ত হয়ে চলে গেছে। এখন বাদশাহ ইতমিনান হলো  যে তার কুস্তিগীর সারা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় কুস্তিগীর। বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর একজন ব্যক্তি আসলেন কুস্তি প্রতিযোগিতা করার জন্য। যখন সেই ব্যক্তি আসলেন সেই ব্যক্তির চেহারা দেখে মনে হচ্ছে না তিনি কখনো কুস্তি করেছেন। কুস্তিগীরেরা সাধারণভাবে যে প্রকার ছিরত ও ছূরত হয়ে থাকে তেমন কোন লক্ষণ উনার মধ্যে নেই। সেই ব্যক্তি এসে বাদশাহর দরবারে যোগাযোগ করলেন যে তিনি বাদশাহর পালোওয়ানের সাথে কুস্তি করতে চান। যারা এই কুস্তির দায়িত্বে ছিলো তারা উনাকে দেখে বললো, আপনি যে কুস্তি করবেন আপনার ছিরত-ছূরত  দেখে মনে হয়না যে আপনি একজন কুস্তিগীর?  আর বাদশাহর যে কুস্তিগীর সে তো অনেক উঁচু লম্বা শক্তিশালী, পৃথিবীর কোন কুস্তিগীরই তার সাথে পারেনি। আপনি কি চিন্তা ফিকির করে কুস্তি করতে এসেছেন? সে ব্যক্তি বললেন, যেহেতু বাদশাহ ঘোষণা দিয়েছেন বাদশাহর কুস্তিগীরকে পরাস্ত করতে পারলে তাকে এক লক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা দেয়া হবে তাই আমি এসেছি।

এখন পরাস্ত হওয়া আর কামিয়াবী হাছীল করা পরের কথা। যেহেতু কুস্তি করার জন্য সুযোগ দেয়া হয়েছে সেজন্য আমি কুস্তি করতে এসেছি, তখন তারা বললো, যে ঠিক আছে। তিনি কুস্তি করবেন ফয়সালা  হলো, তারিখ ঘোষণা করা হলো, স্থানও নির্র্দিষ্ট করা হলো। এখন বাদশাহর কুস্তিগীর সবাইকে পরাস্ত করে ফেলেছে অনেক দিন হলো আর কোন কুস্তিগীর আসছেনা, যারা এসেছিল তারা সকলেই পরাস্ত হয়ে চলে গেছে। এখন অনেক দিন পরে নতুন করে কুস্তি হবে সেজন্য হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ লোকজন জমা হয়ে গেলো। কুস্তির ময়দানে নতুন যে ব্যক্তি এসেছেন তিনি নামলেন অন্যদিকে বাদশাহর পালোওয়ানও নামলো। তখন দেখা গেলো বিষয়টা ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে। বাদশাহর পালোওয়ান তো অনেক উঁচু লম্বা শক্তিশালী মোটা স্বাস্থ্যবান কিন্তু যিনি দ্বিতীয় ব্যক্তি তিনি তদ্রুপ না। দেখে মনে হচ্ছে, যে তিনি কোন দিন কুস্তি করেননি। সকলে আশ্চর্য হলো যে তিনি কেনো এসেছেন কুস্তি করার জন্য। কুস্তি শুরু হওয়ার পূর্বে সেই বিদেশী যিনি এসেছেন কুস্তি করার জন্য, তিনি এসে বাদশার কুস্তিগীরের কানে কানে কিছু কথা বললেন। বাদশাহর পালোওয়ান সে ব্যক্তির কথাগুলো শুনে কিছুক্ষন চুপ হয়ে গেলো। তার যে নড়াচড়া, প্রদর্শনী ছিলো কুস্তি করার সময় তা যেনো থেমে গেলো। বাদশাহর পালোওয়ান চুপ হয়ে গেলো কিছুক্ষনের জন্য, থমকে গেলো। সকলেই একটু আশ্চার্য হলো যে, এ ব্যক্তি কি বললেন? বাদশাহর পালোওয়ান নড়াচড়া, প্রদর্শনী করতো এখন চুপ হয়ে গেলো ব্যাপারটা কি? চুপ থেকে তারপর বললো যে ঠিক আছে কুস্তি শুরু হোক। যখন কুস্তি শুরু হলো তখন, বিদেশী ব্যক্তি চোখের পলকে বাদশাহর পালোওয়ানকে মাটিতে শোয়ায়ে সিনার উপর উঠে বসলেন। সুবহানাল্লাহ! সকলেই তায়াজ্জুব হয়ে গেলো যে ব্যাপারটা কি? একবার, দুইবার, তিনবার। প্রতিবারেই দেখা যাচ্ছে যিনি বিদেশী লোক এসেছেন তিনি বাদশাহর এতো বড় পালোওয়ানকে এমনভাবে ধরে শোয়াচ্ছেন যেনো বাদশাহর পালোওয়ানের নড়ার কোন ক্ষমতা নেই, প্রতিবারই বাদশাহর পালোওয়ান নিচে পড়ে যাচ্ছে আর বিদেশী ব্যক্তি তিনি সিনার উপরে উঠে বসে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! একবার, দুইবার তিন বার যখন হয়ে গেলো, তখন ঘোষণা করা হলো বাদশাহর পালোওয়ান পরাজিত হয়েছে আর বিদেশী ব্যক্তি কামিয়াবী হাছিল করেছেন। সুবহানাল্লাহ! বাদশা তায়াজ্জুব হয়ে গেলো ব্যাপারটা কি? এমন এক ব্যক্তি উনাকে দেখে মনে হয়না যে তিনি কোন দিন কুস্তি করেছেন কিন্তু আজকে বাদশাহর পালোওয়ানের কি হলো আর এই ব্যক্তি আগেই বা কি বললেন? যা বলার কারণে বাদশাহর পালোওয়ানের প্রদর্শনী, সক্রিয়তা যেটা ছিলো তা যেন নিস্ক্রিয় হয়ে গেলো। ব্যাপারটা কি? যখন কুস্তি শেষ হয়ে গেলো তখনতো সেই বিদেশী ব্যক্তি তিনি একলক্ষ দিনার নিয়ে যাবেন যেহেতু বাদশাহ ওয়াদা দিয়েছে একলক্ষ দিনার দিতেই হবে। এখন একলক্ষ দিনার দিয়ে দেয়া হলো, সেই বিদেশী ব্যক্তি তিনি তা নিয়ে চলে গেলেন। সুবহানাল্লাহ!  এদিকে বাদশাহর পালোওয়ান বাদশাহকে বললো, সে আর জীবনে কোন দিন কুস্তি করবে না। যখন পালোওয়ান এ কথা বললো তখন বাদশাহর জানার বিষয় হলো কি ব্যাপার সে পরাস্ত হলো কি কারণে? এতো বড় শক্তিশালী সে তাকে কোন পালোওয়ানই পরাস্ত করতে পারেনি আর এই ব্যক্তি চোখের পলকে পরাস্ত করে দিলেন, কি কারণে? তখন সেই বাদশাহর পালোওয়ানের বক্তব্য হলো আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, এই ব্যক্তি কুস্তি শুরু হওয়ার পূর্বে আমার কানে কানে কিছু কথা বলেছিলেন। সকলেই বললেন, আমরা তা লক্ষ্য করেছি, আপনি নিশ্চুপ হয়ে গেলেন। পালোওয়ান বললো যে হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন ঐ ব্যক্তি তিনি আমার কানে কানে বলেছেন, তিনি অমুক স্থান থেকে এসেছেন। তিনি একজন আওলাদে রসূল। অর্থাৎ তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একজন সম্মানিত আওলাদ। সুবহানাল্লাহ! এখন তিনি যে এলাকায় থাকেন তিনি হচ্ছেন সেই এলাকার প্রধান, উনার আরো বংশধর রয়েছেন। তিনি বললেন,  উনাদের ব্যবসা বাণিজ্য ছিলো, অবস্থা ভালোই ছিলো। কিন্তু নানান কারণে উনারা আর্থিক অনটনে অনেক ঋণগ্রস্ত হয়ে গেছেন, হাজার হাজার স্বর্ণ মুদ্রা ঋণ হয়ে গেছে। এখন উনাদের মান ইজ্জত সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব উনার, কিন্তু এতো ঋণ গ্রস্ত হওয়ার কারণে মান-সম্মান রক্ষা করা কঠিন হয়ে গেছে। আর যাদের কাছ থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে তারা নানান চু চেরা ক্বীল ক্বাল করে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় সেই ব্যক্তি তিনি শুনতে পেলেন যে বাদশাহর পালোওয়ানের সাথে কুস্তিতে কেউ জয় লাভ করতে পারলে তাকে একলক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা দেয়া হবে। তিনি চিন্তা করলেন যে উনার যে ঋণ রয়েছে তা হাজার হাজার স্বর্ণ মুদ্রা। একলক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা যদি পাওয়া যায় তাহলে সমস্ত ঋণ পরিশোধ করে উনারা সম্মান ইজ্জতের সাথে অবস্থান করতে পারবেন। সুবহানাল্লাহ! সেই চিন্তা করে তিনি এসেছেন মল্ল যুদ্ধ করতে। সুবহানাল্লাহ! তিনি কোন দিন মল্ল যুদ্ধ করেননি। আর মল্লযুদ্ধের কি তর্জ-তরীক্বা সেটাও উনার শিখার প্রয়োজন হয়নি। তিনি কানে কানে বলেছেন হে বাদশাহর পালোওয়ান! তুমিতো আসলেই অনেক বড় পালোওয়ান। বাদশাহর পালোওয়ানের বয়সও কম কিন্তু যে ব্যক্তি এসেছেন উনার বয়স অনেক বেশি। প্রায় বৃদ্ধ বয়সের কাছাকাছি। এমন একজন লোক মল্ল যুদ্ধ করে বিজয়ী হওয়া কখনও সম্ভব নয়। এ ব্যক্তি বলেছেন, তুমি তো বড় পালোওয়ান। সত্যি, তোমার সাথে কেউ কুস্তি করে পারবে না এটাও সঠিক। আমি কোন কুস্তিগীর নই, তবে আমি হচ্ছি একজন আওলাদে রসূল তুমি হচ্ছো একজন বড় পালোওয়ান ও শক্তিশালী  যুবক। কিন্তু একদিন তোমার এই শক্তি সামর্থ থাকবে না, তুমি বৃদ্ধ হবে তখন তোমার নামধামও থাকবে না। একটি বিষয় থাকবে অনন্তকাল ধরে, তা হলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবীইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার আওলাদকে তা’যীম-তাকরীম করার প্রতিদান। সুবহানাল্লাহ! এখন তুমি কমপক্ষে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার আওলাদকে তা’যীম-তাকরীম করে কুস্তিতে আজ আমার কাছে পরাস্ত হয়ে যাও। তাহলে আমি একলক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা লাভ করবো। আমাদের এলাকায় আমরা যারা আওলাদে রসূল রয়েছি, আমাদের সকলের ইজ্জত সম্মান রক্ষা হবে এবং আমরা সকলেই তোমার জন্য দোয়া করবো। যিনি খালিক মালিক মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং যিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা তোমাকে ইহকাল পরকালে কামিয়াবী দান করবেন। সুবহানাল্লাহ! তখন পালোওয়ানের বক্তব্য হচ্ছে আমি এটা শুনে চুপ হয়ে গেলাম। এখন আমি কি করবো? এখন আমার এতো নাম ধাম, প্রভাব প্রতিপত্তি, বাদশাহর সম্মান সারা পৃথিবীতে আমাকে এক নামে চিনে যে আমি সবচেয়ে বড় পালোওয়ান। কিন্তু আসলে তো আমার এই শক্তি সামর্থ এবং আমার এই বয়স তো একসময় থাকবে না। এখন যদি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবীইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার আওলাদ হিসেবে যিনি পরিচয় দিচ্ছেন উনাকে যদি সম্মান করে আমি পরাস্ত হয়ে যাই, তাহলে আমার নাম ধাম অবশ্যই নষ্ট হবে, বাদশাহও এ ধরনের কাজে দুঃখিত হবে। কিন্তু আমার যে হাক্বীক্বী কামিয়াবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রেযামন্দী সন্তুষ্টি মুবারক, সে নিয়ামত মুবারক আমি লাভ করতে পারবো। সুবহানাল্লাহ! এ চিন্তা করে আমি সেচ্ছায় পরাস্ত হয়েছি। সুবহানাল্লাহ! যার জন্য আমার বক্তব্য, আমি জীবনে আর কখনও কুস্তি করবো না। আজকেই শেষ এবং এখান থেকে চলে যাবো। এখন বাদশাহর বক্তব্য হলো, কুস্তি করা বা না করা এটা পালোওয়ানের ইখতিয়ার। তবে আপনি যে পরাস্ত হলেন, উনি যে আসলেই আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার প্রমাণ কি? তখন বাদশাহর পালোওয়ান  বললেন, আমি তো সেটা বিশ্বাস করেছি। প্রমাণ চাওয়ার তো  কোন সুযোগ নেই। বাদশাহর পালোওয়ান সেই রাত্র সেখানে থাকলো। সেই রাত্রেই সে পালোওয়ান স্বপ্ন দেখতে লাগলো যে, ‘নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবীইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরিফ মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি এসে পালোওয়ানকে বলতেছেন হে পালোওয়ান! সে পালোওয়ানের নাম ছিলো জুনাইদ। তুমি আজকে যে কাজটা করেছো, তুমি তোমার দুনিয়াবী সমস্ত সম্মান ইজ্জত, তোমার বাদশাহর সম্মান ইজ্জত সব বিসর্জন দিয়েছো একমাত্র আমার সম্মানার্থে।  সুবহানাল্লাহ! সেই ব্যক্তি আসলেই আমার আওলাদ এবং তিনি ঋণগ্রস্ত। তিনি এবং উনার অধীনস্তগণ অত্যন্ত পেরেশানিতে ছিলেন। এখন তুমি যে পরাস্ত হয়ে একলক্ষ স্বর্ণ মুদ্রার ব্যবস্থা করে দিলে, সেজন্য আমি কিন্তু তোমার উপর সন্তুষ্ট হয়ে গেছি।

সুবহানাল্লাহ! তুমি তো পালোয়ানদের প্রধান ছিলে। আমি আজ থেকে তোমার লক্বব দিলাম ‘সাইয়্যিদুত ত্বয়িফা’। সুবহানাল্লাহ! আমি তোমাকে সমস্ত দরবেশ আউলিয়া কিরাম উনাদের প্রধান করে দিলাম। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবীইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পালোওয়ানকে রেযামন্দী সন্তুষ্টির বিষয়টি জানিয়ে দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলেন।’ সুবহানাল্লাহ!

পালোওয়ান ঘুম থেকে উঠে ইস্তিগফার তাওবা করে প্রতিজ্ঞা করলো জীবনে আর কখনও কুস্তি করবে না। বাদশাহকে বিষয়টা জানানো হলো যে, যিনি আওলাদে রসূল দাবী করেছেন, উনার দাবী সত্য। পালোওয়ান যে পরাস্ত হয়ে তার ইজ্জত সম্মান বিসর্জন দিয়েছেন একমাত্র নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবীইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে, উনার আওলাদ উনাদের সম্মান করার জন্যে। সুবহানাল্লাহ! তিনি যে মুবারক রেযামন্দি চেয়েছেন, তা তিনি লাভ করেছেন। সত্যিই পালোওয়ান পরবর্তী সময় রিয়াজত মাশাক্কাত করে খালিছ অলী আল্লাহ হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

সেটাই বলা হয়েছে, যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মান করবে উনাদেরকে তিনি সুপারিশ করবেন। শুধু ক্বিয়ামতের দিন নয়, দুনিয়াতেও তথা সবসময়ই করবেন। সুবহানাল্লাহ!

সর্বক্ষেত্রে দায়িমীভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে এবং আওলাদে রসূল উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীম করতে হবে। উনাদের সার্বিক খিদমতের আঞ্জাম দিতে হবে। উনাদেরকে সর্বাধিক মুহব্বত করতে হবে। তবেই হাক্বীক্বী মু’মিন হওয়া যাবে এব কামিয়াবী হাছিল করা সহজ ও সম্ভব হবে। মহান আল্লাহ পা তিনি সকলকে এ বিষয়ে তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।

-আল্লামা সাইয়্যিদ শাবীব আহমদ

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম