পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ ও হযরত আউলিয়ায় কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের ক্বওল শরীফ উনাদের আলোকে পবিত্র ছলাত বা দরূদ শরীফ পাঠ করার বেমেছাল ফযীলত

সংখ্যা: ২৬৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করার নির্দেশ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتَه يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ ۚ يَا اَيُّهَا الَّذِينَ امَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا

অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে পবিত্র ছলাত বা পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করেন। হে ঈমানদার বান্দাগণ! তোমরাও উনার শান মুবারক-এ পবিত্র ছলাত বা পবত্রি দুরূদ শরীফ পাঠ করো এবং সালামের মতো সালাম দাও অর্থাৎ পরিপূর্ণ আদবসহকারে উনার প্রতি পবিত্র সালাম পেশ করো।”

উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত

صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا

বাক্যখানা আমর বা আদেশসূচক। আর আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী আমর বা আদেশসূচক বাক্য দ্বারা ফরয-ওয়াজিব ছাবিত হয়। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি তা’যীম-তাকরীম ও মুহব্বতের সাথে পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করা প্রত্যেক ঈমানদার বান্দা-বান্দী উনাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র ছলাত বা দুরূদ শরীফ পাঠ করার ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عن حضرت كرم الله وجهه عليه السلام قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صلى على صلاة كتب الله له قيراطا والقيراط مثل احد

অর্থ: হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে কেউ আমার উপর একবার ‘পবিত্র দুরূদ শরীফ’ পাঠ করে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে এক ক্বীরাত ছওয়াব দিয়ে থাকেন। এক ক্বীরাত হচ্ছেন ওহুদ পাহাড়ের সমতুল্য।’ সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক শরীফ)

عن حضرت انس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صلى على فى يوم مائة مرة كتب الله له بها الف الف حسنة ومحا عنه الف الف سيئة وكتب له مائة صدقة مقبولة ومن صلى على ثم بلغتنى صلاته صليت عليه ونالته شفاعتى

অর্থ: হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যে কেউ প্রত্যহ আমার উপর ১০০ বার ‘পবিত্র দুরূদ শরীফ’ পাঠ করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার জন্য এক লক্ষ নেকি লিখে দেন। তার এক লক্ষ গুনাহকে মুছে দেন, তাকে একশত কবুল ছদক্বার ছওয়াব দেন। যে কেউ আমার উপর ‘দুরূদ শরীফ’ পাঠ করে, সেই ‘পবিত্র দুরূদ শরীফ’ আমার নিকট উপস্থাপিত হলে আমি তার জন্য রহমতের প্রার্থনা করি এবং সে আমার শাফায়াত লাভ করে থাকে।’ সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্তফা)

عن حضرت ابى مسعود انصارى رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صلى على صلاة لم يصل فيها على اهل بيتى لم تقبل منه

অর্থ: হযরত আবী মাসউদ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে কেউ নামায পড়ে কিন্তু সেই নামাযের মধ্যে আমার এবং আমার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ উনাদের উপর ‘পবিত্র দুরূদ শরীফ’ পাঠ করে না, তবে সেই নামায মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করেন না।’ সুবহানাল্লাহ! (দারুকুতনী শরীফ, বায়হাকী শরীফ)

عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صلى على فى كتاب لم تزل الملائكة يستغفرون له مادام اسمى فى ذالك الكتاب

অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘কোন ব্যক্তি কোনো কিতাব রচনাকালে তন্মধ্যে পবিত্র দরূদ শরীফসহ আমার নাম মুবারক লিপিবদ্ধ করে তবে যতদিন সেই কিতাবে আমার পবিত্র নাম মুবারক বর্তমান থাকবে ততদিন পর্যন্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবেন।’ সুবহানাল্লাহ! (তাবারানী শরীফ)

পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করার ফযীলত সম্পর্কে হযরত আউলিয়া কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের ক্বওল শরীফ

(১)

শাইখ আহমদ ইবনে ছাবিত আল মাগরিবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘কিতাবুত তাফাক্কুর ওয়াল ইতিবার’ নামক কিতাবে লিখেন, ‘আমি পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠের মাধ্যমে যে সকল উপকার লাভ করেছি তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- আমি একবার স্বপ্নে দেখলাম যে, একজন লোক চিৎকার করে বলছেন, ‘যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে দেখা করতে চায় সে আমার সঙ্গে আসুক।’ দেখলাম যে অনেক লোক এ কথা শুনে উনার দিকে দৌঁড়াতে আরম্ভ করলেন। উনাদের সকলের পোশাক সাদা রংয়ের ছিল। আমি উনাদের মধ্যে একজনকে বললাম ‘মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, আপনি আমাকে বলুন! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোথায় আছেন? তিনি আমাকে বললেন, ‘অমুক স্থানে।’ আমি তখন পবিত্র দুরূদ শরীফ উনার উসীলা দিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফে মুনাজাত করতে লাগলাম যেন তিনি আমাকে সবার আগে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  উনার নিকট পৌঁছে দেন। এমন সময় দেখলাম যে; বিজলীর মত এক বস্তু এসে আমাকে দ্রুত উনার নিকট পৌঁছে দিলো। সুবহানাল্লাহ! আমি দেখলাম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ক্বিবলা মুখী হয়ে বসে আছেন এবং উনার চেহারা মুবারক হতে নূর মুবারক বিচ্ছুরিত হচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! আমি তখন বললাম, আসসালামু আলাইকুম ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি বলেন, মারহাবাম বিকা। আমি তখন উনার কোল মুবারকে আমার মাথা রেখে গড়াগড়ি দিতে লাগলাম। অতঃপর বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাকে কিছু নছীহত মুবারক করুন যা দ্বারা আমি উপকৃত হতে পারি। তিনি বললেন, ‘আমার প্রতি বেশি বেশি পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করুন।’ আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনি জামিন হন যেন আমি মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী হতে পারি। তিনি বলেন, ‘আমি জামিন হয়েছি যে আপনার মৃত্যু ঈমানের সাথে হবে। সুবহানাল্লাহ! আমি আবার বললাম ‘ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জামিন হন যেন আমি মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী হতে পারি।’ তিনি বললেন, আপনার ঈমানের সাথে মৃত্যু হওয়ার আমি জামিন হলাম।’ সুবহানাল্লাহ! তৃতীয়বার ঐরূপ জিজ্ঞাসা করায় তিনি বললেন, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ ঈমানের সাথে মৃত্যু হওয়াই কামনা করে থাকেন। সেই জন্যই আমি আপনার ‘খাতিমা বিল খাইরের’ জন্য জামিন হলাম।’ সুবহানাল্লাহ!

(২)

ইমাম আবু আব্দুল্লাহ ইবনু নোমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার কিতাব ‘মিছবাহুয যালাম’ উনার মধ্যে লিখেন, ‘স্বপ্নে আলিম উনাদের এক বৃহৎ জামায়াতকে দেখলাম। উনাদের অবস্থা অতি উত্তম দেখতে পেলাম। উনাদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম, কিভাবে আপনারা এত উন্নত অবস্থা প্রাপ্ত হলেন? উনারা বললেন, অধিক হারে পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি এরূপ অবস্থা দান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

(৩)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল হিকাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘আমি হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন? তিনি বললেন, আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং উচ্চ মর্যাদা প্রদান করেছেন। আমি বললাম কিসের বদৌলতে আপনার এই মর্যাদা লাভ হলো? তিনি  বললেন, ‘কিতাবুর রিসালাহ’ উনার মধ্যে যে পবিত্র দুরূদ শরীফ লিখা আছে তা পাঠ করার উসীলায়।’ আমি বললাম তা কিরূপ? তিনি বললেন, সেই পবিত্র দুরূদ শরীফ এই: “ছল্লাল্লাহু তা’আলা আলা মুহাম্মাদিন আদাদা মা যাকারাহুয যাকিরূনা ওয়া আদাদা মা গাফালা আন যিকরিহিল গাফিলূন।” ভোর হলে ‘কিতাবুর রিসালাহ উনার মধ্যে দেখলাম, বাস্তবিকই ঐ পবিত্র দুরূদ শরীফ লিখিত আছে।’ সুবহানাল্লাহ!

(৪)

হযরত আবুল হুসাইন শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি  ওয়া সাল্লাম, হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কিতাবুর রিসালাহ উনার মধ্যে লিখেছেন, ‘ছল্লাল্লাহু তায়ালা আলা মুহাম্মাদিন কুল্লামা যাকারাহুয যাকিরূনা ওয়া গাফালা আন যিকরিহিল গাফিলূন। তার জন্য আপনার পক্ষ থেকে কি পুরস্কার রয়েছে? তিনি বললেন, তার পুরস্কার এই যে, তাকে কিয়ামত দিবসে হিসাব দেয়ার জন্য দাঁড়াতে হবে না। সুবহানাল্লাহ!

(৫)

হযরত রাশিদুল আক্তার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘মিশরে আবু সাইদুল খাইয়াত নামে আমাদের এক জাহিদ প্রতিবেশী ছিলেন। তিনি কারো সাথে মিশতেন না এবং কোন মজলিসেও উপস্থিত হতেন না, একমাত্র ইবনে রফিক্ব উনার মজলিস ব্যতীত। উনাকে জিজ্ঞাসা করায় তিনি বললেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখলাম। তিনি বললেন, ‘ইবনে রফিক্ব উনার মজলিসে যান। কারণ, তিনি অধিক পরিমানে উনার উপর পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করেন। সুবহানাল্লাহ!

(৬)

হযরত আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে মানছুর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইন্তেকাল হলে একজন সিরাজবাসী উনাকে স্বপ্নে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করায় তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং সম্মানের সাথে বেহেশতে স্থান দিয়েছেন।’ সুবহানাল্লাহ!  তাতে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কিসের বদৌলতে?’ তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর অত্যাধিক পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করার কারণে।’ সুবহানাল্লাহ!

(৭)

একজন ছুফী ব্যক্তি হযরত মিসতাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা আপনার সহিত কিরূপ ব্যবহার করলেন? তিনি বললেন, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ক্ষমা করেছেন। আবার জিজ্ঞাসা করলেন, কি জন্য? তিনি বললেন, আমার সম্মানিত উস্তাদ উনার নিকট পবিত্র হাদীছ শরীফ পড়ার সময় যখন তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করতেন, তখন আমিও উনার সাথে উচ্চঃস্বরে পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করতাম। আমার সাথে পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ শুনে মজলিসের সকলেই পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করতেন। সেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ক্ষমা করে দেন। সুবহানাল্লাহ!

(৮)

হযরত আবূ হাফস ফাগদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একজন শ্রেষ্ঠ বুযুর্গ ছিলেন। উনার বিছাল শরীফের পর কেউ উনাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন? তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং বেহেশতে স্থান দান করেছেন।’ সুবহানাল্লাহ! উনাকে আবার জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কি কারণে ক্ষমা প্রাপ্ত হলেন? তিনি উত্তরে বললেন, ‘যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে উনার কাছে দাঁড় করান তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আমার আমল হিসাব করতে বললেন। হিসাব করে দেখা গেল যে, আমার পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ আমার গুনাহের চেয়ে অনেক বেশি। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে বললেন, ‘আর হিসাবের দরকার নেই। উনাকে বেহেশতে নিয়ে যাও।’ সুবহানাল্লাহ!

(৯)

একজন নেককার ব্যক্তি স্বপ্নে একটি কুৎসিত চেহারা দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি কে?’ সে বলল ‘আমি আপনার বদ আমল।’ তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কোন আমল দ্বারা তোমার  থেকে নিষ্কৃতি লাভ করা যাবে?’ সে বলল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর অধিক পরিমাণে পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ দ্বারা।’ সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই তো পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আমার উপর পঠিত পবিত্র দুরূদ শরীফ পুলছিরাতের উপর নূরে পরিণত হবে।’ সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ ও হযরত আউলিয়ায়ে ডিকরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের পবিত্র ক্বওল শরীফ উনাদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করার ফযীলত বেমছোল। অর্থাৎ যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অধিক মাত্রায় পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করবে তারা ইহকাল ও পরকালে বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, নৈকট্য ও রেযামন্দি হাছিল করবে। সুবহানাল্লাহ!

তাই প্রত্যেকের জন্যই ফরয হচ্ছে- যত বেশি সম্ভব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠে মশগুল থাকা। মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আমাদেরকে সেই তাওফীক দান করুন। আমীন।

-আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম