পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান উনার ফযীলত ও আমল স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে সালাফীদের কথিত মূল মুরুব্বী ইবনে তাইমিয়া, আলবানী, উসাইমিন- এরা সকলেই

সংখ্যা: ২৬১তম সংখ্যা | বিভাগ:

বর্তমান সালাফী-ওহাবীরা পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান আসলে বিরোধিতায় মেতে উঠে। অথচ তাদের পূর্বসূরি মুরুব্বীরা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র তাফসীর শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, হযরত সলফে ছালিহীন উনাদের আমলে ব্যাপকতার কারণে অস¦ীকার করার কোনো সাহসই পায়নি। তারা অকপটে সত্য স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। সালাফী লা’মাযহাবীদের মূল তিনজন মুরুব্বীর কিতাব থেকে পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ উনার দলীল পেশ করা হলো-

ওহাবীদের মূল মুরুব্বী ইবনে তাইমিয়া তার ‘মাজমুয়ায়ে ফতওয়া’ কিতাবে পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ বিষয়ে লিখেছে-

وَأَمَّا لَيْلَةُ النِّصْفِ فَقَدْ رُوِيَ فِي فَضْلِهَا أَحَادِيثُ وَآثَارٌ وَنُقِلَ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْ السَّلَفِ أَنَّهُمْ كَانُوا يُصَلُّونَ فِيهَا

অর্থ: “মূলত: লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ (পবিত্র শবে বরাত) উনার মর্যাদা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও আছার শরীফ দ্বারা সাব্যস্ত আছে। সলফে ছালিহীনগণ থেকে এ রাতে নামায আদায় অর্থাৎ ইবাদত-বন্দেগী করার কথাও বর্ণিত রয়েছে।” (দলীল: মজমুয়ায়ে ফতওয়া ২৩ তম খন্ড ১৩২ পৃষ্ঠা)

ইবনে তাইমিয়ার কিতাব থেকে যা বোঝা গেলো- ১) পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান উনার অনেক মর্যদা আছে। ২) পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। ৩) এ রাতে জাগ্রত থেকে নামায বা ইবাদত করার অনেক ফযীলত রয়েছে। ৪) হযরত সলফে ছালেহীন রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ এ রাতে ইবাদত-বন্দেগী করতেন।

সুতরাং যারা লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান অস্বীকারকারী তারা মূলত পবিত্র হাদীছ শরীফ ও হযরত সলফে ছালিহীন উনাদের পথতো বটেই নিজেদের মুরুব্বী ইবনে তাইমিয়ার পথ থেকেও খারিজ।

পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান অস্বীকারকারী লা’মাযহাবীদের অন্যতম মান্যবর হচ্ছে আলবানী। আলবানী তার একটা কিতাব “ছহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব” কিতাবের ৩য় খন্ড ৫৩ ও ৫৪ পৃষ্ঠায় পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ সম্পর্কে ৫খানা পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছে। উক্ত কিতাবের ২৭৬৭ নম্বর পবিত্র হাদীছ শরীফে হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কর্তৃক বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে “হাসান ছহীহ” বলেছে।

২৭৬৮ নম্বর পবিত্র হাদীছ শরীফ- হযরত আবু মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে “ছহীহ লি গাইরিহী” বলেছে। ২৭৬৯ নম্বর পবিত্র হাদীছ শরীফ- আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে “ছহীহ লি গাইরিহী” বলেছে, এবং মন্তব্য হিসাবে বলেছে “এই সনদে কোনো সমস্যা  নেই”। এরপর ২৭৭০ নম্বর পবিত্র হাদীছ শরীফ- হযরত কাছীর ইবনে মুররা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে “ছহীহ লি গাইরিহী” বলেছে। হযরত মাকহুল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণিত ২৭৭১ নম্বর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে “ছহীহ লি গাইরিহী” বলেছে। এখানেই শেষ নয়, আলবানী তার আরেকটি কিতাব, যা ছালাফীদের কাছে খুবই সামদৃত, যার নাম হচ্ছে- “সিলসিলাতু আহাদীছিছ ছহীহা”। উক্ত কিতাবে পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে ছহীহ বলে উল্লেখ করে লিখেছে-

حديث صحيح ، روي عن جماعة من الصحابة من طرق مختلفة يشد بعضها بعضا و هم معاذ ابن جبل رضى الله تعالى عنه و أبو ثعلبة الخشنى رضى الله تعالى عنه و عبد الله بن عمرو رضى الله تعالى عنه و أبي موسى الأشعرى رضى الله تعالى عنه و أبى هريرة رضى الله تعالى  عنه و أبى بكر الصديق عليه السلام و عوف ابن مالك رضى الله تعالى عنه و ام الـمؤمنين حضرت عائشة عليها السلام.

অর্থ: “পবিত্র হাদীছ শরীফখানা সহীহ। কেননা এক জামায়াত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের থেকে বিভিন্ন সূত্রে নিসফে শা’বান উনার মর্যাদা উপর একাধিক পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে। বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হওয়ার কারণে পবিত্র হাদীছ শরীফটি মজবুতী লাভ করেছে। যে সকল হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম থেকে হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে উনারা হলেন, হযরত মু’আয ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু সালাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আব্দল্লাহ বিন আ’মর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু মূসা আল আশ’আরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম, হযরত আউফ বিন মালেক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম।

এছাড়াও অনেক আকাবীর ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। (দলীল: সিলসিলাতু আহাদীসি আস ছহীহা ৩য় খন্ড ১৩৫ পৃষ্ঠা: হাদীছ শরীফ নং ১১৪৪)। দেখা গেলো সালাফীদের অন্যতম মুরুব্বী আলবানী সে পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ ছহীহ বলতে বাধ্য হয়েছে। তাহলে বর্তমান নব্য সালাফী লা’মাযহাবীরা বিরোধিতা করে কোন সাহসে?

সউদী আরবের মুফতী বোর্ডের সাবেক অন্যতম ফতওয়াদানকারী, সালাফীদের সমসাময়িক অন্যতম মুরুব্বী বিন সালেহ আল-উসাইমিন সে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান উনার পক্ষে ফতওয়া দিয়েছে, সে তার ফতওয়ার কিতাবে লিখেছে-

ومن هذا الباب ليلة النصف من شعبان روي في فضلها أحاديث ومن السلف من يخصها بالقيام ومن العلماء من السلف وغيرهم من أنكر فضلها وطعن في الأحاديث الواردة فيها، لكن الذي عليه كثير من أهل العلم أو أكثرهم على تفضيلها

অর্থ: মূলকথা সম্মানিত ১৫ই শা’বান শরীফ রাত অর্থাৎ পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ উনার ফযীলত উনার বিষয়ে অনেক হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। পূর্ববর্তীগণ এ রাতে সজাগ থাকার জন্য খাছ করতেন। পূর্ববর্তী অনেক উলামায়ে কিরাম তা দলীলের মাধ্যমে ছাবিত করেছেন। আবার কেউ কেউ তা অস্বীকার করেছে এবং এ সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ উনার বিষয়ে আপত্তি তুলেছে। তবে অধিকাংশ উলামায়ে কিরামগণই পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ উনার পক্ষে। (মজমুয়ায়ে ফতওয়া ওয়া রাসায়েল ইবনে উসাইমিন ৭ম খন্ড ২০৫ পৃষ্ঠা)

উপরোক্ত ফতওয়া থেকে যেটা বোঝা গেলো- ১) পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ উনার ব্যাপারে অনেক ছহীহ হাদীছ শরীফ আছে। ২) অধিকাংশ (সকল) উলামায়ে কিরাম পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ উনার ফযীলত স্বীকার করেছেন। যারা ফযীলত অস্বীকার করেছে তারা অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম উনাদের বিরোধিতা করেছে, সে কারণে যারা অস্বীকার করেছে তাদের ভিত্তিহীন দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।

সুতরাং যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ অস্বীকারের পাশাপাশি নিজেদের তথাকথিত মুরুব্বীদের ফতওয়াই মানছে না বুঝতে হবে এদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। তারা সমাজে বিভক্তি ও ফিতনা বিস্তার করার জন্য ইহুদীদের এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে।

– মুহম্মদ বদরুদ্দীন

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।