প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে সম্মানিত ইসলামী আদর্শ বিস্তারের বিকল্প নেই

সংখ্যা: ২৫২তম সংখ্যা | বিভাগ:

কী শহর, কী গ্রাম- চারদিকেই প্রতারণার ফাঁদ পাতা। একের পর এক প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। পদে পদে প্রতারিত হয়ে সর্বস¦ খোয়াচ্ছে সহজ সরল মানুষ। সমাজে চলতি পথে প্রতারণার এমনি জাল বিছানো যে, ঘরে বসেও রেহাই পাচ্ছে না কেউ। প্রতারণার নানা কৌশল নিয়ে একটি চক্র সর্বদা সজাগ। তাদের ফাঁদে পড়ে খোয়াতে হচ্ছে তিলে তিলে গড়া সঞ্চয়টুকুও। এই ভয়াবহ প্রতারণার শিকড়-বাকড় ব্যক্তি-পরিবার থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ও ক্রমে ছড়িয়ে পড়ছে।

ফুটপাত থেকে শুরু করে অফিস-আদালতের নানা পর্যায়েই চলে নিত্যনতুন প্রতারণা। ঘরে বসে ফেরিওয়ালাদের জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে ওজনে ঠকতে হয়, সাহায্যের নামে টাউট-বাটপারদের হাতে তুলে দিতে হয় নগদ টাকার চাঁদা। গন্তব্যে যেতে সিএনজি ও ট্যাক্সি ক্যাবের মিটার জালিয়াতির কবলে পড়ে ‘অতিরিক্ত ভাড়া’ পরিশোধের পরও গুনতে হয় ২০-২৫-৫০ টাকার বাড়তি বখশিশ।

রাস্তা, বাজার, কর্মস্থলসহ সর্বত্রই আরও কত রকমের ফাঁদ, মওকায় যে লোকজনের পকেট খালি হয় তার ইয়ত্তা নেই। জীবনযাত্রার সব ক্ষেত্রেই প্রতারণার অক্টোপাসে বান্দ হয়ে পড়ছে, পদে পদে ওঁৎ পেতে থাকছে নানামুখী বিপদ। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকমের অন্তত ২০০ প্রতারক সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের কাছে প্রতিদিন সহস্রাধিক লোক প্রতারণার শিকার হয়। ডিএমপিভুক্ত থানাগুলোর লিপিবদ্ধ মামলা-জিডি ও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতারণার খবরা-খবরের সূত্র ধরে এ পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে।

জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ‘প্রতারণাও’ ইদানীং ডিজিটাল রূপ পেতে শুরু করেছে। এখন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড যেমন জালিয়াতি করে অন্যের অ্যাকাউন্ট খালি করা হচ্ছে, তেমনি গলাকাটা পাসপোর্ট তৈরি, বিদেশী ভুয়া ওয়ার্কপারমিট ও নিয়োগপত্র প্রস্তুত করলেও সহজে তা জাল প্রমাণের উপায় থাকে না। জাল টাকার ছড়াছড়ি আছে বাজার জুড়ে। মোবাইলফোনে লাখ লাখ টাকা লটারি পাওয়ার প্রলোভনযুক্ত মেসেজ বানিয়েও প্রতারণা করা হচ্ছে অহরহ।

প্রসূতি মায়ের সন্তান প্রসব থেকে শুরু করে শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি, বিয়ে এমনকি মৃত্যুর পর লাশ দাফন পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই প্রতারণার একচ্ছত্র দাপট রয়েছে।

বিভিন্ন পয়েন্টে আলাদা আলাদা চক্র প্রতারণার জাল বিছিয়ে নানা কায়দায় মানুষ ঠকিয়ে নিজের গাট্টি গোছাচ্ছে। নগরীর ফুটপাতে নাক-কান-গলা রোগসহ দুরারোগ্য সব ব্যাধি থেকে মুক্তির সেøাগান নিয়ে ভুয়া চিকিৎসকরা বসছে নানা ওষুধের পসরা সাজিয়ে।

গুলিস্তান, নয়াপল্টন, মৌচাক, বাংলামোটর, ফার্মগেট এলাকায় আছে পাথরে ভাগ্য ফেরানোসহ জ্যোতিষীবিদ্যায় শনিরদশা কাটানোর হরেকরকম কসরত। গভীর রাতে জিনের বাদশাহ সেজে মোবাইলফোনে কল দিয়ে কথা বলা হয়, বলে দেয়া হয় অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ। মোটা অঙ্কের সেলামি দাবি করে বলে দেয়া হয় জিনের বাদশাহকে খুশি করলে আপনার বাড়িতেই মাটির নিচে থাকা গুপ্তধনের সন্ধান দেবে জিন বাবা।

চাহিদা মতো সেলামি আর গুপ্তধন উঠানোর খরচ হাতিয়ে নিয়েই নিরুদ্দেশ হয়ে যায় কথিত জিনের বাদশাহ। রোগবালাই নিরাময়ে যেকোনো হাসপাতালের উদ্দেশ্যে গেলেই দালাল চক্রের বেহাল উৎপাত চোখে পড়ে। অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোনো যানবাহন থেকে রোগী নামানো, রেজিস্টার খাতায় নিবন্ধন, কোন্ ডাক্তার রোগীর চিকিৎসা করবে- এ সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করে হাসপাতাল গেটের দালালরা। দালাল চক্রের উৎপাত আছে কোর্ট-কাচারি, বিআরটিএ অফিস, বাস টার্মিনাল, সাব রেজিস্ট্রি অফিস, যেকোনো থানার গেটে, পাসপোর্ট দফতরসহ নাগরিক সেবা প্রদানকারী প্রায় প্রতিটি পয়েন্টে। প্রতারণামূলক লটারির দৌরাত্ম্য ইদানীং কিছুটা কমলেও বেড়ে গেছে চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ফন্দিফিকির। রাস্তাঘাটের যেখানে সেখানে দেখা যায় পার্টটাইম চাকরির বিজ্ঞাপন।

এগুলো বেশির ভাগই প্রতারকদের পাতা ফাঁদ, পা দিলেই বিপদ। সংঘবদ্ধ একটি চক্র খাদ্য অধিদফতর, রেল বিভাগ, সেনাবাহিনী, ভূমি জরিপ অধিদফতরসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থায় চাকরি দেয়ার নামে একযোগে হাজার হাজার তরুণ-যুবককে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে।

ইমিগ্র্যান্ট ভিসা দেয়ার লোভ দেখিয়ে সর্বসান্ত করা হয়েছে অনেককে। বেকার যুবক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাও রয়েছে প্রতারিত হওয়ার তালিকায়। তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় ৪ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত, কানাডার ইমিগ্র্যান্ট ভিসা দেয়ার নামে অভিনব কায়দায় টাকা নেয়া হয়। পরে রাতের আঁধারে গুটিয়ে নিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যরা পালিয়ে যায়।

জমি কেনার পর দেখা যায় জমির ভুয়া মালিক সেজে যে বিক্রি করেছে সে শুধুই একজন নিয়োজিত দালাল মাত্র। জমির বায়নানামার স্ট্যাম্প থেকে দলিলপত্র পর্যন্ত সবই হয়েছে জাল। রোগ যেটাই হোক একগাদা অপ্রয়োজনীয় টেস্ট আর বেশি পরিমাণ ওষুধ ধরিয়ে দিচ্ছে ডাক্তার। বিপদে পড়ে অ্যাডভোকেটের কাছে গেলে কোর্ট চত্বরেই প্রতারক চক্রের কবলে পড়ছে অসংখ্য ভুক্তভোগী। তারা এমন সব ব্যবস্থা করে দেয়, তাতে বাদী-বিবাদী যারাই হোক, মাসের পর মাস আদালতে দৌড়াতে হয়- এমন অগণিত প্রতারণার নাগপাশে বন্দি গোটা দেশ। যেন পদে পদে ওঁৎ পেতে থাকে বিপদ।

১০-১২ বছর ধরে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসার নামে দেশজুড়ে রাতারাতি বড়লোক বনে যাওয়ার জন্য সীমাহীন ছোটাছুটি শুরু হয়। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপ পর্যায়ের এজেন্টরা আর তৃণমূল পর্যায়ের লাখ লাখ গ্রাহক কোটি কোটি টাকা হারিয়ে নিঃস¦ হয়ে পড়ছে।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি যে, শুধু আইনের বল প্রয়োগেই এ প্রতারণা প্রবণতা রোধ করা যাবে না। কারণ মানুষের তৈরি আইনের গোলকধাঁধায় মানুষ সহজেই পার পেয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অত্যাবশ্যকীয় হলো- মানুষের সৃষ্টিকর্তা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি অনুগত হওয়া ও উনার ভয় লালন করা এবং এ সম্পর্কিত মূল্যবোধ ও চেতনা জাগ্রত করা।

মূলত, আজকের যুগে ধর্মব্যবসায়ী তথা উলামায়ে ‘সূ’দের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব থাকায় এহেন ইসলামী চেতনা কারো মাঝে নেই বললেই চলে। বরং উলামায়ে ‘সূ’রাও যেভাবে অসততায় আর দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়েছে, তা দেখেই প্রতারণাকারী ও দুর্নীতিবাজরা আরো সাহসী ও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তার পরিণতিতেই সারা দেশব্যাপী এত প্রতারণা আর দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে।

-মুহম্মদ আশরাফুল মাহবূবে রব্বানী, ঢাকা

রৌশনীদের ক্ষোভ, দুঃখ, লজ্জা, ক্রোধের দায়ভার নেবে কে? প্রবাহমান সংস্কৃতি পঙ্কিলতার তোড়ে রৌশনীদের সব আকুতি যে নির্মমভাবে ভেসে যাচ্ছে।  সে দায়বদ্ধতা বর্তমান সমাজ আর কত অস্বীকার করতে পারবে? প্রযুক্তি যতটা আপগ্রেড হচ্ছে সে তুলনায় অপরাধ বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। কাজেই আদর্শের কাছে ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই। পর্দা পালনে বিকল্প নেই।  ইসলামী শিক্ষার বিকল্প নেই। এসব কথার প্রতিফলন না হলে খুন, ধর্ষণ আর পরকীয়ার ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে প্রতিটা পরিবার। সমাজ হবে সমাজচ্যুত।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৬

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৫

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৪

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৪ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল