বাংলাদেশের নদণ্ডনদীগুলোতে রয়েছে সমুদ্রের মতোই বিপুল খনিজ সম্পদ উন্নত গবেষণা, পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রযুক্তির মাধ্যমে এসব উত্তোলনে বছরে আয় হবে লাখো কোটি টাকা সমৃদ্ধ হবে দেশের সিরামিকস, কাঁচসহ খনিজনির্ভর শিল্পগুলো দুষ্প্রাপ্য ও বহুমূল্যবান এসব খনিজ সম্পদগুলো  কাজে লাগাতে সরকারকে গ্রহণ করতে হবে সমন্বিত পরিকল্পনা।

সংখ্যা: ২৮৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় সম্পদের আধার নিয়ে প্রায়সময়ই আলোচনায় হয়। সরকার সংশ্লিষ্টরা সমুদ্রসম্পদ নিয়ে সম্ভাবনাময় বক্তৃতা-বিবৃতি প্রদান করে। যদিও সেসব সম্পদ উত্তোলনে এখনও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জালের মতো ছড়িয়ে থাকা নদীগুলোও যে বিপুল পরিমাণ সম্পদ বহন করে চলেছে তা নিয়ে আলোচনা-অনুসন্ধান খুব কমই হয়ে থাকে।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নদীবক্ষের বালুতে বিপুল পরিমাণ মূল্যবান খনিজ পদার্থ রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশের বিজ্ঞানী-গবেষকরা। পদ্মা, মেঘনা, তিস্তা, ধরলা ও সোমেশ্বরী নদীর কিছু অঞ্চলে মূল্যবান ভারি ও হালকা খনিজের উপস্থিতি রয়েছে বলে তারা নিশ্চিত হয়েছে। এরই মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের (চিলমারী এলাকায়) বালুতে তিন থেকে পাঁচ শতাংশ মূল্যবান খনিজ পদার্থ আছে বলে নিশ্চিত করেছে ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারেলজি অ্যান্ড মেটালার্জি বিভাগ। আর তিস্তা নদীর বালুর নমুনাও পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেখানে ভালো পরিমাণ গার্নেটের উপস্থিতি মিলেছে। যার পরিমাণ ১২ থেকে ১৮ শতাংশ। জয়পুরহাটে মূল্যবান এসব দ্রব্য পৃথকীকরণে  ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারেলজি অ্যান্ড মেটালার্জি বিভাগ একটি প্ল্যান্টও স্থাপন করেছে।

জানা গেছে, এ উৎস থেকে খনিজ কণিকা সংগ্রহ করে ব্যবহার করা হলে কাচশিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। অন্য খনিজগুলোও পৃথক করে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হলে রং, সিরামিকস, ইলেকট্রনিক শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামালের আমদানি কমবে। দেশের নদীগুলোতে মূল্যবান খনিজ পদার্থের উপস্থিতি নির্ণয়ে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরের (জিএসবি) উদ্যোগে নদীবাহিত বালির ওপর অনুসন্ধান ও সমীক্ষা চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী এই সমীক্ষা চালানো হবে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের নদীবক্ষের বালিতে দুর্লভ, মূল্যবান এবং কৌশলগত মৌল ও খনিজের উপস্থিতি সম্পর্কে তথ্যভান্ডার গড়ে উঠবে। এতে একদিকে মূল্যবান খনিজসম্পদ আহরণ করা যাবে অন্যদিকে সাধারণ বালির দামে অতি মূল্যবান বালি বিক্রয় রোধ করা যাবে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে ২০১২-১৩ সালে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলা হতে সিরাজগঞ্জ জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত নদীবক্ষের বালিতে খনিজ পদার্থের উপস্থিতি বিষয়ে জরিপ চালানো হয়। তখনকার জরিপে আশা জাগানো ফল পাওয়া যায়। ওই সমীক্ষা জরিপের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। সেসময় কুড়িগ্রামের বিভিন্ন এলাকার নদীবক্ষের বালুর নমুনা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে প্রতিটন বালুতে ৪০০ গ্রাম রুটাইল, ৪০০ গ্রাম জিরকন ও আড়াই কেজি ইলমেনাইটসহ মূল্যবান খনিজসম্পদের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এসব ধাতু, সিরামিক শিল্প, গাড়ির পলিশিং, পেপার শিল্প, উড়োজাহাজের খুচরা যন্ত্রাংশে, হাঁটুর জয়েন্ট বলে, নকল দাঁত ও লোহার আকরিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

অন্যদিকে, প্রতি বছর প্রাকৃতিকভাবে কক্সবাজারের সমুদ্র তীরের বালুতে ২১ মিলিয়ন টন এবং ব্রহ্মপুত্র নদের বেসিনে ৫ মিলিয়ন টন মূল্যবান ভারী খনিজ কণিকা জমা হয়। নদী থেকে বছরে কমপক্ষে ২৫০ মিলিয়ন টন খনিজসমৃদ্ধ বালু সংগ্রহ করা সম্ভব। সংগ্রহযোগ্য খনিজ থেকে প্রাথমিকভাবে বছরে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। আর সুষ্ঠুভাবে উন্নত গবেষণায় যদি এগুলো উত্তোলন করা যায় তাহলে আয়ের পরিমাণ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের এসকল নদণ্ডনদীগুলোতে যে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে তা যদি সঠিকভাবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় উত্তোলন করা যেত-সংগ্রহ করা যেতো তাহলে বাংলাদেশ অথর্নীতিসহ সবদিক দিয়ে বিশ্বের সেরা ধনী দেশে পরিণত হতে পারতো। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, দেশের সরকার এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি অবহেলার উপর ছেড়ে দিয়েছে। নেই কোনো পরিসংখ্যান। বর্তমান যে জরিপটি প্রকাশিত হয়েছে তাও বিদেশি সংস্থার সহযোগীতায় করা হয়েছে।

বলাবাহুল্য, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলো- ‘সমুদ্রের এসব মূল্যবান খনিজ সম্পদ দ্রুত আহরণের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না করতে পারলে তা বেহাত হয়ে যাবে’। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এই শঙ্কা প্রকাশের সাথে একমত হয়ে বলতে চাই, সমুদ্রের মতো যদি নদীগুলোতে থাকা খনিজ সম্পদগুলোও এভাবে অবহেলায় ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে এসব সম্পদও বেহাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কুড়িগ্রামের নদীগুলোতে যে খনিজ সম্পদ রয়েছে তা নিয়ে ইতোমধ্যেই গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে ভারত। ভারতীয় গবেষকদের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে সীমান্তবর্তী নদীগুলোর খনিজ সম্পদে। বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি অনুসন্ধানী সংস্থাগুলো নিষ্ক্রিয় রয়েছে। আর এই সুযোগে বিভিন্ন লুটেরা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে এসে এইসব সম্পদের ব্যাপারে নানা জরিপ পরিচালনা করছে। যার মধ্যে বেশিরভাগ সম্পর্কেই সরকার বেখবর। ফলে এই সম্পদগুলো চুরি হয়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

বিশ্বের অনেক দেশ রয়েছে যারা তাদের নদণ্ডনদী- সাগর কিংবা সমুদ্রের এসব খনিজ সম্পদ সঠিক উপায়ে উত্তোলন করে সেটাই তাদের দেশের অর্থনীতির প্রধান পরিপূরক হিসেবে তৈরি করে নিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের এসব খনিজ সম্পদের তুলনায় তাদের তেমন কিছুই নেই। কিন্তু তারপরও তারা তাদের এসব সামুদ্রিক খনিজ নিয়ে সক্রিয় ও সচেতন।

সঙ্গতকারণেই আমরা বলতে চাই, জনস্বার্থে বাংলাদেশ সরকারের উচিত- দেশকে সর্বোচ্চ উন্নততর করতে এসব খনিজ সম্পদগুলো উত্তোলনের ব্যবস্থা করা। সম্পদ আহরণের জন্যে দেশের স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, পর্যটন, নৌ, মৎস্য, পরিবেশ, শিক্ষা, জ্বালানি, খনিজসম্পদসহ আরো অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকান্ডের সমন্বয় সাধন করা। খনিজ সম্পদের উত্তোলন ও আরো অনুসন্ধানের জন্য আলাদা সেল গঠন করা। খনিজ সম্পদের জরিপ, অনুসন্ধান, খনন ও আহরণের সুবিশাল কর্মকান্ডটি পরিচালনা করতে প্রশাসনিক জটিলতা থেকে মুক্ত রাখা।

সেইসাথে দরকার হবে মূল্যবান সম্পদরাজি শনাক্তকরণ ও উত্তোলনের জন্যে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি, কারিগরি সক্ষমতা এবং দক্ষ মানবসম্পদ। এক্ষেত্রে আমাদের অভাব মোচনের নিমিত্তে দেশের ভূ-তত্ত্ববিদ, ভূ-পদার্থবিদ, ভূ-রসায়নবিদ, ও যন্ত্র-প্রকৌশলীবৃন্দের জন্যে দরকার হবে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। এই ব্যাপারে বাংলাদেশের স্বার্থ ঠিক রেখে বিশ্বের অভিজ্ঞ দেশগুলোর প্রযুক্তি ও বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় দেশীয়দেরকে অভিজ্ঞ করে তুলতে হবে।

কার্যতঃ এই সম্পদই যে গোটা বাংলাদেশবাসীর ভাগ্য ঘুরিয়ে দিতে পারে তাও সহজেই অনুমেয়। এজন্য সম্পদ রক্ষা ও অনুসন্ধানে নিয়োজিত প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ও শিল্পোন্নত বিভিন্ন দেশ ও বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা দরকার দেশের স্বার্থ ঠিক রেখে। তাই এগুলোকে এখনই কাজে লাগানোর জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা ও বিশদ গবেষণা প্রয়োজন। যথার্থ গবেষণা, ডাটা সংগ্রহ, তথ্যানুসন্ধানসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ ও উদ্যমের পাশাপাশি প্রয়োজন ইসলামী মূল্যবোধে উজ্জীবিত অনুভূতি ও জজবা।

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান, ঢাকা।

রৌশনীদের ক্ষোভ, দুঃখ, লজ্জা, ক্রোধের দায়ভার নেবে কে? প্রবাহমান সংস্কৃতি পঙ্কিলতার তোড়ে রৌশনীদের সব আকুতি যে নির্মমভাবে ভেসে যাচ্ছে।  সে দায়বদ্ধতা বর্তমান সমাজ আর কত অস্বীকার করতে পারবে? প্রযুক্তি যতটা আপগ্রেড হচ্ছে সে তুলনায় অপরাধ বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। কাজেই আদর্শের কাছে ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই। পর্দা পালনে বিকল্প নেই।  ইসলামী শিক্ষার বিকল্প নেই। এসব কথার প্রতিফলন না হলে খুন, ধর্ষণ আর পরকীয়ার ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে প্রতিটা পরিবার। সমাজ হবে সমাজচ্যুত।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৬

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৫

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৪

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৪ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল