মাহে রবীউছ ছানী ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা

সংখ্যা: ২১৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ শুয়াইব আহমদ

  রবীউছ ছানীআরবী মাসের চতুর্থ মাসটি হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সাওয়ানেহে উমরী মুবারক বর্ণনা বা আলোচনা করার খাছ মাস। কারণ এ মাসটির ১১ই তারিখ পবিত্র সোমবার শরীফ দিনটিতে বিছাল শরীফ লাভ করেন যামানার লক্ষ্যস্থল ওলী, ষষ্ঠ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, গওছূল আযম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, আওলাদে রসূল হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি। সুবহানাল্লাহ!

আবার এ মাসের ১৯ তারিখ মুবারক দিনটিতে বিলাদত শরীফ লাভ করেন বর্তমান পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আযম, আওলাদে রসূল ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার লখতে জিগার, ছানী আওলাদ, সাইয়্যিদাহ, ছিদ্দীক্বাহ, আতীক্বাহ, হুমায়রা, ত্বাহিরাহ, তইয়িবাহ, জামীলাহ, হাজীবাহ, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল ওয়ারা, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

স্মরণীয় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র আহলিয়া, আহলে বাইত ও আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা একদিকে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মনোনীত আরেকদিকে যিনি যামানার মুজাদ্দিদ উনার যারা আহলিয়া, আহলে বাইত ও আওলাদ উনারাও মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মনোনীত। এ মনোনীত হওয়ার বিষয়টি চেষ্টা- কোশেশ, রিয়াযত-মাশক্কাত, প্রার্থনার দ্বারা হাছিলের বিষয় নয়। এটি এককভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ ফজল-করম, দয়া-দান, ইহসানের বিষয়।

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের এমন শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা, বুযুগী-সম্মান দান করেছেন যে, উনাদের প্রতি সদ্ব্যবহার, সদাচরণ করা, সুধারণা পোষণ করা, ছানা-ছিফত করা, তাযীম-তাকরীম ও খিদমত করা কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন-

قل لا اسئلكم عليه اجرا الا الـمودة فى القربى

অর্থ: হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মতদেরকে বলুন, আমি তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান বা বিনিময় চাই না। আর তোমরা তা দিতেও পারবে না। তবে তোমাদের নিজস্ব ফায়দা লাভের লক্ষ্যেই আমার যারা আপনজন অর্থাৎ আমার আহলে বাইত ও আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি তোমরা সদ্বাচরণ ও সদ্ব্যবহার করবে। (সূরা শূরা: আয়াত শরীফ ২৩)

হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,  হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো; কেননা তিনি তোমাদেরকে রিযিক দানের মাধ্যমে অনুগ্রহ করে থাকেন। আর তোমরা আমাকে মুহব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত পাওয়ার জন্য। আর আমার আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার মুহব্বত পাওয়ার জন্য।” (তিরমিযী, মিশকাত)

উল্লেখ্য, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হলেন হযরত আহলে বাইত ও আওলাদে রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতমা সদস্য ও মুক্ববূল ওলীআল্লাহ।

হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয়ই ছালিহীন বা নেককার বান্দা-বান্দী উনাদের আলোচনা করা রহমত বর্ষনের কারণ।সুবহানাল্লাহ!

অতএব, রহমত লাভের প্রত্যাশায় কায়িনাতবাসীর জন্য যারা হাক্বীক্বী ওলীআল্লাহ পুরুষ কিংবা মহিলা উনাদের আলোচনা করতে হবে এবং সেই সাথে উনাদের গুণ-বৈশিষ্ট্য, আদর্শ অনুসরণ করে নিজেদেরকে সংশোধন করতে নিতে হবে।

বলাবাহুল্য, সাধারণত মহিলা ওলীআল্লাহ উনাদের আলোচনা খুব কমই হয়ে  থাকে, যদিও কার্যক্ষেত্রে উনাদের ভূমিকা সুদূর প্রসারী। কেননা মায়ের সঠিক সিদ্ধান্ত ও যথাযথ তত্ত্বাবধানের ফলেই সন্তান মর্যাদা বা কামিয়াবীর চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হতে পারে। মাতৃকোলই হলো শিশু বা সন্তানের প্রথম শিক্ষাগার এবং মায়ের হাতেই শিশুর শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের ভিত্তিমূল স্থাপিত হয়। এজন্য এটা একেবারে সত্য যে, মা যদি আল্লাহওয়ালী হন তাহলে সন্তান আল্লাহওয়ালা বা আল্লাহওয়ালী হওয়া অতি সহজ। শুধু তাই নয়, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও আল্লাহওয়ালা বা আল্লাহওয়ালী হওয়ার জন্য সহায়ক।

কাজেই, আমাদের উচিত আমাদের অধীনস্ত মহিলা- মা, বোন, আহলিয়া (স্ত্রী) ও মেয়েদেরকে যামানার লক্ষস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার লক্ষস্থল আওলাদে রসূল, যামানার মহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদ আযম ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পবিত্রা আহলিয়া, কায়িম-মক্বামে উম্মুল মুমিনীন, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার কিংবা উনার পবিত্রতমা শাহাযাদীদ্বয়- নাক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহাযাদী উলা ক্বিবলা আলাইহাস সালাম ও  নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাদের ছোহবত ইখতিয়ার করা।

মাহে রমাদ্বান শরীফ ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা

মাহে শাওওয়াল-যিলক্বদ ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা

মাহে যিলহজ্জ ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা

মাহে মুহররমুল হারাম ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা

মাহে রবীউল আউয়াল শরীফ ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা