মিয়ানমার থেকে জীবন বাঁচাতে আশ্রয়ের সন্ধানে বাংলাদেশে এসে এক শ্রেণীর পশ্বাধম লুটেরাদের নির্মম বাণিজ্যের শিকার, এমনকি আবার সম্ভ্রমহরণের শিকারও মজলুম রোহিঙ্গারা। নেপথ্যে স্থানীয় দালালচক্র, রাজনৈতিক নেতা; এমনকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। মিয়ানমারের মগদস্যুর নিপীড়নের পর বাংলাদেশে একই নির্যাতন বরদাশতযোগ্য নয়। সরকারকে সত্বর কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গুটিকতক কুচক্রীর জন্য বাংলাদেশের বদনাম কিছুতেই হতে দেয়া যায় না।

সংখ্যা: ২৬৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

চারদিকে ফায়ারিংয়ের শব্দ, গণহারে বসতবাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে বর্বর বার্মিজ মগ দস্যুরা। মুসলিম গণহত্যা পরিচালিত হচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে। এমন সঙ্কটময় মুহূর্তে অসহায় রোহিঙ্গা মুসলমানরা যখন দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে শুধুমাত্র জান বাঁচানোর তাগিদে আসছে; ঠিক সেইসময় এসব অসহায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে এদেশেও একটি চরম হীনচক্র মর্মন্তুদ অমানবিক বাণিজ্য শুরু করেছে। এই চক্রের হোতাদের মধ্যে আছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বনবিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন। আর এর ফলে উভয়সঙ্কটে পড়েছে নির্যাতিত হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিম নর-নারী ও শিশুরা।

চতুর্মুখী ধান্ধাবাজের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে অনেকে। যেখানে মানবতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার কথা; সেখানে নতুন করে ফাঁদ পেতেছে উঠতি বয়সী কিছু স্থানীয় দালাল। সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢোকার মুখেই অসহায় রোহিঙ্গাদের টাকা গুনতে হচ্ছে। বাংলাদেশে ঢোকার পর তাদের সঙ্গে থাকা গবাদি পশু ও মূল্যবান জিনিসপত্র ভয়ভীতি দেখিয়ে কমমূল্যে কিনে নেয়ার ঘটনাও ঘটছে। এছাড়া ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়ার নামে আবাসন ভাড়া হিসেবেও এই সিন্ডিকেট বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। একটু অন্ধকার হলেই সীমান্ত দিয়ে প্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের পড়তে হচ্ছে চরম বিপাকে। সারা বছরের উপার্জনটুকু যেন সীমানা পার হয়ে দিয়ে দিতে হচ্ছে তাদের। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, সেখানকার স্থানীয় একটি দালালচক্র মিয়ানমারের ২ লাখ কিয়াত (বর্মী টাকা) রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে নিয়ে মাত্র ৪ হাজার টাকা দিচ্ছে। অসহায়ত্বের কারণে বাধ্য হয়েই দালালদের হাতে লাখ টাকা তুলে দিয়ে হাজার টাকা নিতে হচ্ছে মজলুম রোহিঙ্গা মুসলমানদের।

এছাড়া রোহিঙ্গাদের নৌকায় পারাপার করিয়ে দেবার নামে নির্দয় বাণিজ্যও সংঘটিত হচ্ছে। পারাপারের দালালরা জনপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আদায় করছে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে। যারা টাকা দিতে পারছে না অথবা টাকার পরিমাণ কম তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হচ্ছে স্বর্ণলঙ্কার, টাকা, কাপড়-চোপড়সহ মূল্যবান সব কিছু। আবার পরিবারের দুই-একজন সদস্যকে বন্দি রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে দালালদের চাহিদামতো টাকা সংগ্রহ করে আনতে। শুধু তাই নই, দালালদের চাহিদামতো টাকা পরিশোধ করতে না পারায় রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার ডুবিয়ে দেয়ার মতো নিষ্ঠুরতা দেখিয়ে যাচ্ছে এই দালালরা। অন্যদিকে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের পাচার ও অপহরণের, এমনকি দলে দলে সম্ভ্রমহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ মজলুম রোহিঙ্গারা একদিকে মায়ানমারে বর্বর মগদস্যুর দ্বারা সম্ভ্রম হারাচ্ছে, অপরদিকে আবার বাংলাদেশী কিছু পশ্বাধমদের দ্বারাও আরেকবার সম্ভ্রম হারাচ্ছে। এ লজ্জা কোথায় রাখবে বাংলাদেশ?

এদিকে কিছু দালাল মিডিয়াও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এদেশবাসীকে উস্কিয়ে দিচ্ছে। এসব মিডিয়াগুলোতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে লিড নিউজ প্রকাশ করা হচ্ছে। যার উদ্দেশ্য হলো, বাংলাদেশের স্থানীয়দেরকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। সেইসাথে এসব মিডিয়া মিয়ানমারের ম্যাসাকারকে বিশেষায়িত করেছে ‘জাতিগত দাঙ্গা’ হিসেবে। ‘মুসলিম গণহত্যা’ হিসেবে চিত্রিত করতে তারা কুণ্ঠিত হয়েছে। যদিও মূল ব্যাপার হলো মুসলিম নিধন বা গণহত্যাই। রোহিঙ্গা আর রাখাইন (মগ) দুটি পৃথক জাতিগোষ্ঠী হলেও মূল বিষয় হলো ধর্মের ভিন্নতা। একারণেই রোহিঙ্গাদেরকে পাইকারি হারে হত্যা করার সময় সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও হত্যাকারী মগদের সাহায্য করেছে, করছে। বর্মী সরকার ও বিরোধীদলীয় কেউ কোনো উদ্যোগই নেয়নি। কারণ তারাও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। রাখাইনরা (মগদস্যু) যাতে আরো বেশি করে মুসলমান হত্যা করতে পারে সে ব্যবস্থা করেছে, করছে বর্মী সরকারি বাহিনী। অর্থাৎ রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিহত ও দেশছাড়া হওয়ার পথ করে দিয়েছে সবাই মিলে। কিন্তু এ সত্যটা বাংলাদেশের কিছু মিডিয়া উচ্চারণ করতেই চায়নি এবং চায় না।

এদিকে অনেক দেরিতে হলেও বাংলাদেশ সরকার তথা খোদ প্রধানমন্ত্রীর খানিকটা বোধোদয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছে, আরো ৭ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আরো বলেছে- ‘দরকার হলে খাবার ভাগ করে খাবো’।

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের জন্য ইতোমধ্যে মালয়েশিয়া ১২ টন, তুরস্ক ১ হাজার টন, সউদী আরব ১০০ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে। সউদী আরব বলেছে, তারা কমপক্ষে ৪ হাজার কোটি টাকার ত্রাণ পাঠাবে। সেইসাথে মরক্কো ১৪ টন ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে। তুরস্ক পরবর্তীতে আরো বেশি পরিমাণে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর কথা বলেছে। ১ লাখ আশ্রয়স্থল তৈরি করে দিবে বলেছে। এ পরিস্থিতিতে যদি বাংলাদেশ সরকার ওআইসি, ডিএইট, আরব লীগসহ বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম সংগঠনগুলোর সহযোগিতায় মুসলিম বিশ্বে রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টি এবং রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর বিষয়টি আলোড়িত করতে পারে, তাহলে মুসলিম বিশ্বে থেকে আরো বিপুল পরিমাণ ত্রাণ আনা সম্ভব। যা দিয়ে রোহিঙ্গাদের মানবেতর জীবনের নিরসন করে সুখী জীবনযাপন শুরু সম্ভব।

তবে গভীর লজ্জাজনক হলেও আমরা উচ্চারণ করতে বাধ্য হচ্ছি যে, এদেশে বন্যাসহ যেকোনো দুর্যোগেই ত্রাণ বেহিসেবে লুট হয়। গেল বন্যায়ও ত্রাণের চাল বাজারে পাওয়া গেছে। একারণে সবাই ত্রাণ বিতরণে সেনাবাহিনীকে চায়।

রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রেও আমরা দেখতে পাচ্ছি এদেশের কিছু পশ্বাধম ব্যক্তিরা ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গাদের শোষণ ও নির্যাতন শুরু করেছে। এক্ষেত্রে সরকারকে সার্বক্ষণিক সক্রিয় মনিটরিং করতে হবে। এদেশেও লুটেরাদের অভাব নেই। এরা যাতে বিধ্বস্ত রোহিঙ্গাদের শেষ সম্বল ও সম্ভ্রমটুকু শুষে নিতে না পারে, সে মানবিক দিকটি অন্তত রক্ষা করতে হবে।

পাশাপাশি সরকারের উচিত হবে- রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ত্বরিৎ কার্যক্রম গ্রহণ করা। কারণ বর্তমানে সীমান্ত সংলঘœ রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। সে কারণে ডায়রিয়াসহ নানাবিধ রোগের প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। এমনকি মহামারী আকার ধারণ করতে পারে। এক খবরে জানা গেছে, প্রায় কয়েকশো শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। মারাও গেছে অনেকে। তাই সরকারের উচিত হবে- রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা, পোশাক ও চিকিৎসা ক্যাম্প খোলার ব্যবস্থা করা। তবে যেসব নরপশু, দালাল রোহিঙ্গাদের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে, এমনকি সম্ভ্রমহরণ করছে; তাদেরকে সর্বাগ্রে আইনের আওতায় নিয়ে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এ বিষয়ে জনগণকেও বিশেষ সোচ্চার হতে হবে।

-আল্লামা মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।