মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি আদর্শ সৌর ক্যালেন্ডার অত্যন্ত জরুরী উম্মাহর এই ঘাটতি পুরণের উদ্দেশ্যেই আত-তাক্বউইমুশ শামসী তৈরি করা হয়েছে মুসলিম বিশ্বের উচিত- বিধর্মীদের অনুসরন বাদ দিয়ে আত-তাক্বউইমুশ শামসী অনুসরন-অনুকরন করা

সংখ্যা: ২৭০তম সংখ্যা | বিভাগ:

বিশ্বে সাধারণত ৪ ধরণের ক্যালেন্ডার ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ১. সূর্যভিত্তিক সৌর সন ২. চাঁদভিত্তিক চন্দ্র সন ৩. সূর্য ও চাঁদ মিলিয়ে লুনিসোলার সন ৪. নক্ষত্র অনুযায়ী নাক্ষত্রিক সন (যা এখন আর তেমন ব্যবহার হয়না)।

প্রায় ৪০ প্রকার ক্যালেন্ডার ব্যবহার হয়ে থাকে বিশ্বজুড়ে। যেমন- গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার, বাহাই ক্যালেন্ডার, ফসলী ক্যালেন্ডার, বৌদ্ধ ক্যালেন্ডার, বার্মিজ ক্যালেন্ডার, চাইনিজ ক্যালেন্ডার, হিব্রু ক্যালেন্ডার, ভারতীয় জাতীয় ক্যালেন্ডার, ইরানিয়ান ক্যালেন্ডার, জাপানিজ ক্যালেন্ডার, কোরিয়ান ক্যালেন্ডার ইত্যাদি।

পৃথিবীতে আজ যতগুলো ক্যালেন্ডার ব্যবহার হচ্ছে সবই মূলত ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক কাজের জন্যই। আর ধর্মীয় বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসনিক কাজেও ব্যবহার করছে। অনেকে মনে করে, গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার হয়তো বেশী নির্ভুল, তাই এটি আন্তর্জাতিক ভাবে ব্যবহার হয়ে আসছে এর ধর্মীয় কোন গুরুত্ব নেই। আসলে তা নয়। ইতিহাস ঘাটলেই দেখতে পাবেন জুলিয়ান ক্যালেন্ডার সংশোধনের মূলে রয়েছে ধর্মীয় কারণ।

জুলিয়ান ক্যালেন্ডার ধর্মীয় কারণে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে পরিবর্তিত হয় রোমান ক্যাথলিক চার্চ ৩২৫ ঈসায়ী সনে হিসেব করে ২১ মার্চ দিন-রাত সমান ঘোষণা দেয়। কিন্তু ১৫৮২ সালে এসে দেখে ২১ মার্চের পরিবর্তে ১১ মার্চ দিনরাত্রি সমান হয়ে যাচ্ছে। এতে তাদের ঈস্টার ডে পালন করতে সমস্যা দেখা গেলো। পূর্ণ চন্দ্রের পরের প্রথম রোববার হল খ্রিস্টানদের ইস্টার সানডে।

পশ্চিমাঞ্চলে সাধারণত ইস্টারের সময় ২২ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে পড়ে। অন্যদিকে, পূর্বাঞ্চলের খ্রীস্টানরা নির্ভর করে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের ওপর। এখানে সাধারণত ৪ এপ্রিল থেকে ৮ মে’র মধ্যে দিনটি পড়ে।

জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে গড়ে এক বছর সমান ধরা হত ৩৬৫.২৫ দিন কিন্তু বাস্তবে এক সৌর বছর সমান হল ৩৬৫.২৪২২ (৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড) দিন। ৩২৫ ঈসায়ী সনে রোমান ক্যাথলিক চার্চ ২১ মার্চ দিন-রাত সমান ঘোষণা দেয়ার পর থেকে প্রতি বছর ১১ মিনিট করে পার্থক্য হতে হতে ১৫৮২ সালে এই পার্থক্য এসে দাঁড়ায় প্রায় ১০ দিন। এই পার্থক্যের কারণে ২১ শে মার্চের পরে পূর্ণ জোছনা (ঋঁষষ গড়ড়হ) অনুযায়ী ঈস্টার ডে পালনের তারিখটি সরে আসতে থাকে সে কারণে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি এটি সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহন করে এবং ১৫৮২ সালের ৪ঠা অক্টোবরের পর ৫ ই অক্টোবর পরিবর্তিত হয়ে ঘোষিত হয় ১৫ অক্টোবর ১৫৮২ সাল। অর্থাৎ এই সংশোধনের মূল কারণটিই ছিল ধর্মীয়।

এটি ধর্মীয় কারণে পরিবর্তিত হয়েছিলো তার আরেকটি প্রমাণ হচ্ছে, ৩০০ বছর নন-ক্যাথলিক সম্প্রদায় এটি অনুসরণ করেনি। আর যুক্তরাজ্য প্রায় ১৭৪ বছর পর ১৭৫৬ সালে এটি অনুসরণ করে।

জাতিগত কারণেও অনেকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরন করেছে দেরীতে। যেমন- রাশিয়া ১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লবের পর ঈসায়ী ক্যালেন্ডার চালু করে আর গ্রীস চালু করে ১৯২৩ সালে এবং সবশেষে তুরস্ক চালু করে ১৯২৬ সালে।

আর পৃথিবীর অনেক দেশে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার চালু হয়েছে ইউরোপীয় উপনিবেশ থাকার কারণে।

যে সব দেশে ইউরোপীয় উপনিবেশ ছিলোনা সেসব দেশে আজো গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হচ্ছে না। যেমন- বর্তমানে ইরান, আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, নেপাল তাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার ব্যবহার করছে। উল্লেখ্য এদেশগুলো কখনো ইউরোপীয় উপনিবেশ মেনে নেয়নি।

আবার দেখা যাচ্ছে অনেক দেশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যবসা করার কারণে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মেনে নিলেও তাদের প্রশাসনিক, ধর্মীয় উৎসব ঠিক করার জন্য তাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার ব্যবহার করছে। তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, উত্তর কোরিয়া, জাপান নিজেদের মত করে একটা ক্যালেন্ডার ব্যবহার করছে। তাছাড়া ইসরাইল, চাইনিজরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যবসায়িক কারণে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মেনে নিলেও নিজ নিজ দেশের প্রশাসনিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কাজকর্ম পালনের লক্ষ্যে তাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে থাকে।

ভারত উপমহাদেশে বৃটিশরা প্রথম ১৭৫৭ সালের দিকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নিয়ে আসে। ভারতে ইউরোপীয় উপনিবেশ থাকার কারণে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করতে বাধ্য হয়েছে সত্য কিন্তু এখনো অনেক প্রদেশের প্রশাসনিক কাজ থেকে শুরু করে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কাজসমূহ তাদের স্ব স্ব ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পালিত হচ্ছে। এই দেশগুলো জাতিগত সত্ত্বা বজায় রাখার জন্যেও যার যার নিজস্ব ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে থাকে।

আবার শাসকদের স্মরণ করার জন্যও ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়েছে ও নামকরণ করা হয়েছে। যেমন- জুলিয়ান ক্যালেন্ডার হয়েছে জুলিস সিজারের নামে। পোপ গ্রেগরিকে মনে রাখার জন্য হয়েছে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। সম্রাট আকবরের সিংহাসনে বসার তারিখ স্মরণের জন্য চালু করা হয়েছিলো ফসলী সন। আবার পৃথিবীর প্রাচীনতম ক্যালেন্ডারের মধ্যে একটি হচ্ছে ইরানী ক্যালেন্ডার যা জালালী ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত। ইরানের সর্বশেষ রাজা রেজা শাহ পাহলভি ১৯৭৬ সালে বর্ষপঞ্জীর হিসাব পদ্ধতিতে সামান্য পরিবর্তন এনে এর প্রথম সালকে প্রায় ১২০০ বছর আগে নিয়ে হিসাব করার আদেশ জারী করেছিলো কারণ সেই সালটিকে ধরা হয় ইরানের শাসক সাইরাসের ক্ষমতায় আরোহণের বছর হিসেবে। তাহলে দেখা গেল শাসকদের স্মরণ করার জন্যেও বর্ষপঞ্জিকে শাসক শ্রেণী বিভিন্ন সময় পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছে।

তাহলে যিনি সকল সৃষ্টির মূল যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মনে রেখে যদি কোন ক্যালেন্ডার রচিত হয় তা অবশ্যই মুসলিম বিশ্বের মুসলমানগণ মেনে নেবেন এবং মেনে নেয়াই আবশ্যক।

আত তাকউইমুশ শামসী সনের বিশেষত্ব:

এই শামসী সন শুরু হয়েছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে বছর এবং যে মাসে আল্লাহ পাক উনার সাথে দীদারে মিলিত হন সেই বছর ও সেই মাসের পহেলা তারিখ থেকে। অর্থাৎ ১১ হিজরি সনের সাইয়্যিদুশ শুহূর পবিত্র রবীউল আউয়াল শরীফ মাসের পহেলা তারিখ থেকে। তাহলে এই শামসী সন অনুসরণের মধ্যে দিয়ে মুসলমানগণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্মরণ করবেন।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা কাফির মুশরিকদের অনুসরণ করোনা।” আর প্রত্যেক জাতি তার নিজস্ব স্বকীয়তা ধারণ করার চেষ্টা করা উচিত সেই হিসেবে মুসলিম জাতির পক্ষ থেকে এই শামসী সন রচনা করেছেন যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার লক্ষ্যস্থল ওলী আল্লাহ ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্মানিত শায়েখ উনার সুযোগ্য লখতে জিগার আহলে বাইতে রসূল হযরত খলিফাতুল উমাম আল মানসুর আলাইহিস সালাম। তাই বিশ্বের সকল দেশের বিশেষ করে মুসলিম দেশসমূহের সরকারদের উচিত এই শামসী ক্যালেন্ডারটির যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করা এবং এর প্রচলন করার ব্যবস্থা নেয়া।

– এ বি এম রুহুল হাসান।

খাতামুন নাবিইয়ীনা, খাতামুল মুরসালীনা, খতীবুল আম্বিয়ায়ি ওয়ালউমামি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলে বাইত উনাদের ফযীলত

খইরু খলক্বিল্লাহি, খাযিনু কামালিল্লাহি, খইরুল আলামীনা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শরীয়ত প্রণেতা

দারুল হিকমাতি, দারুস সালামি, দা’ওয়াতুন্ নাবিইয়ীনা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং অন্যান্য নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের আহল তথা পরিবার-পরিজনের মধ্যে কেউ যদি কাফির ও মুনাফিক হয়ে যায় তাহলে তাদেরকে আহলে নবী বা নবীর পরিবার ও সাইয়্যিদ বলা যাবে না

যুল খলক্বিল আযীমি, যুল ওয়াসীলাতি, যুল মাক্বামিল মাহমূদি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার যবান মুবারক হতে নিঃসৃত সর্বপ্রকার কথাই ওহীর অন্তর্ভুক্ত

রসূলু রব্বিল আলামীনা, রহমাতুল্লিল আলামীনা, রঊফুম বিলমু’মিনীনা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলাদের শ্রেষ্ঠ হক্ব সংরক্ষণকারী