সম্পাদকীয়

সংখ্যা: ২৯০তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সব সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ওয়েবসাইটে ‘ইকোনমিস্ট আউটলুক’ শিরোনামে পরিচালিত জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৩% অর্থনীতিবিদ মনে করে ২০২৩ সালে মন্দা হতে পারে। তাদের মধ্যে ৬৪% মন্দার আশঙ্কা এবং বাকি ৯% শক্তিশালী মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

ওয়াশিংটন থেকে গত সেপ্টেম্বর মাসেই বিশ্বব্যাংক তার ‘বিশ্বে কি মন্দা আসন্ন’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপের অর্থনীতি দ্রুত গতি হারাচ্ছে। ফলে আগামী বছরে সামান্য আঘাতেও মন্দা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদন আমেরিকা-কানাডাসহ বিশ্বের তাবত রাষ্ট্রের সরকার প্রধান ও অর্থনীতিবিদদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক খুব সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যদি দ্রুত শেষ না হয় তাহলে ২০২৩ সালে সারা পৃথিবীর খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন, বিশ্ব খাদ্য সংস্থাও বলেছে যে, বিশ্ব অর্থনীতি নিশ্চিতভাবে আগামীতে অর্থনৈতিক মন্দার দিকেই ধাবিত হচ্ছে।

এদিকে মিডিয়ার এসব প্রচারণার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারও একই কথা প্রচার করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছে, জাতিসংঘে গিয়ে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে। সংস্থাটির মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সবাই খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্ত যে ২০২৩ সালে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। অর্থনৈতিক মন্দা আরও ব্যাপক আকারে দেখা দিতে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখে সবাইকে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, এ প্রস্তুতি জাতিসংঘের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশসহ মুসলিম দেশগুলোর জন্য একই রকম হতে পারেনা। এমনকী বিশ্বমন্দা সম্পর্কে ধারণাও এক হতে পারেনা। জলীলুল কদর রসূল হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার এক উম্মত সেই মহাপ্লাবনকে চোখেই দেখেননি। কাজেই সত্যিকার মুসলমান ও মুসলিম দেশ কথিত বিশ্বমন্দা চোখেই দেখবেনা। অথবা দেখলেও হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার নৌকার মত নিরাপদ আশ্রয়ে ও আনন্দে থাকবে  এটাই স্বাভাবিক।

পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘আপনি বলুন, নিশ্চয় আমার রব তায়ালা যার জন্য চান রিযিক সম্প্রসারিত করে দেন এবং সংকুচিতও করে দেন কিন্তু অধিকাংশ, লোক তা জানে না।’ (সম্মানিত ও পবিত্র সুরা সাবা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)।

পৃথিবীতে বিচরণশীল সকল প্রাণীর রিযিকের দায়িত্ব মহান আল্লাহ পাক উনার উপর ন্যস্ত। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হুদ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)।

তিনিই (আল্লাহ পাক) আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তা দিয়ে আমি সব ধরনের উদ্ভিদ উৎপন্ন করি; তারপর তা থেকে সবুজ ফসল নির্গত করি, যা থেকে ঘন শস্যদানা উৎপাদন করি এবং খেজুর বৃক্ষের মাথি থেকে ঝুলন্ত কাঁদি বের করি আর আঙুরের বাগান সৃষ্টি করি এবং জয়তুন ও আনারও। এরা একে অন্যের সদৃশ ও বিসদৃশ। লক্ষ্য করো তার ফলের প্রতি, যখন তা ফলবান হয় এবং তার পরিপক্বতার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করো। ঈমানদারদের জন্য এগুলোয় অবশ্যই নিদর্শন আছে।  (সম্মানিত ও পবিত্র সুরা আনআম শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৯৯)।

প্রসঙ্গত, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী পোষ্টারসহ এযাবৎ প্রকাশিত সব পোষ্টারের শীর্ষে প্রচারিত হয়, ‘মহান আল্লাহ পাক সর্বশক্তিমান’। অর্থাৎ সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করেই বর্তমান সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েছে এবং নিচ্ছে।

সঙ্গতকারণেই ক্ষমতায় থাকার পর সরকারের যাবতীয় কাজে তথা কথিত বিশ্বমন্দা ব্যবস্থাপনায়, নির্দেশনায় একই দৃষ্টিভঙ্গী থাকা উচিত। মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম  হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দিকে রুজু হওয়া তথা ধাবিত ও সমর্পিত হওয়া বা সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়াদ শরীফ পালনে নিবেদিত হওয়াতেই সব শঙ্কা ও সমস্যার পরিপূর্ণ, অতীব সুন্দর সমাধান সম্ভব।

ছহিবে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়