সম্মানিত কারবালা শরীফ উনার নির্জন প্রান্তরে সাইয়্যিদুশ শুহাদা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার জন্য নিঃসন্দেহে ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সে-ই দায়ী

সংখ্যা: ২৬৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

৬১ হিজরী সনের ১০ মুহররমুল হারাম শরীফ তারিখে সাইয়্যিদুশ শুহাদা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত পরিবার মুবারকসহ সম্মানিত কারবালা শরীফ উনার নির্জন প্রান্তরে সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! মূলত, উনাদের এই শাহাদাত মুবারক উনার পিছনে নিঃসন্দেহে কাফির ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সে-ই দায়ী। সে নিজেই এই ঘটনার হোতা। তাই তার ব্যাপারে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে  ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

১নং পবিত্র ও সম্মানিত হাদীছ শরীফ

اَخْرَجَ اَحْمَدُ وَالْبَزَّارُ بِسَنَدٍ صَحِيْحٍ عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنْ رَّأْسِ السِّـتِّـيْنَ وَمِنْ اِمَارَةِ الصِّبْـيَـانِ.

অর্থ: “হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম বাযযার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা ছহীহ সনদ মুবারক-এ হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ৬০ হিজরী সনের পরের অবস্থা (৬১ হিজরীর) থেকে এবং তরুণদের শাসনকাল থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করুন।” (মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে বাযযার, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, খছাইছুল কুবরা ২/২৩৬ ইত্যাদি)

অন্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

২নং পবিত্র ও সম্মানিত হাদীছ শরীফ

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ عُبَيْدَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَزَالُ اَمْرُ اُمَّتِـىْ قَائِمًاۢ بِالْقِسْطِ حَتّٰى يَكُوْنَ اَوَّلُ مَنْ يَّثْلَمُه رَجُلٌ مِّنْۢ بَـنِـىْ اُمَيَّةَ يُقَالُ لَه يَزِيْدُ لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِ.

অর্থ: “হযরত আবূ উবাইদা ইবনে জাররাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার সম্মানিত উম্মত উনাদের শাসনব্যবস্থা তথা সম্মানিত খিলাফত মুবারক সত্য, ন্যায় ও ইনসাফ মুবারক উনার উপর অবিচল থাকবে। আর সর্বপ্রথম বনূ উমাইয়ার এক সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তি সেই সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক বিনষ্ট করে দিবে (তথা রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে)। তার নাম হচ্ছে, ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি।” (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১০/৮৯, খছাইছুল কুবরা ২/২৩৬, তারীখুল খুলাফা ১৬৬, আছ ছওয়াইকুল মুহরিক্বাহ ২/১২৩, জামিউল আহাদীছ ৯/২৪, দায়লামী শরীফ ৫/৯২, আবূ ইয়ালা, আবূ নাঈম, বাইহাক্বী, ইবনে আসাকির ইত্যাদি)

৩ নং পবিত্র ও সম্মানিত হাদীছ শরীফ

সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَزِيْدُ لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِ لَا بَارِكَ اللهُ فِـىْ يَزِيْدَ لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِ الطَّعَّانِ اللَّعَّانِ اَمَا اِنَّه نُعِـىَ اِلَـىَّ حَبِـيْــبِـىْ وَحِبِّـىْ حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ حُسَيْنٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ اُتِيْتُ بِتُرْبَتِه وَرَاَيْتُ قَاتِلَه اَمَا اِنَّه لَا يُقْتَلُ بَيْنَ ظَهْرَانَـىْ قَوْمٍ وَّلَا يَنْصُرُوْنَه اِلَّا عَمَّهُمُ اللهُ بِعِقَابٍ.

অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আয় বারে ইলাহী মহান আল্লাহ পাক! আপনি ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি এর উপর থেকে বরকত তুলে নিন, তার উপর আপনি লা’নত বর্ষণ করুন! তার উপর আপনি লা’নত বর্ষণ করুন! সে হচ্ছে আমার পূত-পবিত্র মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি সর্বনিকৃষ্ট আক্রমণকারী, আঘাতকারী এবং উনাদের ক্ষতি সাধন করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয়ী। নাঊযুবিল্লাহ! সাবধান! নিশ্চয়ই ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সেই সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তি যে, আমার পূত-পবিত্র মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে শহীদ করবে। নাঊযুবিল্লাহ! আমার নিকট আমার অতি প্রিয় হাবীব এবং মাহবূব হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সংবাদ মুবারক নিয়ে আসা হয়েছে এবং তিনি যেই জায়গায় সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন, সেই জায়গার মাটি মুবরক আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করা হয়েছে। আর উনাকে যে সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তি শহীদ করবে, আমি সেই সর্বনিকৃষ্ট মাল’ঊন, মারদূদ ব্যক্তিটিকে দেখিছি। সাবধান! তিনি নির্জন এলাকায় সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন এবং ওই সময় উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ কেউ এগিয়ে আসবে না। তবে উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে যারা জড়িত থাকবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে ব্যাপকভাবে শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ! (জামি’উল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ২৪/১২৬, জাম’উল জাওয়ামি’ লিস সুয়ূত্বী ১ম খ-, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১০/৮৯, ইবনে আসাকির  ইত্যাদি)

পবিত্র ও সম্মানিত হাদীছ শরীফসমূহ

উনাদের ব্যাখ্যা

১০ম হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ, হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ব্যখ্যায় বলেন-

فَكَتَبَ يَزِيْدُ لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِ اِلـٰى وَالِـيْهِ بِالْعِرَاقِ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ زِيَادٍ بِقِتَالِه.

অর্থ: “অতঃপর ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি তার ইরাকের গভর্ণর উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদের নিকট সাইয়্যিদুশ শুহাদা, শুহাদায়ে কারবালা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করার জন্য লিখিত ফরমান পাঠায়।” নাঊযুবিল্লাহ! (তারীখুল খুলাফা ১৬৫পৃ.)

তিনি ব্যাখ্যায় আরো বলেন-

وَ لَـمَّا قُتِلَ حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ الْـحُسَيْنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَبَنُوْ اَبِيْهِ بَعَثَ ابْنُ زِيَادٍ لَّعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِ بِرُؤُوْسِهِمْ اِلـٰى يَزِيْدَ لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِ فَسُرَّ بِقَتْلِهِمْ.

অর্থ: “যখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে শহীদ করার পর ইবনে যিয়াদ উনাদের সকলের সম্মানিত শির মুবারক ইয়াযীদের নিকট প্রেরণ করে, তখন ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে শহীদ করার কারণে খুশি প্রকাশ করে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! (তারীখুল খুলাফা ১৬৬ পৃ.)

ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি

সে সম্পর্কে তিনি আরো বলেন-

لَعَنَ اللهُ قَاتِلَه وَابْنَ زِيَادٍ مَّعَه وَيَزِيْدَ اَيْضًا.

অর্থ: “যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে শহীদ করেছে তার উপর এবং ইবনে যিয়াদ ও ইয়াযীদের উপর লা’নাত বর্ষণ করুন! আমীন! (তারীখুল খুলাফা ১৬৫পৃ.)

তিনি আরো বলেন-

وَقَالَ نَوْفَلُ بْنُ اَبِـى الْفُرَاتِ  كُنْتُ عِنْدَ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيْزِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فَذَكَرَ رَجُلٌ يَّزِيْدَ لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِ فَقَالَ قَالَ اَمِيْرُ الْـمُؤْمِنِيْنَ يَزِيْدُ بْنُ مُعَاوِيَةَ فَقَالَ تَقُوْلُ اَمِيْرُ الْـمُؤْمِنِيْنَ وَاَمَرَ بِه فَضُرِبَ عِشْرِيْنَ سَوْطًا.

অর্থ: “নওফেল ইবনে আবুল ফারাত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, একদা আমি খলীফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বসেছিলাম। তখন এক ব্যক্তি ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির আলোচনা করতে যেয়ে, তাকে ‘আমীরুল মু’মিনীন’ খেতাবে সম্বোধন করলে খলীফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত ব্যক্তিকে বললেন, এই সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তিকে ‘আমীরুল মু’মিনীন’ বলছো? এই কথা মুবারক বলে তিনি এই অপরাধের জন্য তাকে বেত্রাঘাত করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তাকে বিশটি বেত্রাঘাত করা হলো।” (তারীখুল খুলাফা ১৬৬)

মহান আল্লাহ পাক তিনি মালঊনদের সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন-

اَلَـمْ تَرَ اِلَى الَّذِيْنَ بَدَّلُوْا نِعْمَتَ اللهِ كُفْرًا وَّاَحَلُّوْا قَوْمَهُمْ دَارَ الْبَوَارِ.

অর্থ: “আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যে, যারা কুফরীবশত মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নিয়ামত মুবারক উনাকে বদল করেছে এবং তাদের সম্প্রদায়কে ধ্বংসের ঘরে নামিয়ে এনেছে?” (সম্মানিত সূরা ইবরাহীম শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ২৮)

এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় আল্লামা কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে মাযহারী শরীফ’ উনার মধ্যে মালঊনদের সম্পর্কে বলেন-

كَفَرَ يَزِيْدُ لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَمَنْ مَّعَه بِـمَا اَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ وَانْتَصَبُوا الْعَدَاوَةَ اٰلَ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَتَلُوْا  حَضْرَتْ اَلْاِمَامَ حُسَيْنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ ظُلْمًا وَّكَفَرَ يَزِيْدُ لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِ بِدِيْنِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتّٰى اَنْشَدَ اَبْيَاتًا حِيْنَ قَتَلَ حَضْرَتْ اَلْاِمَامَ حُسَيْنًا عَلَيْهِ السَّلَامُ مَضْمُوْنَـهَا  اَيْنَ اَشْيَاخِىْ يَنْظُرُوْنَ اِنْتِقَامِىْ…

 بِاٰلِ  مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَنِىْ هَاشِمٍ وَاٰخِر الْاَبْيَاتِ وَلَسْتُ مِنْ جُنْدُبٍ اِنْ لَـمْ اَنْتَقِمْ…..

مِنْ بَنِىْ اَحْمَدَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا كَانَ فَعَلَ

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি ও তার সাথীদের উপর যে নেয়ামত দিয়েছিলেন, তারা তা প্রত্যাখান করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বৈরিতার পতাকা উড়ায়। না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা অন্যায়ভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করে। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দ্বীন তথা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে অস্বীকার করে। না‘ঊযুবিল্লাহ! এমনকি সে যখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করে, তখন সে অনেকগুলো চরণ আবৃত্তি করে। যার বিষয়বস্তু হলো-

اَيْنَ اَشْيَاخِىْ يَنْظُرُوْنَ اِنْتِقَامِىْ……

بِاٰلِ  مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَنِىْ هَاشِمٍ

‘আমার পূর্বপুরুষরা আজ কোথায়, তারা বেঁচে থাকলে আজ দেখতো কীভাবে আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর ও বনী হাশিম উনাদের উপর প্রতিশোধ নিয়েছি।’ না‘ঊযুবিল্লাহ!

তার চরণসমূহের শেষাংশ হলো-

وَلَسْتُ مِنْ جُنْدُبٍ اِنْ لَـمْ اَنْتَقِمْ …

مِنْ بَنِىْ اَحْمَدَ صلى الله عليه وسلم مَا كَانَ فَعَلَ

অর্থ: “বদরের যুদ্ধে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার পূর্বপুরুষদের সাথে যা কিছু করেছেন, তার বদলা যদি আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বংশধর আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে না নেই, তাহলে আমি জুনদুব বংশদ্ভূত হয়েছি কেনো! না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে মাযহারী শরীফ ৫/২৭১)

সে মদকে হালাল করে নিয়েছিলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! সে মদের প্রশংসায় বলেছিলো-

فَاِنْ حُرِّمَتْ يَوْمًا عَلٰى دِيْنِ اَحْمَدَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ…

فَخُذْهَا عَلـٰى دِيْنِ الْـمَسِيْحِ بْنِ مَرْيَمَ

অর্থ: “যদি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দ্বীন তথা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম-এ মদ হারাম হয়, তাহলে হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালাম উনার ধর্মের উপর ভিত্তি করে তুমি তা গ্রহণ করো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে মাযহারী শরীফ ৫/২৭১)

মূলত সাইয়্যিদুশ শুহাদা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করার কারণেই ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি এবং তার যারা সাঙ্গপাঙ্গ ছিলো, তারা প্রত্যেকেই কঠিন লা’নতের মধ্যে পরে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদের অস্থিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। তাদের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি মহান আল্লাহ পাক তিনি অনেক পূর্বেই উনার যিনি হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক করে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنِ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا قَالَ اَوْحَى اللهُ تَعَالـٰى اِلـٰى سَيِّدِنَا حَبِيْبِنَا شَفِيْعِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّـىْ قَتَلْتُ بِيَحْيَـى بْنِ زَكَرِيَّا عَلَيْهِمَا السَّلَامُ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّاِنِّـىْ قَاتِلٌ ۢبِابْنِ ابْنَتِكَ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّسَبْعِيْنَ اَلْفًا.

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক করেছেন যে, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, নিশ্চয়ই যারা ইয়াহ্ইয়া ইবনে যাকারিয়্যা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে জড়িত ছিলো, এর কাফফারা বাবদ আমি তাদের সত্তর হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি। আর আপনার যিনি লখতে জিগার, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার যিনি মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে যারা জড়িত থাকবে, এর কাফফারা বাবদ তাদের ৭০ হাজার এবং ৭০ হাজার মোট কমপক্ষে ১ লক্ষ ৪০ হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দিবো, ধ্বংস করে দিবো, তাদের অস্থিত্ব বিলীন করে দিবো।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ২/৩১০, ৬৪৮, ৩/১৯৫, খছাইছুল কুবরা ২/১৯২)

মহান আল্লাহ পাক তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম মামদুহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত আস সাফাফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মুবারক উসীলায় আমাদের সবাইকে ছহীহ সমঝ, বিশুদ্ধ আক্বীদা ও হুসনে যন দান করুন। আমীন।

-আল্লামা মুহম্মদ ইবনে মানছুর।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম