সম্মানিত শরীয়ত উনার ফাতাওয়া অনুযায়ী “সুস্থ মানুষকে সুস্থ মানুষ থেকে দুরে থাকার ব্যাপারে” ইফার ফাতাওয়া ও সরকারী নির্দেশনা সম্পূর্নরূপে ভুল, মনগড়া, কুফরী ও শিরকীপূর্ণ

সংখ্যা: ২৭৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

      বর্তমান সময়ে কাফির মুশরিকদের উপর আপতিত মহা গযব করোনা সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোচিত। এই করোনার বিষয়ে ইফার ফাতাওয়া ও সরকারী নির্দেশনার কারনে স্বাধারন মানুষ সুস্পষ্ট কুফরী ও শিরকীতে নিমজ্জিত হয়েছে এবং হচ্ছে। যার কতিপয় নিম্নে আলোচনা করা হলো:

১। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশংকায় পবিত্র নামাযের কাতারে মুকতাদিগণ ফাঁক ফাঁক করে দাড়ানো ।

* মসজিদ মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর মুবারক, উনাতে মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশ মুবারক বাদ দিয়ে মনগড়াভাবে নামাযের কাতার ফাঁক ফাঁক করে দাড়ানোর নির্দেশ দেয়া উনাদেরই বিরুধীতা করা, যা স্পষ্ট কুফরী ।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন:

وَمَنْ لَـمْ يَـحْكُمْ بِـمَاۤ أَنْزَلَ اللهُ فَأُولٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُوْنَ

অর্থ: যে বা যারা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মোতাবেক নির্দেশ প্রদান করেনা তারা কাফির। (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ-৪৪)

জামাতের সাথে পবিত্র ছলাত আদায় করতে মুছল্লিদেরকে এমনভাবে দাঁড়াতে হবে, যাতে দুই মুছল্লির মাঝে কোন ফাঁক না থাকে। কাতারের মাঝে পরস্পরে ফাঁক রেখে দাড়ানো পবিত্র সুন্নত বিরুধী অর্থাৎ বিদয়াত এবং মাকরূহের অন্তর্ভুক্ত। এ ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নাই।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ تعالٰى عَنْهُ عَنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رُصُّوْا صُفُوْفَكُمْ وَقَارِبُوْا بَيْنَهَا وَحَاذُوْا بِالْأَعْنَاقِ فَوَالَّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِه إِنِّىْ لَأَرَى الشَّيْطَانَ يَدْخُلُ مِنْ خَلَلِ الصَّفِّ كَأَنَّهَا الْحَذَفُ

অর্থ: হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- তোমরা তোমাদের (নামাযের) কাতারসমূহে মিলিত হয়ে দাঁড়াও। এক কাতারকে অপর কাতারের নিকটবর্তী রাখো। পরস্পর কাধেঁ কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াও। ঐ মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কুদরতময় সত্তা মুবারক উনার শপথ, যাঁর  ক্বুদরতি হাত মুবারকে আমার নূরুল আমর (প্রাণ) মুবারক। আমি চাক্ষুস দেখতে পাচ্ছি, কাতারের খালি (ফাঁকা) জায়গাতে শয়তান যেন একটি ভেড়া বা বকরীর বাচ্চার ন্যায় প্রবেশ করছে। (আবূ দাউদ শরীফ, ছহীহ ইবনে খুযাইমা-৩/২২, ছহীহ ইবনে হিব্বান- ৫/৫৪০, শারহুস সুন্নাহ লিল বাগাবী- ৩/৩৬৮, মুসনাদুস সিরাজ- ১/২৪৬)

২.পবিত্র পাঁচ ওয়াক্ত ছলাতে পাঁচ জনের বেশি ও পবিত্র জুমুয়ার ছলাতে দশজনের বেশি উপস্থিতির নিষেধাজ্ঞা জারী করা।

*পবিত্র পাঁচ ওয়াক্ত ছলাতে পাঁচ জনের বেশি ও পবিত্র জুমুয়ার ছলাতে দশজনের বেশি উপস্থিতির নিষেধাজ্ঞা জারী করা। এটা মূলত মহান আল্লা পাক উনার ঘর পবিত্র মসজিদে নামাজ পড়তে  বাধা দেয়ারই অন্তর্ভুক্ত।

মহান আল্লাহপাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

مَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ مَّنَعَ مَسَاجِدَ اللهِ أَنْ يُّذْكَرَ فِيْهَا اسْمُهُ.

অর্থ- যে বা যারাই মহান আল্লাহ পাক উনার মসজিদে উনার নাম মুবারক উনার যিকির করতে অর্থাৎ পবিত্র নামাযে যেতে বাধা দেয় তারা সবচেয়ে বড় জালিম অর্থাৎ কাফির। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ-১১৪)

৩. যারা মসজিদে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা করেন তারাও মসজিদে না আসার অবকাশ আছে বলা।

* মসজিদ মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত উনার স্থান। আর যেকোন গযব বা বিপদণ্ডআপদ থেকে বাঁচতে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত ব্যতিত পরিত্রাণের কোন পথ নাই। পবিত্র নামাযে পবিত্র ক্বুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা হয়, যাতে সমস্ত রোগের আরোগ্যতা রয়েছে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْاٰنِ مَا هُوَ شِفَآءٌ وَّرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِيْنَ

অর্থ:- আমি পবিত্র ক্বুরআন শরীফ থেকে যা নাযিল করেছি তা সকল রোগের আরোগ্যকারী এবং মুমিনদের জন্য রহমত সরূপ। (পবিত্র সূরা ইসরা শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ৮২)

পবিত্র হাদীছ শরীফে রয়েছে-

قالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ فِى الصَّلٰوةِ شِفَاء

অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই পবিত্র নামায উনার মধ্যে রোগের আরোগ্যতা রয়েছে (পবিত্র ইবনে মাজাহ শরীফ)

সুতরাং যারা মসজিদে গেলে রোগাক্রান্ত হওয়ার আশংকা করে, তারা পবিত্র ক্বুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফকে অস্বীকার করার কারণে তারা মুরতাদ ও কাফিরের অন্তর্ভুক্ত।

৪. পাঁচ ওয়াক্ত জামাত, জুমার বয়ান, খুৎবা ও দোয়া সংক্ষিপ্ত করতে বলা।

* করোনা রোগ ছোঁয়াচে তথা সংক্রামক হবে এমন আক্বীদা অথাৎ বিশ্বাস পোষণ করে জামাত, জুমার বয়ান, খুৎবা ও দোয়া সংক্ষিপ্ত করতে বলা, এটাও স্বয়ং পবিত্র ক্বুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদেরকেই  অস্বীকার করার নামান্তর, যা স্পষ্ট শিরক ও কুফরী।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

قُلْ لَّنْ يُّصِيْبَنَا إِلَّا مَا كَتَبَ اللهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জানিয়ে দেন যে,আপনি বলে দিন মহান আল্লাহ পাক তিনি (রোগ-বিমার, বালা-মুছীবত থেকে) যা তোমাদের জন্য নির্ধারিত করেছেন তা ব্যতিত তোমাদের নিকট কিছুই পৌঁছবেনা। তিনিই আমাদের একমাত্র অভিবাবক (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ- ৫১)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَليْهِ وسَلَّمَ لَا عَدْوٰى

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু নেই … । (ইবনে মাজাহ্ শরীফ, হাশিয়াতুস সিন্দী ২/৩৬৩)

عَنْ حَضْرَتْ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضْيَ اللهُ تَعَالٰي عَنْهُ قَالَ قَامَ فِيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ لَا يُعْدِيْ شَيْءٌ شَيْئًا

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের মাঝে দাঁড়ালেন, অতপর ইরশাদ মুবারক করেন, কোন কিছুই অন্য কিছুকে সংক্রমণ করতে পারে না। (তিরমিযী শরীফ)

৫. সতর্কতার নামে লক ডাউনের মাধ্যমে করোনা রোগ থেকে বাঁচার চেষ্টা করা ।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَليْهِ وسَلَّمَ وَلْيَحْلُلِ الْمُصِحُّ حَيْثُ شَاءَ

অর্থ:- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সুস্থ ব্যক্তি অন্য যেকোন সুস্থ ব্যক্তির সাথে যেথায় ইচ্ছা অবস্থান করতে পারবে। (মুয়াত্তা ইমাম মালেক ২/ ৯৪৬, কিতাবুল জামি’)

সতর্কতার নামে লক ডাউনের মাধ্যমে করোনা রোগ থেকে বাচার চেষ্টা করা এবং দেশের মানুষকে ক্ষুদা, চিকিৎসা, প্রয়োজনে যাতায়াত সহ সর্বক্ষেত্রে বাধা প্রদান করা ও কষ্ট দেয়া এটা একটা চরম মুর্খতা, কেননা এভাবে সুস্থ মানুষকে সুস্থ মানুষ থেকে দূরে রেখে বাধা বিপত্তি সৃষ্টি করে কোন দিন রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বরং এর দ্বারা সুস্থ মানুষকে তড়িৎগতিতে অসুস্থ বানানোর এটা চরম পন্থা। যা সম্পূর্ণরূপে পবিত্র ক্বুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ বিরোধী ও কুফরী হয়েছে।

মূলত এ ধরণের ইসলাম বিরোধী সিদ্ধান্তের দ্বারা মানুষের মাঝে করোনা সচেতনতার পরিবর্তে  করোনার আতঙ্কই মানুষের অন্তরে বৃদ্ধি করেছে, ফলে মানুষ মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় না করে, করোনার ভয় ও মৃত্যুর আশংকা তাদের অন্তরে স্থান করে নিয়ে কুফরী করছে ও ঈমান হারা হচ্ছে। নাউযুল্লিাহ!

মহামারী ও ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ

মহামারী কোন ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগের নাম নয়, মূলত মহামারীকে সংক্রামক মনে করাও শিরক ও কুফরী ।

মহামারীতে আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে অবস্থান করতে মানুষ দুর্গন্ধের কারনে কষ্টপায়, সে কারণে এ ধরণের রোগীর সাথে আমভাবে সুস্থ মানুষ অবস্থান করতে নিষেধ থাকলেও  পবিত্র হাদীছ শরীফে সুস্থ ব্যক্তির সাথে সুস্থ ব্যক্তির অবস্থানের আদেশ রয়েছে।

এই বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফে রয়েছে,

عَنِ ابْنِ عَطِيَّةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ  لاَ عَدْوٰى….وَلاَ يَـحُلَّ الْمُمْرِضُ عَلَى الْمُصِحِّ وَلْيَحْلُلِ الْمُصِحُّ حَيْثُ شَاءَ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَا ذَاكَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  إِنَّهٗ أَذًى

অর্থ: “হযরত ইবনে আতিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু নেই…সুস্থ ব্যক্তি রোগী বা রোগ গ্রস্থ ব্যাক্তির সাথে অবস্থান করবে না, সুস্থ ব্যক্তি অন্য যেকোন সুস্থ ব্যক্তির সাথে যেথায় ইচ্ছা অবস্থান করতে পারবে, তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম  উনারা প্রশ্ন করলেন হে আল্লাহ পাক উনার রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি কারনে রোগী থেকে দূরে থাকবে? তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, দুর্গন্ধে কষ্ট পাওয়ার কারণে (মুয়াত্তা ইমাম মালেক ২/ ৯৪৬, কিতাবুল জামি’)

খাছভাবে রোগীর দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ রোগীর সাথে অবস্থান পূর্বক সেবা শুশ্রুষায় নিয়োজিত থাকা অবশ্যই কর্তব্য কেননা এটা হক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে রয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰي عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ سِتٌّ قِيْلَ مَا هُنَّ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ ……..وَإِذَا مَرِضَ فَعُدْهُ

অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, একজন মুসলমানের উপর অন্য মুসলমানের ছয়টি হক্ব অর্থাৎ দায়িত্ব রয়েছে, জিজ্ঞাসা করা হলো হে আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেগুলি কি? তিনি বলেন… … …যখন  সে রুগ্ন হবে তখন তার সেবা শুশ্রুষা করবে। (মুসলিম শরীফ)

প্রত্যেক মানুষের হায়াত ও মৃত্যু নির্ধারিত, কোন মানুষই নির্ধারিত সময়ের পূর্বে ইন্তিকাল করবেনা  তাই কোন স্থানে মহামারী দেখা দিলেই সকল লোক মারা যাবেনা বরং যাদের জন্য ঐ রোগের মাধ্যমে  মৃত্যু নির্ধারিত শুধু তাদেরই মৃত্যু হবে অন্য কারো মৃত্যু হবেনা।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

فَإِذَا جَآءَ أَجَلُهُمْ لَا يَسْتَأْخِرُوْنَ سَاعَةً وَّلَا يَسْتَقْدِمُوْنَ

অর্থ: যখন মানুষের মৃত্য আসবে তার নির্ধারিত সময়ের এক মুহুর্তকাল পূর্বে হবেনা এবং এক মুহুর্তকাল পরেও হবেনা। (পবিত্র সূরা নাহল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৬১)

তাই মৃত্যুর ভয়ে ও মৃত্যু থেকে বাচার জন্য কোন করোনায় আক্রান্ত রোগী থেকে দূরে সরে যাওয়া, সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় না করে, রোগকে ভয় করে মৃত্যুর আশংকায় রোগী থেকে দূরে সরে যাওয়া এবং পরস্পর দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া, নিঃন্দেহে শিরক ও কুফরী ।

পবিত্র ইসলামী শরীয়তে ছোয়াচে বা সংক্রামক বলতে কোন রোগ নাই, কোন রোগ স্বয়ং নিজে সুস্থ মানুষের উপর আক্রমন করে সুস্থ মানুষকে রোগী বানাবে এরুপ মনে করা এটা জাহিলী যুগের মুশরিকদের শিরক ও কুফরী আক্বীদা।

পবিত্র মুসলিম শরীফ’ উনার শরাহ গ্রন্থ ‘আল মু’লিম বিফাওয়াইদিল মুসলিম’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-

وَقَوْلُهٗ لَا عَدْوٰى.تَفْسِيْرُهُ أَنَّ الْعَرَبَ كَانَتْ تَعْتَقِدُ أَنَّ الْـمَرَضَ يُعْدِيْ وَيَنْتَقِلُ إِلَى الصَّحِيْحِ فَأَنْكَرَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِعْتِقَادَهُمْ.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক ‘ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছুই নেই’। (এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ) উনার ব্যাখ্যা মুবারক হচ্ছেন, জাহিলী যুগে আরবরা এটা বিশ্বাস করতো যে, রোগ অসুস্থ ব্যক্তির থেকে সুস্থ ব্যক্তির দিকে সংক্রামিত হয়, স্থানান্তরিত হয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের এই বিশ্বাসকে বাতিল বলে ঘোষণা করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’লিম বিফাওয়াইদিল মুসলিম ৩/১৭৭)

করোনা মহামারী নয় বরং কাফির-মুশরিকদের উপর আপতিত একটি মহাগযব

মহামারী বা বালা-মুছীবত তা মুসলমানদের উপরও এসে থাকে কিন্তু উক্ত রোগের ঔষধ থাকে যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফে রয়েছে-

قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِكُلِّ دَاءٍ دَوَاءٌ

অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রত্যেক রোগের ঔষধ রয়েছে। (পবিত্র মুসলিম শরীফ, পবিত্র মুসনাদে আহমদ শরীফ)

আর করোনা এমন একটি মহাগযব যার কোন ঔষধ নাই, বরং যার উক্ত করোনা ভাইরাস হবে তার মৃত্যু অর্থাৎ ধ্বংস অনিবার্য। পবিত্র হাদীছ শরীফে রয়েছে

اِنَّ اللهَ لَيُمْلِي الظَّالِـمَ حَتّٰى إِذَا أَخَذَهٗ لَـمْ يُفتِلْهٗ

অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূরে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই জালিমকে মহান আল্লাহ পাক তিনি দীর্ঘ অবকাশ দেন এমনকি যখন তিনি তাকে গযবে নিপতিত করেন সে কোনক্রমেই রেহাই পায়না। (পবিত্র বুখারী শরীফ, পবিত্র মুসলিম শরীফ)

আর বর্তমান বিশ্বের কাফির মুশরিকরা পবিত্র ক্বুরআন শরীফ উনার অবমাননা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূরে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার ব্যঙ্গচিত্র ও উনার শান মানের খিলাফ বক্তব্য, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধীতা, মুসলমানদের উপর লাগাতার অত্যাচার নির্যাতন ইত্যাদি নানান জুলুম অত্যাচারের পরিপ্রেক্ষিতে নাযিল হয় করোনা নামক মহাগযব।

উল্লেখ্য যে, মহামারী বা যে কোন রোগের ক্ষেত্রে সুস্থ মানুষ থেকে সুস্থ মানুষকে দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা পবিত্র ক্বুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কোথাও দেয়া হয় নাই।

তাহলে একথা স্পষ্ট যে, একদিকে করোনা রোগটি যেমন কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়, তেমনি এটি বাংলাদেশের জন্য মহামারী রোগও নহে। কেননা মহামারী হলো এমন রোগ, তা যে স্থানে দেখা দেয়, ঐ এলাকায় ব্যাপকহারে লোক মারা যায়। আর বাংলাদেশে বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন স্থানে জ্বর সর্দি কাশিতে সারা বৎসরেই কিছু মানুষ প্রায় আক্রান্ত থাকে, বিশেষ করে ঋতুর পরিবর্তনের সময়ও এ ধরণের বিক্ষিপ্ত রোগ হয়ে থাকে। এতদসত্ত্বেও এ ধরণের বিক্ষিপ্ত রোগকে কেন্দ্র করে, করোনার অজুহাতে সুস্থ মানুষকে সুস্থ মানুষ থেকে দূরে থাকার ব্যাপারে ইফার ফাতাওয়া ও সরকারী নির্দেশনা যেরূপ সম্পূর্নরূপে পবিত্র ক্বুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী, তেমনিভাবে করোনা নিয়ে তাদের ফাতাওয়া গুলিও বিভ্রান্তিকর, দলিল বিহীন, মানবতা বিরুধী, ফেৎনা জনক, শিরক ও কুফরী যুক্ত হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক !

কাজেই তাদের এই শিরক ও কুফরী পূর্ণ ফাতাওয়া অনুসরণ থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে এবং তাদেরকে প্রকাশ্যে খালিছ তওবা করে এই ফাতাওয়া প্রত্যাহার করতে হবে।

-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং নিজেই সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেন

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুল ফারীক্বাইন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজেই নিজের বিলাদত শরীফ পালন করে খুশি প্রকাশ করেন

হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের খিলাফতকালে নাবিইয়ুর রহমাহ, নাজিইয়ুল্লাহ, নূরুম মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করেছেন এবং এ উপলক্ষে ব্যয় করার ফযীলতও বর্ণনা করেছেন

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেছেন

বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয হওয়ার প্রমাণ