সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দাদাজান সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার ‘শায়বাহ’ ইসম বা নাম মুবারক এবং কিতাবে বর্ণিত উনার কতিপয় সম্মানিত মশহূর লক্বব মুবারক সম্পর্কে কিছু আলোচনা

সংখ্যা: ২৫৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ইসম বা নাম মুবারক কি এই বিষয়ে সীরাতগ্রন্থগুলোতে অনেক বর্ণনা রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, উনার সম্মানিত নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আমির আলাইহিস সালাম।’ আবার কেউ কেউ বলেছেন, উনার সম্মানিত নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম।’ আবার কেউ কেউ বলেছেন, উনার সম্মানিত নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাতুল হামদ আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ!

এই বিষয়ে ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি সর্বোত্তম ফায়ছালা মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “প্রকৃপক্ষে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মূল ইসম বা নাম মুবারক ছিলেন, ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! তবে একজন মানুষের যেমন একাধিক নাম মুবারক থাকে সেই হিসেবে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরো একখানা সম্মানিত নাম মুবারক ছিলেন, ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আমির আলাইহিস সালাম’। আর ‘শায়বাতু হামদ’ হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা সম্মানিত বিশেষ লক্বব মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক কেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম’ রাখা হয়েছে, এই বিষয়ে সীরাতবিশারদগণ উনারা বিভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত ওছীয়ত মুবারক করেন যে, তিনি যেন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! তাই উনার নাম মুবারক রাখা হয় ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! যেমন কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

لأن أباه وصّى أمه بذلك.

অর্থ: “কেননা উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনাকে এই বিষয়ে ওছীয়ত মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ শরীফ ১/২৬২)

আর এটা এই জন্য যে, সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শুভ পরিণাম সম্পর্কে, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে অবহিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি জানতেন যে, ‘উনার যেই মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করতে যাচ্ছেন, তিনি ‘সম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনাকে বহন করবেন এবং তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দাদাজান হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন মুবারক করবেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি কায়িনাতের মাঝে সবচেয়ে বড় সৌভাগ্যবান হবেন। সবহানাল্লাহ! অল্প বয়স মুবারক থেকেই উনার বেমেছাল ইলম, হিকমত ও সম্মান মুবারক উনার বিষয়টি প্রকাশিত হতে থাকবে। সুবহানাল্লাহ! তাই তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম’ রাখার জন্য ওয়াছীয়ত মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! কেননা  আরবরা স্বীয় সন্তানদের বিচক্ষণতা ও বুদ্ধিমত্তাতার কামনা করে উনাদের সন্তানদের নাম রাখতেন শায়বাহ। সুবহানাল্লাহ!

মূল কথা হলো, আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি এবং আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ইলহাম-ইলক্বা’ মুবারক এবং সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক-এ আদিষ্ট হয়ে উনাদের মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক রেখেছেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! আর উনাদের সম্মানিত ইলহাম-ইলক্বা মুবারক এবং সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক ছিলেন সম্মানিত ওহী মুবারক উনার ন্যায় অকাট্য। সুবহানাল্লাহ!

 

কিতাবে বর্ণিত সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় সম্মানিত মশহূর লক্বব মুবারক এবং এই সম্পর্কে কিছু আলোচনা:

شيبة الحمد (শায়বাতুল হামদ) চরম প্রশংসাকারী ও চরম প্রশংসিত শায়বাহ আলাইহিস সালাম: হযরত শাহ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মাদারেজুন নুবুওওয়াহ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শায়বাতুল হামদও বলা হতো। কারণ উনার প্রতিটি কাজকর্ম মুবারক খুবই পছন্দনীয় হতো। ফলে সকলেই উনার প্রশংসা মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!

আল্লাম ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ আরো অনেকেই বলেন-

ويقال له شيبة الحمد لجوده

অর্থ: “আর উনার বেমেছাল দানশীলতার কারণে উনাকে ‘শায়বাতুল হামদ’ বলা হতো।”

‘সীরাতে হালবিয়্যাহ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-

ويدعى شيبة الحمد لكثرة حمد الناس له

 অর্থ: “লোকেরা উনার সীমাহীন প্রশংসা মুবারক করতো, তাই উনাকে ‘শায়বাতুল হামদ’ বলে ডাকা হতো।” সুবহানাল্লাহ!

এই প্রসঙ্গে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছাহিবু ইললিম আউওয়ালি ওয়াল ইললিম আখিরি, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুইখানা সম্মানিত ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আহমদ ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম’Ñচরম প্রশংসাকারী এবং ‘সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’- চরম প্রশংসিত। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ধারণ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই কারণে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সেই সম্মানিত খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তিনি ছিলেন চরম প্রশংসকারী এবং চরম প্রশংসিত। সুবহানাল্লাহ! তিনি নিজে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের চরম প্রশংসা মুবারক করেছেন। আর উনারাও উনার চরম প্রশংসা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! ফলে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীও উনার অত্যধিক প্রশংসা মুবারক করতো। সুবহানাল্লাহ! আর এই কারণেই উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক হচ্ছেন, ‘শায়বাতুল হামদ’ তথা চরম প্রশংসাকারী ও চরম প্রশংসিত শায়বাহ। সুবহানাল্লাহ!

سَيّدُ قُرَيْشٍ  (সাইয়্যিদু কুরাইশ) সমস্ত কুরাইশ উনাদের সাইয়্যিদ, সর্দার: যেহেতু সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত কুরাইশ উনাদের  সাইয়্যিদ তথা সর্দার ছিলেন, তাই উনাকে এই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ আহ্বান করা হতো। সুবহানাল্লাহ!

شَيْخُ الْبَطْحَاءِ  (শায়খুল বাত্বহা’)- সম্মানিত বাত্বহা’ তথা সম্মানিত মক্কা শরীফ উনার শায়েখ: বাত্বহা’ হচ্ছেন সম্মানিত মক্কা শরীফ উনার একখানা সম্মানিত নাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যেহেতু সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মক্কা শরীফবাসী উনাদের সকলের শায়েখ তথা সাইয়্যিদ ছিলেন। সকলেই উনার আদেশ-নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী চলতেন। সুবহানাল্লাহ! তাই তিনি আরব-অনারবের তথা সারা পৃথিবীতে ‘শায়খুল বাত্বহা’ লক্বব মুবারক-সুপরিচিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

مُجَابُ الدعوة    (মুজাবুদ দা’ওয়াহ বা মুস্তাজাবাদ দা’ওয়াত) এমন সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক, যিনি দোয়া মুবারক করার সাথে সাথে, উনার দোয়া মুবারক কবূল করা হয়: এই সম্পর্কে ‘সীরাতে হালবিয়্যাহ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-

وكَانَ مُجَاب الدعوة

অর্থ: “আর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন, মুজাবুদ দা’ওয়াহ তথা মুস্তাজাবুদ দা’ওয়াত।” সুবহানাল্লাহ!

কুরাইশরা বা যেকোনো ব্যক্তি যখন কোন বালা-মুছীবতে পতিত হতো, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আসতো এবং এসে উনার নিকট দোয়া চাইতো। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া মুবারক করতেন এবং সাথে সাথে তাদের বালা- মুছীবত দূর হয়ে যেতো। সুবহানাল্লাহ! এই জন্য সবাই উনাকে ‘মুজাবুদ দা’ওয়াহ বা মুস্তাজাবাদ দা’ওয়াত’ বলে সম্বোধন করতো। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে কিতাবে অনেক ঘটনা বর্ণিত রয়েছে। যেমন কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

وكانت قريش اذا اصابها قحط شديد تاتى عبد الـمطلب عليه السلام فتستسقى به فيسقون

অর্থ: “আর কুরাইশরা যখন অনাবৃষ্টির কারণে কঠিন দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হতো, তখন তারা সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আসতো। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বৃষ্টির জন্য দোয়া করতেন এবং সাথে সাথে বৃষ্টি বর্ষিত হতো।” সুবহানাল্লাহ!

ফলে কুরাইশরা কঠিন দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি পেতো। সুবহানাল্লাহ!

আর সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার সম্মানিত গিলাফ মুবারক ধরে আবরাহার ও তার হস্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে বদোয়া করা এবং বদদোয়া মুবারক উনার বদৌলতে আবরাহা ও তার হস্তিবাহিনী পরিপূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ঘটনা মুবারকখানা সমস্ত সীরাতগ্রন্থেই উল্লেখ রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, এই ঘটনা মুবারক উনাকে কেন্দ্র করে, স্বয়ং যিনি খালিক্ব রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ‘সম্মানিত সূরা ফীল শরীফ’ নামে আলাদাভাবে একখানা সূরা শরীফ নাযিল করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যা সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সীমাহীন শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

সুতরাং সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, তা সমস্ত জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

اَلْفَيَّاضُ (আল ফাইয়্যায)- সীমাহীন দাতা: যেহেতু সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবাইকে বেহিসাব দান করতেন, তাই সবাই উনাকে ‘আল ফাইয়্যায’ লক্বব মুবারক দ্বারা সম্বোধন করতো। সুবহানাল্লাহ!

এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

وكان يقال له الفياض لجوده،

অর্থ: “উনার সীমাহীন দানশীলতার কারণ উনাকে আল ফাইয়্যায বলা হতো।” (সীরাতে হালবিয়্যাহ শরীফ ১/৯)

مُطْعِمُ الْاِنْسِ وَالْوَحْشِ وَالطَّيْرِ  (মুত্ব‘ইমুল ইন্সি ওয়াল ওয়াহশি ওয়াত ত্বইর) মানুষ, বন্যপশু ও পাখিদেরকে খাদ্যদানকারী: সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মানুষ, জিন; এমনকি বন্যপশু ও পাখিদেরকেও খাদ্য খাওয়াতেন। সুবহানাল্লাহ! এই কারণে সকলে উনাকে ‘মুত্ব‘ইমুল ইন্সি ওয়াল ওয়াহশি ওয়াত ত্বইর’ লক্বব মুবারক দ্বারা সম্বোধন করতো। সুবহানাল্লাহ! যেমন, এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

يرفع من مائدة عبد الـمطلب للوحوش والطيرفى رؤوس الجبال

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বন্যপশু ও পাখীদের জন্য পাহাড়ের চূড়াসমূহে দস্তরখানা ভর্তি খাবার উঠিয়ে রাখতেন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/১৫৯)

তিনি ধনী, গরিব, মুসাফির সবাইকে বেহিসাব খাদ্য খাওয়াতেন। সুবহানাল্লাহ!

পৃথিবীর ইতিহাসে এরূপ দৃষ্টান্ত আর নেই যে, কোন মানুষ বন্যপশু ও পাখিদেরকেও খাদ্য খাওয়াতেন এবং বন্যপশু ও পাখীদের জন্য পাহাড়ের চূড়াসমূহে দস্তরখানা ভর্তি খাবার উঠিয়ে রাখতেন। এটা সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একক খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

سَيّدُ النَّاسِ  সাইয়্যিদুন নাস: তিনি ছিলেন সমস্ত মানুষের সাইয়্যিদ। তাই উনার একখানা বিশেষ লক্বব মুবারক হচ্ছেন সাইয়্যিদুন নাস। সুবহানাল্লাহ!

ذُو الْمَجْدِ وَالسُّؤْدَدِ  (যুল মাজদি ওয়াস সু’দাদ)-সম্মানিত মর্যাদা-মর্তবা ও

কর্তৃত্ব মুবারক উনার মালিক:

এই সম্পর্কে আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَإِنَّ أَبِىْ ذُو الْمَجْدِ وَالسُّؤْدَدِ الَّذِىْ …

يُشَارُ بِهِ مَا بَيْنَ نَشْزٍ إِلَى خَفْضِ

অর্থ: “আর নিশ্চয়ই আমার মহাসম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন সীমাহীন মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও সম্মানিত কর্তৃত্ব মুবারক উনার অধিকারী। উনার সম্মানিত ইশারা-ইঙ্গিত মুবারক-এ, নির্দেশ মুবারক-এ পরিচালিত হয় উঁচু থেকে নিচু (সম্মানিত আরশে আযীম থেকে তাহ্তাছ ছারা পর্যন্ত) এতোদুভয়ের মাঝে (সারা কায়িনাতে) যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছু।” সুবহানাল্লাহ!

তাই সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা বিশেষ লক্বব মুবারক হচ্ছেন ‘যুল মাজদি ওয়াস সু’দাদ’। সুবহানাল্লাহ!

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

তিনি হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যত খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক রয়েছে, সমস্ত কিছুর অধিকারী হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: উনার সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানিত লক্বব মুবারক হচ্ছেন ‘জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম’। অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দাদাজান আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উপলধ্বি করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-আল্লামা মুহম্মদ আকরাম আলী।

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং নিজেই সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেন

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুল ফারীক্বাইন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজেই নিজের বিলাদত শরীফ পালন করে খুশি প্রকাশ করেন

হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের খিলাফতকালে নাবিইয়ুর রহমাহ, নাজিইয়ুল্লাহ, নূরুম মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করেছেন এবং এ উপলক্ষে ব্যয় করার ফযীলতও বর্ণনা করেছেন

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেছেন

বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয হওয়ার প্রমাণ