সাম্প্রতিককালে মাদকাসক্ত সন্তান কর্তৃক হত্যার শিকার ২০০ বাবা-মা। অপরদিকে মাদকের কারণে স্ত্রী-সন্তান হত্যা থেকে বিক্রির ঘটনাও ঘটছে। দেশের শিশু-কিশোরদের টার্গেট করেই দেশে মাদকের বিস্তার ঘটানো হচ্ছে। মাদক নির্মূলে পবিত্র দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান।

সংখ্যা: ২৮০তম সংখ্যা | বিভাগ:

মরণঘাতী মাদক এখন নানা অপরাধের প্রধান নিয়ামক। এই ভয়াল মাদক তারুণ্য, মেধা, বিবেক, লেখাপড়া, মনুষ্যত্ব সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। বিনষ্ট করে দিচ্ছে স্নেহ-মায়া, মুহব্বত, পারিবারিক বন্ধন। ২০১৫ সালে মাদকাসক্ত মেয়ে কর্তৃক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর নির্মম হত্যকান্ডের পর থেকে মাদকাসক্ত সন্তানের হাতে বাবা-মা, ঘনিষ্ঠ স্বজন নির্মম হত্যার শিকার হচ্ছেই। নেশাখোর বাবা মাদক সংগ্রহে ব্যর্থ হওয়ার ক্রোধে নিজ সন্তানকে খুন করছে। এছাড়া নেশার টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারা, মাকে জবাই করা, আদরের সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার মতো পৈশাচিক ঘটনাও ঘটেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে, সাম্প্রতিককালে মাদকাসক্ত সন্তানের হাতে প্রায় ২০০ বাবা-মা খুন হয়েছে। অন্য এক হিসেবে এই সংখ্যা প্রায় ৩০০-র কাছাকাছি। এখানেই শেষ নয়, একই সময়ে মাদকসেবী স্বামীর হাতে নিহত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক নারী। বিশেষজ্ঞরা বলছে, এসকল ঘটনা ঘটলেও সরকার তা বন্ধে একপ্রকার ব্যর্থই। কারণ সরকার কথিত আইনের মাধ্যমেই মাদক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। অথচ শুধুমাত্র আইন দিয়েই কোনো অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব নয়।

উল্লেখ্য, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭০ লাখ। তার মধ্যে শিশু ও কিশোর মাদকাসক্ত রয়েছে ৪ লাখের অধিক। ঢাকা বিভাগে মাদকাসক্ত শিশুর প্রায় ৩০ শতাংশ ছেলে এবং ১৭ শতাংশ মেয়ে। কিন্তু প্রকৃত হিসেব এর চেয়ে অনেক বেশি।

দৈনিক আল ইহসান শরীফের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, দেশের সিলেবাসে পবিত্র দ্বীন ইসলাম বর্জন করে নাস্তিক্যবাদ প্রবেশ করানো, শিথিল পারিবারিক বন্ধন, সন্তানের প্রতি বাবা-মার কর্তব্য এবং দায়িত্বে অবহেলা, সরকারিভাবে সম্মানিত ইসলামী মূল্যবোধকে উপেক্ষা করা, সামাজিক অবক্ষয় ইত্যাদির কারণেই মূলত সন্তানেরা মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে। পারিবারিক মূল্যবোধ, আদর্শ, শিক্ষা-দীক্ষা সব কিছুই তুচ্ছ হয়ে উঠছে। আবার আগের মতো উপযুক্ত পারিবারিক বন্ধন, মায়া-মমতা-ভালোবাসাও টুটে যাচ্ছে সহজেই। অভিভাবকরা নিজেরাও অতিমাত্রায় ভোগবাদী ও প্রতিযোগী হয়ে উঠছেন। ফলে মা-বাবাদের কাছে এখন সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় সময় দেয়া, দেখভাল করার গুরুত্ব কমে গেছে।

এর ফাঁক গলেই জীবন বিধ্বংসী মাদক ঢুকে পড়ছে নতুন প্রজন্মের অস্তিত্বে। সর্বনাশা ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, প্যাথেড্রিন, সিসা, মদ, বিয়ার, কোকেন, গাঁজাসহ অনেক কিছু এখন পৌঁছে যাচ্ছে সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণীদের হাতে। সঙ্গদোষেই ছেলেমেয়েদের মাদকাসক্তির ঘটনা ঘটছে বেশি। ভয়াল মাদকের গ্রাসে ধ্বংস-নিঃস্ব হয়ে পড়ছে একেকটি পরিবার।

মূলত বাংলাদেশের শিশু-কিশোর তথা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে টার্গেট করেই মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। আর এই টার্গেটটি কারছে পাশ্ববর্তী দুই দেশ ভারত ও মিয়ানমার। এক্ষেত্রে মিয়ানমারই বেশি এগিয়ে। এদেশের শিশু-কিশোর-যুবকদের মাঝে মাদক ছড়িয়ে দিয়ে ভারত ও মিয়ানমার বছরে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার মাদক বাণিজ্য করছে। বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের অন্তত ১৫ টি রুট এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের অন্তত ২০টি রুট দিয়ে এদেশে পাচার করা হচ্ছে মাদক। অথচ এই সর্বনাশা এই মাদকের বিস্তার দীর্ঘদিন থেকেই ধীরে ধীরে প্রভাব বিস্তার করলেও দেশের সরকার সংশ্লিষ্টরা এটি নিয়ন্ত্রনে আনতে পারেনি, পারেনি মাদক থেকে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে, পারেনি সন্তান কর্তৃক বাবা-মা হত্যার সংস্কৃতি নিরোধ করতে।

প্রসঙ্গত, মাদকদ্রব্যের নিয়ন্ত্রণ, সরবরাহ ও চাহিদা হ্রাস, অপব্যবহার ও চোরাচালান প্রতিরোধ এবং মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকল্পে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০ রহিত করে যুগোপযোগী আইন প্রণীত করা হয়; যা মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ নামে অভিহিত। এই আইন অমান্য করে মাদকদ্রব্য সরবরাহ, অপব্যবহার ও চোরাচালান করলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু এই আইন করার পরও মাদকাসক্তের সংখ্যা কমেনি বরং বেড়েই চলেছে। আর এ থেকে স্পষ্টই প্রমাণিত যে, শুধুমাত্র আইন দিয়ে মাদকাসক্ত নির্মূল সম্ভব নয়। মূলত মাদকসহ সব সমস্যার সমাধান একটি বিষয়েই রয়েছে। আর তা হচ্ছে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম। কারণ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যেই শিশুকাল থেকে শুরু করে কিভাবে একটি মানুষ নৈতিকতা, দায়িত্ব-কর্তব্যবোধ শিখবে তার নির্দেশনা দেয়া আছে, সন্তান যাতে বিপথে না যায়, অবাধ্য না হয় সেজন্য সন্তানের প্রতি পিতামাতার কিরূপ দায়িত্ব-কর্তব্য তা সর্বশ্রেষ্ট ও সর্বোত্তম উপায়ে নির্ধারণ করা রয়েছে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে।

অভিজ্ঞমহল মনে করেন, যতদিন পর্যন্ত আমাদের দেশে শিশু-কিশোর ও পিতামাতার মধ্যে সম্মানিত ইসলামী মূল্যবোধ সম্পর্কিত সত্যিকার শিক্ষা এবং নীতি-নৈতিকতার প্রসার ঘটানো যাবে না, ততদিন পর্যন্ত দেশে সন্তান কর্তৃক পিতামাতা খুন কিংবা মাদক সংশ্লিষ্ট হত্যাকান্ড ঘটতেই থাকবে। আর নৈতিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধ তৈরির ক্ষেত্রে যুগান্তকারী এবং একমাত্র পথ হলো পবিত্র দ্বীন ইসলাম। কারণ বর্তমান নিয়ন্ত্রণহীন সমাজ থেকে কোনোভাবেই নৈতিকতাপূর্ণ সঠিক চরিত্র গঠন সম্ভব নয়। আজকের বাংলাদেশের তরুণ ও কিশোর সমাজ পবিত্র দ্বীন ইসলাম থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। আর এর পেছনে অর্ধেক দায়ী তার পরিবার। আর পুরো দায়ী সরকার। এসব কিশোররা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পরিবার কোনোদিক থেকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে না। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে কিশোর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের আদর্শ মুবারক আজকের কিশোর সমাজের জানা নেই, অনুসরণ নেই। ফলে দিকভ্রান্ত, আদর্শচ্যুত তথা মাদকাসক্ত হচ্ছে তারা।

প্রসঙ্গত সরকারের পক্ষ থেকে দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে বলা হয়েছে- আইন করে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়। যদি তাই হয় তাহলে বলতে হয় সরকারকে খুঁজতে হবে কোন পথে এবং কী করে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

লেখাবাহুল্য, তার সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট জবাব হলো সমাজ, জাতীয় এবং কথিত রাষ্ট্রীয় জীবনের সর্বত্র সম্মানিত ইসলামী আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রতিফলনই মাদক নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায়। আর তা বাস্তবায়নে সরকার ও জনগণ উভয়কেই যুগপৎভাবে কাজ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ!

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা।

রৌশনীদের ক্ষোভ, দুঃখ, লজ্জা, ক্রোধের দায়ভার নেবে কে? প্রবাহমান সংস্কৃতি পঙ্কিলতার তোড়ে রৌশনীদের সব আকুতি যে নির্মমভাবে ভেসে যাচ্ছে।  সে দায়বদ্ধতা বর্তমান সমাজ আর কত অস্বীকার করতে পারবে? প্রযুক্তি যতটা আপগ্রেড হচ্ছে সে তুলনায় অপরাধ বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। কাজেই আদর্শের কাছে ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই। পর্দা পালনে বিকল্প নেই।  ইসলামী শিক্ষার বিকল্প নেই। এসব কথার প্রতিফলন না হলে খুন, ধর্ষণ আর পরকীয়ার ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে প্রতিটা পরিবার। সমাজ হবে সমাজচ্যুত।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৬

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৫

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৪

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৪ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল