সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ

সংখ্যা: ১৯৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

 খন্দকার সেলিম আহমদ

পাহাড় কাঞ্চনপুর, টাঙ্গাইল

 

সুওয়াল: হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে প্রকাশিত অখ্যাত মাসিক পত্রিকা ফেব্রুয়ারী-২০০৫ ঈসায়ী সংখ্যায় জিজ্ঞাসা-সমাধান বিভাগে, মাসিক আল বাইয়্যিনাত-অক্টোবর ২০০৩ ঈসায়ী সংখ্যায় প্রদত্ত “মীলাদ-ক্বিয়াম” সম্পর্কিত বক্তব্যের সমালোচনা করতে গিয়ে  এবং একই বিষয়ে এপ্রিল-২০০৫ ঈসায়ী ও মে-২০০৫ ঈসায়ী সংখ্যায় এছাড়াও মাসিক মদীনা পত্রিকা ফেব্রুয়ারী-২০০৫ ঈসায়ী সংখ্যায় প্রশ্নোত্তর বিভাগে একই ধরনের জাওয়াব দেয়া হয়েছে।

তাদের বক্তব্যগুলোর মধ্যে যে বিষয়গুলো আমার নিকট সন্দেহজনক তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

যেমন, মে-২০০৫ ঈসায়ী সংখ্যায় জিজ্ঞাসা-সমাধান বিভাগে বলা হয়েছে, “সমাজে বহুল প্রচলিত যে মীলাদ দেখা যায়, তা সম্পূর্ণ কুরআন সুন্নাহর খিলাফ, যা কোন দিন ভালো কাজ হতে পারে না।” …

এখন আমাদের সুওয়াল হলো, সমাজে বহুল প্রচলিত যে মীলাদ শরীফ দেখা যায়, সে সম্পর্কে তাদের উল্লিখিত বক্তব্য কতটুকু দলীলসম্মত? কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের দৃষ্টিতে দলীলভিত্তিক জাওয়াব দিয়ে আমাদের আক্বীদা, আমল হিফাযতে সহায়তা করবেন বলে আমরা আশাবাদী।

জাওয়াব: সমাজে বহুল প্রচলিত মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ সম্পর্কে হাটহাজারী মাদ্রাসার অখ্যাত মাসিক পত্রিকার জিজ্ঞাসার সমাধানে এবং অপর একটি পত্রিকার প্রশ্নোত্তর বিভাগে যা বলা হয়েছে তা শুদ্ধ তো হয়ইনি, বরং সম্পূর্ণই মিথ্যা, ভুল, মনগড়া ও দলীলবিহীন এবং অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ ও ফক্বীহগণের সর্বজনমান্য ও স্বীকৃত বিশ্ব বিখ্যাত ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাবসমূহের বক্তব্যের বিপরীত ও বিরুদ্ধমত। যা ইতঃপূর্বে আমাদের “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ”-এর অনেক সংখ্যায় খ-ন করে সঠিক ও দলীলভিত্তিক জাওয়াব দেয়া হয়েছে। আর “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ”-এর জাওয়াবকে খ-ন করা হাটহাজারী মৌলভী ছাহেবদের পক্ষে আদৌ সম্ভব হয়নি, হবেও না ইনশাআল্লাহ।

এরপরেও হাটহাজারীর মৌলভী ছাহেব এবং তাদের সকল সমজাতীয়রা বার বার ‘মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ’ সম্পর্কে বিনা তাহক্বীকে ও বিনা দলীলে উক্ত ভুলেরই পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছে।

(ধারাবাহিক)

যেমন, উল্লিখিত প্রথম বক্তব্যের প্রথমেই তারা বলেছে, “সমাজে বহুল প্রচলিত যে মীলাদ দেখা যায়  তা সম্পূর্ণ কুরআন সুন্নাহর খিলাফ, যা কোন দিন ভালো কাজ হতে পারে না।” নাঊযুবিল্লাহ!

এর জাওয়াবে বলতে হয় যে, কুরআন শরীফ-এর কোন আয়াত শরীফ-এ ‘সমাজে বহুল প্রচলিত মীলাদ শরীফকে কুরআন শরীফ-এর খিলাফ বলা হয়েছে এবং হাদীছ শরীফ-এর কোন হাদীছ শরীফ-এ ‘সমাজে বহুল প্রচলিত মীলাদ শরীফকে সুন্নাহ বা হাদীছ শরীফ-এর খিলাফ বলা হয়েছে, তা হাটহাজারী মৌলভী ছাহেবরা কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ, হাদীছ শরীফ-এর ইবারতসহ দলীল উল্লেখ করেনি। সুতরাং তাদের দলীলবিহীন, ইবারতবিহীন, মনগড়া ও মিথ্যা বক্তব্য মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

কারণ, মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-

هاتوا  برهانكم ان كنتم صدقين

অর্থ: “যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো, তাহলে দলীল প্রমাণ পেশ করো।” (সূরা বাক্বারা-১১১)

সুতরাং হাটহাজারী মৌলভী ছাহেবরা যদি তাদের উক্ত বক্তব্যে সত্যবাদী  হয়ে থাকে, তাহলে তারা যেন কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ উল্লেখ করে প্রমাণ করে দেয় যে, “মীলাদ শরীফ কুরআন-সুন্নাহর খিলাফ” এবং হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের ইবারতসহ দলীল উল্লেখ করে প্রমাণ করে দেয় যে, মীলাদ শরীফ কুরআন-সুন্নাহর খিলাফ।

এবং হাদীছ শরীফ ও ইজমা-ক্বিয়াসের ইবারতসহ দলীল উল্লেখ করে প্রমাণ করে দেয় যে, “মীলাদ শরীফ কুরআন-সুন্নাহর খিলাফ।”

কিন্তু কস্মিনকালেও হাটহাজারীর মৌলভী ছাহেবরা কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ এবং হাদীছ শরীফ ও ইজমা ক্বিয়াসের ইবারতসহ দলীল উল্লেখ করে প্রমাণ করতে পারবে না যে, “মীলাদ শরীফ কুরআন-সুন্নাহর খিলাফ।”

সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, তাদের উক্ত বক্তব্য মনগড়া, দলীলবিহীন, ইবারতবিহীন, মিথ্যা এবং কুফরীমূলক হয়েছে। আর মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহ পাক-এর লা’নত। কারণ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-

لعنت الله على الكذبين

অর্থ: “মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহ পাক-এর লা’নত।” (সূরা আলে ইমরান-৬১)

অথচ ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ’-এ কিতাবের ইবারতসহ দলীল-প্রমাণ উল্লেখ করে প্রমাণ করা হয়েছে যে, মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ কুরআন-সুন্নাহর খিলাফ নয়। বরং মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ শরীয়তসম্মতই শুধু নয়, খাছ সুন্নত।

নি¤েœ কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস এবং বুযুর্গদের আমল দ্বারা প্রমাণিত বিস্তারিত দলীল-আদিল্লাহ পেশ করা হলো-

স্মরণীয় যে, মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ-এর মূল উদ্দেশ্য হলো সংক্ষেপে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছিফত ও বিলাদত শরীফ সম্পর্কে আলোচনা করা এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা।

এককথায় মীলাদ শরীফ বলতে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত ও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছিফত, তা’রীফ, প্রশংসা উনার মু’জিযা বর্ণনা, বিলাদত শরীফ-এর আলোচনা, না’ত, শে’র, কাছীদা পাঠ ও উনার প্রতি ছলাত ও সালাম প্রেরণ করা ইত্যাদিকে বুঝানো হয়।

যেমন- মীলাদ শরীফ-এর প্রথমেই কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা হয়। কেননা, কোন নেক কাজ কুরআন শরীফ তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু করা রহমত, বরকত, সাকীনা তথা আল্লাহ পাক-এর সন্তুষ্টি লাভের কারণ। সেহেতু প্রথমেই পবিত্র কালামে পাক হতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ফযীলত সম্বলিত আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করা হয়। যাতে স্বয়ং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এরই মীলাদ বা ছানা-ছিফত বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন, ইরশাদ হয়েছে-

لقد جاءكم رسول من انفسكم الخ

অর্থ: “অবশ্যই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে একজন রসূল আগমন করবেন …।” (সূরা তওবা-১২৮)

ماكان محمد ابا احد من رجالكم ولكن رسول الله وخاتم النبين وكان الله بكل شىء عليما.

অর্থ: “মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের কোন পুরুষের পিতা নন। বরং তিনি হলেন আল্লাহ পাক-এর রসূল এবং শেষ নবী। আর আল্লাহ পাক সব বিষয় সম্পর্কে অবগত আছেন।” (সূরা আহযাব-৪০)

يايها الذين امنوا صلوا عليه وسلموا تسليما.

অর্থ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা আমার হাবীব (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ছলাত ও সালাম পাঠ কর পাঠ করার মত।” (সূরা আহযাব-৫৬) ইত্যাদি কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করা হয়।

আর কুরআন শরীফ তিলাওয়াত সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-

انما المؤمنون الذين اذا ذكر الله وجلت قلوبهم واذا تليت عليهم ايته زادتهم ايمانا وعلى ربهم يتوكلون.

অর্থ: “নিশ্চয়ই মু’মিনগণের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যখন তাদের নিকট আল্লাহ পাক-এর যিকির বা আলোচনা করা হয়, তখন তাদের অন্তরগুলো বিগলিত হয় (আল্লাহভীতি পয়দা হয়)। অর্থাৎ আল্লাহভীতি পয়দা হয় এবং তাদের নিকট যখন আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন তাদের ঈমান (ঈমানী কুওওয়াত) বৃদ্ধি হয় এবং তারা একমাত্র আল্লাহ পাক-এর প্রতি তাওয়াক্কুল করে থাকে।” (সূরা আনফাল-২)

واذا قرئ القران فاستمعوا له وانصتوا.

অর্থ: “যখন কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা হয়, তখন তোমরা চুপ থেকে তা মনোযোগের সাথে শ্রবণ কর। অবশ্যই তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হবে।” (সূরা আ’রাফ-২০৪)

এককথায় মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ বলতে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত ও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছিফত, তা’রীফ, প্রশংসা, উনার মু’জিযা বর্ণনা, বিলাদত শরীফ-এর আলোচনা, না’ত, শে’র, কাছীদা পাঠ ও তার প্রতি ছলাত ও সালাম প্রেরণ করা ইত্যাদি পাঠ করা হয়। আর উপরোক্ত বিষয়গুলো কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত। সুতরাং যে বিষয়গুলো কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত সে বিষয়গুলোকে দলীলবিহীন, মনগড়াভাবে কুরআন-সুন্নাহর খিলাফ বলা, নাজায়িয বলা প্রকাশ্য কুফরী। মুসলমান হয়ে যারা কুফরী করে শরীয়তের দৃষ্টিতে তারা মুরতাদ ও কাফির। (চলবে)

মুহম্মদ হুসাইন

নরসিংদী

সুওয়াল: মাসিক মদীনা নভেম্বর-২০০৯ ঈসায়ী সংখ্যায় প্রশ্নোত্তর বিভাগে নি¤েœাক্ত প্রশ্নোত্তর ছাপা হয়-

প্রশ্ন: মুসলমানগণ যে টুপি মাথায় পরেন তার আকৃতি সম্পর্কে যেমন গোল হওয়া চাই না কিসতির মত লম্বা হওয়া চাই স্পষ্ট হাদীছ শরীফ আছে কিনা? হাদীছ শরীফ-এর নাম উল্লেখ করে জানাবেন আশা করি।

উত্তর: টুপি পরা সুন্নত। হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম টুপি পরেছেন এবং পাগড়ী পরার সময় পাগড়ীর নিচে টুপি পরতে তাগিদ দিয়েছেন। টুপি এবং পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে তাই সুন্নত বলে স্বীকৃত যা সমকালীন নির্ভরযোগ্য ওলামা-মাশায়িখগণের মধ্যে সাধারণভাবে প্রচলিত। হাদীছ শরীফ-এ (শামায়িলে-তিরমিযী) বলা হয়েছে, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাথার টুপি ছিল চেপ্টা, যা মাথার সাথে লেগে থাকতো। সেই টুপির অনুকরণে ছাহাবীগণ এবং পরবর্তী যুগের ওলামা-মাশায়িখগণ কাপড়ের দ্বারা নির্মিত টুপি তৈরি করেছেন। কারো টুপি গোল ছিল, কারো টুপি কিসতি আকৃতির ছিল, কারো টুপি পাঁচকল্লি বা তিন কল্লির ছিল। এইসব ধরনের টুপি যেহেতু ওলামা-মাশায়িখগণের মধ্যে প্রচলিত ছিল এবং এ যুগেও রয়েছে, সুতরাং এসব ধরনের টুপিই সুন্নত অনুযায়ী মনে করে পরা যেতে পারে। অনুসরণযোগ্য ওলামাগণের পছন্দনীয় পোশাকাদি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা অভিপ্রেত নয়।

মাসিক মদীনা পত্রিকার উক্ত প্রশ্নের উত্তরে যে বিষয়গুলো আমার কাছে আপত্তিকর মনে হয়, তাহলো-

১. আল্লাহ পাক-এর রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে টুপি ও পোসাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে কোন সুন্নতের বর্ণনা নেই।

২. টুপি ও পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমদেরকে বাদ দিয়ে সমকালীন আলিমদেরকে অনুসরণ করতে হবে।

৩. শামায়িলে তিরমিযী-এর বরাতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নামে মিথ্যারোপ করা হয়েছে।

৪. হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত ‘কুম্মাতুন (كمة) ও বুতহুন (بطح) শব্দের মনগড়া অর্থ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

৫. হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণও কিসতি, পাঁচ কল্লি, তিন কল্লি টুপি পরিধান করেছেন।

৬. সমকালীন আলিমগণের মধ্যে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী আমল জারি থাকলেও সেটাই অনুসরণ করতে হবে। বিরোধিতা করা যাবেনা।

উপরোক্ত প্রতিটি বিষয়ের শরীয়তসম্মত জাওয়াব দিয়ে আমাদের ঈমান-আমল হিফাযতে সহায়তা করবেন বলে আমরা আশাবাদী।

জাওয়াব: মাসিক মদীনায় প্রদত্ত টুপি সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তরের প্রেক্ষিতে আপনার প্রথম সুওয়াল হচ্ছে-

১. আল্লাহ পাক-এর রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে টুপি ও পোসাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে কোন সুন্নতের বর্ণনা নেই। একথা কতটুকু সঠিক?

এর জাওয়াবে বলতে হয় যে, টুপি ও পোসাক-পরিচ্ছদ সম্পর্কিত মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীনের উক্ত বক্তব্য ভুল, দলীলবিহীন, ডাহা মিথ্যা।

শুধু তাই নয় তার উক্ত বক্তব্য সরাসরি নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি সুস্পষ্ট মিথ্যারোপের শামিল। যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। কেননা নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন ধরনের টুপি ও পোসাক পরিধান করতেন। অর্থাৎ সুন্নতী টুপি ও পোসাক কোনটি তা অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। অতএব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ধরনের টুপি ও পোসাক পরিধান করেছেন, তাই খাছ সুন্নতি টুপি ও পোসাক। কেননা সুন্নতের সংজ্ঞায় ফিক্বাহ্র বিখ্যাত কিতাব ‘তাহতাবীতে’ উল্লেখ আছে-

السنة ما فعل النبى صلى الله عليه وسلم او واحد من اصحابه.

অর্থ: ‘সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমদের থেকে কোন একজন যে কাজ করেছেন তাই সুন্নত।’

আর হাদীছ শরীফ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম গোল টুপি পরিধান করতেন, এমন গোল টুপি যা সবদিক থেকে মাথার সাথে লেগে থাকতো। মাথা হতে উঁচু হয়ে থাকতোনা এবং সে টুপিটি ছিল চার টুকরা বিশিষ্ট।

যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

عن عائشة رضى الله تعالى عنها قالت كانت له كمة بيضاء.

অর্থ: হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাদা রংয়ের গোল টুপি ছিল।’ (আদদিমিয়াতী, মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া লিল কুস্তলানী, শরহে মাওয়াহিব লিয্যুরক্বানী)

হাদীছ শরীফ-এ আরো উল্লেখ আছে-

عن ابى كبشة رضى الله تعالى عنه قال كان كمام اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم بطحا.

অর্থ: “হযরত আবু কাবশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছাহাবীগণের টুপি ছিল গোল যা চতুর্দিক থেকে মাথার সাথে লেগে থাকতো।” (তিরমিযী, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব)

বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ইমামুল মুহাদ্দিছীন, হযরত ইমাম মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত কিতাব ‘মিরকাত শরহে মিশকাত’-এর ৮ম খণ্ডের ২৪৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন-

(كمام) بكسر الكاف جمع كمة بالضم كقباب وقبة وهى قلنسوة المدورة سميت بها لانها تغطى الرأس

অর্থ: ‘(كمام) কিমামুন কাফের নিচে যের দিয়ে ইহা মূলত (كمة) (কাফির উপর পেশ) কুম্মাতুন-এর বহুবচন। আর কুম্মাতুন মূলত গোল টুপি উহা যেহেতু মাথাকে ঢেকে ফেলে তাই এ নামকরণ করা হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে বিশ্বখ্যাত আরবী লোগাত আল ক্বামুসুল মুহীত ও লিসানুল আরবে উল্লেখ আছে-

الكمة. قلنسوة مدورة لانها تغطى الرأس.

অর্থ: ‘কুম্মাতুন’ হলো গোল টুপি, কেননা তা মাথাকে ঢেকে রাখে।’

বিখ্যাত মুহাদ্দিছ, ইমামুল মুহাদ্দিছীন, হযরত ইমাম মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত কিতাব মিশকাত শরীফ-এর বিখ্যাত শরাহ “মিরকাত শরীফের” ৮ম খণ্ডের ২৪৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন-

(بطحا) اى كانت مبسوطة على رؤسهم لازقة غير مرتفعة عنها.

অর্থ: ‘বুতহা’ এমন প্রশস্ত গোল টুপি যা মাথার সাথে উপর দিক থেকে মিলিত থাকে, মাথা হতে উঁচু বা ফাঁকা নয়।’’ অনুরূপ শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ্ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব ইত্যাদিতেও উল্লেখ আছে।

হাদীছ শরীফ-এর উপরোক্ত বর্ণনা ও লুগাতী তাহ্ক্বীকের দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমদের টুপি মুবারক ছিল, গোল, সাদা যা চতুর্দিক থেকে মাথার সাথে লেগে থাকতো। তবে উক্ত গোল টুপি মুবারক কি ধরনের ছিল, তার সুন্দর ও সুস্পষ্ট বর্ণনা সম্পর্কে  ‘মাজমুয়ায়ে মাল্ফুযাতে খাজেগানে চিশ্ত’- কিতাবের  ১ম বাবের ১০-১১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

حضرت حاضی شریف زندنی رحمہ اللہ علیہ .. ارشاد فرمایا کہ اے عثمان جبکہ تمنے کلاہ چھار ترکی سر پر رکھی ہے. لازم ہے کہ اسکا حق بجالاؤگے … حضرت خواجہء عالم صلی اللہ علیہ وسلم نے جس وقت سے اس کلاہ کو اپنی سر مبارک پر رکہا فقر وفاقہ اختیار کیا. بعد اسکے حضرت علی کرم اللہ وجہہ نے پہنا اور فقر وفاقہ کو اپنی ذات پر لازم گردانا. اسیطرح سلسلۃ مجھ تک پھنچا.

অর্থ: ‘‘হযরত হাজী শরীফ জিন্দানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হে ওছমান হারুনী (রহমতুল্লাহি আলাইহি!) যখন আপনি চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি মাথায় পরিধান করেছেন, তখন আপনার জন্য তার হক্ব আদায় করা আবশ্যক। …. সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম যখন চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি মাথায় পরিধান করেন, তখন দরিদ্র্যতা ও উপবাসকে গ্রহণ করেন। তারপর হযরত আলী র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু চার টুকরা বিশিষ্ট টুপি পরিধান করেন দরিদ্র্যতা ও উপবাসকে নিজের জন্য জরুরী করে নেন। এরূপভাবে পর্যায়ক্রমে চার টুকরা বিশিষ্ট টুপি আমার নিকট পৌছে।” (আনীসুল আরওয়াহ)

‘ইসরারুল আওলিয়া’ কিতাবের ১১৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “হে দরবেশগণ! চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপিই প্রকৃত টুপি। হযরত জিবরাইল আলাইহিস্ সালাম বেহেশ্ত হতে এ টুপি এনে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পরিধান করতে দিয়ে বলেন, আপনি পরিধান করুন এবং আপনি যাকে ইচ্ছা তাকে এ টুপি দান করে আপনার খলীফা নিযুক্ত করুন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপিটি মাথায় পরিধান করেন এবং পরবর্তিতে হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত উমর ফারূক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত উসমান যিন নূরাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে একটি করে টুকরা দান করেন।” অনুরূপ আনীসুল আরওয়াতেও উল্লেখ আছে।

খলীফায়ে আ’যম, শায়খে শুয়ুখিল আলম, সানাদুল মুওয়াহ্হেদীন, সুলতানুল আরিফীন, ওয়ারিছুন নবী ফিল হিন্দ, মুঈনুল মিল্লাত ওয়াশ্ শরা ওয়াল হুদা ওয়াদ্ দ্বীন, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তি, সানজিরী ছুম্মা আজমিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মালফূযাত সম্বলিত বিখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য কিতাব ‘আনীসুল আরওয়াহ’ ও ইমামুল আইম্মাহ, হযরত ফরীদুদ্দীন মাসউদ গঞ্জে শোকর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মালফূযাত সম্বলিত কিতাব ‘ইসরারুল আওলিয়া’ নামক কিতাবের উক্ত বর্ণনা দ্বারা স্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও বিশিষ্ট ছাহাবী খুলাফায়ে রাশিদীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা  ‘চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি পরিধান করতেন। কাজেই চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপিই হচ্ছে খাছ সুন্নতী টুপি।

এছাড়াও সাদা ও চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপির বহু দলীল হাদীছ শরীফ ও অন্যান্য নির্ভরযোগ্য ও অনুসরণীয় কিতাবসমূহে রয়েছে। কাজেই, “আল্লাহ পাক-এর রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে টুপি ও পোসাক-পরিচ্ছদের ব্যপারে কোন সুন্নতের বর্ণনা নেই।” মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীনের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণই ভুল, দলীলবিহীন, ডাহা মিথ্যা ও কুফরীমূলক বলে প্রমাণিত হলো। এ ধরনের বক্তব্য থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকেই খাছ তওবা করতে হবে।

বিঃ দ্রঃ “চার টুকরা বিশিষ্ট সাদা ও গোল টুপিই হচ্ছে খাছ সুন্নতী টুপি। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ-এর ৫৩, ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭, ৫৮, ৫৯তম সংখ্যাগুলো পাঠ করলে টুপি সম্পর্কিত প্রশ্নোল্লিখিত বিষয়সহ যাবতীয় সুস্পষ্ট দলীলভিত্তিক ফায়সালা পেয়ে যাবেন।

মুসাম্মত সানজিদা আক্তার

সভানেত্রী- ছাত্রী আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত

মুহম্মদপুর, ঢাকা।

সুওয়াল: অখ্যাত মাসিক রাহমানী পয়গাম এপ্রিল/২০০৩ ঈসায়ী সংখ্যায় জিজ্ঞাসা-জবাব বিভাগে নিম্নোক্ত ১২৪৭ নম্বর জিজ্ঞাসার জবাব ছাপা হয়।

জিজ্ঞাসা: ছাহাবী আবু সাঈদ খুদরী ও আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা বলেন যে, রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন আমার মৃত্যুর পর পূর্ব দেশগুলির মধ্য হতে কোন একটি দেশ হতে আমার উম্মতের ভিতর হতে একটি দল বের হবে। এই দলের সদস্যগণ হবে অশিক্ষিত ও মূর্খ। এদের মধ্যে কোন শিক্ষিত লোক গেলে সেও হয়ে যাবে মূর্খের মত। তাদের বক্তৃতা হবে বহু বহু গুণের ফযীলতের। তাদের মত বক্তৃতা বা বয়ান কারো হবে না। …… তারা কুরআনের উপর আমল কিম্বা কুরআন প্রতিষ্ঠার একটু চেষ্টাও করবে না কখনো। উক্ত অখ্যাত পত্রিকা হাদীছ শরীফ ছহীহ স্বীকার করলেও মন্তব্য করেছে যে, প্রচলিত তাবলীগের কার্যক্রম পুরোপুরি শরীয়তসম্মত। ইসলাম পরিপন্থী কোন কিছু এতে নেই।

উক্ত অখ্যাত পত্রিকার উল্লিখিত “জিজ্ঞাসা-জবাবের” প্রেক্ষিতে আমার সুওয়াল বা জানার বিষয় হলো-

…. (৪) প্রচলিত ছয় উছূলী তাবলীগীদের পৃষ্ঠপোষকতায় বা পরিচালনায় যারা রয়েছে তারা সকলেই হক্কানী আলিম, তাদের এ দাবি কতটুকু সঠিক? আসলে হক্কানী আলিমের সংজ্ঞা বা পরিচিতি কি?

কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও ক্বিয়াসের দৃষ্টিতে উল্লিখিত সুওয়ালগুলোর দলীলভিত্তিক জাওয়াব দিয়ে আমাদের আক্বীদা, আমল হিফাযতে সহায়তা করবেন বলে আমরা আশাবাদী।

জাওয়াব: প্রচলিত ছয় উছূলী তাবলীগ জামায়াত সম্পর্কে উক্ত অখ্যাত পত্রিকার জবাব শুদ্ধ হয়নি। বরং ভুল, মনগড়া ও দলীলবিহীন হয়েছে।

তাই নিম্নে সুওয়ালে বর্ণিত বিষয়গুলোর দলীলভিত্তিক জাওয়াব দেয়া হলো-

ছয় উছূলী তাবলীগ সম্পর্কে প্রশ্নে উল্লিখিত অখ্যাত পত্রিকার অপব্যাখ্যা ও মিথ্যাচারিতার খ-নমূলক জবাব

প্রচলিত ছয় উছূলী তাবলীগ সম্পর্কে অখ্যাত পত্রিকার জিজ্ঞাসার জবাবের প্রেক্ষিতে আপনার চতুর্থ সুওয়াল হলো-

(৪) “প্রচলিত ছয় উছূলী তাবলীগের পৃষ্ঠপোষকতায় বা পরিচালনায় যারা রয়েছে তারা সকলেই হক্কানী আলিম, তাদের এ দাবি কতটুকু সঠিক? আসলে হক্কানী আলিমের সংজ্ঞা বা পরিচিতি কি?

আপনার উক্ত সুওয়ালের প্রেক্ষিতে বলতে হয় যে, প্রচলিত ছয় উছূলীদের উক্ত দাবি সম্পূর্ণই অবান্তর, মিথ্যা ও দলীলবিহীন। কারণ গত দুই সংখ্যায় প্রদত্ত হক্কানী আলিমের সংজ্ঞা বা পরিচিতিমূলক আলোচনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হয়েছে যে, হক্কানী আলিম বা সত্যিকার নায়িবে নবী তিনিই (১) যিনি ইসলামের প্রতিটি বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করেন, (২) ইলমে ফিক্বাহ অর্জন করার সাথে সাথে একজন হক্কানী শায়খ বা মুর্শিদের নিকট বাইয়াত গ্রহণ করে তাছাউফ চর্চা করতঃ অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে আল্লাহভীতি বা তাক্বওয়া অর্জন করেছেন, (৩) অর্জিত ইলম অনুযায়ী পরিপূর্ণ আমল করেন, (৪) সুন্নতের পূর্ণ  পায়রবী করেন, (৫) হারাম-নাজায়িয ও শরীয়তবিরোধী কাজে লিপ্ত হননা। কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর দৃষ্টিতে তাঁরাই আলিম বা নায়িবে নবী।

অথচ প্রচলিত ছয় উছূলীদের কথিত আলিমদের মধ্যে উল্লিখিত গুণাবলীসমূহের কোনটাই বিদ্যমান নেই। আমরা যদি উল্লিখিত পাঁচটি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করি তবে বিষয়টি আরো সুস্পষ্ট হয়ে যাবে।

পূর্ব প্রকাশিতের পর

হক্কানী-রব্বানী আলিম হওয়ার জন্য চতুর্থ শর্ত হচ্ছে-

(৪) সুন্নতের পরিপূর্ণ ইত্তিবা বা অনুসরণ-অনুকরণ করা।”

অর্থাৎ হক্কানী-রব্বানী আলিম তিনিই যিনি ফরয, ওয়াজিব, সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ পালন করার সাথে সাথে সুন্নতে যায়িদাহ এমনকি মুস্তাহাব আমলগুলো সঠিকভাবে নিয়মিত পালন করেন তথা মাথার তালু থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত, চলা-ফেরা উঠা-বসা, খাওয়া-দাওয়া, কথা-বার্তা, আমল-আখলাক্ব ইত্যাদি সবক্ষেত্রে যিনি সুন্নতের পরিপূর্ণ অনুসরণ অনুকরণ করেন তিনিই হক্কানী-রব্বানী আলিম। কেননা কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর অসংখ্য স্থানে সুন্নত পালনের ব্যাপারে বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

যেমন- এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-

قل ان كنتم تحبون الله فاتبعونى يحببكم الله ويغفرلكم ذنوبكم والله غفور رحيم.

অর্র্থ: “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহ পাককে মুহব্বত কর বা আল্লাহ পাক-এর মুহব্বত হাছিল করতে চাও, তবে তোমরা আমার অনুসরণ কর। আল্লাহ পাক তোমাদের মুহব্বত করবেন এবং তোমাদের গুনাহখাতা ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ পাক অত্যধিক ক্ষমাশীল ও দয়ালু।” (সূরা আলে ইমরান-৩১)

মহান আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন-

لقد كان لكم فى رسول الله اسوة حسنة

অর্থ: “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহ পাক-এর রসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।” (সূরা আহ্যাব-২১)

এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে-

عن جابر رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم حين اتاه عمر بن الخطاب  رضى الله تعالى عنه فقال انا نسمع احاديث من يهود تعجبنا افترى ان نكتب بعضها فقال امتهوكون انتم كما تهوكت اليهود والنصارى لقد جئتكم بها بيضاء نقية ولوكان موسى حيا ما وسعه الا اتباعى.

অর্থ: “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করে বলেন, একদিন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরবার শরীফ-এ এসে বলেন, (ইয়া রসূলাল্লাহ) আমরা ইহুদীদের কাছ থেকে আশ্চর্যজনক অনেক কথা শুনি, আপনি সেগুলো থেকে কিছু লিখে রাখার অনুমতি দেন কি? সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমরা কি ইহুদী-নাছারাদের ন্যায় দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছো? অথচ আমি তোমাদের জন্য স্পষ্ট ও পরিপূর্ণ দ্বীন নিয়ে এসেছি। যদি হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম জীবিত থাকতেন, তবে তাঁকেও আমার ইত্তিবা বা অনুসরণ করতে হতো।” (আহ্মদ, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব, মিরআতুল মানাজীহ্)

আর তাই মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালাম পাকে বান্দাদেরকে নির্দেশ দিয়ে বলেন-

وما اتاكم الرسول فخذوه وما نهاكم عنه فانتهوا واتقوا الله ان الله شديد العقاب.

অর্থ: “রসূল (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে যা আদেশ করেন তা পালন কর, আর তোমাদেরকে যা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন, তা থেকে বিরত থাকো। আর আল্লাহ পাককে ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তিদাতা।” (সূরা হাশর-২১)

আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

عن عبد الله بن عمر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يؤمن احدكم حتى يكون هواه تبعا لما جئت به.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিনে কামিল হতে পারবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত তার নফ্স, আমি যে আদর্শ এনেছি তার অনুগত না হবে।” (শরহুস্ সুন্নাহ্, আরবাঈন, কিতাবুল হুজ্জাহ্, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব, মিরআতুল মানাযীহ্)

হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে,

عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم كل امتى يدخلون الجنة الا من ابى قيل ومن ابى قال من اطاعنى دخل الجنة ومن عصانى فقد ابى.

অর্থ: “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার প্রত্যেক উম্মত জান্নাতে যাবে, তবে ঐ ব্যক্তি ব্যতীত, যে আমাকে অস্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসা করা হলো- ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কে আপনাকে অস্বীকার করেছে? জবাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমাকে অনুসরণ করেছে, সে ব্যক্তি জান্নাতে যাবে। আর যে ব্যক্তি আমার নাফরমানী করেছে (আমাকে অনুসরণ করেনি), সে ব্যক্তিই আমাকে অস্বীকার করেছে।” (বুখারী, মিশকাত, ফাতহুল বারী, ওমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস্ সারী, তাইসীরুল ক্বারী, শরহে কিরমানী, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরআতুল মানাজীহ্)

তাই মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালাম পাকে  ইরশাদ করেন,

من يطع الله ورسوله فقد فاز فوزا عظيما.

অর্থ: “যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক ও উনার রাসূলকে অনুসরণ করলো, সে ব্যক্তি বিরাট সফলতা অর্জন করলো।” (সূরা আহ্যাব-৭১)

কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা স্পষ্টই প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রিযামন্দী বা সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে বা হক্কানী রব্বানী আলিম হতে হলে, সুন্নতের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ও পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং হুবহু অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। কারণ সুন্নতের খিলাফ আমল করে কখনোই হক্কানী-রব্বানী আলিম হওয়া সম্ভব নয়। (চলবে)

মুহম্মদ শাফায়াত হুসাইন

দিনাজপুর

সুওয়াল: কোন মাস ও দিনকে অশুভ ও কুলক্ষণে মনে করা এবং কোন রোগ-ব্যাধিকে ছোঁয়াচে বা সংক্রামক মনে করার ব্যাপারে শরীয়তে কোন বিধি-নিষেধ আছে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

জাওয়াব: কোন মাস ও দিনকে অশুভ ও কুলক্ষণে মনে করা কুফরী এবং একইভাবে কোন রোগ-ব্যধিকে সংক্রামক বা ছোঁয়াচে মনে করাটাও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।

বর্ণিত রয়েছে, আইইয়ামে জাহিলিয়াতে ছফর মাসকে অশুভ ও কুলক্ষণে মনে করা হতো। আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের সে ভ্রান্ত আক্বীদা-বিশ্বাসের মূলোৎপাটন করেন।

যেমন হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে-

عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لاعدوى ولا هامة ولا نوء ولا صفر

অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “সংক্রামক রোগ বলতে কিছু নেই। পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণের কিছুই নেই। তারকার (উদয় বা অস্ত যাওয়ার) কারণে বৃষ্টি হওয়াও ভিত্তিহীন এবং ছফর মাসে অশুভ বলতে কিছু নেই।” (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ-৩৯১, শরহুস্ সুন্নাহ্-৬/২৭১)

হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত রয়েছে-

عن عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال الطيرة شرك قاله ثلاثا

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “যে কোন বিষয়কেই অশুভ ও  কুলক্ষণে মনে করা শিরকের অন্তর্ভূক্ত। তিনি এ বাক্যটি তিনবার উল্লেখ করেছেন।” (আবূ দাউদ, তিরমিযী শরীফ, মাওয়ারিদ, মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বল-১/৪৩৮, শরহুস্ সুন্নাহ্-৬/২৭৪, মিশকাত শরীফ-৩৯২, শরহুত্  ত্বীবী-৮/৩২)

হাদীছ শরীফ-এ আরো বর্ণিত রয়েছে-

عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لاعدوى ولا هامة ولا صفر فقال اعرابى يا رسول الله صلى الله عليه وسلم فما بال الابل تكون فى الرمل لكانها الظباء فيخالطها البعير الاجرب فيجربها فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم فمن اعدى الاول.

অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “কোন রোগই সংক্রামক নয়। পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণের কিছুই নেই এবং ছফর মাসের মধ্যেও অশুভ কিছু নেই। তখন এক ব্যক্তি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাহলে উটের এ অবস্থা হলো কেন? যে উট গুলো ছিল জংলী হরিনের মত তরু-তাজা, যেগুলো ময়দানে স্বাধীনভাবে বিচরণ করতো। এমতাবস্থায় কোথা হতে এক চর্মরোগাক্রান্ত উট এসে সে উটের পালে মিলিত হলো এবং উটগুলোকে চর্মরোগী বানিয়ে দিলো। ফলে এ উটগুলোও খুজলীযুক্ত হয়ে গেল। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আচ্ছা তাহলে প্রথম উটটির চর্মরোগ কোথা থেকে আসলো? অর্থাৎ প্রথম উটটি যেভাবে খুজলীযুক্ত হয়েছিল ঠিক পরবর্তী উটগুলোও সেভাবে খুজলীযুক্ত হয়েছে।” (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ/৩৯১, শরহুস্ সুন্নাহ্-৬/২৬৫)

স্মরণীয় যে, চিকিৎসা শাস্ত্রের পাঠ্যসূচিতে ইসলামী আক্বায়িদ সংক্রান্ত ইল্ম না থাকার কারণে কোন কোন চিকিৎসক কিছু কিছু রোগ সম্পর্কে যেমন- চর্মরোগ, খুজলী-পাঁচড়া, কুষ্ঠ, কলেরা-বসন্ত ইত্যাদিকে সংক্রামক বা ছোঁয়াচে বলে অভিমত ব্যক্ত করে থাকে। যা শরীয়তে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কাজেই, এরূপ ভ্রান্ত ও কুফরী আক্বীদা হতে বিরত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।

তবে ভাল লক্ষণ সম্পর্কে ধারণা করার অবকাশ আছে। অর্থাৎ তা মুস্তাহাব- সুন্নত।

যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-

عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول لا طيرة وخيرها الفال قالوا وما الفال قال الكلمة الصالحة يسمعها احدكم.

অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি শুনেছি যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “কোন বিষয়কে অশুভ কুলক্ষণে মনে করোনা, তবে শুভ লক্ষণ আছে। ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! শুভ লক্ষণ কি? তখন তিনি বললেন, উত্তম কথা, যা তোমাদের মধ্য হতে কেউ শুনতে পায়।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ, শরহুত্ ত্বীবী-৮/৩১৩, শরহুস্ সুন্নাহ্-৬/২৭২)

উল্লেখ্য, বর্তমানে সমাজে আরো যেসব কুফরীমূলক ভ্রান্ত আক্বীদা ও কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে তাহলো: (১) রাস্তা চলার সময় কোন প্রাণী যদি ডান থেকে রাস্তা অতিক্রম করে বাম দিকে যায় তাহলে যাত্রা শুভ, কল্যাণকর হবে। আর যদি বিপরীত দিকে যায় তাহলে কুলক্ষণে বা অমঙ্গল হবে, এরূপ বিশ্বাস করা। (২) শান্তির প্রতীক বা শান্তি লাভের আশায় পাখি উড়িয়ে দেয়া।

(৩) ঘুম থেকে উঠে পেঁচা দেখা কিংবা রাতে পেঁচার ডাক শুনলে কুলক্ষণের পূর্বাভাস মনে করা।

(৪) অনেকে সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি কোন বন্ধ্যা ব্যক্তিকে দেখতে পায়, কিংবা খালী কলস দেখতে পায় তাহলে সারাদিন অমঙ্গলে অতিবাহিত হবে বা কোন কল্যাণ অর্জিত হবেনা বলে ধারণা করা। (৫) শনিবার এবং মঙ্গলবার ইন্তিকাল করাকে কুলক্ষণ এবং জাহান্নামী হওয়ার আলামত বলে মনে করে। যা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা বা কুসংস্কারের অন্তর্ভূক্ত। কেননা নবী আলাইহিমুস্ সালামগণের পরে শ্রেষ্ঠ মানুষ, ছিদ্দীকে আকবর, হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মঙ্গলবার দিন বিছাল শরীফ লাভ করেন। আর দ্বিতীয় ও চতুর্থ খলীফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, যথাক্রমে সাইয়্যিদুনা হযরত ওমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শনিবার দিন ইন্তিকাল করেছেন। (৬) পরীক্ষার পূর্বক্ষণে ডিম বা কলা খাওয়াকে পরীক্ষা পাশের প্রতিবন্ধক মনে করা। (৭) সময়কে গালি দেয়া, জোরে বাতাস প্রবাহিত হতে দেখলে বাতাসকে গালি দেয়া, আকাশে দীর্ঘ সময় মেঘ থাকতে দেখলে মেঘকে গালি দেয়া ইত্যাদি।

অতএব, প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীকে নিজেদের ঈমানকে হিফাযত করতে হলে যাবতীয় কুফরী আক্বীদা থেকে বেঁচে থাকাটা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।

মুহম্মদ আসলাম হুসাইন

পলাশ, নরসিংদী

সুওয়াল: অনেকে মনে করে থাকে, পিতা-মাতা জীবিত থাকা কালে মুর্শিদ বা শায়খ-এর নিকট বাইয়াত হওয়া যায় না। এ ধারণা কতুটুকু শুদ্ধ ও শরীয়তসম্মত? দয়া করে জানাবেন।

জাওয়াব: পিতা-মাতা জীবিত থাকা কালে শায়খ বা মুর্শিদের নিকট বাইয়াত হওয়া যায় না। এটা একটি অবান্তর ধারণা। যা সম্পূর্ণরূপে শরীয়তের খিলাফ।

কালামুল্লাহ শরীফ-এর বহু আয়াত শরীফ-এ ইলম শিক্ষার বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে।

ইরশাদ হয়েছে-

هل يستوى الذين يعلمون والذين لا يعلمون

অর্থ: যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান? অর্থাৎ যাদের ইলম রয়েছে এবং যাদের ইলম নেই তারা কখনই সমান নয়। (সূরা যুমার-৯)

যার কারণে আল্লাহ পাক বান্দাকে ইলম অর্জন ও বৃদ্ধির জন্য দুআ করতে বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে-

قل رب زدنى علما

অর্থ: হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (উম্মতকে) বলে দিন, তারা যেন তাদের খালিক, মালিক, রব সুবহানাহু ও তায়ালা-এর নিকট দোয়া করে, ‘হে বারে ইলাহী! আপনি আমার বা আমাদের ইলম বৃদ্ধি করে দিন।’ (সূরা ত্বাহা-১১৪)

এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-

عن انس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم طلب العلم فريضة على كل مسلم وفى رواية اخرى على كلى مسلم ومسلمة.

অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ইলম অর্জন করা ফরয।” (মুসলিম, ইবনে মাজাহ, বায়হাক্বী, মিশকাত, মাছাবীহুস্ সুন্নাহ, মুসনাদে আবূ হানীফা)

হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে-

عن الحسن رحمة الله عليه قال العلم علمان فعلم فى القلب فذاك العلم النافع وعلم على اللسان فذالك حجة الله عز وجل على ابن ادم

অর্থ: “হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, ইলম দু’প্রকার। একটি হচ্ছে ক্বালবী ইল্ম্ (ইলমে তাছাউফ) যা উপকারী ইলম। অপরটি হচ্ছে যবানী ইলম (ইলমে ফিক্বাহ) যা আল্লাহ পাক-এর তরফ থেকে বান্দার প্রতি দলীল স্বরূপ।” (দারিমী, মিশকাত, মিরকাত, মাছাবীহুস্ সুন্নাহ)

হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “ইলম শিক্ষা করা ফরয বলতে বুঝায় ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফ। উভয়টিই জরূরত আন্দাজ শিক্ষা করা ফরয।”

হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি বিশ্ববিখ্যাত আলিম হওয়া সত্ত্বেও তিনি বলেন-

لولا سنتان لهلك ابو نعمان

অর্থ: “আমি ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ধ্বংস হয়ে যেতাম যদি দু’বছর না পেতাম।” (সাইফুল মুক্বাল্লিদীন, ফতওয়ায়ে ছিদ্দীক্বিয়া) অর্থাৎ তিনি উক্ত দু’বছর হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দরবার শরীফ-এ থেকে ইলমে তাছাউফ হাছিল করেন।

উল্লেখ্য, হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রথমে হযরত ইমাম বাকির রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কাছে মুরীদ হন এবং তাঁর বিছাল শরীফ-এর পর তাঁরই ছেলে হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কাছে বাইয়াত হয়ে কামালিয়াত হাছিল করেন। যা বিশ্বখ্যাত গায়াতুল আওতার ফী শরহে দুররিল মুখতার, সাইফুল মুক্বাল্লিদীন, ইছনা আশারিয়া ইত্যাদি কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিশ্বখ্যাত কিতাব মিশকাত শরীফ-এর শরাহ মিরকাত শরীফ-এ হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি (যিনি মালিকী মাযহাবের ইমাম)-এর ক্বওল শরীফ উল্লেখ করেছেন যে-

من تفقه ولم يتصوف فقد تفسك ومن تصوف ولم يتفقه فقد تزندك ومن جمع بينهما فقد تحقق.

অর্থ: “যে ব্যক্তি ইলমে ফিক্বাহ শিক্ষা করলো অথচ ইলমে তাছাউফ শিক্ষা করলো না, সে ব্যক্তি ফাসিক। আর যে ব্যক্তি ইলমে তাছাউফ শিক্ষা করলো কিন্তু ইলমে ফিক্বাহ শিক্ষা করলো না অর্থাৎ গুরুত্ব দিল না, সে যিন্দিক (কাফির)। আর যে ব্যক্তি উভয়টিই অর্জন করলো, সে ব্যক্তি মুহাক্কিক।” (মিরকাত শরীফ)

আর ইলমে ফিক্বাহ অর্থাৎ ওযু, গোসল, ইস্তিঞ্জা, মুয়ামিলাত, মুয়াশিরাত ইত্যাদি শিক্ষার জন্য ওস্তাদ গ্রহণ করা যেমন ফরয (আবশ্যক), সেটা মাদরাসায় গিয়েই হোক অথবা ব্যক্তিগতভাবে কোন ওস্তাদের নিকট থেকেই হোক তা জরূরত আন্দাজ শিক্ষা করা ফরয। তদ্রুপ ইলমে তাছাউফের জন্যও ওস্তাদ গ্রহণ করা ফরয। আর এ ওস্তাদকেই আরবীতে ‘শায়খ’ বা ‘মুর্শিদ’ বলা হয়। আর ফারসীতে ‘পীর’ বলা হয়।

‘দুররুল মুখতার’ যা বিশ্বখ্যাত ফতওয়ার কিতাব তার মধ্যে একটি উছূল উল্লেখ করা হয়েছে-

ما لا يتم به الفرض فهو فرض ما لايتم به الواجب فهو واجب.

অর্থ: “যে আমল ব্যতীত ফরয পূর্ণ হয় না, সে আমল করাও ফরয। যে আমল ব্যতীত ওয়াজিব পূর্ণ হয়না, সে আমল করাও ওয়াজিব।”

ইলমে ফিক্বাহ শিক্ষা করার জন্য প্রত্যেকের পিতা-মাতা অথবা মুরুব্বীগণই মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে থাকেন। কারো যদি পিতা-মাতা অথবা মুরুব্বী জীবিত না থাকেন, তাহলে তার পক্ষে ইলমে ফিক্বাহ শিক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে এবং সময় বিশেষে অসম্ভবও হয়ে যায়। কেননা ইলমে ফিক্বাহ শিক্ষা করার সময় যেমন থাকা-খাওয়া, লেখা-পড়া ইত্যাদির জন্য টাকা-পয়সার জরূরত হয়, সে টাকা-পয়সার আঞ্জাম দেন পিতা-মাতা অথবা মুরুব্বীগণ। অনুরূপ ইলমে তাছাউফ শিক্ষা করার সময়ও থাকা-খাওয়া, লেখা-পড়া ইত্যাদির জন্য টাকা-পয়সার জরূরত হয় এবং সে টাকা-পয়সার আঞ্জাম দেন পিতা-মাতা ও মুরুব্বীগণ্ এটাই যদি সত্য হয় যে, পিতা-মাতা অথাব মুরুব্বীগণ জীবিত থাকাকালীন ইলমে তাছাউফ শিক্ষা করা যাবে না, তাহলে যে সকল সন্তানেরা পিতা-মাতা জীবিত থাকা অবস্থায় ইন্তেকাল করলো, তারা তো ইলমে তাছাউফ শিক্ষা করতে পারলো না, যা তাদের জন্য ফরয ছিল। যার ফলে তারা একটি ফরয আদায় করা হতে মাহরূম থেকে গুনাহগার হল্ োআর যদি পিতা-মাতা জীবিত থাকা অবস্থায় ইলম অর্জন করা না যায়, তাহলে সন্তানদের ইলম অর্জন করার জন্য পিতা-মাতার মৃত্যু কামনা করতে হবে। নাঊযুবিল্লাহ

কাজেই, পিতা-মাতা জীবিত থাকা অবস্থায় শায়খ বা মুর্শিদের নিকট বাইয়াত হওয়া যাবে না-এ ধারণা বা বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে কুরআন-সুন্নাহর খিলাফ এবং কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।

মুহম্মদ জসীমুদ্দীন

ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর

সুওয়াল: খিলাফত, খলীফা, পীর বা মুর্শিদ গদীনশীন পীর ইত্যাদি বিষয়গুলির সঠিক ব্যাখ্যা জানিয়ে বাধিত করবেন।

জাওয়াব: খিলাফত: সালিক তরীক্বতের রাস্তায় প্রবেশ করে কামিল ওলী বা মুর্শিদের ছোহবত ইখতিয়ার করতঃ তরীক্বতের সবকাদি আদায় করার মাধ্যমে বিভিন্ন মাক্বাম বা মঞ্জিল অতিক্রম করে যখন তাকমীল বা পূর্ণতায় পৌছেন তখন আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নির্দেশে মুর্শিদ ক্বিবলা তাঁকে পূর্ণতার যে সনদ প্রদান করেন তার নামই খিলাফত।

খলীফা ও পীর বা মুর্শীদ: যিনি খিলাফত লাভ করেন তাঁকে খলীফা বলা হয়। প্রত্যেককে খিলাফত লাভ করে খলীফা হয়ে পীর বা মুর্শীদ হতে হয়। তিনি গদীনশীন হোন বা না হোন তা শর্ত নয়। তবে খিলাফত লাভ না করে কেউই পীর বা মুর্শিদ হতে পারে না। অতএব, পীর বা মুর্শিদের ছেলে হোক, ভাই হোক, পীর বা মুর্শিদ হওয়ার জন্য তাঁকেও অবশ্যই খিলাফত লাভ করতে হবে। অন্যথায় তিনি পীর বা মুর্শিদ হতে পারবেন না।

গদীনশীন পীর বা মুর্শিদ: ‘গদীনশীন’ শব্দটি ফার্সী। গদী অর্থ আসন আর নশীন অর্থ উপবেশনকারী। অর্থাৎ আসনে উপবেশনকারী। পীর-মুর্শিদের অবর্তমানে বা ইনতিকালের পর তাঁদের গদী বা আসনে বসে যিনি দায়িত্ব পালন করেন তাঁকে বলা হয় গদীনশীন পীর বা মুর্শিদ।

আজকাল দেখা যায়, পীর বা মুর্শিদের আত্মীয়-স্বজন ও মুরীদেরা মিলে আলোচনা বা পরামর্শ করে পীর মুর্শিদের গদীনশীন ও খলীফা নির্বাচিত করছে। নাউযুবিল্লাহ! যা শরীয়ত ও তরীক্বতের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

পীর বা মুর্শিদের ছেলে হোক, জামাই হোক, ভাই হোক, মুরদী হোক ইত্যাদি যেই হোক না কেন সে যদি পূর্বে যে খিলাফতের বর্ণনা দেয়া হয়েছে সেই খিলাফত না পেয়ে থাকে তাহলে তাকে গদীনশীন কিংবা খলীফা হিসেবে গ্রহণ করা জায়িয নেই। খিলাফত লাভ না করে যারা গদীনশীন বা খলীফা নির্বাচিত হবে শরীয়ত ও তরীক্বতের পথে তারা অন্ধ। এক অন্ধ আরেক অন্ধকে রাস্তা দেখাতে পারে না।

কাজেই, এসব গদীনশীন ও খলীফা এবং তাদের যারা অনুসারী সকলকেই একজন খিলাফতপ্রাপ্ত মুর্শিদ বা ওলীর নিকট বাইয়াত হয়ে তাকমীলে পৌঁছার জন্য কোশেশ করতে হবে। (সমূহ তাছাউফ-এর কিতাব দৃষ্টব্য)

সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ