সোনার বাংলার প্রতিটি খাত এমনকি বর্জ্যও অপার সম্ভাবনাময়। বর্জ্য থেকে আহরিত হতে পারে জৈব সার, গ্যাস, মূল্যবান জেট ফুয়েল এমনকি অতি প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎও। প্রয়োজন সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ তথা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার প্রয়াস ও আকল খাটানোর অবকাশ।

সংখ্যা: ২৩৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সমস্ত প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

রাজধানীর রাজপথগুলো ক্রমান্বয়ে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। রাজধানীর প্রায় সব জায়গাতেই রাস্তার পাশে পড়ে থাকে এসব ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। সিটি কর্পোরেশনের বড় বড় কনটেইনার থেকেও উপচে পড়ছে ময়লা। ঢাকা শহরে দুই কর্পোরেশনের ৬০০ খোলা কনটেইনার রয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা মাঝে-মধ্যে কিছু কিছু নিয়ে যাচ্ছে, তারপরও জমেও থাকছে অনেক বর্জ্য। একদিনে ৪৫ শতাংশের বেশি বর্জ্য পরিষ্কার বা অপসারণ করার সক্ষমতা নেই প্রতিষ্ঠান দুটির। সিটি কর্পোরেশনে নির্ধারিত কোনো স্টেশন না থাকায় সড়কের বিভিন্ন মোড়সহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানেই রাখা হয়েছে এসব কনটেইনার।

এতে দুর্ভোগে পড়ে পথচারীরা। মারাত্মক যানজটে পড়ে মানুষের যখন হাসফাঁস অবস্থা, তখন এসব ডাস্টবিনের দুর্গন্ধে দুর্ভোগ চরমে উঠে। এ অবস্থা চলছে সারা বছরজুড়ে। কিন্তু এসবে যে পরিবেশ দূষণ ঘটছে তা কেউ বলে না; অথচ পবিত্র কুরবানীর সময় মাত্র একদিনের পশু জবাইতেই নাকি পরিবেশের সর্বনাশ! তখন একটি বিশেষ মহল ও একশ্রেণীর মিডিয়া কুরবানীর পশু জবাইয়ের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে ও হৈচৈ শুরু করে দেয়। তাদের এ আচরণ অবশ্যই রহস্যজনক। দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে বিষয়টি নিয়ে ভবতে হবে।

তথ্য মতে, বর্জ্য অপসারণের কাজে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ৯০টি ওয়ার্ডে ৮ হাজার পরিছন্নতাকর্মী কাজ করছে। কিন্তু জনবল স্বল্পতা ও কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে সঠিকভাবে এ কর্মীদের কাজ মনিটর করা হচ্ছে না।

সভ্য আইন অনুযায়ী দিনের বেলায় রাস্তার পাশে আবর্জনা পড়ে থাকার কথা কল্পনা করাও কঠিন। ডাস্টবিনের ময়লা রাতে ফেলার নিয়ম নির্দিষ্ট ভাগাড়ে। কিন্তু নিজেদের অবস্থানকে মহা প্রশ্নবিদ্ধ করে উভয় সিটি কর্পোরেশন পুরো রাজধানীকেই আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত করেছে।  মূলত, রাজধানীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকায় এ ব্যাপারে বিপুল অর্থ ব্যয়ই শুধু সার হচ্ছে।

ময়লা-আবর্জনার এক বড় অংশ ফেলা হচ্ছে বুড়িগঙ্গা নদী কিংবা অন্য কোনো নীরাশয়ে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সিটি কর্পোরেশনের অন্যতম নাগরিকসেবা। এজন্য বিপুলসংখ্যক কর্মরত কর্মচারী থাকলেও তারা কতটা দায়িত্বশীল তা এক তীর্যক প্রশ্ন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উভয় সিটি কর্পোরেশন স্থানীয় সরকারের অন্তর্ভুক্ত। আর সরকার সম্মানিত রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে সমর্পিত। আর পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অনুসারী মুসলমান মাত্রই জানেন- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। কিন্তু বাংলাদেশের উভয় সিটি কর্পোরেশন এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আমল না করলেও বিদেশীরা তা আমল করে শুধু পরিচ্ছন্নই থাকছে না, পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও অর্জন করছে।

উদাহরণত জার্মানী ইউরোপের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। জার্মানে এক ব্যক্তি প্রতি বছরে ৫৮৩ কিলোগ্রাম বর্জ্য তৈরি করে থাকে, দেশের পুরো জনগোষ্ঠীর হিসাব নিলে এ বর্জের পরিমাণ দাঁড়ায় কয়েক লক্ষ কিলোগ্রাম। আর এই বিপুল পরিমাণ বর্জের ১০০ শতাংশ কাজে লাগায় জার্মানি।

জার্মানী তার গোটা দেশের অতি সক্রিয় পৌরসভার ব্যবস্থার সাহয্যে দৈনন্দিন বর্জ্য পদার্থ যথা কাগজ প্লাস্টিক মেটাল জৈব বা অজৈব বর্জ্য সংগ্রহ করে ৪৫ শতাংশ পূণঃব্যবহারের কাজে লাগায়, বাকি বর্জ্যের ৩৮ শতাংশ পুড়িয়ে কাজে লাগায় আর বাকি ১৭ শতাংশ দিয়ে সার তৈরি করে। ব্যবহার অনুপযোগী গাড়ির টায়ার থেকে জ্বালানি তৈল উৎপাদনের কারখানাসহ বর্জ্যভিত্তিক অন্যান্য শিল্প-কারখানা স্থাপন করায় তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ। বর্জ্য তাদের জন্য অভিশাপ বা বোঝা নয়, বরং আনুকূল্য। শুধুমাত্র সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার মাধ্যমে তাদের দেশ, জনগণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উপকৃত হচ্ছে। জার্মানীসহ ইউরোপের প্রায় দুই মিলিয়ন লোক চাকরি করে এই বর্জ্যভিত্তিক শিল্প-কারখানায়। এ থেকে যে আয় হয় প্রায় ১৪৫ থেকে ১৫০ বিলিয়ন ইউরো বা ১৯০ থেকে ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আবর্জনাকে সম্পদে রূপান্তর করাই সাম্প্রতিককালের ভাবনা। চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনে আবর্জনা থেকে সার উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় বেশ সফল। অথচ আক্বল খাটানো এবং পরিচ্ছন্ন থাকা দু’টোই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শিক্ষা। ৯৭ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশ বাংলাদেশেই এ শিক্ষা কাজে লাগানোর সর্বাধিক দাবিদার এবং এতে করে শুধু রাজধানীর প্রতিদিনের আবর্জনা থেকে ২৪০ টন জৈব সার উৎপাদন সম্ভব। বছরে এতে লাভ হবে কোটি কোটি টাকা। আর ৬ হাজার লোকের মতো কর্মসংস্থান হবে। সবচেয়ে বড় কথা- যে বিদ্যুতের জন্য কুইক রেন্টালের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা গচ্চা দেয়া হচ্ছে, সেক্ষেত্রে রাজধানীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

বর্জ্য থেকে বাংলাদেশেও বায়ো ফুয়েল উৎপাদন সম্ভব। বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে উৎপাদন করা যাবে মূল্যবান জেট ফুয়েল। ফলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করতে পারবে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে জেট ফুয়েল উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ বিমান এবং অন্যান্য এয়ারক্রাফটগুলো এখান থেকে জেট ফুয়েল রিফুয়েলিং করতে পারবে। এতে আয় বাড়বে সরকারের। প্রতিদিন মাত্র ২শ’ টন বর্জ্য পাওয়া গেলে বছরে ৪শ’ মিলিয়ন লিটার বায়ো ফুয়েল তৈরি করা সম্ভব হবে। অথচ গোটা বাংলাদেশে প্রতিদিন বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে পনের হাজার টনেরও বেশি। এছাড়া বর্জ্য ব্যবহার করে প্রায় ১৫ কোটি ঘনলিটার বায়োগ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব। বিদ্যুতের পাশাপাশি আবর্জনা থেকে জৈব সারও উৎপাদিত হবে বছরে ৯ লাখ টন। শাক-সবজি, ধানসহ কৃষি উৎপাদনে এই জৈব সার ব্যবহৃত হবে।

উল্লেখ্য, প্রায় ১১ মিলিয়ন হেক্টর চাষযোগ্য জমিতে বিপুল পরিমাণ জৈব পদার্থের চাহিদা থাকার পরও আমরা জৈব সার উৎপাদন ও জমিতে ব্যবহারে উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছি।

বলাবাহুল্য, যথাযথভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করলে নতুন অর্থনৈতিক দিগন্ত খোলার পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বহুল প্রত্যাশিত একটি কাজ করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে পরিবেশ দূষণের ভয়ঙ্কর ছোবল থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করা যাবে।

মূলত, সব সমস্যা সমাধানে চাই সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা তথা সততা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন নেক ছোহবত মুবারক, নেক সংস্পর্শ মুবারক তথা রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা পাওয়া সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

-আল্লামা মুহম্মদ আশরাফে মাহবূবে রব্বানী

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬০

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৯

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৮

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৯ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

 মতিভ্রমদুষ্ট মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার হতে পারে; কিন্তু রাজাকার কখনও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না।  যেমনটি ইসলামের ইতিহাসে পরবর্তিতে অনেকেই ছাহাবী হয়েছেন।  অনেকে অনেক জিহাদও করেছেন। কিন্তু বদরী ছাহাবী তিনশ’ তের জনই।  ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর কেউ বদরী ছাহাবী হতে পারবে না। সে মর্যাদা পাবে না।  অপরদিকে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীরা স্বাধীনতার সুফল পেতে পারে না।  স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো স্থানে তারা সমাবেশের অনুমতি পেতে পারে না।  মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট কোন অনুষ্ঠান করা, ইসলামের     দৃষ্টিতে বড় ধরনের প্রতারণা, মিথ্যা ও মহা বেঈমানী ও চরম মুনাফিকী।  মুক্তিযোদ্ধার নামে কোনো অনুষ্ঠান করতে চাইলে জামাতীদের আগে প্রকাশ্যে     তওবা করতে হবে।  তার আগ পর্যন্ত রাজাকার জামাতীদের কোনো ধরনের সমাবেশ করার অনুমতি       দেয়া সরকারের উচিত নয়। মুক্তিযোদ্ধা কেনার হাটের অনুমতি দেয়া উচিত নয়।  মুক্তিযোদ্ধা কেনার প্রক্রিয়াও বরদাশত করা উচিত নয়। কারণ তা সংবিধানে     সম্মত নয় এবং ইসলাম সঙ্গত তো নয় আদৌ।