স্বাধীনতা উত্তর অস্ত্রের মুখে ব্যাংক ডাকাতির পরিবর্তে এখন হচ্ছে ক্ষমতার দাপটে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে নির্বিচারে ব্যাংক লুটপাট। ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যথেচ্ছাচারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোকে লুটপাটের আখড়া বানাচ্ছে। জনগণের সচেতনতা দরকার। শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া দরকার।

সংখ্যা: ২৩৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সমস্ত প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

নাম ও প্যাড সর্বস্ব ভুয়া কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে ঋণ দেয়া হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। ব্যাক টু ব্যাক এলসির নামেও এ টাকা দেয়া হয়। এসব ভুয়া কোম্পানি যেসব কাগজপত্র জমা দেয় তাদের জমির দলিল থেকে শুরু করে কোনো কাগজপত্রই ঠিক নয়। বাস্তবে দেখা যায়, এসব দলিল অধিকাংশই জাল ও ভুয়া। মিরপুরসহ রাজধানীর কিছু কিছু এলাকা আছে, যেখানে সরকারের খাস জমি রয়েছে সেগুলোর ভুয়া ও জাল দলিল তৈরি করে, আবার অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবে কোনো জমিই নেই, অথচ জাল দলিল বানিয়ে ব্যাংকে জমা দিয়ে ব্যাংক ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিচ্ছে নাম ও প্যাড সর্বস্ব কোম্পানিগুলো। আর তাদের এই অনিয়মের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে খোদ ব্যাংকের কর্মকর্তারাই। তারাই এসব জাল দলিলকে আসল দলিল হিসেবে চিহ্নিত করে, যার ফলে ভুয়া কোম্পানিগুলোর ঋণ পেতে কোনোরকম সমস্যা হয় না।

আর ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে অনেক কোম্পানি-প্রধানই দেশ ছেড়েছে। কেউ গেছে দুবাই, আবুধাবি, কেউবা ব্যাংকক। আবার মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমস নিচ্ছে কেউ কেউ। এছাড়া ব্যাংকের টাকা নিয়ে কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ায়ও নাগরিকত্ব নিয়েছে অনেকে। জানা গেছে, গত কয়েক বছরে বিসমিল্লাহ গ্রুপ ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে চলে গেছে আবুধাবি। তাদের আরেকটি গ্রুপ মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমস নিচ্ছে।

ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ মনিটরিং না থাকার কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। এমনকি ভুয়া ও জাল দলিলের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেলেও এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়া নজরদারি নেই। মূলত ব্যাংকগুলোয় রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিচালনা পরিষদ থাকার কারণে সহজেই হচ্ছে এসব অনিয়ম।

গত কয়েক বছরে দেশে অসংখ্য নামসর্বস্ব গ্রুপ অব কোম্পানিজ গঠিত হয়েছে। এসব কোম্পানির কার্যক্রম সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছে খোদ জয়েন্ট স্টক কোম্পানি। অথচ এ প্রতিষ্ঠানটি থেকেই নিবন্ধন নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হয় যে কোনো কোম্পানিকে। এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে আনন্দ গ্রুপ, নির্ভরতা গ্রুপ, আইকন গ্রুপ, আইসিএল গ্রুপ, ট্রান্সপারেন্ট গ্রুপ, অন্যরকম গ্রুপ, স্বদেশ গ্রুপ, হিমালয় গ্রুপ, এবি গ্রুপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, হলমার্ক গ্রুপ, অক্সফাম গ্রুপ, পিক্সেল গ্রুপ, স্বপ্নধারা গ্রুপ, কনফিডেন্স গ্রুপ। এসব গ্রুপের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেরই বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। সবই কাগজে কলমে। জানা গেছে, ক্ষমতাসীনদের প্রভাবে এসব কোম্পানিই ভুয়া ও জাল দলিল বানিয়ে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে এবং নিচ্ছে।

রাষ্ট্রীয় মালিকানার অনেক ব্যাংক বিনিয়োগের গুণগত মান যাচাই-বাছাই না করেই ক্ষমতাসীনদের নির্দেশের কারণে ঋণ বিতরণ করেছে, যা পরবর্তীতে ব্যাংকের জন্য বোঝা হয়ে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদে রূপান্তরিত হয়েছে। এর সামগ্রিক প্রভাব ব্যাংকের সংরক্ষিত মূলধন ঘাটতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

ব্যাংকগুলোকে কোম্পানিতে রূপান্তর করা হলেও কোম্পানির অনুশাসন অর্থ মন্ত্রণালয় বা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং এমনকি অর্থমন্ত্রী নিজেই অনুসরণ করে না। এর বড় উদাহরণ হলো ব্যাংকগুলোতে সরকার সরাসরি চেয়ারম্যান, পরিচালক নিয়োগ দেয়, গেজেট প্রকাশ করে। অর্থমন্ত্রী তা গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরে। কিন্তু কোম্পানি কাঠামোতে পরিচালক নিয়োগ হয় বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম)। পরে পরিচালকরা তাদের মধ্য থেকে যোগ্য বিবেচনায় চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়। কিন্তু বছরের পর বছর ব্যাংকগুলোতে সরকার ‘নিজের লোকদের’ পরিচালক ও চেয়ারম্যান নিয়োগ করে গেজেট প্রকাশ করে আসছে।

সরকারি ব্যাংক বাঁচানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সরকারের নিকটতম লোকদের কাছে। তারা এখন লুটে খাচ্ছে ব্যাংকের হাড়-অস্থিমজ্জাটুকুও। কেউ ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে জামানত ছাড়াই দিয়ে দিচ্ছে কোটি কোটি টাকার ঋণ। আবার কেউ সমাজসেবার নামে ব্যাংকের টাকায় দান-খয়রাত করছে উদার হাতে। কেউ অনৈতিকভাবে শ্রেণীকৃত ঋণ অশ্রেণীকৃত করছে। আবার কেউ ইচ্ছামাফিক ঋণের জামানত পরিবর্তনের সুযোগ করে দিচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের হাতের মুঠোয় পড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতি এখন সেই গ্রাম্য প্রবাদের মতো- “বেড়া এখন নিজেই খেত খাচ্ছে।”

মূলত, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সব টাকা সরকারের নয়, জনগণের। কিন্তু সরকারের নিকটাত্মীয় ও প্রভাবশালী মহল এখন অস্ত্র ব্যবহার না করে ভুয়া ঋণপত্র তথা কাগজপত্র তৈরি করে দলের প্রভাব খাটিয়ে অবাধে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছে। আর সরকারের মুখপাত্র অর্থমন্ত্রী বলছে- “চার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক দুর্নীতি বড় কোনো বিষয় নয়।” নাঊযুবিল্লাহ!

বলাবাহুল্য, জনগণের সচেতনতা ও অন্যায় তথা শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার মনোভাবের অভাবের কারণেই স্বাধীনতা-উত্তর ব্যাংক ডাকাতির চেয়েও বর্তমানে বড় ধরনের ব্যাংক লুটপাট হচ্ছে। কিন্তু অস্ত্রের মুখে নয়। নীরবে-নিভৃতে ক্ষমতাসীনদের প্রভাব খাটিয়ে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দুর্নীতিবাজরা সাগর চুরি করছে। আর গরিব জনসাধারণ ধুকে ধুকে তিলে তিলে শোষিত হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও জনগণ অজ্ঞ ও নিষ্ক্রিয় থেকে যাচ্ছে। নিজের হক্ব উপলব্ধি করা ও রক্ষা করা ফরয। নিজের হক্ব কেউ নষ্ট করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে জিহাদের অনুমতি রয়েছে। কাজেই জনগণকে বঞ্চিত করে বর্তমান ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের টাকা মহালুটপাটের বিরুদ্ধে জনগণকেই সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা যালিম হয়ো না, মজলুমও হয়ো না।”

মূলত, এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি থেকে উত্তরণ লাভ করার ও দেশের সম্পদ রক্ষা করার মতো দায়িত্ববোধ আসে সম্মানিত ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। তবে এর জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ তাওয়াজ্জুহ মুবারক।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত মুবারক হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬০

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৯

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৮

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৯ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

 মতিভ্রমদুষ্ট মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার হতে পারে; কিন্তু রাজাকার কখনও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না।  যেমনটি ইসলামের ইতিহাসে পরবর্তিতে অনেকেই ছাহাবী হয়েছেন।  অনেকে অনেক জিহাদও করেছেন। কিন্তু বদরী ছাহাবী তিনশ’ তের জনই।  ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর কেউ বদরী ছাহাবী হতে পারবে না। সে মর্যাদা পাবে না।  অপরদিকে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীরা স্বাধীনতার সুফল পেতে পারে না।  স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো স্থানে তারা সমাবেশের অনুমতি পেতে পারে না।  মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট কোন অনুষ্ঠান করা, ইসলামের     দৃষ্টিতে বড় ধরনের প্রতারণা, মিথ্যা ও মহা বেঈমানী ও চরম মুনাফিকী।  মুক্তিযোদ্ধার নামে কোনো অনুষ্ঠান করতে চাইলে জামাতীদের আগে প্রকাশ্যে     তওবা করতে হবে।  তার আগ পর্যন্ত রাজাকার জামাতীদের কোনো ধরনের সমাবেশ করার অনুমতি       দেয়া সরকারের উচিত নয়। মুক্তিযোদ্ধা কেনার হাটের অনুমতি দেয়া উচিত নয়।  মুক্তিযোদ্ধা কেনার প্রক্রিয়াও বরদাশত করা উচিত নয়। কারণ তা সংবিধানে     সম্মত নয় এবং ইসলাম সঙ্গত তো নয় আদৌ।