স্বয়ং যিনি খ্বলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানিত মাক্বাম মুবারক, সম্মানিত অবস্থান মুবারক সমস্ত সৃষ্টি জগতের উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

সংখ্যা: ২৮০তম সংখ্যা | বিভাগ:

যিনি খ্বলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ

অর্থ: “আর (আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আমি আপনার সম্মানিত যিকির মুবারক তথা সম্মানিত আলোচনা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আলাম নাশ্রহ্ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংযুক্ত এবং সম্পৃক্ত। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক যেমন বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছেন, ঠিক তেমনিভাবে উনার সাথে সাথে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারকও বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

আলমে খ্বলক্ব হচ্ছে- যেটা আরশে আযীমের নীচে। অর্থাৎ তাহ্তাছ ছারা বা মাটির নিম্নতম স্তর থেকে আরশে আযীম পর্যন্ত হচ্ছে আলমে খ্বলক্ব। আবার আরশে আযীম থেকে ঠিক সম উচ্চতা হচ্ছে আলমে আমর। অর্থাৎ তাহতাছ ছারা থেকে আরশে আযীম পর্যন্ত যে পরিমাণ জায়গা ঠিক আরশে আযীম থেকে সেই পরিমাণ উচ্চতা হচ্ছে আলমে আমর। আরশে আযীম হচ্ছেন আলমে খ্বলক্বের মধ্যে। এর উপরে হচ্ছে আলমে আমর। আর আলমে খ্বলক্ব ও আলমে আমর মিলে হচ্ছে আলমে ইমকান তথা সম্পূর্ণ সৃষ্টি জগত। সুবহানাল্লাহ!

আর এই সমস্ত কিছু সৃষ্টি করার পূর্বেই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি মুবারক করেছেন এবং সৃষ্টি মুবারক করে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে উনার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক এবং মহাসম্মানিত দায়িমী দীদার মুবারক উনাদের মধ্যে রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত কিছু সৃষ্টি হওয়ার পূর্বেই মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক এবং মহাসম্মানিত দায়িমী দীদার মুবারক উনাদের মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!

তাহলে এখন বলার বিষয় হচ্ছে- মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক কোথায় থাকবে? সৃষ্টির মধ্যে, না সৃষ্টির উর্ধ্বে? সৃষ্টির উর্ধ্বে। তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা আপসে আপ সৃষ্টির উর্ধ্বে আছেন। সৃষ্টির মধ্যে তো আসার প্রশ্নোই উঠে না। সমস্ত কিছু সৃষ্টি করার পূর্বে উনারা মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন। তাহলে আলমে ইমকান যে বলা হয়, আলমে খ্বলক্ব ও আলমে আমর, এর উর্ধ্বে উনারা আগে থেকেই। তাহলে উনারা সৃষ্টির মধ্যে আসেন কি করে? উনারা সৃষ্টির উর্ধ্বে তো আগে থেকেই। তাহলে তিনি নীচে আসেন কি করে?

মূলত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য উনাদেরই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে নেয়া এক কাতরা সম্মানিত নূর মুবারক থেকে আরশে আযীম, কুরসী মুবারক, সম্মানিত জান্নাত মুবারক, জাহান্নাম, আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্য, আলো-বাতাস, মাটি-পানি, গাছপালা-তরুলতা, জামাদাত, শাজারাত, হাজারাত, জিন-ইনসান, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত সৃষ্টি জগত, তামাম মাখলূকাত অর্থাৎ আলমে ইমকান তথা আলমে খ্বলক্ব ও আলমে আমর সমস্ত কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মাক্বাম মুবারক, সম্মানিত অবস্থান মুবারক সমস্ত সৃষ্টি জগতের উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এটা হচ্ছেন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক অনন্য বেমেছাল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাজদীদ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি এ বিষয়ে কায়িনাতবাসীকে বিশেষ ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

এ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা নিম্নে পেশ করা হলো-

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৬ই মুহররমুল হারাম শরীফ লাইলাতুল আহাদ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “আলমে খ্বলক্ব ও আলমে আমর মিলে হচ্ছে আলমে ইমকান। আলমে খ্বলক্ব হচ্ছে- যেটা আরশে আযীমের নীচে। অর্থাৎ তাহ্তাছ ছারা বা মাটির নিম্নতম স্তর থেকে আরশে আযীম পর্যন্ত হচ্ছে আলমে খ্বলক্ব। এটা মহান আল্লাহ পাক তিনি ছয় ধাপে সৃষ্টি মুবারক করেছেন।

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

اَللهُ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِـىْ سِتَّةِ اَيّامٍ.

অর্থ: “সেই খ্বলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমানসমূহ (সাত আসমান) এবং সমস্ত যমীন (সাত যমীন) এবং উভয়ের মাঝে যা কিছু আছে, এ সমস্ত কিছু ছয় দিন তথা ছয় ধাপে সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা সিজদাহ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

আবার আরশে আযীম থেকে ঠিক সম উচ্চতা হচ্ছে আলমে আমর। অর্থাৎ তাহতাছ ছারা থেকে আরশে আযীম পর্যন্ত যে পরিমাণ জায়গা ঠিক আরশে আযীম থেকে সেই পরিমাণ উচ্চতা হচ্ছে আলমে আমর। যা খ্বলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম মুবারক হওয়া মাত্রই সৃষ্টি হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন, كُنْ فَيَكُوْنُ অর্থ: ‘হও, হয়ে গেছে।’

আলমে আমর হচ্ছে ফাঁকা জায়গা। আলমে খ্বলক্ব হলো নফ্স, আব, আতেশ, খাক্ ও বাদ্। আর আলমে আমর হলো- ক্বল্ব, রূহ্, সির, খফী এবং আখ্ফা। উপরে ৫টি এবং নীচে ৫টি। আরশে আযীম হচ্ছে আলমে খ্বলক্বের মধ্যে। এর উপরে হচ্ছে আলমে আমর।

আলমে খ্বলক্ব ও আলমে আমর মিলে হচ্ছে আলমে ইমকান তথা সম্পূর্ণ সৃষ্টি জগত। সুবহানাল্লাহ! আর এই সমস্ত কিছুই সৃষ্টি করা হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক কাতরা নূর মুবারক থেকে। সুবহানাল্লাহ!

এখন আরশে আযীমের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক যাহির হয়, সেখান থেকে এটা সারা কায়িনাতে প্রচার-প্রসার হয়। সাধারণভাবে মানুষ মনে করে, আরশে আযীম থেকে মূল বিষয় প্রকাশ পায়। কিন্তু আরশে আযীম যে ফায়দা লাভ করে, এটা কিভাবে লাভ করে? আরশে আযীমের ৭০ হাজার ভাগের একভাগ নূর মুবারক যাহির হলো তূর পাহাড়ে, হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি না’লাইন শরীফ খুলে গেলেন। তাহলে আরশে আযীম ফায়দা লাভ করছে কিভাবে? এটা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে আসে। তাহলে এটা শুধু মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকেই আসে? উনার তরফ থেকে শুধু আসে না। আর আরশে আযীমে যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো, এটা তো একটা তরতীব করা হয়েছে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যে নিসবত-কুরবত মুবারক, নৈকট্য মুবারক সেটা সৃষ্টি জগতের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রমাণ করার জন্য করা হয়েছে। আরশে আযীমকে আলমে খলক্বের শেষ স্তর হিসেবে বুঝানো হয়েছে। সেখানে পৌঁছানো হয়েছে। কিন্তু আসলে এখন যেটা দেখা যাচ্ছে, আমি যেটা দেখতেছি- এর উর্ধ্বে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অবস্থান মুবারকগুলো। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উনাদের তরফ থেকে যে নূর মুবারকগুলো যাহির হচ্ছেন, সেগুলো আরশে আযীমে পড়তেছে। মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে তো আছেই, উনার কুদরত মুবারক যাহির হচ্ছেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারও মু’জিযা শরীফ যাহির হচ্ছেন সেখানে। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উনারা তো আরশে আযীমের অধীনে না। আরশে আযীম উনাদের অধীন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক কাতরা নূর মুবারক দিয়ে আরশে আযীম তৈরী করা হয়েছে। তাহলে উনারা এর অধীন হন কিভাবে? বরং আরশে আযীম উনাদের অধীন, মুহতাজ এবং উনাদের দ্বারাই আরশে আযীম সম্মানিত। শুধু তাই নয়; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূ পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্পর্শ মুবারক-এ যা এসেছেন, প্রত্যেকটাই আরশ, কুরসী, লৌহ, ক্বলম সমস্ত কিছু থেকে লক্ষ কোটি গুণ বেশি সম্মানিত, পবিত্র ও ফযীলতপ্রাপ্ত। আরশ, কুরসী, লৌহ, ক্বলম সমস্ত কিছু উনার এক কাতরা নূর মুবারক দ্বারা তৈরী। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেই বিষয়টিই যেটা দেখা যাচ্ছে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার তো কুদরত মুবারক যাহির হচ্ছেনই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মু’জিযা শরীফ যাহির হচ্ছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তরফ থেকে যেই নূর মুবারক ঝরতেছে, ওটা দিয়ে আরশে আযীম সম্মানিত। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উনাদের অবস্থান তো তার চেয়ে উর্ধ্বে। মহান আল্লাহ পাক তিনি তো কোনো সময়, স্থান, কাল, পাত্রের মধ্যে না। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনিও সময়, স্থান, কাল, পাত্রের মধ্যে না; উর্ধ্বে। কোনো সময়, স্থান, কাল, পাত্রের সাথে নির্দিষ্ট করা ঠিক হবে না। জিসিম মুবারক হিসেবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করেতেছেন, এটা আলাদা বিষয়। হাক্বীক্বত তিনি কোনো সময়, স্থান, কাল, পাত্রের অধীন না। সবকিছুর উর্ধ্বে তিনি। উনার হাক্বীক্বী যে মাক্বাম, সেটা তো কোনো স্থান, কাল, পাত্রের মধ্যে না।

মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমা ও ছিফত দ্বারা যাহির। হাক্বীক্বত তিনি যাহির নন। ইলম ও কুদরত দ্বারা হাযির-নাযির। হাক্বীক্বীত তো মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কায়িনাতের মধ্যেই আছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়টিও ঠিক একই রকম। মহান আল্লাহ পাক তিনি খ্বলিক্ব মালিক রব হিসেবে, আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি মুবারক করার পর উনার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যে রাখেন। সুবহানাল্লাহ! তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত আর কোনো কিছুরই অস্তিত্ব ছিলো না। সুবহানাল্লাহ!

এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْاَنْصَارِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قُلْتُ يَا رَسْوُلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاَبِـىْ اَنْتَ وَاُمِّىْ اَخْبِـرْنِـىْ عَنْ اَوَّلِ شَىْءٍ خَلَقَهُ اللهُ تَعَالـٰى قَبْلَ الْاَشْيَاءِ قَالَ يَا جَابِرُ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اِنَّ اللهَ تَعَالـٰى قَدْ خَلَقَ قَبْلَ الْاَشْيَاءِ نُوْرَ نَبِيِّكَ مِنْ نُّوْرِهٖ فَجَعَلَ ذٰلِكَ النُّوْرُ يَدُوْرُ بِالْقُدْرَةِ حَيْثُ شَاءَ اللهُ تَعَالـٰى.

অর্র্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আরয করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক, দয়া করে আমাকে এ বিষয়ে সংবাদ মুবারক দান করুন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম কোন্ জিনিস সৃষ্টি করেছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কিছুর পূর্বে সর্বপ্রথম আপনার যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী এবং রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক উনাকে অত্যন্ত মুহব্বত মুবারক উনার সাথে সম্মানিত সৃষ্টি মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ইচ্ছা মুবারক অনুযায়ী, তিনি যেভাবে চান সেভাবে ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ, শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাদারেজুন নুবুওওয়াত, ফতওয়ায়ে হাদীছিয়্যাহ ইত্যাদি)

আলমে খ্বলক্ব ও আলমে আমর সমস্ত কিছু সৃষ্টির পূর্বে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি মুবারক করা হয়েছে। তখন তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক এবং মহাসম্মানিত দীদার মুবারক উনাদের মধ্যে ছিলেন। সুতরাং মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন কায়িনাতের কোনো কিছুর মুহ্তায নন, ঠিক তেমনিভাবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত সৃষ্টি জগতের কোনো কিছুর মুহ্তায নন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক এবং মহাসম্মানিত দীদার মুবারক উনাদের মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সকলের নূর মুবারক ঝরে আরশে আযীম একাকার হচ্ছে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

আরশে আযীম হচ্ছে আলমে খ্বলক্বের শেষ সীমানা। এর উপরে হচ্ছে আলমে আমর। এটাও সৃষ্টি জগতের মধ্যে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সম্মানার্থেই সমগ্র কায়িনাত তথা আলমে খলক্ব ও আলম আমর সৃষ্টি করা হয়েছে। তার উর্ধ্বে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সম্মানিত অবস্থান মুবারক। উনাদের থেকে নূর মুবারক ঝরেই সবকিছু হচ্ছে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

কয়েকদিনের মধ্যে আমি যেটা দেখলাম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের থেকে নূর মুবারক ঝরে পড়তেছে। পড়তে পড়তে সেগুলো পড়তেছে আরশে আযীমের মধ্যে। মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক যেমন যাহির হন, এ রকম। সেখান থেকে সারা কায়িনাতে বণ্টিত হয়। মানুষ তো আর এগুলো বুঝবে না।

আরশে আযীম পর্যন্ত? না; আসলে আরশে আযীম পর্যন্ত না। সমস্ত সৃষ্টি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অধীন। উনারা সমস্ত সৃষ্টির উর্ধ্বে। উনারা অনেক উর্ধ্বে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বা’বা শরীফ যেমন একটা ক্বিবলা- এদিক ফিরে নামায পড়তে হয়। অনুরূপভাবে আরশে আযীম হচ্ছে একটা কেন্দ্র, সেখান থেকে সমস্ত কিছু বণ্টিত হয়। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

কুর্সী হচ্ছে একটা যমীন, আরশ হচ্ছে একটা আসন। আসন হিসেবে সেখানে নিয়ামতগুলো বর্ষিত হয়, আর সেখান থেকে কায়িনাতে বণ্টিত হয়। সুবহানাল্লাহ! আরশে আযীমের উপরে যে আলমে আমর রয়েছে, তারও উপরে হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অবস্থান মুবারকগুলো। সুবহানাল্লাহ! আর এটাই স্বাভাবিক। কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের গোলামী করার জন্যই সমস্ত কায়িনাত সৃষ্ট করা হয়েছে।

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। তাহলে মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক কোথায় থাকবে? সৃষ্টির মধ্যে, না সৃষ্টির উর্ধ্বে? সৃষ্টির উর্ধ্বে। তাহলে তো তিনি আপসে আপ সৃষ্টির উর্ধ্বে আছেন। এখানে তো আসার প্রশ্নোই উঠে না।

সমস্ত কিছু সৃষ্টি করার পূর্বে মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যে তিনি ছিলেন। তাহলে আলমে ইমকান যে বলা হয়, আলমে খ্বলক্ব ও আলমে আমর, এর উর্ধ্বে তিনি আগে থেকেই। তাহলে তিনি সৃষ্টির মধ্যে আসেন কি করে?

তিনি সৃষ্টির উর্ধ্বে তো আগে থেকেই। তাহলে তিনি নীচে আসেন কি করে? তাহলে উনার মাক্বাম মুবারক আরশে আযীম পর্যন্ত হয় কি করে?

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য আরশ, কুর্সী, লৌহ, ক্বলম সারা কায়িনাত সৃষ্টি করা হয়েছে। উনার শান-মান প্রকাশের জন্য আরশে আযীম সৃষ্টি করা হয়েছে। তাহলে তিনি আগে থেকেই তো সৃষ্টির উর্ধ্বে। উনার তরফ থেকে আরশে আযীমে নিয়ামত মুবারক যাহির হচ্ছে। আর সেখান থেকে সারা কায়িনাতে ছড়িয়ে পড়ছে। সুবহানাল্লাহ!

আরশ, কুর্সী, লৌহ, ক্বলম উনার সম্মানার্থে সৃষ্টি। তাহলে উনি এগুলোর অধীন হবেন কেনো?

সমস্ত সৃষ্টির উর্ধ্বে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অবস্থান মুবারক। উনাদের কারণেই সমগ্র সৃষ্টি সম্মানিত হয়েছে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা তো ঈমান। উনাদের থেকে সব সৃষ্টি হয়েছে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই ছফর শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান মুবারক সম্পর্কে কিতাবগুলো পড়ে দেখো কি লেখা আছে। তোমাদেরকে সেই কুফরী আক্বীদাহ্ থেকে বাঁচানো হয়েছে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) কুফরীতে ভরা। সেই কুফরীগুলি দূর করে দেওয়া হয়েছে। উনাদের হাক্বীক্বী শান-মান মুবারক প্রকাশ করা হয়েছে। তোমরা যদি না বুঝো, তোমাদেরটা তোমাদের। আমার তো করার কিছু নেই। একজনের বাবা থাকে ৫০ তালায় আর মা থাকে বান্দিদের সাথে! এইটাই নিয়ম নাকি? কিতাবাদিতে এটাই তো দেখা যায়। তোমাদেরকে সঠিক বিষয়টা শিখানো হলো। তোমরা কি শিখলে?

মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এক সাথে করে দিয়েছেন। আর মানুষ এটা পার্থক্য করতে চায়। না‘ঊযুবিল্লাহ! তাহলে ঈমান কোথায়? ঈমান তো শুদ্ধ করা হলো। তোমরা কি শিখলে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। না‘ঊযুবিল্লাহ! উনারাই তো ঈমান। জান্নাত তো উনাদের জন্য কিছুই না। জান্নাত সারা দিন পিছনে ঘুরে কখন উনারা আসবেন। জান্নাত তো উনাদের উপযুক্ত না। উনারা প্রবেশ করলে, উপযুক্ত হবে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আক্বীদাহ্ শুদ্ধ করা হলো। তোমরা এই আক্বীদাহ্ না গ্রহণ করলে, কি করার আছে? তোমাদের আক্বীদাহ্ শুদ্ধ করা হলো। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত সৃষ্টির উর্ধ্বে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছে কুদছী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,

خَلَقْتُكَ وَاَهْلَ بَيْتِكَ مِنَ النُّوْرِ الْاَوَّلِ وَفِـىْ رِوَايَةٍ اُخْرٰى مِنَ الْقِسْمِ الْاَوَّلِ.

অর্থ: “আমি আপনাকে এবং আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে প্রথম নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি করেছি।”

অপর বর্ণনায় রয়েছে, “প্রথম ভাগ নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি করেছি।”

যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি করা হলো, তখন কিছুই ছিলো না। তাহলে উনারা কোথায় ছিলেন? মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন। এখনও মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যে আছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

উনাদের শান-মান তো আলাদা। উনারা কুদরতময় সৃষ্টি। আবার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যেই আছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

সাধারণত ওলী আল্লাহ উনাদের ব্যাপারে বলা হয়েছে-

اِنَّ اَوْلِـيَائِـىْ تَـحْتَ قَبَائِـىْ لَا يَعْرِفُهُمْ غَيْـرِىْ.

অর্থ: “নিশ্চয়ই ওলীআল্লাহগণ উনারা আমার ক্বাবা’ তথা কুদরতী জুব্বা মুবারক উনার মধ্যে অবস্থান করেন। আমি ব্যতীত উনাদেরকে আর কেউ চিনে না।” (তাফসীরে আলূসী)

একজন ওলী আল্লাহ যদি কুদরতী জুব্বার মধ্যে থাকেন, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা কোথায় আছেন? বুঝার জন্য সবচেয়ে বড় বিষয় যেটা, সেটা হলো- উনাদেরকে কখন সৃষ্টি করা হলো? যখন কিছুই ছিলো না। তাহলে বুঝা যায়, উনারা সৃষ্টির উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সৃষ্টির উর্ধ্বে অর্থ হচ্ছে- এরকম যে, অর্থাৎ যা কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে, এ সব কিছুর উর্ধ্বে উনারা। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) উনারাই প্রথম সৃষ্টি। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) উনাদের থেকেই সমস্ত কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে। তাহলে উনারা নিশ্চয়ই এ সমস্ত সৃষ্টির উর্ধ্বে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন-

اَوَّلُ مَا خَلَقَ اللهُ نُوْرِىْ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْئٍ مِّنْ نُّوْرِىْ.

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক সৃষ্টি মুবারক করেন এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাকতূবাত শরীফ, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল ইনসানুল কামিল, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

তাহলে নিশ্চয়ই উনারা এই সমস্ত সৃষ্টির উর্ধ্বে। তাহলে উনাদের ফযীলত কতটুকু? উনাদের মাক্বাম মানুষ কি বর্ণনা করবে? উনাদের মাক্বামটা কোথায়? মানুষ জানে সেটা? মানুষ জানে না। মকতুবাত শরীফে মাক্বাম বর্ণনা করা আছে। আসলে উনি যাহিরীভাবে যেটা দেখেছেন, উনি সেটাই বর্ণনা করেছেন। হাক্বীক্বত কিন্তু এ রকম না। যাহের এক রকম, বাত্বেন আরেক রকম। উনাদের বাত্বিনী যে বিষয়টা- এটা উনারা আরশে আযীম তো অবশ্যই; সমস্ত সৃষ্টি জগত অর্থাৎ আলমে খলক্ব ও আলমে আমর এ সমস্ত কিছুর উর্ধ্বে উনাদের অবস্থান মুবারক। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

আর এখানে দুটি ত্ববক্বা আছে। একটি হলো- উনাদের ২৩ জনের অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা ২ জন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ১৩ জন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা ৮ জন এই মোট ২৩ জনের যে ত্ববক্বা, একটা বেলায়েত, বেষ্টনী। এরপরে ত্বহারত ও ছমাদিয়াতের আরেকটা বেষ্টনী আছে। দুটি আছে। ওখান থেকে নিসবত প্রাপ্ত হয়ে এখানে আসে। আর এখানে যাঁরা আছেন, উনারা তো আছেনই। বিশেষ করে হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ১০ জন নাতী-নাতনী আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সরাসরি সম্পৃক্ত। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) উনাদের থেকে আবার বাকিরা। এই ১০ জন আলাদা।

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তো আছেনই আলাদা। মহান আল্লাহ পাক তিনি আলাদা আছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা ২ জন আছেন। এরপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ১৩ জন। তারপর উনাদের থেকে যাঁরা আসছেন অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা মোট ৮ জন। যিনি ১২তম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার থেকে ১ জন অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি। উনার সিলসিলা ওই পর্যন্তই। এদিকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে আসছেন ৭ জন- ১. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম, ২. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ৩. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম, ৪. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম, ৫. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম, ৬. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ্ আলাইহাস সালাম এবং ৭. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ্ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! এই ৭ জনের মধ্যে ৩ জনের আওলাদ আছেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার ৩ জন আওলাদ। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার ১ জন। আর সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবি‘য়াহ্ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার ৬ জন। এই প্রথম বেষ্টনী থেকে এটা নামছে। নেমে উনারা ৬ জন, ১ জন এবং ৩ জন মোট ১০ জন। এরপরের থেকে যেটা আসছে, সেটা এরপরে আবার এটা হলো একটা বেষ্টনী শেষ হয়ে গেলো। এরপরে হচ্ছে ত্বহারত, ছমাদিয়াতের মাক্বাম যেটা বলা হয়। ঐটা একই মাক্বাম; তবে ঐটা হলো উচ্চ মাক্বাম। এইটা হলো শেষ মাক্বাম। ঐটা হলো আগের মাক্বামটা। এখানে এই ১০ জন আওলাদ। মানে উনাদের ৩ জনের যে ১০ জন আওলাদ, উনারা এখানে আছেন। উনারা তো আবার বিশেষ করে সবাই ছাহাবিয়াতের মাক্বামে এই ১০ জন। ১০ জন মানে- সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম উনারা যে ৬ জন, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ৩ জন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার ১ জন। উনারা আবার ছাহাবীও। যেহেতু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করছেন উনারা। সে হিসেবে উনারা সংশ্লিষ্ট। এরপরে যেটা আছে, সেটার মধ্যে আবার ত্বহারত এবং ছমাদিয়াতের মাক্বামটা এর আগেরটা। এরপরে দ্বিতীয় মাক্বামটা এটা। এটা খাছ উনাদের জন্য। এখন উনারা তো সৃষ্টির উর্ধ্বে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) সৃষ্টির উর্ধ্বে। অর্থাৎ সমস্ত কিছু সৃষ্টি করার পূর্বে উনাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর উনাদের থেকে সব কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি করা হলো, তখন কিছুই ছিলো না। উনারা কুদরতময় সৃষ্টি। আবার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যে আছেন। তাহলে উনাদের মাক্বাম মুবারক কোথায়? সব কিছুর উর্ধ্বে। উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সব। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) কারণ উনাদের থেকেই তো সমস্ত কিছু সৃষ্টি। অন্য কারো থেকে তো সৃষ্টি করা হয়নি। উনাদের থেকে নূর মুবারকের একটা অংশ নিয়ে সমস্ত কায়িনাত সৃষ্টি করা হয়েছে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) নূর মুবারক ভাগ করা হয়েছে না? প্রথম এক ভাগ। সেখান থেকে চার ভাগে। আবার এক ভাগ চার ভাগ। আবার এক ভাগ চার ভাগ। এভাবে করতে করতে সমস্ত কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে। উনাদের থেকেই তো আনা হয়েছে। তাহলে তো উনারা সব কিছুর উর্ধ্বে। মানুষ তো এটা বুঝেনি। এটা কি বুঝতে পেরেছে মানুষ? বুঝতে পারেনি।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

কাজেই, স্বয়ং যিনি খ্বলিক্ব মালিক রব মহান তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানিত মাক্বাম মুবারক, সম্মানিত অবস্থান মুবারক সমস্ত সৃষ্টি জগতের উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সর্বোচ্চ বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্, হাক্বীক্বী ছহীহ সমঝ ও হুসনে যন মুবারক নছীব করুন। আমীন!

-মুফতী মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন ইবনে ছিদ্দীক্ব।

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং নিজেই সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেন

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুল ফারীক্বাইন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজেই নিজের বিলাদত শরীফ পালন করে খুশি প্রকাশ করেন

হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের খিলাফতকালে নাবিইয়ুর রহমাহ, নাজিইয়ুল্লাহ, নূরুম মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করেছেন এবং এ উপলক্ষে ব্যয় করার ফযীলতও বর্ণনা করেছেন

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেছেন

বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয হওয়ার প্রমাণ