গো-আযম, মইত্যা, মইজ্জ্যা, বাংলার ইহুদী ওরফে সাঈদী তথা জামাতীরা শুধু রাজাকার আর আল বাদরই নয় ছহীহ হাদীছ শরীফের আলোকে ওরা মিথ্যাবাদী দাজ্জাল

সংখ্যা: ১৬৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

হাদীছ শরীফে ওদের দাজ্জাল বলা হয়েছে। ওরা ধর্মব্যবসায়ী। মূল দাজ্জাল আসার আগে ওরা আসবে শত শত।

রাজাকার আল বাদর, গো-আযম, মইত্যা, মইজ্জ্যা, বাংলার  ইহুদী ওরফে সাঈদী তথা  গোটা জামাতী, দেওবন্দী, খারেজী এরা হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কায্যাব তথা মিথ্যাবাদী দাজ্জাল।

হাদীছ শরীফে বর্ণিত আলামতের সাথে ওদের হুবহু মিল। হাদীছ শরীফে ওদের আলামত সম্পর্কে বলা হয়েছে, ওরা এমন সব কথা বলবে যা তোমরা শোননি এমনকি তোমাদের বাপ-দাদা চৌদ্দপুরুষও শোনেনি।

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বাংলাদেশের প্রায় ৯৫ ভাগ জনগণ জানে যে ৭১ এ জামাতীরা রাজাকার আল বাদর নামে এদেশে যে নির্মম খুন, লুণ্ঠন ও পৈশাচিক কায়দায় এদেশের মা বোনদের সম্ভ্রম লুণ্ঠন করেছে। কিন্তু সম্প্রতি ইংরেজি পত্রিকা রেমঠণ এর সাথে সাক্ষাতকারে মইত্যা রাজাকার ৭১ এ তাদের অপকর্মের কথা  সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। (সূত্র দৈনিক আমাদের সময় ৩ আগস্ট)

যা আজকের প্রজন্ম কোনদিন শুনেনি তাদের বাপ দাদারাও শুনেনি। এক্ষেত্রে তারা যে কুখ্যাত মিথ্যাবাদী দাজ্জালের তবকায়ই পড়ে।

হাদীছ শরীফের বর্ণনা অনুযায়ী ওদেরকে নির্দ্বিধায়, নির্বিঘেœ, নিঃসকোচে,  নিশ্চিন্তে মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বলে চিহ্নিত করা যায়। গো-আযম, মইত্যা রাজাকার, মইজ্জ্যা, বাংলার ইহুদী ওরফে সাঈদীর ৭১ এ অপকর্ম অস্বীকারের বিপরীতে নিম্নে ওদের অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরা হলো। যদ্বারা পাঠক সহজেই মূল্যায়ন করতে পারবে যে সত্যিই ওরা দাজ্জালের কত ঘনিষ্ঠজন। কি রকম খাছ চেলা তথা মিথ্যাবাদী দাজ্জাল।

৩ এপ্রিল গভর্ণর জেনারেল টিক্কাখানের সাথে সাক্ষাত করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন জ্ঞাপন করেন গোলাম আযম।

৭ এপ্রিল সংবাদপত্রে এক বিবৃতিতে গোলাম আযম বলেন, সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের দেখামাত্র খতম করা হবে।

৮ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর আমীর গোলাম আযম ও সাধারণ সম্পাদক এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে। ভারতীয় বা পাকিস্তানবিরোধী  এজেন্ট বা অনুপ্রবেশকারীদের যেখানেই দেখা যাওয়া যাবে, দেশপ্রেমিক পূর্ব পাকিস্তানীরা তাদের নির্মূল করবে।

১০ এপ্রিল সামাজিকভাবে বিরুদ্ধাচরণের জন্য শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। গোলাম আযম শান্তি কমিটির শীর্ষ সদস্য হিসেবে যোগ দেন।

১২ এপ্রিল ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তি কমিটি পরিকল্পিত মিছিলে গোলাম আযম নেতৃত্ব দেন এবং মিছিল শেষে তিনি পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করে।

১২ এপ্রিল ঢাকায় ছাত্র সংঘ (আই সি এস) নেতা মতিউর রহমান নিজামী, মোহাম্মদ ইউনুস, নুরুদ্দিন ইসলাম, শাহ জামাল চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, স্বাধীন বাংলা আমাদের গোলামে পরিণত করবে।

১৫ এপ্রিল জামাতে ইসলামী মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম পাকিস্তানী সৈন্যদের গ্রামে, গিয়ে দুস্কৃতকারীদের (মুক্তিবাহিনী) আক্রমণ করার পরামর্শ দেয়।

২২ এপ্রিল ইসলামী ছাত্র সংঘ নেতা মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে জামালপুরে প্রথম আলবদর বাহিনী গঠিত হয়।

২২ এপ্রিল দৈনিক সংগ্রামে লেখা হয়, মাননীয় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও টিক্কা খানের সময়উপযোগী পদক্ষেপের জন্য পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে।

২৩ এপ্রিল দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনী ধরার জন্য বাড়ি বাড়ি তল্লাসী করার পরামর্শ দেয়।

১০ এপ্রিল একই পত্রিকায় লেখা হয়, যারা পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ করেছিল তাদের পাকিস্তানে জায়গা হবে না।

১ মে দৈনিক সংগ্রামে লেখে, দেশের শান্তির জন্য দুস্কৃতকারীদের (মুক্তিবাহিনী) নির্মূল করা একান্ত প্রয়োজন।

৪ মে মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের ধরিয়ে দেবার জন্য দৈনিক সংগ্রাম বিজ্ঞাপন প্রচার করে এবং বলে, এটা হবে ঈমানী দায়িত্ব।

৮মে দৈনিক সংগ্রামে লেখা হয় শেখ মুজিব ২৬ মার্চ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলা কায়েমের পরিকল্পনা এটেছিলেন। সেনাবাহিনী তা জানতে পেরে ২৫ মার্চ হঠাৎ আক্রমণ করে এই পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়ে আমাদের পাকিস্তানকে বাঁচিয়েছে।

১৯ মে পাকিস্তান জামাতের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক ও শ্রম সম্পাদক মোহাম্মদ শফিউল্লাহ এক যুক্ত বিবৃতিতে স্বদেশের পবিত্রতম মাটি থেকে পাকিস্তানবিরোধীদের উৎখাত করতে আহ্বান জানান। তারা বলেন, আল্লাহর মেহেরবানীতে পাকিস্তানবিরোধী দুষ্কৃতকারী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ত্রাসের রাজত্ব খতম হয়েছে এবং পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে।

২৪ মে দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মসমর্পনের আহ্বান জানায় এবং বলে, গেরিলাগিরির নামে মুক্তিবাহিনীর তৎপরতা পাকিস্তান সেনাবাহিনী তছনছ করে দেবে।

২৭ মে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার দেয়া হবে বলে দৈনিক সংগ্রামে ঘোষণা দেয়। একই সাথে মুক্তিবাহিনী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচারের আবেদন জানায়।

২৮ মে মুক্তিবাহিনী নির্মূলের জন্য অস্ত্রশস্ত্র দাবী করে এবং বেসামরিক পোশাকে একটি বাহিনী গঠনের পরামর্শ দেয়।

১৩ জুন গেরিলাগিরির নামে যেসব দুষ্কৃতকারী দেশের শান্তি ব্যাহত করছে, সামরিক কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে প্রয়োজনীয় হাতিয়ার নিয়ে গেরিলা পদ্ধতিতেই দুষ্কৃতকারীদের (মুক্তিযোদ্ধা) নির্মূল করার জন্য গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন করতে হবে বলে দৈনিক সংগ্রামে লেখা হয়।

১৫ জুন দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনীকে খতম করার জন্য কেবল সেনাবাহিনীর দিকে না তাকিয়ে থেকে  পাকিস্তানীদের পথ বেছে নিতে বলা হয়।

১৭ জুন গোলাম আজম বলেন, দুষ্কৃতকারী (মুক্তিযোদ্ধা) এখনও ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত রয়েছে। এদের পাকড়াও করা গেলে তবেই পরিস্থিতি দমন করা যাবে।

২০ জুন গোলাম আযম লাহোরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, যারা প্রকাশ্যে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার আন্দোলন শুরুকরেছিল, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছেনা। সেনাবাহিনী সকল দুষ্কৃতকারী উৎখাত করেছে। মুক্তিবাহিনীকে মোকাবেলার জন্য সরকারের কাছে অস্ত্র সরবরাহের জন্য তিনি দাবি জানান।

২২ জুন এক সাক্ষাৎকারে গোলাম আযম বলেন, তারা কখনোই পাকিস্তানকে ত্যাগ করতে পারবেন না। প্রয়োজনে কোরবানী দেয়ার জন্যেও তার কর্মীরা প্রস্তুত রয়েছে।

একই দিন গোলাম আযম তার দলের এক কর্মীসভায় বলেন, বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগ কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানে সৃষ্ট গোলযোগ ১৮৫৭ সালের বাংলা বিদ্রোহের চেয়েও দশগুণ বেশি শক্তিশালী ছিল। ওদিনই তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে যেসব দল আন্দোলন করছে তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করার আহ্বান জানান।

২৩ জুন -পূর্ব পাকিস্তানী ভাইয়েরা সর্বদাই পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে বাস করবে।

৩০ জুন গোলাম আযম ও তার রাজনৈতিক পূর্বসুরি বা গুরু মাওলানা আবুল আলা মওদুদী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সংসদ সদস্যদের সদস্যত্ব বাতিল ঘোষণা করায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে অভিনন্দন জানান।

এদিন দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করাকে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা বলে অভিহিত করে।

৪ জুলাই ইসলামী ছাত্র সংঘের পরিচালনয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে রাজাকারদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী যুদ্ধে প্রশিক্ষণ শুরু হয়।

একই দিন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ইহুদী ষড়যন্ত্র বলে দৈনিক সংগ্রামের এক উপসম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়।

৮ জুলাই পাকিস্তান জামাতের জেনারেল সেক্রেটারি আব্দুল খালেক এক বিবৃতিতে বলেন, সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী ও স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে গ্রাস করার ভারতীয় চক্রান্ত জনগণ পুরোপুরিভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানের শত্রু দুষ্কৃতকারী বলে আখ্যায়িত করেন পাকিস্তান জামাতের নেতা মাওলানা আবুল আলা মওদুদী।

জামাতে ইসলামী মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায়। এদিন সংগ্রাম মন্তব্য করে, পাকিস্তান টিকে থাকার জন্য এসেছে।

৯ জুলাই জামাতে ইসলামী এবং দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনীকে দুষ্কৃতকারীর সাথে ডাকাত বলে অভিহিত করতে শুরু করে।

১৬ জুলাই মহান ভাষা আন্দোলনের স্মরণে নির্মিত ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ভেঙে ফেলায় দৈনিক সংগ্রাম এবং জামাত নেতারা অভিনন্দন জানায়। ওদিন দৈনিক সংগ্রাম লিখেছে, যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে পাকিস্তানপন্থিরা তাদের কোনদিনই ক্ষমা করবে না।

১৭ জুলাই মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের দেশদ্রোহী বলে আখ্যায়িত করে দৈনিক সংগ্রাম।

এ মাসে বরিশালে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের সভায় এডভোকেট আব্দুর রহমান বিশ্বাস, ব্যারিস্টার আখতার উদ্দিন আহমদ, মেজর আফসারউদ্দিন প্রমুখ নেতারা মুক্তিযোদ্ধাদের দুষ্কৃতকারী ও বিদেশী চর আখ্যা দিয়ে এদের উৎখাত করার আহ্বান জানান।

১৯ জুলাই পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞের সচিত্র প্রতিবেদন ব্রিটিশ টেলিভিশনে পরিবেশিত হবার পর দৈনিক সংগ্রাম লেখে, এগুলো ঘুর্ণিঝড়ের ছবি।

২ আগস্ট জামাতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের এক ছাত্র মিছিলে বলেন, মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে জিততেই হবে।

৮ আগস্ট গোলাম আযম দৈনিক সংগ্রামে এক উপসম্পাদকীয়তে লেখেন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে টিক্কা খানের বীরত্বের কথাশুনে তাকে এক নজর দেখার ইচ্ছা প্রবল হচ্ছিল। তাঁর ছবি আমার মানসপটে বিশেষ মর্যাদার সাথে আকাঁ রয়েছে।

১২ আগষ্ট গোলাম আযম বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থকদের দুশমন আখ্যা দিয়ে তন্নতন্ন করে খুঁজে বের করার আহ্বান জানান।

 একই দিন জামাত নেতারা ডাক্তার মালেকের পুতুল সরকারে যোগ দেন।

১৪ আগস্ট গোলাম আজম বলেন, জাতি যে চরম সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে এবারের স্বাধীনতা দিবস পালন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের আদর্শের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতাই জাতীয় সঙ্কটের মূল কারণ।

১৮ আগস্ট গোলাম আজম লাহোরে বলেন, ভারত দুষ্কৃতকারীদের সাহায্য করছে। তাই পাকিস্তানের উচিত কালবিলম্ব না করে ভারত আক্রমণ করা এবং আসাম দখল করা।

২২ আগস্ট গোলাম আযম বলেন, যারা জামাতে ইসলামীকে দেশপ্রেমিক সংস্থা নয় বলে আখ্যা দিচ্ছে তারা হয় জানে না বা স্বীকার করার সাহস পায় না যে, ইসলামের আদর্শ তুলে ধরা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরোধিতা করার জন্যই কেবল পূর্ব পাকিস্তানে জামাতের বিপুল কর্মী দুষ্কতৃকারীদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে।

২৬ আগস্ট পেশোয়ারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে গোলাম আযম বলেন, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানী দুষ্কৃতকারীদের হাত থেকে রক্ষা করেছে। এই দুষ্কৃতকারীদের ধ্বংস করারজন্য সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে হবে।

২৮ আগস্ট গোলাম আজম বলেন, শুধুমাত্র ইসলামী আদর্শই পাকিস্তানের দুই অংশের ঐক্য বজায় রাখতে পারে। তিনি পাকিস্তানের সংহতি রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।

৩১ আগষ্ট গোলাম আজম বলেন, বেআইনী আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচিত ও সরকার কর্তৃক বহাল ঘোষিত ৮৮জন সদস্যের অধিকাংশই পাকিস্তানে নেই।

বর্তমান মুহূর্তের আশু প্রয়োজন হচ্ছে, পূর্ব পাকিস্তানে দেশপ্রেমিক ও ইসলামপ্রিয় লোকজনের হাত শক্তিশালি করা। এসব লোক পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাপকভাবে সাহায্য করছে। এবং দুষ্কৃতকারীদের রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে ও বিদ্রোহীদের দমনে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনকে পূর্ণ সহযোগিতা দান করছে। পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসছে।

১ সেপ্টেম্বর গোলাম আজম বলেন, কোন ভাল মুসলমানই তথাকথিত বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থক হতে পারে না। পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মূল করার জন্যে একমনা ও দেশপ্রেমিক লোকেরা একত্রে কাজ করে যাচ্ছেন। রাজাকাররা খুবই ভালো কাজ করছেন।

২ সেপ্টেম্বর জামাতে ইসলামী এবং দৈনিক সংগ্রাম টিক্কা খানের বিদায়ে এবং গভর্ণর ডাক্তার মালেকের নিয়োগে লেখে, টিক্কাখান কথা বলতেন কম এবং কাজ করতেন বেশি। তিনি বীরত্বের সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পাকিস্তান একদিনও টিকে থাকতো না। এদেশের মানুষ কোনদিনও তাকে ভুলবেনা এবং তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেনা। ডাক্তার মালিককে অভিনন্দন এবং সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়।

৬ সেপ্টেম্বর জামাতের ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক এক বিবৃতিতে বলেন, ৬ সেপ্টেম্বর আমাদের পাকিস্তানের সংহতি ও অখ-তার জন্য শপথ নিতে হবে।

ঐদিন মতিউর রহমান নিজামী বলেন, ছাত্রসংঘ কর্মীরা রক্ত দিয়ে পাকিস্তানের প্রতিইঞ্চি জমি রক্ষা করবে।

১৪ সেপ্টেম্বর নিজামী বলেন, সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের খতম করার আহ্বান জানান।

১৬ সেপ্টেম্বর মতিউর রহমান নিজামী বলেন, দুনিয়ার কোন শক্তি পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারবেনা। ১৭ সেপ্টেম্বর গভর্ণর ডাক্তার মালেক মন্ত্রীসভার ১০জনের মধ্যে ২ জন জামাতী নেতা আব্বাস আলী খান এবং এ কে এম ইউসুফ শপথ গ্রহণ করেন।

একই দিন গোলাম আযম রাজাকারদের মনোবল শক্ত করার জন্য রাজাকার শিবির পরিদর্শন করেন।

২০ সেপ্টেম্বর ডাক্তার মালেক মন্ত্রীসভাকে গোলাম অভিনন্দন জানান।

২৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রীসভাকে জামাতে  ইসলামী এক সম্বর্ধনা দেয়। সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে গোলাম আযম বলেন, পাকিস্তানই যদি না থাকে তাহলে জামাত কর্মীদের বেঁচে থেকে লাভ নেই।

১১ অক্টোবর জামাত নেতারা রাজাকার-আল বাদরদের ভারী অস্ত্রশস্ত্র দাবি করে বলে, অন্যথায় মুক্তিবাহিনী দমন করা যাবেনা।

৮ অক্টোবর পাকিস্তান জামাতের প্রধান মাওলানা মওদুদী বলেন, পাকিস্তান রক্ষা পেলে ইসলাম রক্ষা পাবে। কেননা, পাকিস্তানই বিশ্বে ইসলামের সবচেয়ে বড় দুর্গ।

১৮ অক্টোবর দৈনিক সংগ্রাম বলে, যারা পাকিস্তানের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না, তারা যেন এদেশ ছেড়ে চলে যায়।

২০ অক্টোবর দৈনিক সংগ্রামে লেখা হয়, জাতি কর্তৃক গোলাম আযমের গলাধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

৭ নভেম্বর দৈনিক সংগ্রামে লেখা হয়, মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূলে হয় গাজি, নয় শহীদ হওয়ার শপথ নিতে হবে।

৮ নভেম্বর দৈনিক সংগ্রাম লেখে, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল খরচ ইসরাইল বহন করছে। মুক্তিবাহিনীকে ট্রেনিংও দিচ্ছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী। ইহুদিরা মুক্তিবাহিনীকে অস্ত্রশস্ত্র-টাকা পয়সাও দিচ্ছে।

১০ নভেম্বর জামাত নেতা মাওলানা আব্দুর রহিম গভর্ণর ডাক্তার মালেকের সাথে সাক্ষাত করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এ ব্যাপারে তার দল সরকারকে সব রকম সাহায্য সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

১২ নভেম্বর দৈনিক সংগ্রাম খোলাখুলিভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যার পরামর্শ দেয়। এদিন লেখা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তর থেকে যারা মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করছে তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে উৎখাত করতে হবে। এটা যতই বিলম্ব হবে ততই পাকিস্তানের ক্ষতি হবে।

১৬ নভেম্বর মতিউর রহমান নিজামী এক নিবন্ধে বলেন, পাকিস্তান হচ্ছে আল্লাহর ঘর।

২৪ নভেম্বর গোলাম এক বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তানকে ভারত আক্রমণের আহ্বান জানান এবং রাজাকার-আলবদরদের উন্নতমানের স্বয়ংক্রীয় অস্ত্রে সজ্জিত করার আহ্বান জানান।

কুরআন শরীফে ধর্মব্যবসায়ীদের প্রসঙ্গে এরশাদ হয়েছে, তোমরা অল্পমূল্যে আল্লাহ পাক-এর আয়াত শরীফকে বিক্রী করোনা।

এদের সম্পর্কে আরো ইরশাদ হয়েছে, তার চেয়ে অধিক জালিম কে? যে আল্লাহ পাক-এর প্রতি মিথ্যারোপ করে

উপরোক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা আল্লাহ পাক সম্পর্কে মিথ্যা বলতেও ধর্ম ব্যবসায়ীদের ঠেকেনা। সামান্য মূল্যের পরিবর্তে আল্লাহ পাক-এর আয়াত শরীফকে বিকৃত ও বিক্রী করতেও তাদের কুণ্ঠা হয়না। নিজেদের বারবার বিক্রি করতেও তাদের  সংকোচ হয়না। এটাই তাদের চিরন্তনত খাছলত যার সবটুকুই পুরোপুরি প্রমাণিত করেছে আল বদর, রাজাকার,  জামাতীরা।

কাজেই শুধু রাজাকার, আল বাদর হিসেবেই এদের পরিচয় শেষ নয় বরং ইসলামের দৃষ্টিতে এদের বিশেষ পরিচয় হল এরা মিথ্যাবাদী দাজ্জাল। যে দাজ্জাল আবহমানকাল ধরে মুসলিম শিশু থেকে সবার কাছেই অব্যক্ত ঘৃণা, শ্লেষের পাত্র, অস্পৃশ্য বলে প্রতিভাত। সব মুসলমানের কাছে রাজাকার জামাতীরাও ঠিক তাই।

-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮

‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’- একটি সূক্ষ্ম ও গভীর ষড়যন্ত্রের প্রক্রিয়া অথচ নিশ্চুপ তথাকথিত খতীব, মহিউদ্দীন, আমিনী ও শাইখুল হাদীছ গং তথা তাবত ধর্মব্যবসায়ীরা- (১)

মওদুদীর নীতি থেকেও যারা পথভ্রষ্ট সেই জামাত- জামাতীদের জন্যও ভয়ঙ্কর মুনাফিক॥ আর সাধারণের জন্য তো বলারই অপেক্ষা রাখেনা

প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২