প্রসঙ্গ: ভারতের মুসলিম নাম পরিবর্তন

সংখ্যা: ২৯৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ’ রাষ্ট্র দাবীদার ভারতে বেশ ক’বছর ধরে বিভিন্ন এলাকা ও স্থাপনার মুসলিম নাম পরিবর্তন করে হিন্দু নাম দেয়া হচ্ছে। হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সরকার ক্ষমতায় আসার পর যেন নাম পরিবর্তনের প্রতিযোগিতা চলছে। সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশের (আল্লাহাবাদ) এলাহাবাদের নাম পরিবর্তন করে প্রয়াগরাজ রাখা হয়েছে। এলাহাবাদ উত্তর প্রদেশের একটি ঐতিহাসিক শহর। ১৬ শ’ শতাব্দীতে দিল্লির মুঘল সম্রাটরা এই শহরের নাম রেখেছিলেন এলাহাবাদ। প্রায় ১০ লাখ লোকের বাস এখানে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক বৈঠক ও সংগ্রামের স্মৃতি বহন করে চলেছে এই শহর। এভাবে বিভিন্ন এলাকার শত শত বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যও নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে।

কট্টরপন্থী হিন্দু ধর্মীয় নেতারা সম্প্রতি ফয়জাবাদ জেলার নাম পরিবর্তন করে অযোধ্যা রেখেছে। ১৯৯২ সালে এ অযোধ্যাতেই উগ্রপন্থী হিন্দুরা মুঘল আমলে নির্মিত বাবরি মসজিদ ভেঙেছিল। এর ফলে সমগ্র ভারতজুড়ে ধর্মীয় দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। যাতে নিহত হয় হাজার হাজার মানুষ। বিজেপি সরকার এখন উত্তর প্রদেশের আগ্রা জেলার নামও পরিবর্তন করতে যাচ্ছে। এখানেই অবস্থিত বিশ্ববিখ্যাত তাজমহল। এ ছাড়াও পাল্টে ফেলা হচ্ছে গুজরাটের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহমেদাবাদের নামও।

মুসলিম নাম ‘আহমেদাবাদ’ পরিবর্তন করে রাখা হচ্ছে অ্যামদাবাদ। আসাম রাজ্যের বাংলাভাষী বরাক উপত্যকা। বছর কয়েক আগে সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, নাম আসাম ইউনিভার্সিটি। শিলচর শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে যে স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত, তার নাম দরগাকুনা। হজরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সঙ্গী ৩৬০ আউলিয়ার মধ্যে একজন দরবেশ ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে সেখানে বসতি স্থাপন করেছিলেন। এ কারণে, তার স্মৃতিধন্য এলাকাটির নাম হয়েছে দরগাকুনা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এলাকার ডাকঘরটির নামও ছিল দরগাকুনা। প্রায় ২০-২২ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এলাকাটির যখন গুরুত্ব বেড়ে গেল, তখন ডাকঘরটির নামও পাল্টে দেয়া হয়। ‘দরগাকুনা’ হয়ে গেল ‘দুর্গাকুনা’। এটা পরিষ্কার, কাজটি করা হয়েছে সরকারিভাবে। বিষয়টি প্রথম ধরা পড়ার পর স্থানীয় লোকজন যখন নাম-বিকৃতির প্রতিবাদ করলেন, বলা হলো ‘ভুল হয়ে গেছে, সংশোধন করা হবে’। কিন্তু ভুল আর সংশোধন করা হয়নি এবং এ জন্য কোনো উদ্যোগই নেয়া হচ্ছে না।

কিছু দিন আগে উত্তর প্রদেশের ঐতিহ্যবাহী মুঘলসরাই রেলস্টেশনের নাম পাল্টে রাখা হয় হিন্দ্ত্বুবাদী দীনদয়ালের নামে। মুসলিম শাসক আওরোঙ্গজেব সড়কের নামও করা হয় পরিবর্তন। সম্প্রতি ভারতের রাজস্থানে আটটি গ্রামের মুসলিম নাম পরিবর্তন করে হিন্দুয়ানী নাম দেয়া হয়েছে। রাজস্থান রাজ্যের বারমের জেলার ‘মিয়া কা বড়া’ গ্রামের নাম বদল করে করা হয়েছে ‘মহেশপুর’। রাজ্যের অপর একটি গ্রামের ‘ইসমাইলপুর’ নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘পিচানবা খুর্দ’। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এমন আরো ছয়টি গ্রামের নাম বদলানো হয়। এগুলোর বেশির ভাগই ছিল মুসলিম নাম। গত ১ জুন আটটি গ্রামের নাম পরিবর্তনের আবেদন মঞ্জুর করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। হরিয়ানা রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত ছোট্ট গ্রাম মরোরার প্রবেশমুখে বিশাল একটি বিলবোর্ডে হিন্দি ও ইংরেজিতে লেখা ‘ট্রাম্প গ্রামে স্বাগতম’। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাসিমুখের ছবি দেখা যায়। উত্তর প্রদেশের আলিগড় জেলায় বিভিন্ন স্থানে ‘আলিগড়’ শব্দের স্থানে লেখা হচ্ছে ‘হরিগড়’।

মধ্যপ্রদেশের আজমগড়কে বলা হচ্ছে ‘আরইয়মগড়’। মির্যাপুরকে পরিবর্তন করে লেখা হচ্ছে ‘মিরজাপুর’। স্থানটিতে নাকি হিন্দুদের দেবী মিরজা বাস করতো। লখনৌ শহরের প্রসিদ্ধ ‘বেগম হজরত মহল’ পার্ককে বলা হচ্ছে ‘উর্মিলা বাটিকা’। মুসলিম ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন নাম পরিবর্তনের কাজ অতীতেও হয়েছে সুচতুরভাবে। যেমন- পশ্চিমবঙ্গের মেদিনিপুর একসময় ছিল মদিনাপুর। পরে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে নামটিকে বিকৃত করা হয়েছে। হুসাইন সাগর নামক যে বিখ্যাত হ্রদটি সারা হায়দরাবাদ শহরের পানির প্রয়োজন মেটায়, তাকে এখন বলা হয় ‘বিনায়ক সাগর’। কারণ, কোনো এক হিন্দু নাকি বলেছে, তাদের পৌরাণিক দেবতা গণেশের মূর্তিকে এ সাগরে ডুবিয়ে রাখা হয়েছিল। এমনকি ‘হায়দ্রাবাদ’ শহরটির নাম পরিবর্তন করে ‘ভাগ্যনগর’, ‘ফয়যাবাদকে’ সাকেট এবং লখনৌকে লক্ষণপুর নামকরণ ভারত সরকারের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে। হয়তো কয়েক বছরের মধ্যে ভারতে মুসলমানদের ঐতিহ্যবাহী কোনো স্মৃতি অবশিষ্ট থাকবে না। (সূত্র : ইন্ডিয়ান টাইমস, অ্যারাবিয়া জার্নাল, বিবিসি, বিভিন্ন দৈনিক)

অপরদিকে আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় মুসলিম বা ইসলামি নামও বিয়োজন হয়েছে। ভারতে নাম পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া কখনো বাংলাদেশে হয়নি, বরং মুসলিম নামই পরিবর্তন করা হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!

মুসলমানদের কৃষ্টি-ঐতিহ্য রক্ষার জন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল বলে এর মনোগ্রামে উৎকীর্ণ হয়েছিল, ‘রাব্বি জিদনি ইলমা’ বাক্যটি, যার অর্থ ‘হে আল্লাহ পাক, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।’ বাদ দেয়া হয়েছে। বিদ্বেষের শিকার হয়েছে জাহাঙ্গীনগর ‘মুসলিম’ বিশ্ববিদ্যালয়, ফজলুল হক মুসলিম হল। সারা বাংলাদেশে বহু স্থাপনার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। তখন নিম্নোক্ত নামগুলো কি পরিবর্তন করা যেত না যেগুলো ব্রিটিশরা পরিবর্তন করেছিল।

যেমন- ময়মনসিংহের পূর্ব নাম মোমেনশাহী, এরপর হয় নাসিরাবাদ। কিন্তু উপনিবেশবাদী ব্রিটিশরা কথিত ভুলের অজুহাতে এর নামকরণ করে ‘ময়মনসিংহ’। ইতিহাসের ‘ভুল’ সাক্ষ্য বহন করে বিধায় নামটি পরিবর্তন করা কি জরুরি নয়?

মন্তব্য প্রতিক্রিয়া: ‘আল বাইয়্যিনাত যে কথিত ১২টি কালো তালিকাভুক্ত সংগঠন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা সে সম্পর্কে কতিপয় ব্যক্তিদের উদ্ধৃতি: * হক্বের একমাত্র ঝাণ্ডাবিহীন ‘আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে জঙ্গি অপবাদ দিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে -আওয়ামী ওলামা লীগ * ইসলামিক ফাউন্ডেশন-এর ডিজি’র প্রতিক্রিয়া- হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি, সাইয়্যিদ আহমদ বেরেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর তরীক্বায়ই চলছে ‘আল বাইয়্যিনাত’। ‘আল বাইয়্যিনাত’ জামাতি-জঙ্গি, ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যে সাহসী পদক্ষেপে কাজ করছে তা আমরাও পারি না * স্থানীয় সাংসদ রাশেদ খান মেনন এমপি’র প্রতিক্রিয়া-‘আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কে মন্তব্য করার আগে প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ স্থানীয় সাংসদের কাছে একবার জিজ্ঞাসা করারও প্রয়োজন মনে করেননি দীর্ঘদিন যাবত জঙ্গিবাদ, মৌলবাদের বিরুদ্ধে ‘আল বাইয়্যিনাত’-এর লেখালেখি দেখে আসছি- (বিস্তারিত পড়ৃন দৈনিক আল ইহসান-২৬.০৪.০৯ ঈসায়ী)

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বরাষ্ট্র যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক) মহোদয়-এর প্রতি- খোলা চিঠি বিষয়: ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণকারী একমাত্র দরবার শরীফ, মুক্তিযুদ্ধোত্তর সময় থেকেই জামাত-শিবিরের তীব্র বিরোধিতা ও দমনকারী, * গত দু’দশক ধরে জঙ্গি কওমী, ধর্মব্যবসায়ী তথা জামাত-জোটের বিরুদ্ধে দীপ্ত অবস্থান গ্রহণকারী, ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’-এর নামে ‘আল বাইয়্যিনাত’কে কালো তালিকাভুক্তি করায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বুদ্ধিজীবী মহল, সুশীল সমাজ, ধর্মপ্রাণ মানুষ হতবাক ও বিস্মিত এবং বিশেষভাবে মর্মাহত। * পাশাপাশি সংবাদপত্রে প্রকাশিত ৩৪টি জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে ‘আল বাইয়্যিনাত’-এর নাম না থাকলেও তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। * পক্ষান্তরে বাকি ২২টি জঙ্গি সংগঠনের দীর্ঘদিনের সক্রিয়তা থাকলেও তাদেরকে বাদ দিয়ে গত শুক্রবার মাত্র ১২টি কালো তালিকাভুক্ত করায় সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা রিপোর্ট নিয়ে বিশেষ জোরালো প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি ২৬শে এপ্রিল-২০০৯ রোববারের ‘দৈনিক আমাদের সময়’ পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছে যে, ‘বগুড়ার হিযবুল্লাহর নাম নেই কেন?’ অথচ তা একটি চিহ্নিত অস্ত্রধারী সংগঠন। * অপরদিকে ‘আল বাইয়্যিনাত’কে জঙ্গি বলা হবে ইতিহাসের সবচাইতে নির্মম অপবাদ এবং মহা মিথ্যাচার আর জামাতী-জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বরের প্রতি চরম ও গভীর ষড়যন্ত্র। কারণ, তাতে কওমী, জামাতী ও জঙ্গিরা তথা ধর্মব্যবসায়ীরাই মহা উপকৃত ও শক্তিশালী হবে যেহেতু ‘আল বাইয়্যিনাত’-এর মতো কেউই ওদের হাক্বীক্বত উন্মোচন করতে পারবে না। * উপরোল্লিখিত সঙ্গতকারণে ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’-এর নামে ‘আল বাইয়্যিনাত’কে কথিত কালো তালিকা থেকে বাদ দেয়া প্রসঙ্গে।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬০

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৯

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৮