আন্তর্জাতিক পানি ব্যবহারের বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ভারত নির্মাণ করছে টিপাইমুখ বাঁধ। বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের জোর প্রতিবাদ দরকার।

সংখ্যা: ২৩২তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত ছলাত মুবারক ও সালাম মুবারক।

সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশচন্দ্র সেন বলেছিল, ‘টিপাইমুখ বাঁধে আমাদের কোনো ক্ষতি হবে না; বরং আমাদের এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ হবে। আর যদি কোনো ক্ষতি হয়ই তখন দেখা যাবে।’ পানিসম্পদমন্ত্রী হয়ে এ ধরনের মন্তব্য করায় এটা স্পষ্ট যে- সে দেশের স্বার্থ দেখছে না, ভারতের স্বার্থ দেখছে। ফারাক্কা বাঁধ ও তিস্তায় ভারতের ড্যামের করুণ পরিণতি উদাহরণ হিসেবে আমাদের সামনে থাকায় এরপর কোনো বিবেকসম্পন্ন লোক বলতে পারে না যে, টিপাইমুখ ড্যামে আমাদের ক্ষতি হবে না।

সিলেট জেলার পূর্ব সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটার উজানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মনিপুরের চোরাচাঁদপুর জেলার টিপাইমুখ নামক স্থানে এই বাঁধ নির্মিত হচ্ছে। জানা গেছে, ভারতীয় মুদ্রায় আট হাজার ৮৬৭ কোটি রুপি ব্যয়ে ত্রিপুরার বরাক নদীর উপর এই বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনই এর লক্ষ্য। এই ড্যামের উ”চতা হবে ১৮১ মিটার এবং ড্যামের দৈর্ঘ্য হবে ৪৯৫ মিটার। এতে যে লেক হবে তার পানি ধারণক্ষমতা হবে ১৫০০ বিলিয়ন ঘনমিটার। ভারত বলে আসছে, এ ড্যাম বাংলাদেশে পানিপ্রবাহে কোনো বাধা হবে না; কিš‘ জানা গেছে, টিপাইমুখ বাঁধের ১০০ কিলোমিটার উজানে সুবর্ণশিরিতে আরো একটি ড্যাম দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে ত্রিপুরা ও মনিপুর রাজ্যে এরা পানি সেচ কাজ চালাবে। তাই ত্রিপুরার নিম্নঞ্চল ও বাংলাদেশের ভূখন্ডে বরাক নদী থেকে আর কোনো পানি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। বাংলাদেশের পানি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের গোটা পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চল পানিশূন্য হয়ে মরুকরণ দেখা দেবে। একই সাথে দেশের সার্বিক জীববৈচিত্র্যে বিপর্যয় নেমে আসবে। অন্যদিকে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়ত বাংলাদেশকে তাড়া করে বেড়াবে।

আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী ভারত একতরফাভাবে এ ড্যামের কাজ করতে পারে না। আন্তর্জাতিক নিয়ম হলো, আন্তর্জাতিক নদী যেসব দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত- তাদের সবার স্বার্থ বজায় রেখে সমতার ভিত্তিতে প্রকল্প নিতে হবে এবং সে প্রকল্প আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পরিচালিত হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব দেশের উপর দিয়ে নদীটি প্রবাহিত হয় এর অববাহিকার প্রতিটি দেশের দায়িত্ব হচ্ছে এমনভাবে নদীটি ব্যবহার করা, যাতে অন্যান্য দেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন না হয়। ওই নদীর পানি সমতার ভিত্তিতে ব্যবহার করতে হবে। কোনো একটি দেশ সে নদীর পানি নিজের ই”ছামতো ব্যবহার করতে পারবে না। ভাটির দেশকে ওই নদীর পানি থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। আন্তর্জাতিক আইনে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা আছে। আন্তর্জাতিক নদীর একতরফা পরিবর্তন বা পরিবর্ধন অথবা পানি প্রত্যাহার করা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য ও বেআইনি। আন্তর্জাতিক নদীসংক্রান্ত হেলসিংকি নীতিমালার ৪ ও ৫ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়া আছে। প্রতিটি অববাহিকাভুক্ত দেশ, অভিন্ন নদীগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই অন্য দেশের ক্ষতি না করেই তা ব্যবহার করতে হবে। ১৯৬৬ সালে আন্তর্জাতিক আইনানুসারে হেলসিংকি নীতিমালার অনুচ্ছেদ ১৫-এ বলা হয়েছে, নদীটি প্রবাহিত প্রতিটি দেশের মধ্যে সুষম ও সমতার ভিত্তিতে পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং অনুচ্ছেদ ২৯-এ বলা হয়েছে, এক অববাহিকাভুক্ত দেশকে আন্তর্জাতিক নদীর পানি ব্যবহারের পদক্ষেপের ক্ষেত্রে অন্যদেরকে অবশ্যই অবহিত করতে হবে। ১৯৯২ সালের ডাবলিন নীতিমালার ২ নম্বর নীতিতে বলা হয়েছে, পানি উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনায় অবশ্যই সবাইকে অংশ নিতে হবে। কিন্তু টিপাইমুখ বাঁধ সম্পর্কে ভারত কোনো নীতিই অনুসরণ করেনি। বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখেই ভারত এ কাজ করে যাচ্ছে। এটা আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ কনভেনশনের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।

আন্তর্জাতিক নদীর ব্যবহার সম্পর্কে ১৮১৫ সালে ভিয়েনা সম্মেলনে এবং ১৯২১ আন্তর্জাতিক দানিয়ুব নদী কমিশন প্রণীত আইনে এই নীতির উল্লেখ আছে। নদীটি প্রবাহিত প্রতিটি রাষ্ট্রের মধ্যে সুষম ও সমতার ভিত্তিতে পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পানিসম্পদের সুষম বণ্টনের নীতি ১৯৭২ সালে স্টকহোমে অনুষ্ঠিত মানব পরিবেশ সংক্রান্ত জাতিসঙ্ঘের কনফারেন্সের ঘোষণাপত্রের ৫১ অনুচ্ছেদে স্থান পায়। ১৯৪৯ সালের বিখ্যাত করফু নদী (ঈড়ৎভঁ ঈযধহহবষ) মামলায় (ব্রিটিশ বনাম আলবেনিয়া) আদালত তার সিদ্ধান্তে উল্লেখ করে যে, একটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের বহিঃপ্রকাশ কখনো এমনভাবে হতে পারে না, যার বিরূপ প্রভাব সেই রাষ্ট্রের বাইরে অনুভূত হতে পারে। বিশ্বে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মামলা ও চুক্তি রয়েছে যেখানে পানির হিস্যার প্রশ্নে ভাটির দেশের নদীকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে এবং পানির একচেটিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১৯৫৭ সালে লেক লেনো (Lake Lanou) মামলার (স্পেন বনাম ফ্রান্স) রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক নদীর প্রাকৃতিক পানিপ্রবাহের ধারা এমনভাবে পরিবর্তন করা যাবে না, যার পরিণতি অপরাপর রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে Wyoming Vs Calorado wKsev Chicago Diversion Case   ১৯২৫, মামলার রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক নদীর একচেটিয়া ব্যবহার আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী এবং নদীর স্থানীয় অংশের উপর পাশের কোনো দেশের অবাধ সার্বভৌমত্ব কার্যকর হতে পারে না। ১৯২১ সালে সুদান ও মিসরের মধ্যে নীল নদ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তাতে উল্লেখ আছে, সুদান নীল নদে এমন কোনো ব্যবস্থাকরবে না যাতে মিসরের কোনো স্বার্থ ক্ষুন্ন হতে পারে। ১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাক্ষরিত সিন্ধু অববাহিকা চুক্তিতেও এমন ঘোষণা উল্লেখ ছিল যে, পাশের দেশ এমন কোনো ব্যবস্থানেবে না যাতে অপর দেশে নদীর স্বাভাবিক ব্যবহার বিঘ্নিত হতে পারে।

টিপাইমুখ ড্যাম করলে ভারতীয়রা বাংলাদেশকে বরাক নদীর কোনো পানি দেবে না। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এত দিন নিরাপদ থাকলেও আজ ভারত বরাক নদীতে টিপাইমুখ বাঁধ দিয়ে এ অঞ্চলকে মরুকরণসহ অন্যান্য ভৌগোলিক সমস্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ভারতের মতিগতি দেখে মনে হচ্ছে, এ প্রকল্প থেকে তারা সরে আসবে না। তাদেরকে সরিয়ে আনার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা ছাড়া উপায় নেই। ভারত কোনো দিন দ্বিপক্ষীয়ভাবে এ সমস্যার সমাধানে আসবে না। আমাদের জনগণ ও আসাম-মনিপুরের জনগণের মধ্যে এ বাঁধের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারকে এ ব্যাপারে ভারতের সেবাদাস হলে চলবে না।

মূলত, সব সমস্যা সমাধানে চাই সদি”ছা ও সক্রিয়তা তথা সততা। কিš‘ এর জন্য প্রয়োজন নেক  ছোহবত মুবারক, নেক সংস্পর্শ মুবারক তথা রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার  নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা পাওয়া সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

-আল্লামা মুহম্মদ মাহবুবুল্লাহ

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬২

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২০ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল