কুরআন শরীফ-এ ঘোষিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু ইহুদীদের দ্বারা  ফিলিস্তিনে অব্যাহত বর্বরতায় আর নির্মম হত্যাকাণ্ডে আর কতকাল নির্বাক থাকবে মুসলিম বিশ্ব- (২)

সংখ্যা: ১৯৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

ইহুদীবাদীরা ফিলিস্তিন জবরদখল করেছে ৬২ বছর হলো। কিন্তু এখনো ফিলিস্তিনী জনগনের ওপর চলছে গণহত্যা, জুলুম ও নির্যাতন। কথায় কথায় ফিলিস্তিনী জনগণকে পাখির মত গুলি করে মারা হচ্ছে, যখন তখন দল বেধে নিরপরাধ ফিলিস্তিনী জনগণকে ধরে নিয়ে জেলখানায় নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এমনকি ইহুদীবাদীরা ফিলিস্তিনী জনগণের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে দিচ্ছে এবং তাদের বিস্তৃর্ণ কৃষিজমির ফসলও নষ্ট করে ফেলছে। ফিলিস্তিন জবরদখলের দীর্ঘ ৬ দশক পর এখনো ফিলস্তিন সংকট মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান সমস্যা হয়ে রয়েছে।

ফিলিস্তিনী ভূখন্ড জবরদখল করে ইসরাইল নামক একটি অবৈধ রাষ্ট্রকে মুসলিম বিশ্বের মধ্যখানে চাপিয়ে দেয়ার মাধ্যমে পাশ্চাত্য মুসলমানদের প্রতি চরম অবিচার করেছে। তারা ফিলিস্তিন তথা মুসলমানদের ঘরের মধ্যে সংঘর্ষ চাপিয়ে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যকে একটি চাপা আগ্নেয়গিরিতে রূপান্তরিত করেছে। ইহুদীবাদীদের জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পশ্চিমাদের যে অর্থ ব্যয় হয়েছে, তা তারা ফিলিস্তিনী জনগণের কাছ থেকে উসুল করে নিচ্ছে। আর তারা যে অশুভ ইহুদীবাদী দাবানল মধ্যপ্রাচ্যের বুকে জ্বালিয়ে দিয়েছে, তার লেলিহান শিখা এখন সারাবিশ্বকে গ্রাস করতে চাইছে। আধিপত্যকামীদের আগ্রাসন থেকে জাতিগুলোকে রক্ষা করার নামে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মানুষ আশা করেছিল, এবার বুঝি ঐ বিশ্ব সংস্থার ছায়াতলে সবাই প্রশান্তির নিঃশ্বাস ফেলবে। কিন্তু জাতিসংঘ তথা ইহুদী সংঘের ওপর পরাশক্তিগুলোর একচ্ছত্র আধিপত্য সে আশার গুড়ে বালি ঢেলে দিয়েছে।

জাতিগুলোর অধিকার রক্ষার পরিবর্তে বিংশ শতাব্দি জুড়ে জাতিসংঘ তথা ইহুদী সংঘকে ব্যবহার করে বৃহৎ শক্তিগুলো জাতিসমূহের অধিকার পদদলিত করে চলেছে। এ পরিস্থিতিকে ফিলিস্তিন জবরদখলের মত আরেকটি বিপর্যয় বলা যেতে পারে। ফিলিস্তিনী জনগণের নিজেদের মাতৃভূমিতে বসবাস করার অলঙ্ঘনীয় অধিকার পদদলিত করে ফিলিস্তিনকে দ্বিখন্ডিত করার প্রস্তাব পাশের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ ওরফে ইহুদী সংঘ তার কার্যক্রম শুরু করে। পাশ্চাত্য ও ইহুদীবাদীদের সম্মিলিত চক্র ফিলিস্তিনী জনগণের ঐতিহাসিক ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার উপেক্ষা করে ফিলিস্তিন জবরদখল ও ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে

স্বীকৃতি দেয়। ইউরোপীয়রা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাদের মাধ্যমে ইহুদীদের যে ক্ষতি করেছিল, ফিলিস্তিনী ভূখন্ডে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তা পুষিয়ে দিয়েছে। তারা গাজা উপত্যকার ওপর অবরোধ আরোপ করে সেখানে খাদ্য ও জ্বালানী সরবরাহসহ সব ধরনের মানবীক সাহায্য প্রেরণ বন্ধ করে দেয়। সেই সাথে মজলুম ফিলিস্তিনী জনগণের ওপর চলে ইহুদীবাদীদের দমন অভিযান। আকাশ ও ভূমিপথে তাদের পাশবিক হামলায় শহীদ হন লাখ লাখ ফিলিস্তিনী।

পতনোন্মুখ ওসমানিয়ো সাম্রাজ্যের দুর্বল অবকাঠামোর কারণে আগ্রাসী পশ্চিমা শক্তিগুলো মুসলিম সাম্রাজ্যে আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ পায় এবং মুসলমানদের সম্পদ লুটপাটে মেতে ওঠে। তবে এশিয়া থেকে ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ওসমানিয়া সাম্রাজ্যকে পুরোপুরি ধ্বংসের জন্য দুটি কাজ করার প্রয়োজন ছিল। ওসমানিয়ো সাম্রাজ্যকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে দেয়া এবং এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেশে পশ্চিমাদের তাঁবেদার সরকারকে ক্ষমতায় বসানো। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশের মিলনস্থলে অবস্থিত কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফিলিস্তিনের ওপর তৎকালীন পশ্চিমা শাসকদের দৃষ্টি পড়ে। একই সাথে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে সুইজারল্যান্ডের ব্যাল শহরে থিওডর হাটর্জেলের নেতৃত্বে এবং বৃটিশ পূঁজিপতিদের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথম ইহুদীবাদী মতাদর্শের জন্ম হয়। ফিলিস্তিনে ষড়যন্ত্রের বীজবপন করে ঐ ভূখন্ড দখল করে সেখানে ইহুদীদের জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই ছিল ইহুদীবাদী গোষ্ঠীর মূল উদ্দেশ্য।

গাজা উপত্যকা

গাজা উপত্যকা হচ্ছে ইসরাইল ও মিশরের মধ্যবর্তী একফালি ভূমি। এটি ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত। দৈর্ঘে্য মাত্র ৪০ কিলোমিটার এবং প্রস্থে ১০ কিলোমিটার। এর অধিবাসী ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি। ইসরাইলের জন্মের পর ১৯৪৮ সালে আমিস্টিক লাইন অনুযায়ী এর সীমানা নির্ধারণ করা হয়। আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে সীমানা বারংবার কমবেশি হয়েছে।

১৯৪৮ সালের পর থেকে পরবর্তী ১৯ বছর গাজা

মিসরের শাসনাধীন ছিল। কিন্তু ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময়ে ইসরাইল গাজা দখল করে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত গাজা ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে। ২০০৫ সালে ইসরাইল গাজা থেকে সৈন্যসহ বসতি স্থাপনকারী ইহুদীদের সরিয়ে নিলেও গাজার মিসর নিয়ন্ত্রিত দক্ষিণ সীমান্ত ছাড়া বাকি সব (জল, স্থল ও আকাশ) সীমানা ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণাধীন। গাজা সিটি সমগ্র উপত্যকার মধ্যে জনবহুল নগরী। এর অধিবাসীর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। অন্য শহরগুলোর মধ্যে এটিও দারিদ্র্য, বেকারত্বসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত।

২০০৬ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ফিলিস্তিনি জঙ্গি সংগঠন ফাতাহকে পরাজিত করে জঙ্গি সংগঠন হামাস জয় লাভ করে। হামাস প্রশাসনিক ব্যাপারে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের পশ্চিম তীর থেকে গাজা বিচ্ছিন্নকরণ কখনোই সুনজরে দেখেনি। ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত ফাতাহর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটলেও হামাসাধীন গাজার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো।

শুরু থেকেই হামাসকে ধ্বংস করার জন্য ইসরাইল বিমান হামলা চালিয়ে আসছিল। এসব হামলায় সামরিক ব্যক্তিদের তুলনায় জনবহুল গাজার সাধারণ মানুষই নিহত হয়েছে বেশি। জনসংখ্যার দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অপর দুটি শহর খান ইউনিস মধ্যগাজায় অবস্থিত এবং এর জনসংখ্যা প্রায় ২ লাখ। দক্ষিণে অবস্থিত রাফাহ শহরের অধিবাসী দেড় লাখ।

১৯৪৮ সালে যে স্থানগুলো ইসরাইল নামে জন্মগ্রহণ করে তার বিতাড়িত অধিবাসীরা আজকের গাজার অধিকাংশ অধিবাসী। জাতিসংঘের সাহায্যাধীন আটটি শরণার্থী শিবিরে অধিকাংশ গাজাবাসীর বসবাস। গাজা এখন পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। ২০ শতাংশের বেশি মানুষের জন্য পয়ঃনিষ্কাশনের কোনো সুবিধা নেই। ময়লা পানি রাস্তার উপর দিয়ে গড়িয়ে চলে। অনেকদিন থেকেই গাজায় প্রবেশ ও ত্যাগের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। হামাস ক্ষমতা গ্রহণের পর ইসরাইল আরো কঠোর হয়ে উঠে। তাদের লক্ষ্য ছিল হামাসের রকেট হামলা বন্ধ করা। বাধার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থনীতি। জীবনধারণের প্রয়োজনীয় উপকরণ সামান্যই আসতো। রফতানির অনুমতি না থাকায় গাজার অর্থনীতি কার্যত পঙ্গু হয়ে পড়ে।

মানবাধিকার বলতে ইসলাইলের ভাষায় মানুষের খাদ্য,

পশু খাদ্য, ওষুধপত্র, ন্যাপকিন, বিভিন্ন পরিষ্কারক পণ্য- এগুলো ছাড়া বাকি সব পণ্য প্রবেশে বাধা দেয় তারা।

দক্ষিণ ইসরাইলে হামাসের রকেট হামলার পরিপ্রেক্ষিতে গাজাকে গোলযোগপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ইসরাইল তেল আমদানি বন্ধ করে দেয়। তেল সঙ্কট এবং বিকল্প যন্ত্রাংশের অভাবে পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা, আবর্জনা, পানি সরবরাহসহ চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। ২০০৮ সালের প্রথম দিকে অবস্থা আরো খারাপ হয়ে উঠে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, ১৯৬৭ সালের পর থেকে এর চেয়ে খারাপ অবস্থা আর হয়নি। এমনকি জাতিসংঘের ধারণা ইসরাইল গাজাবাসীদের গ্রুপ পানিশমেন্ট দিচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার মতেও প্রকৃত অবস্থা তাই।

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।