খাদ্যের সব খাতে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও ভোগ্যপণ্যের দাম ৭০ শতাংশ বেশি। ভোগ্যপণ্যের বাজার জিম্মি হয়ে আছে গুটিকয়েক মহলের হাতে। দেশের ২১ কোটি মানুষ ভোগ্যপণ্যের অতিমূল্যে মহাশোষণের শিকার। মাথাপিছু আয় তথাকথিত বাড়লেও ক্রয়ক্ষমতা ক্রমশ কমছে জনগনের। জনগণকে সুফল না দিয়ে উন্নয়নের প্রচারণা মহাপ্রতারণা।

সংখ্যা: ২৭৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

প্রকাশিত এক খবরে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজার দরের তুলনায় বাংলাদেশে নিম্ন ও মধ্যবর্তী ভোক্তাদের ভোগ্যপণ্য কিনতে ৭০ শতাংশ বেশি মূল্য গুণতে হয়। ক্যাবের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভোগ্যপণ্যের অতিমুল্যের কারনে বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ শতাংশ। আর এতে করে দিন দিন দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছে মধ্যবিত্ত, নি¤œমধ্যবিত্ত ও হতদরিদ্ররা। নানা রকম পরিসংখ্যান চিত্রে দেখানো হচ্ছে, দেশের মানুষের আয় বাড়ছে। বাস্তবে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে আয়ের তুলনায় অনেক বেশি। মানুষের সঞ্চিত অর্থে হাত পড়ছে এবং আয় বাড়া সত্ত্বেও সমাজে এ জন্য ইতিবাচক প্রভাব যেভাবে পরিলক্ষিত হওয়ার কথা, সেভাবে হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সব ধরনের চালের গড় মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। গড়ে প্রায় ২০ শতাংশ দাম বেড়েছে সাবানের। মাছের দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, শাক-সব্জিতে ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ, চা-পাতায় ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ, পান-সুপারিতে ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ, তরল দুধে ১০ দশমিক ৩৩ শতাংশ, গরম মসলায় ৮ শতাংশ, মাংসে ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ, মুরগিতে ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ডিমে ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ। ওয়াসার সরবরাহকৃত পানির মূল্য প্রতি হাজার লিটারে বেড়েছে ৫ শতাংশ। দেশি থান কাপড়ের দাম বেড়েছে ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

আর এ কারণে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় গত চার বছরের মধ্যে বেড়েছে সর্বোচ্চ। ২০১৪ সালের পর রাজধানীর দুই কোটির বেশি মানুষকে পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ৭ দশমিক ২৭ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির মুখে পড়তে হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির কারণে ২৫ কোটির মধ্যে ২১ কোটি মানুষকেই অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার পঁচাত্তর শতাংশকেই ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের চড়া মূল্য তাদের বাড়তি আয় খেয়ে ফেলেছে। সর্বাধিক বিরূপ প্রভাব পড়েছে অতিদরিদ্র দুই কোটি মানুষের উপর। উন্নয়নের সুফল তারা পাচ্ছে না। বাজারে চাল নিয়ে এরই মধ্যে অন্যরকম চালবাজি হয়েছে। সীমিত আয়ের মানুষের খরচের বড় অংশই চলে যায় চাল কেনায়। গত বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চালের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল।

বাংলাদেশ খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু এরপরও বাংলাদেশ সরকার ভোগ্যপণ্যের অন্যতম আমদানিকারক দেশ। আর সে হিসেবে আন্তর্জাতিব বাজারের উপর বাংলাদেশের ভোগ্যপণ্যের দাম নির্ভর করে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক খাদ্যপণ্যের দাম ২৪ শতাংশ কম রয়েছে। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আলোচ্য মাসে দানাজাতীয় শস্য, ভোজ্য তেল, দুধ ও দুগ্ধজাত  পণ্য, চিনি ও গোশতের দাম বেশি কমেছে, যার সার্বিক প্রভাব পড়েছে মূল্যসূচকে। কিন্তু বিশ্ববাজারে কমলেও বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের দাম দফায় দফায় বাড়তে দেখা গেছে। কোনোভাবেই লাগামহীন এই ঊর্ধ্বগতি থামানো যাচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে ভোগ্যপণ্যের মূল্যের এই আগুনের পেছনে রয়েছে দেশের গুটিকয়েক সিন্ডিকেট মহল ও সরকারের বাজার সংশ্লিস্টদের ব্যর্থতা। জানা গেছে, বাংলাদেশের চালের বাজার ৭-৮ টি প্রতিষ্ঠানের হাতে জিম্মি। তাদের ইশারায় চালের বাজারের দা ওঠানামা করে। দেশের চিনির বাজার ৫ মিল মালিকের হাতে জিম্মি। বাংলাদেশের তেলের বাজার ৫ ভোজ্যতেল পরিশোধন প্রতিষ্ঠানের হাতে জিম্মি। বাংলাদেশের সবজির বাজার সারাদেশের প্রায় ৫০ টি সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি। এককথায় বাংলাদেশের ভোগ্যপণ্যের বাজারটি সিন্ডিকেটদের হাতে জিম্মি। এরাই কিছুদিন পর পর অসৎ মুনাফা লুটার জন্য ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ায়। অন্যদিকে সরকারও বোবা ও অন্ধের ভুমিকা পালন করে। ফলে মাঝপথে চরম দুর্ভোগ সইছে সাধারণ মানুষ।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মহলের মতে-বাংলাদেশের ভোগ্যপণ্যের অতিদামের কোনো কার্যকরী যুক্তি নেই। যেখানে বাংলাদেশ প্রতিবছর রেকর্ড পরিমাণ চাল উৎপাদন করছে, মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, শাসসবজি ফলমুল রফতানি করছে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে, দুগ্ধশিল্পে শ্বেত বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে সেখানে এসব পণ্যই জনগনের নাগালে বাইরে চলে যাচ্ছে। এটা এককথায় জনগনের প্রতিমহাশোষণ। বর্তমানে বিশ্বের ৩৩টিরও বেশি দেশে ভোগ্যপণ্যের দাম কমানোর জন্য সেসব দেশের জনগন সহিংস আন্দোলন করছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর দাবিতে মিয়ানমার, ফিলিপাইন, হাইতি, মিশরসহ আরো কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যে সহিংস বিক্ষোভ এবং সরকারি খাদ্য গুদামে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। কারন সেসব দেশে মন্দাসহ খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কিন্তু সেই হিসেবে বাংলাদেশে কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই। বরং উদ্বৃত্ত রয়েছে। কিন্তু উদ্বৃত্ত থাকার পরও জনগন মহাশোষিত হচ্ছে।

বলাবাহুল্য, সরকারের পক্ষ থেকে প্রবল প্রচারণা চালানো হচ্ছে, বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। মাথাপিছু আয় এক হাজার ৬০০ ডলারের বেশি। বার্ষিক জিডিপি’র প্রবৃদ্ধিও ৭ শতাংশের বেশি। অথচ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ দেশের সার্বিক উন্নয়নের সুফল থেকে বঞ্চিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ‘একজনের প্রতিবেশী আরো অনেক বেশি ধনী হয়েছে। কিন্তু সে গরিব হয়েছে। অথচ তাত্ত্বিক হিসাবে দু’জনের গড় আয় ও সম্পদ বেড়েছে। এটাকেই জিডিপি বৃদ্ধি বলে চালানো হচ্ছে। কিন্তু আসলে কিছু ধনী থেকে অতি ধনী হয়েছে। আর বেশিরভাগ জনগোষ্ঠী গরিব থেকে অতি গরিব হয়েছে। যা সরকারের দায়িত্বহীনতা ও নিয়ন্ত্রণহীনতার প্রমাণ।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, উন্নয়নের সুফল থেকে সাধারণ মানুষ যাতে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে।

আর এর জন্য সরকারের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে ভোগ্যপণ্যের মূল্য জনগনের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা। দৈনিক আল ইহসানের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এটি করতে হলে মাত্র ১২ থেকে ১৫টি খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চিহ্নিত করে সেসব পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে।

-মুহম্মদ আশরাফুল মাহবূবে রব্বানী, ঢাকা।

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।