জনগণকে না জানিয়ে ভারতকে ট্রানজিট দেয়া হলো কেন? ভারতকে ট্রানজিট দেয়ায় বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্যতা এবং স্বাধীনতার চেতনা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে

সংখ্যা: ২৫৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

অবশেষে ভারতকে ট্রানজিট দেয়া হলো। ট্রানজিট দেয়া হলো নামমাত্র মাশুলের বিনিময়ে। ১৫ মে-২০১৬ ঈসায়ী তারিখে ১ হাজার টন ঢেউটিনের চালান কলকাতা থেকে আগরতলায় নেয়ার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এজন্য প্রতি টনে মাত্র ১৯২ টাকা করে মাশুল দিতে হবে। যদিও ট্যারিফ কমিশনের নেতৃত্বে গঠিত ট্রানজিট-সংক্রান্ত কোর কমিটি টনপ্রতি ১ হাজার ৫৮ টাকা মাশুল আদায়ের সুপারিশ করেছে। কমিটির সুপারিশ মেনে নিলে বাংলাদেশ ১ হাজার টন পণ্য ট্রানজিটে কেবল মাশুল হিসেবেই পেত ১০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। আর এখন পাবে মাত্র ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা।

তিন বছর আগে ভারতের প্রতি মানবিকতা দেখিয়ে বাংলাদেশ নৌপ্রটোকলের আওতায় কলকাতা-আশুগঞ্জ-আখাউড়া-আগরতলা পথে কোনো ধরনের মাশুল ছাড়াই পরীক্ষামূলকভাবে একটি লোহার চালান যাওয়ার সুযোগ দেয়। এরপর এ পথ ব্যবহার করে ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী যন্ত্রাংশ এবং ১০ হাজার টন চালের চালান যাওয়ারও সুযোগ দেয়া হয়। এসব পরীক্ষামূলক ও মানবিক কারণে ভারতকে নৌট্রানজিট ব্যবহারের আগে ২০১১ সালে ভারত, নেপাল ও ভুটানকে সড়ক, রেল ও নৌপথে ট্রানজিট দিতে ট্যারিফ কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কোর কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটি নৌপথে পণ্যপরিবহনে টনপ্রতি ১০৫৮ টাকা মাশুল নির্ধারণ করে। ভারত এই মাশুল দিতে কোনোভাবেই রাজি হয়নি। মাশুল কমানোর জন্য সে বাংলাদেশের উপর চাপ দিতে থাকে। অবশেষে ভারতের ইচ্ছাই পূরণ হলো।

উল্লেখ্য, নৌট্রানজিট-এর মতো একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে, তা দেশের মানুষ জানে না। সরকারের তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি। অনেকটা গোপনে চালু হয়েছে। দুয়েকটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ না করলে হয়তো জনগণ তা সহসা জানতোই না।

অথচ বাংলাদেশ সংবিধানের ১৪৩নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে-

(১) আইনসঙ্গতভাবে প্রজাতন্ত্রের উপর ন্যস্ত যেকোনো ভূমি বা সম্পত্তি ব্যতীত নিম্নলিখিত সম্পত্তিসমূহ প্রজাতন্ত্রের উপর ন্যস্ত হইবে।

(ক) বাংলাদেশের যেকোনো ভূমির অন্তঃস্থ সমস্ত খনিজ ও অন্যান্য মূল্যসম্পন্ন সামগ্রী;

(খ) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পানিসীমার অন্তরবর্তী মহাসাগরের অন্তঃস্থ কিংবা বাংলাদেশের মহীসোপানের উপরিস্থ মহাসাগরের অন্তঃস্থ সমস্ত ভূমি, খনিজ ও অন্যান্য মূল্যসম্পন্ন সামগ্রী; এবং

(গ) বাংলাদেশে অবস্থিত প্রকৃত মালিকবিহীন যেকোনো সম্পত্তি।

উপরোক্ত অনুচ্ছেদে যেমন বাংলাদেশের উপর বাংলাদেশী প্রজাসাধারণের মালিকানা প্রতিভাত হয়েছে তেমনি এ মালিকানা সাপেক্ষে বিদেশের সাথে চুক্তির ক্ষেত্রেও জনগণের অবগতির কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

বাংলাদেশ সংবিধানের ১৪৫নং ‘ক’ অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে-

‘বিদেশের সহিত সম্পাদিত সমস্ত চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হইবে এবং রাষ্ট্রপতি সংসদে পেশ করিবার ব্যবস্থা করিবেন।’

ট্রানজিট চুক্তির সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিষয় ছাড়াও সার্বভৌমত্বের বিষয়টি জড়িত। কাজেই এ চুক্তি সম্পাদনের আগে জনগণের মতামত গ্রহণ করা এবং লাভ-ক্ষতির বিষয়গুলো গভীরভাবে অনুধাবন করা আবশ্যক।

না জানানোর কারণে ভারতের সাথে ট্রানজিটের ক্ষেত্রে সম্পন্ন চুক্তিতে কী আছে, আর কী নেই তা বোধগম্য নয়। তবে যেহেতু বাংলাদেশের উপর দিয়ে মালামাল পরিবহন হবে, নিরাপত্তার বিষয়টি চলে আসে। সেক্ষেত্রে হোস্ট সরকারকে (বাংলাদেশ) বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে।

কারণ এই ট্রানজিট আসামসহ ভারতের স্বাধীনতাকামী ৭ রাজ্যের (সেভেন সিস্টারস) মুক্তিকামী মানুষের বিরুদ্ধে। পণ্য পরিবহনের কথা বলা হচ্ছে, তবে এর নামে সমরাস্ত্র অবশ্যই যাবে। সেভেন সিস্টারসের আন্দোলন প্রতিহত করতে এই ট্রানজিট।

প্রসঙ্গত, আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেছে- বাংলাদেশ সাীমান্ত সিল করে দেবে। অর্থাৎ ট্রানজিটের পরিণাম বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ হবে। সেভেন সিস্টারসের স্বাধীনতাকামীদের প্রতিপক্ষ হয়ে যাবে বাংলাদেশ।

সুতরাং এটি যেমন-তেমন কোনো ট্রানজিট না। ভারতের সেভেন সিস্টারসে স্বাধীনতা সংগ্রাম চলছে। এটি ঐ ৭ রাজ্যের বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণার মাহপরিকল্পনার অংশ।

এক্ষেত্রে জাতি কিংবা গোষ্ঠীর মধ্যে স্বাধীনতার আকাঙ্খা তৈরি হলে, কখনো কখনো তা দমানো যায়- তবে নির্মূল করা যায় না। সেক্ষেত্রে ট্রানজিটের মাধ্যমে সেভেন সিস্টারের কাছে বাংলাদেশ রাজাকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো। ট্রানজিটের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের নামে সেখানে সমরাস্ত্র পাঠাবে দিল্লি সরকার। যা ব্যবহৃত হবে সেভেন সিস্টারসের মুক্তিকামী মানুষদের বিরুদ্ধে। তাদের রোষানলে পড়ে বাংলাদেশও আক্রমণের শিকার হবে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিঘিœত হবে।

পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, দেশের নিরাপত্তা বিঘিœত করে এমন সিদ্ধান্ত কোনো উন্মাদ-পাগল ছাড়া কেউ এমন নিতে পারে না। পাশাপাশি উল্লেখ্য, পৃথিবীর বহু দেশে ট্রানজিট আছে। কিন্তু এত সস্তায় কোথাও নেই। আবার এর অনেক ভয়ঙ্কর দিকও রয়েছে। ভারতের পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে বাংলাদেশের নৌবন্দরগুলোয় পতিতালয় গড়ে উঠবে। কারণ বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থায় বন্দর কেন্দ্রিক পতিতালয় গড়ে উঠেছে। অপরদিকে ভারতে এইডস মহামারি আকারে। সেক্ষেত্রে ভারতীয় ট্রাক চালকদের মাধ্যমে বাংলাদেশেও এইচআইভি ছড়াবে। যা উদ্বেগের বিষয়।

সঙ্গতকারণেই আমরা মনে করি, ট্রানজিট দেয়ার  সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, রাষ্ট্রদ্রোহী। সংক্ষুব্ধ দেশপ্রেমিক মহল মনে করেন, রাষ্ট্রকে ব্যক্তিগত মনে করে সরকার দিল্লির কাছে আত্মাকে বন্ধক রাখতে পারে না। অভিজ্ঞ মহল মনে করেন, বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য আছে, এটাকে নিজের দেশ মনে করে এমন কোনো সরকারের পক্ষে ট্রানজিটের ফাঁদে পা দেয়ার কথা না।

-আল্লামা মুহম্মদ মাহবুবুল্লাহ, ঢাকা

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।