তাফসীরুল কুরআন: সুমহান সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল

সংখ্যা: ২৬২তম সংখ্যা | বিভাগ:

 

يَا اَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُم مَّوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِّمَا فِىْ الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ. قُلْ بِفَضْلِ اللّـهِ وَبِرَحْمَتِه فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مِّـمَّا يَجْمَعُوْنَ

তরজমা: “হে মানুষেরা! তোমাদের রব তায়ালা উনার তরফ থেকে তোমাদের নিকট এসেছেন মহান নছীহতকারী, অন্তরের মহান আরোগ্য দানকারী, মহান হিদায়েত দানকারী এবং মু’মিনদের জন্য মহান রহমত দানকারী। (অতএব, আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি (উম্মতদেরকে) বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ফদ্বল ও সম্মানিত রহমতস্বরূপ আপনাকে যে তারা পেয়েছে, সেজন্য তাদের প্রতি কর্তব্য তথা ফরয হচ্ছে খুশি প্রকাশ করা। এই খুশি প্রকাশের ইবাদত মুবারক হবে তাদের সমস্ত ইবাদত বা আমল অপেক্ষা উত্তম বা শ্রেষ্ঠ।” (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭, ৫৮)

তাফসীর : খ্বলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে কায়িনাতবাসীর প্রতি সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত হচ্ছেন সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। তাই উনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মুবারক স্বরূপ পাওয়ার কারণে কায়িনাতবাসীর জন্য বিশেষ করে ঈমানদার বান্দা-বান্দী উম্মতের জন্য ফরয হচ্ছে খুশি মুবারক প্রকাশ করা। আর খুশি মুবারক প্রকাশ করার অনন্য মাধ্যম হচ্ছেন পবিত্র ছলাত শরীফ ও পবিত্র সালাম শরীফ পেশ করার মজলিস বা মাহফিল অর্থাৎ পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার মাহফিল। মূলত পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার মাহফিল মানেই পবিত্র ছলাত শরীফ এবং পবিত্র সালাম শরীফ পেশ করার মাহফিল। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

إِنَّ اللَّـهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا

অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শানে ছলাত শরীফ পেশ করেন। হে ঈমানদাররা! উনার সুমহান শানে তোমরাও ছলাত শরীফ পেশ করো এবং যথাযথ আদব রক্ষা করে বা যথাযথ সম্মান প্রদর্শনপূর্বক সালাম শরীফ পেশ করো।

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা বান্দা-বান্দী, উম্মতের প্রতি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শানে ছলাত শরীফ ও সালাম শরীফ পেশ করা ফরয করে দেয়া হয়েছে।

সম্মানিত নামায আদায়কালে তাশাহ্হুদ শরীফ উনার মধ্যে সালাম শরীফ এবং দুরূদে ইবরাহীম শরীফ উনার মধ্যে ছলাত শরীফ পেশ করার হুকুম দেয়া হয়েছে। আর সম্মানিত নামায উনার বাইরে সম্মানিত দুরূদ শরীফ উনার মধ্যে ছলাত শরীফ উনার সাথে সালাম শরীফ পেশ করা হয়। আর পবিত্র মদীনা শরীফে রওজা শরীফ যিয়ারতকালে যিয়ারতকারীগণ অত্যন্ত আদব ইহতিরামের সাথে দাঁড়িয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ছলাত শরীফ ও সালাম শরীফ পেশ করেন। এখন যাদের পবিত্র মদীনা শরীফ যাওয়ার এবং পবিত্র রওজা শরীফ যিয়ারত মুবারক করার সৌভাগ্য হলো না তারা কিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শানে ছলাত শরীফ ও সালাম শরীফ পেশ করবে সে তরীক্বা বা নিয়মই বর্ণনা করা হয়েছে পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার মধ্যে। সুবহানাল্লাহ! এ মুবারক মাহফিলে বসা অবস্থায় ছলাত শরীফ পেশ করা হয় অতঃপর তাওয়াল্লুদ শরীফ পাঠ শেষে দাঁড়িয়ে সালাম শরীফ পেশ করা হয়। সুবহানাল্লাহ!

এখানে স্মরণীয় যে, পবিত্র মদীনা শরীফে গিয়ে যিয়ারত মুবারককালে যেভাবে দাঁড়িয়ে আদবের সাথে সালাম শরীফ পেশ করা হয় পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকে সালাম শরীফ পেশ করতে হলেও উক্ত নিয়মেই সালাম শরীফ পেশ করতে হবে। অর্থাৎ দাঁড়িয়ে সালাম শরীফ পেশ করতে হবে। বসে কিংবা শুয়ে সালাম শরীফ পেশ করা যাবে না। এক্ষেত্রে সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার মাসয়ালা বা ফতওয়া হলো, যারা সাধারণ মু’মিন-মুসলমান উনাদের কবরস্থানে বসা নিষেধ। সেখানে দাঁড়িয়ে এ বলে সালাম দিতে হয়-

السَّلامُ عَلَيْكُمْ يا أَهْلَ القُبُورِ مِنَ الْـمُسْلِمِيْنَ وَالْمُؤْمِنِيْنَ أَنْتُم لَنَا سَلَفُ وَنَحْنُ لَكُمْ تَبَعُ وَاِنَّا اِنْشَاءَ اللهُ بِكُمْ لَاحِقُوْنَ.

অর্থ: হে কবরবাসী মু’মিন-মুসলমান! আপনাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আপনারা আমাদের পূর্বসূরী আর আমরা হলাম আপনাদের উত্তরসূরী বা অনুগামী। ইংশাআল্লাহ নিশ্চয়ই আমরাও আপনাদের সাথে মিলিত হবো।

অতএব, সাধারণ মু’মিন-মুসলমান উনাদের কবরস্থানে যদি দাঁড়িয়ে সালাম দেয়ার হুকুম হয় তাহলে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মাযার শরীফে এবং হযরত আম্বিয়ায়ে ইযাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের রওজা শরীফে সালাম পেশ করার হুকুম কি হবে? আর যিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সালাম দিতে হলে কিভাবে দিতে হবে? এটা বুঝার জন্য সাধারণ আক্বলই কি যথেষ্ট নয়? মহান আল্লাহ পাক তিনি সবাইকে ছহীহ সমঝ ও হিদায়েত নছীব করুন।

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী