তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

সংখ্যা: ১৯৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহানতম বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে একটি হলো তিনি মা’ছূম বা নিষ্পাপ। মূলত হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই এ মহানতম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। কারণ হলো আল্লাহ পাক তিনি নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে খাছভাবে মনোনীত করেই সৃষ্টি করেছেন এবং উনারা প্রত্যেকেই আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে ওহী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ফলে উনাদের কোন রকম গুনাহখতা করার, ভুল-ত্রুটি করা, অপছন্দনীয় ও দৃষ্টিকটু কাজ করার প্রশ্নই উঠেনা। তাই হাদীছ শরীফ ও আক্বায়িদের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

الانبياء عليهم السلام كلهم معصومون.

অর্থ: হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই মা’ছূম অর্থাৎ নিষ্পাপ। (শরহে আক্বায়িদে নসফী, আল ফিকহুল আকবার)

আক্বায়িদের কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয়েছে-

الانبياء عليهم السلام كلهم منزهون عن الصغائر والكبائر والكفر والقبائح

অর্থ: হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই ছগীরা, কবীরা, কুফরী গুনাহ থেকে এমনকি অপছন্দনীয় কাজ থেকেও পবিত্র। (আল ফিক্বহুল আকবার)

উল্লেখ্য, অন্যান্য নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাই যেখানে মা’ছুম ও পবিত্র সেখানে উনাদের যিনি নবী ও রসূল, যিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মা’ছূম ও পবিত্র হওয়ার বিষয়টি যে কত ঊর্ধ্বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর তাই হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রসঙ্গে আক্বায়িদের কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-

محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم نبيه وعبده ورسوله وصفيه ونقيه ولم يعبد الصنم ولم يشرك بالله طرفه عين قط ولم يرتكب صغيرة ولا كبيرة

অর্থ: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা জাল্লা জালালুহূ উনার নবী এবং উনার বান্দা ও রসূল। উনার তরফ হতে মনোনীত ও পবিত্রতম। তিনি কখনোও মূর্তিপূজা করেননি। এবং তিনি চোখের পলকের তরেও কখনও আল্লাহ পাক উনার সাথে শিরক করেননি। এবং তিনি ছগীরা ও কবীরা গুনাহতেও লিপ্ত হননি। (আল ফিকহুল আকবার)

আরো উল্লেখ্য, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যারা সম্মানিতা আহলিয়া হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম এবং সম্মানিতা আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতার বিষয়টি খোদ কালামুল্লাহ শরীফ-এ উল্লেখ করা হয়েছ।

যেমন ইরশাদ হয়েছে-

انما يريد الله ليذهب عنكم الرجز اهل البيت ويطهركم تطهيرا.

অর্থ: আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার ইচ্ছা হলো যে, আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে যাবতীয় অপবিত্রতা ও অশালীনতা দূর করে পরিপূর্ণরূপে পবিত্র করে সৃষ্টি করা।

অর্থাৎ আল্লাহ পাক তিনি হযরত আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পুত-পবিত্র করে সৃষ্টি করেছেন।

এখন কথা হলো, আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনারা যেই হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার মুবারক ছোহবত ও নিসবতের কারণে এমন পবিত্রতার অধিকারী যে, উনাদের পবিত্রতার বিষয়টি কালামুল্লাহ শরীফ-এ ঘোষণা করা হলো তাহলে স্বয়ং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কত বেমেছাল পবিত্রতার অধিকারী তা বর্ণনার ভাষা মাখলূক্বাতের জানা নেই। তা কেবল যিনি খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা জাল্লা শানুহূ তিনিই ভাল জানেন।

প্রসঙ্গত আরো উল্লেখ্য, হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারী রাবীগণের মধ্যে যারা প্রথম শ্রেণীর উনাদেরকে বলা হয় ছিক্বাহ রাবী। হাদীছ শরীফ বিশারদগণ ছিক্বাহ রাবী হওয়ার জন্য যে মানদণ্ড নির্ধারণ করেছেন তারমধ্যে মূল বিষয় হলো দুটি- আদালত ও জবত। এবং আদালত-এর চারটি শর্তের মধ্যে প্রধান হলো দুটি- তাক্বওয়া ও মুরুওওয়াত। তাক্বওয়া হলো- শিরক, কুফর, বিদয়াত, ফাসিকী কাজ থেকে বেঁচে থাকার সাথে সাথে কবীরা গুনাহ থেকে এমনকি ছগীরা গুনাহ থেকেও বেঁচে থাকা। আর মুরুওওয়াত হলো- অশালীন, অশোভনীয়, অপছন্দনীয় ও দৃষ্টিকটু কাজ থেকে বেঁচে থাকা। যেমন রাস্তায় হেঁটে হেঁটে পানাহার করা, অট্টহাস্য করা, চিৎকার করা ইত্যাদি। (তাদরীবুর রাবী, মীযানুল আখবার)

এখন ফিকিরের বিষয় হলো, হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারী একজন ছিক্বাহ রাবী যদি এত গুণ ও বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হন এবং তাক্বওয়াধারী হন তাহলে যারা আল্লাহ পাক উনার কালাম বর্ণনা করবেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং সর্বোপরি যিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য আল্লাহ পাক কি মানদণ্ড নির্ধারণ করেছেন এবং কি পরিমাণ মা’ছূম ও মাহফূজ হওয়া নির্দিষ্ট করেছেন তা অনুধাবনীয়।

প্রতিভাত হলো, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পরিপূর্ণ মা’ছূম ও পরম পবিত্রতম।

অতএব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যারা তাদের মতো বলছে তারা কি মা’ছূম ও পবিত্র? আদৌ নয়। বরং তারা হাজারো কবীরা-ছগীরা, বিদয়াত-বেশরা, শিরক-কুফর ইত্যাদি গুনাহর মধ্যে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। নাঊযুবিল্লাহ!

কাজেই তাদের উক্ত কথা সম্পূর্ণরূপে কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী