তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

সংখ্যা: ১৯৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার শানে কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

وهو بكل شىء عليم

অর্থ: æতিনি সবকিছু সম্বন্ধে জ্ঞাত।” (সূরা হাদীদ, আয়াত শরীফ-৩)

এ আয়াত শরীফ-এর পরিপূর্ণ মিছদাক্ব আল্লাহ পাক উনার যিনি হাবীব যিনি কুল মাখলূক্বাতের নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার মুবারক জাত ও ছিফাত এবং সমস্ত যাহির ও বাতিনের ইলম এবং মাখলূক্বের আউয়াল ও আখিরের সব ইলম উনার কাছেই জমা করা হয়েছে। এ মর্মে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন-

اعطيت بحوامع الكلم

অর্থাৎ- আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলম হাদিয়া করা হয়েছে।” (মুসলিম শরীফ)

হাদীছ শরীফ-এ আরো বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন-

انما انا قاسم والله يعطى

অর্থ: æআল্লাহ পাক তিনি হাদিয়া করেন আর নিশ্চয়ই আমি হলাম (উক্ত হাদিয়া) বণ্টনকারী।” (বুখারী ও মুসলিম শরীফ)

অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার সর্বপ্রকার নিয়ামত উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়া করেছেন। আর হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুল মাখলূক্বাতের যাকে যতটুকু বা যে পরিমাণ ইচ্ছা তাকে সে পরিমাণ বণ্টন করে দিয়ে থাকেন।

এখন যিনি কুল-মাখলূক্বাতের জন্য বণ্টনকারী তিনি মূলত সৃষ্টির শুরু হতে সৃষ্টির শেষ পর্যন্ত বণ্টনকারী। আর বণ্টনকারী যাদের মাঝে বণ্টন করবেন তাদেরকে অবশ্যই চিনেন ও জানেন। অন্যথায় না চিনলে ও না জানলে কাকে কতটুকু বা কি পরিমাণ দিবেন? কাজেই বলার অপেক্ষা রাখেনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইলমে বাতিন বা ইলমে গইবসহ সমস্ত ইলমের অধিকারী।

উল্লেখ্য, লওহে মাহফূয সম্পর্কে বলা হয়, সৃষ্টির শুরু হতে যা কিছু হয়েছে, হচ্ছে ও হবে সবকিছু সেখানে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এখানে বলতে হয়, লওহে মাহফূয সৃষ্টি হয়েছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ওজুদ পাক নূর মুবারকের অংশ হতে। আর লওহে মাহফূয যেহেতু সৃষ্টিরাজির মধ্যে একটি সৃষ্টি সেহেতু তারমধ্যে সংরক্ষিত নিয়ামত তথা ইলমেরও বণ্টনকারী হলেন নূরে  মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

অর্থাৎ আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার ইলমের একটা অংশ রাখা হয়েছে লওহে মাহফূযে যেই ইলম মাখলূক্বাত সম্পর্কিত এবং মাখলূক্বাতের জন্য বণ্টিত। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু মাখলুক্বাতের সর্বপ্রকার নিয়ামতের বণ্টনকারী সেহেতু তিনি মাখলুক্বাতের অবস্থা সম্পর্কিত ও তাদের জন্য বণ্টিত লওহে মাহফূযে সংরক্ষিত সমস্ত ইলমেরও অধিকারী।

মূলকথা হলো, লওহে মাহফূযে সংরক্ষিত ইলম যেরূপ আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার ইলমের একটা অংশ একইভাবে সে ইলম নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারও ইলমের অংশ বিশেষ। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই মুসলমান নামধারী, বেশধারী, ছূরতধারী মুনাফিক ও মুরতাদদের প্রশ্ন অবান্তর যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারী নন। নাঊযুবিল্লাহ!

মুনাফিক ও মুরতাদরা কার শানে দলীল চাচ্ছে? তারা একবারও কি ভেবে দেখছে না, নুবুওওয়াত ও রিসালতের সত্যতার প্রমাণ কেবল তলব করেছিলো চিহ্নিত কাফির, মুশরিক, মুনাফিক ও ইহুদী গং। তাদেরকে দলীল প্রমাণ দেয়ার পরও তারা কিন্তু বিশ্বাস করেনি ও ঈমান আনেনি।

কাজেই, যুগে যুগে যারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মর্যাদা মর্তবার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে ও করছে তারা মূলত কাফির-মুশরিক, ইহুদী গং অথবা তাদের ঘৃণ্য এজেন্ট ও অনুসারী মুসলমান ছূরতে মুনাফিক, উলামায়ে ছূ ও মুরতাদগং।

কাজেই মু’মিন মুসলমানকে নিজেদের ঈমান-আক্বীদা হিফাযতের স্বার্থে এসব ঘৃণ্য এজেন্ট ও অনুসারী মুনাফিক, উলামায়ে ছূ ও মুরতাদগং থেকে সাবধান ও সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পরিপূর্ণরূপে গইবের ইলম বণ্টনকারী। উনার মধ্যেমেই বান্দা ও উম্মত গইবের ইলম জেনেছে, বুঝেছে ও লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ!

কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

عالم الغيب فلا يظهر على غيبه احدا الا من ارتضى من رسول

অর্থ: æআল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা তিনি আলিমুল গইব। তিনি উনার গইবের ইলম উনার মনোনীত রসূল আলাইহিমুস সালাম ব্যতীত কারো নিকট প্রকাশ করেন না।” (সূরা জিন : আয়াত শরীফ-২৬, ২৭)

প্রতিভাত হলো, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম প্রত্যেকেই ইলমে গইবের অধিকারী। আর উনারা এই নিয়ামতের অধিকারী হয়েছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক বণ্টনের ওসীলায়। কাজেই মুনাফিক ও মুরতাদ উলামায়ে ছূদের মনগড়া প্রলাপ সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাজ্য।

অতএব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যারা তাদের মতো মনে করছে তারা কি ইলমে গইবসহ সমস্ত ইলমের অধিকারী ও বণ্টনকারী? কস্মিনকালেও নয়। কাজেই তাদের সে ধারণা ও বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী