তাফসীরুল কুরআন

সংখ্যা: ২০৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

চুগলখোরের খারাবী ও লাঞ্ছিত পরিণতি

দু’ব্যক্তি বা দু’দলের নিকট দু’ধরনের কথা বলে কলহ বা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করাকে চুগলখোরি বলা হয়।

চুগলখোরের খারাবী ও লাঞ্ছনা সম্পর্কে অনেক আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ ইরশাদ হয়েছে।

কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

ولا تطع كل حلاف مهين. هماز مشاء بنميم. مناع للخير معتد اثيم. عتل بعد ذلك زنيم.

অর্থ: এরূপ ব্যক্তির কথা মান্য করোনা যে বহু শপথকারী, লাঞ্ছিত, নিন্দুক, চোগলখুরির উদ্দেশ্যে ভ্রমণকারী, নেক কাজে বাধা দানকারী, সীমালঙ্ঘনকারী, পাপী, কঠোর প্রকৃতি, অতঃপর অবৈধ সন্তান। (সূরা কলম : আয়াত শরীফ ১০-১৩ )

এ আয়াতে কারীমার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মিথ্যা তোহমত দানকারী কাট্টা মুশরিক ও কাফির ওলীদ বিন মুগীরার অনেকগুলো বদ খাছলতের কথা প্রকাশিত হয়েছে তারমধ্যে চুগলখোরির কথাও ব্যক্ত হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ! ছহীহ মুসলিম শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন-

لا يدخل الجنة نمام

অর্থ: “চুগলখোর বেহেশতে প্রবেশ করবে না।”

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ করেন-

شرار عباد الله المشائون بالنميمة المفرقون بين الاحبة الباغون البراء العنت

অর্থ: “বান্দাদের মধ্যে সবেচেয়ে নিকৃষ্টতম তারা- যারা চুগলখোরি করে বেড়ায়, প্রিয়জনদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটায় এবং নির্দোষ লোকদেরকে দোষারোপ করে।” (আহমদ, বায়হাক্বী)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ করেন-

من كان ذا وجهين فى الد

.نيا كان له يوم القيامة لسانان من نار.

অর্থ: “যে ব্যক্তি দুনিয়াতে দু’মুখ বিশিষ্ট হবে অর্থাৎ চুগলখোর হবে ক্বিয়ামতের দিন তার জন্য আগুনের দুটি জিহ্বা হবে।” (দারিমী শরীফ)

কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

والفتنة اشد من القتل

অর্থ: “ফিতনা-ফ্যাসাদ হত্যা করা অপেক্ষা কঠিন গুনাহ।”  (সূরা বাক্বারা : আয়াত শরীফ ১৯১)

আরো ইরশাদ হয়েছে-

ويفسدون فى الارض اولئك لهم اللعنة ولهم سوء الدار

অর্থ: “যারা যমীনে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে তাদের জন্য লা’নত-অভিসম্পাত এবং তাদের জন্য মন্দ গৃহ- জাহান্নাম রয়েছে।” (সূরা রা’দ : আয়াত শরীফ ২৫)

আর এই ফিতনা-ফ্যাসাদ সংঘটিত হওয়ার প্রধান কারণই হচ্ছে চুগলখোরি। নাঊযুবিল্লাহ!

কাজেই, প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা জিন-ইনসানের জন্য ফরয হলো চুগলখোরি থেকে নিজেকে  হিফাযত করা।

বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ পাক উনার জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি অনাবৃষ্টিতে দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ায় বনী-ইসরাইলদের সম্ভ্রান্ত, নেককার লোকদেরকে নিয়ে বৃষ্টি বর্ষণের জন্য চার দিন লাগাতার দোয়া করলেন। কিন্তু দোয়া কবুল হওয়ার কোন আলামত প্রকাশিত না হওয়ায় তিনি আল্লাহ পাক উনার নিকট বলতে লাগলেন, আয় বারে ইলাহী! চারদিন লাগাতার আপনার কাছে বৃষ্টির জন্য দোয়া করছি, তথাপি দোয়া কবুল না হওয়ার কি কারণ, দয়া করে অবহিত করুন। আল্লাহ পাক তিনি ওহী করে জানালেন যে, আপনি যদি ৪০ দিন পর্যন্ত দোয়া করেন তবুও তা কবুল হবেনা, কারণ আপনার সম্প্রদায়ের মধ্যে একজন চুগলখোর আছে, তার বদ আমলের কারণে দোয়া কবুল হচ্ছে না। হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে ইলাহী! আমাকে জানিয়ে দিন, সেই চুগলখোর ব্যক্তিটি কে? তাহলে আমি তাকে তওবা করাতে পারি। আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আমি চুগলখোরিকে অপছন্দ করি, কাজেই নিজেই তাকে কি করে চিনিয়ে দেই? আপনি এক কাজ করুন, উপস্থিত সমস্ত লোকদেরকে চুগলখোরি থেকে তওবা করতে বলুন, তাহলে অন্যান্য সকলের সাথে সেই চুগলখোর ব্যক্তিও তওবা করবে। তখন আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সকলকে তওবা করতে বললেন, এতে সকলেই তওবা করলো, অমনি মেঘ হতে প্রবল বৃষ্টি বর্ষণ শুরু হলো। সুবহানাল্লাহ!

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী