দুর্নীতি দমনে এককালের মহাদাম্ভিক দৈত্য দুদকের দুর্দান্ত দুর্নীতি এটাই প্রমাণ করে যে অন্য কোন নীতি বা ব্যুরো নয়-আত্মিক পরিশুদ্ধতা তথা ইলমে মারিফাতের অনুশীলন অর্জনেই সবধরনের দুর্নীতি প্রবণতা রোধ সম্ভব।

সংখ্যা: ১৯৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

এদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইতিহাস একেবারে কম নয়। প্রায় ৬৬ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৩ সালে খাদ্য বিভাগের অধীনে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ নামে একটি সংস্থা তৈরি করা হয়েছিলো। রেশনিং সিস্টেমে দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য এ সংগঠনটির জš§ হয়। ১৯৪৭ সালে প্রথম দুর্নীতিবিরোধী আইন তৈরি করে এ সংগঠনটি সিআইডি বিভাগে ন্যস্ত করা হয়। ১৯৫৭ সালে দুর্নীতিবিরোধী আরেকটি আইন করে এ বিভাগকে দুর্নীতি দমন ব্যুরো নামকরণ করা হয়। পাকিস্তান আমলে দুর্নীতি দমন ব্যুরোকে রাজনৈতিক দমন ও নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধিকার আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে এ ব্যুরোকে ব্যবহার করা হয়। এভাবে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত এ সংস্থাটি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের অফিস থেকে একটি নোটিশে পুলিশের উপর থেকে জনশক্তির নির্ভরতা এড়াতে ব্যুরোরে জন্য আলাদা কর্মী কাঠামো গঠন করা হয়। তবে এ সময়ও এ সংস্থাটির উপর আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত থাকে। ফলে সংস্থাটি দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে তেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেনি। উল্টো, এর বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। জনদাবির প্রেক্ষাপটে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২০০৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করে। বিলুপ্ত করা হয় দুর্নীতি দমন ব্যুরো। কিন্তু এ কমিশন পরবর্তী তিন বছর কোনো কাজই করতে পারেনি।

২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর ফেব্রুয়ারি মাসে এটি পুনর্গঠিত হয়। সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব.) হাসান মশহুদকে এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। শুরু হয় দুর্নীতিবিরোধী অভিযান। দেশের প্রধান দলের শীর্ষ নেতৃত্বসহ কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ী দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হন। তাদের বিচারের জন্য স্থাপন করা হয় বিশেষ আদালত। ওই আদালত ২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১১২টি মামলায় ১৪৭ জনকে ১ হাজার ২২৪ বছর ৬ মাস কারাদ- দেন। তবে দুর্নীতি মামলার সেই প্রক্রিয়া ছিলো প্রশ্নবিদ্ধ।

কারাদ-প্রাপ্তরা হাইকোর্টের আশ্রয় নিয়ে সবাই সব মামলায়

স্থগিতাদেশ নেন। বর্তমানে ২০৩টি মামলা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। আপিল বিভাগে রয়েছে ১৭৯টি।

২০০৪ সালের ৫ নম্বর আইন দিয়ে দুদক পরিচালিত হয়।

২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা অধ্যাদেশ জারি করে এর কার্যক্রমকে শক্তিশালী করা হয়েছিলো। বর্তমান সংসদ তা গ্রহণ করেনি। এজন্য ওই বিধিমালা তামাদি হয়ে গেছে।

দুদকের চেয়ারম্যান বলেছেন, ২০০৭ সালের অধ্যাদেশের মাধ্যমে কমিশনের স্বায়ত্তশাসনের কথা বলা হয়েছিলো। কিন্তু সরকারের বর্তমান কার্যক্রমে এর স্বায়ত্তশাসন খর্ব হলো।

এদিকে দুদকের স্বায়ত্তশাসন প্রসঙ্গে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রয়োজন নেই’ যা গত ০৪.০৫.২০১০ ঈসায়ী তারিখে ‘দৈনিক আল ইহসান’ পত্রিকায় ফার্স্ট লীড আকারে প্রকাশ পেয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, æসরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যেভাবে কাজ করেছে তাতে দুদকের প্রয়োজন নাই। ওই সময় তারা রাষ্ট্রের সংবিধান লঙ্ঘন করে গোষ্ঠী স্বার্থে বিশেষ মহলের তল্পিবাহক হিসেবে কাজ করেছে। এ প্রেক্ষিতে দুদক আইনের সংশোধনকে ইতিবাচক আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, দুদককে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দিলে সেনা প্রধানও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা চাইবেন। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সংসদ সচিবালয়ে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৩তম বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংকালে ম খা আলমগীর বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিযুক্তীয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচিত কর্তৃপক্ষের উপরে স্থান পেতে পারে না। দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন এসবই নিযুক্তীয় কর্তৃপক্ষ। এগুলোর স্থান কখনোই সংসদের উপরে নয়। তা যদি কখনো হয় তবে স্বৈরতন্ত্রকে প্রশ্রয় দেয়া হবে।

সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুদককে অবশ্যই আইন অনুযায়ী কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের কোন সংস্থা সরাসরি কোন বিদেশি সাহায্য নিতে পারে না।

কিন্তু তৎকালীন (বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে) দুদক সরাসরি বিদেশি সাহায্য নিয়েছে। এমনকি ওই সময়ের দুদক চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরী বিনা টেন্ডারে দুদকের আসবাবপত্র বিক্রি করেছেন। এর বিচার কে করবে? এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যারা কোটি কোটি টাকা বিদেশ পাচার করলো কেন তাদের কিছু হলো না? প্রথম আলো ট্রান্সকমের মালিক লতিফুর রহমানকে দুদক যে নোটিশ দিয়েছিল, সেই নোটিশ এখন কোথায়?

ম খা আলমগীর বলেন, ফখরুদ্দীন  ও মইন উ আহমেদের আমলে দুদক বিনা দোষে রাজনীতিবিদদের হয়রানি করেছে। আমাকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিতে বলেছিল। বিবৃতি দেইনি বলে গ্রেফতার করেছে। সাজা দিয়েছে। কিন্তু কোন অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। বিনা দোষে কাউকে কামড়ানোর ক্ষমতা আমরা কাউকে দিতে চাই না।

এ সময় দুর্নীতি দমনের পন্থা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চূড়ান্ত পর্যায়ে দুর্নীতি দমিত হবে জনতার আদালতে।

দুদক আইনের সংশোধন সম্পর্কে অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের বক্তব্যের প্রতিবাদ করে আলমগীর বলেন, আইনের ফাঁক-ফোকর গলিয়ে নয়, আইনের মাধ্যমেই আমরা মুক্ত হয়েছি। এরপর জনগণের রায়ে নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসেছি। কিন্তু তিনি বিদেশি টাকার বিনিময়ে জনগণের সমর্থন ছাড়াই কথা বলছেন। তার বক্তব্য আদালত এবং জনগণের সমর্থনকে অবমাননার শামিল। তিনি বলেন, যারা রাষ্ট্রের সংবিধানকে লঙ্ঘন করে গোষ্ঠী স্বার্থে প্রশাসনকে স্বৈরাচারী কায়দায় পরিচালনা করেছে সেই মইন উ আহমদের বস্তাপচা বই এর মোড়ক উন্মোচন করতে তিনি (অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ) গলফ ক্লাবে গিয়েছিলেন কোন নীতি আদর্শ নিয়ে? যারা রাষ্ট্রের সংবিধান লঙ্ঘন করে তাদের চেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ নেই।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের সরকারের সময় আমি রাষ্ট্রের কর্মকর্তা ছিলাম। আর মোজাফ্ফর আহমদ ছিলেন জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা। আর তিনি যখন ইনস্টিটিউট অব বিজনেস ম্যানেজমেন্টে চাকরি করতেন তখন ওই প্রতিষ্ঠানের টাকা কিভাবে তার ব্যক্তিগত একাউন্টে জমা হয়েছিল সেটা আজো জাতি জানে না।”

বলাবাহুল্য, এই যদি হয় জাতীয় পর্যায়ে দুর্নীতি দমন দুশ্চরিত্র তথা আন্তর্জাতিক দুর্নীতি পরিমাপের প্রতিষ্ঠান টিআইবি’র প্রতিনিধির প্রতিচিত্র; তাহলে দুর্নীতি দমন কেবল কল্পনায়ই থাকতে পারে।

বলাবাহুল্য, এসব তথ্য এই প্রমাণ করে যে, বিগত সময়ে দুর্নীতি দমন প্রশ্ন বহু হম্বিতম্বি তথা বহু কিছু করা হলেও আসলে কিছুই কাজ হয়নি। এবং আসলে কাজের যে প্রক্রিয়া সেটাই ঠিকভাবে নির্ণীত হয়নি।

উল্লেখ্য, দুর্নীতিদমন মূলত রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা সম্ভব নয়। কারণ,

রাষ্ট্র একটা বিমূর্ত ধারণা। অথচ দুর্নীতির জš§ মানুষের মনে।

আর মানুষের মনোজগত নিয়ন্ত্রণ করা রাষ্ট্রযন্ত্রের জন্য কখনো সম্ভব নয়। সে কারণে পত্রিকার পাতায় অনেক রাষ্ট্রপ্রধানেরই দুর্নীতি থেকে দুশ্চরিত্রেরও রগরগে কাহিনী বর্ণিত হয়।

তবে নিজাম ডাকাতও যে ওলীআল্লাহ হতে পারে সে কাহিনী কিন্তু বিস্তর।

অথচ ওই মহিমান্বিত পথটিতে চলা তো দূরের কথা কিন্তু একবার আলোচনাও হচ্ছে না। তবে সমালোচনা হচ্ছে অন্য পন্থার, প্রক্রিয়ার। কিন্তু এর শেষ কোথায়?

দেশের শতকরা পঁচানব্বই ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রযন্ত্রের একথা স্বীকার করা কী খুব অপ্রাসঙ্গিক যে, এ জনগোষ্ঠীকে দুর্নীতি বিমুখ করতে হলে ওলী আল্লাহ, উনাদের রূহানী দৃষ্টি তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

–        মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।