দেশ কী দু’ভাগে বিভক্ত হবে? একদিকে পুঁজিপতি সিন্ডিকেট অপরদিকে শোষিত বঞ্চিত দরিদ্র জনগোষ্ঠী। সিন্ডিকেটরা এত বহাল তবিয়তে থাকে কী করে? টিসিবি অকার্যকর হয় কেন? সিন্ডিকেট কী সরকারের ভেতরে আরেক সরকার?

সংখ্যা: ২০৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

গত কয়েক বছর ধরে রমাদ্বান বা অন্য কোনো সংকট মুহূর্তে টিসিবিকে কার্যকর করার পদক্ষেপ নেয়া হলেও মূলত কৌশলে নিষ্ক্রিয় রাখা হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। অভিযোগ রয়েছে, টিসিবিকে কার্যকর করার নামে মন্ত্রীদের বরাতে কথার ফুলঝুরি ছড়িয়ে মূলত ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকেই লাভবান করা হয়।

বছরের পর বছর ধরে টিসিবি সম্পর্কে একই ধরনের কথা উঠছে। মন্ত্রীরা বরাবরই টিসিবিকে কার্যকর করার ফর্মুলা দিলেও শেষ পর্যন্ত কোনো বছরই টিসিবি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে না।

বাজার নিয়ন্ত্রণের নামে সরকারি পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) ব্যবহার করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। সংস্থাটি লোকবলের অভাবে কয়েক বছর ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললেও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের কারণে লোকবল নিয়োগ দিতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। টিসিবিকে নিষ্ক্রিয় করে রাখার কৌশল হিসেবে এই কাজটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

বিশেষ করে দরপত্র আহ্বানের পর থেকে পণ্য সরবরাহ ও ডিলারদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ টিসিবির হাতে থাকে না। সময়মতো পণ্য সরবরাহ, উত্তোলন ও সরবরাহ না করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন ডিলাররা। তবে টিসিবি জানিয়েছে, পরপর দুবার পণ্য সরবরাহ না করলে ডিলারশিপ বাতিল করা হয়। কিন্তু ততোদিনে বিশেষ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কারসাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এবারো নানা অজুহাতে ৩ হাজার ডিলার পণ্য উত্তোলন করেননি। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় ছাড়া তাদের কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান।

জানা গেছে, সংস্থাটির তালিকাভুক্ত ৩ হাজার ডিলার বাজারে পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য ঢাকাসহ সারা দেশে ডিলারদের মাধ্যমে চিনি, ভোজ্যতেল ও ডাল সরবরাহ করছে। কিন্তু বর্তমান চলতি বরাদ্দপত্রে অতিরিক্ত দামের কারণে ডিলাররা পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা অভিযোগ করে বলেছেন, টিসিবিকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি সংস্থাটি।

প্রথমে এই প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ৪০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন। বর্তমানে কমতে কমতে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৫ জনে।

এই সীমিত জনবল দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে সংস্থাটিকে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে দেশজুড়ে ৩ হাজার পরিবেশকের মধ্যে পণ্য সরবরাহের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকায় ৩০ জায়গায় ট্রাকে করে চিনি, ভোজ্যতেল ও মসুর ডাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় টিসিবি।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) কাজে লাগানো হচ্ছে না। সংস্থাটিকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তাগাদা দিলেই কেবল নড়েচড়ে ওঠে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তারপর আবার আগের অবস্থা। ফাইল চলে না, কাজও এগোয় না। আর, ঢিমেতালে এভাবেই কেটে গেল সরকারের আড়াই বছর।

এই সময়ে টিসিবি নিয়ে অনেক পরিকল্পনাই করা হয়েছে। আওতাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে একে শক্তিশালী করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে। পরে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও এতে জড়িত হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাধিক বৈঠকে টিসিবিকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

টিসিবি কেন শক্তিশালী হচ্ছে না জানতে তার পেছনে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানেরই একটি মন্তব্যের স্মরণ করা যায়। দায়িত্ব গ্রহণের ১২ দিনের মাথায় ২০০৯ সালের ১৮ জানুয়ারি ঢাকা চেম্বারের সঙ্গে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে টিসিবিকে কাজে লাগাতে চায় না, আর ব্যবসাও নিয়ন্ত্রণ করতে চায় না। এ দেশের ব্যবসায়ীরা দক্ষ, সৎ, মেধাবী ও পরিশ্রমী।’

অথচ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে অগ্রাধিকারভুক্ত পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে এক নম্বরটিই হলো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ। ইশতেহারে বলা হয়েছে, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখার ব্যবস্থা করা হবে এবং সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য সৃষ্টি করা হবে।’

বাস্তবতা হচ্ছে, সরকারের আড়াই বছরে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকেনি। দফায় দফায় বেড়েছে পণ্যমূল্য। বাজারে কোনো হস্তক্ষেপই করতে পারেনি সরকার। এমনকি গণখাতে ক্রয় বিধিমালার (পিপিআর) শর্ত পরিপালন থেকে পরপর তিন বছর অব্যাহতি নিয়েও চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সংস্থাটি। প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা দূরের কথা, টিসিবি স্থানীয় বাজার থেকেও প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে পারেনি।

উল্লেখ্য, টিসিবিকে কাজে না লাগানোর ব্যাপারে দেশজুড়ে সমালোচনা হলে গত ১৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে টিসিবিকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বাজারে যাতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং সাধারণ মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সে জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য টিসিবির মাধ্যমে আমদানি করা হবে।’

কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রী তথা খোদ প্রধানমন্ত্রীর বাগাড়ম্বর পরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মূলত: খোদ সরকারের মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট আছে। ওই সিন্ডিকেট টিসিবিকে পঙ্গু করে রেখেছে। তাদের কারণে টিসিবি কার্যকর হতে পারছে না। গত রমাদ্বান শরীফ-এও টিসিবিকে কার্যকর করার একই নির্দেশনা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। কারণ সরকারের মধ্যেই যদি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট থাকে, তাহলে টিসিবি কেমন করে কার্যকর হবে? টিসিবি কার্যকর হলে ওই সিন্ডিকেটের লোকসান হবে বিধায় তারা তা করতে দিচ্ছে না। কার্যত যা হচ্ছে, দেশের মধ্যবিত্ত, নি¤œমধ্যবিত্ত, দরিদ্র, অতিদরিদ্র তথা খেটে খাওয়া মানুষের রক্ত পানি করে কামানো অর্থ কারসাজি করে অন্যায়ভাবে শোষণ করে নিচ্ছে সিন্ডিকেট। ভাগ পাচ্ছে সরকারের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা সরকার। প্রকান্তরে সিন্ডিকেটই হয়ে উঠেছে সরকারের ভেতর আরেক সরকার। আর দেশ আজ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। এক সিন্ডিকেট অপরদিকে তাদের দ্বারা শোষিত সাধারণ জনগোষ্ঠী। দেশের সমূদয় সম্পদ আজ কতিপয় ব্যক্তির হাতে পুঞ্জীভূত হচ্ছে। চরম ধনী আর চরম গরীব এ দু’শ্রেণীই প্রকট হচ্ছে। যা দেশের জন্য অশনি সংকেত।

সঙ্গতকারণেই সরকারকে এ বিষয়ে অতিদ্রুত, শক্ত ও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। বিশেষ করে সিন্ডিকেট নির্মূল করে দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়ে রোযাদারদের মুখে হাসি ফোটাতে সর্বোতভাবে এগিয়ে আসতে হবে সরকারকেই।

মূলত: এসব দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম উনার নেক ছোহবতেই কেবলমাত্র তা লাভ সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।