ধর্মদ্রোহ আর ধর্মের অবমাননার অপরাধ কী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার সমান? মুরতাদের শাস্তি বিধিবদ্ধ করা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অধিকারী ও সংবিধান সংশোধনে শীর্ষে থাকা ক্ষমতাসীন সরকারের জন্য কী কঠিন কিছু?

সংখ্যা: ২৪০তম সংখ্যা | বিভাগ:

ধর্মদ্রোহ আর ধর্মের অবমাননার অপরাধ কী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার সমান?

মুরতাদের শাস্তি বিধিবদ্ধ করা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অধিকারী ও সংবিধান সংশোধনে শীর্ষে থাকা ক্ষমতাসীন সরকারের জন্য কী কঠিন কিছু?

দেশের ৯৭ ভাগ জনগোষ্ঠী সংক্ষুব্ধ মুসলমানদের প্রশমিত করতে

মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর ফাঁসির বাস্তবায়ন ব্যতীত কোনো বিকল্প নেই।


সমস্ত প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

সরকার কী মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর কারাগারে যাওয়ার ঘটনা হতে নসীহত গ্রহণ করবে? নাকি নিজেদের ব্যর্থ, বঞ্চিত ও বিপদগ্রস্ত এবং বিপৎগামী করবে? পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিদ্বেষীদের প্রতি এদেশের ৯৭ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান উনাদের তীব্র ঘৃণা ও চরম সংক্ষোভের আঁচ অনুধাবন করবে? নাকি আত্মঘাতী আত্মশ্লাঘায় ব্যাপৃত কর্মকা-ে পর্যবসিত হবে?

মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়ায়নি। সরকার কি বিলক্ষণ বুঝতে ব্যর্থ হবে এদেশের নাস্তিক-মুরতাদরা কত নগণ্য ও অসহায়? কত অবাঞ্ছিত ও অপাঙ্তেয়?

মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিল, জুতা মিছিল, থু থু বৃষ্টি নিক্ষেপের ঘটনা অবলোকন করে সরকার কি নিজেদের শুধরে নিবে? নাকি শুদ্ধতার পথে না গিয়ে নিজেদেরকে গণবিদ্রোহ ও গণবিস্ফোরণের মুখে ফেলবে? মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে কারাগারে নেয়ার সময় মুহুর্মুহু শেইম, শেইম চিৎকার, নাস্তিক মুরতাদ ধিক্কার; পবিত্র দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে উদাসীন সরকারের কর্ণকুহরে প্রবেশ করবে কী? এমনকি সরকারের ক্ষমতার অংশীদার এক এমপি যে ঘোষণা দিয়েছে মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর জানাযা কেউ পড়বে না- সে ঘোষণা থেকেও সরকার নিজেদের জানাযা পাওয়ার পথ প্রশস্ত করার প্রয়াস পাবে কী?

সরকার প্রজ্ঞার কাজ তখনই করবে, যখন সরকার বুঝতে সক্ষম হবে যে- মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর বিরুদ্ধে জনরোষ যতটা প্রদর্শিত হয়েছে তা খুবই সামান্য। তবে সদিচ্ছা থাকলে মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর বিরুদ্ধে প্রকৃত জনরোষ অনুধাবন করা সকারের জন্য দুরূহ নয়। এবং এ জনরোষ প্রশমনে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণও জটিল কিছু নয়।

সরকারকে এখন উপলব্ধি করতে হবে যে, মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর জামিন হয়নি এবং সে জেলে গিয়েছে   এ খবরই উত্তাল জনতাকে সুস্থির রেখেছে। সরকারকে এক্ষেত্রে বিশেষ মনে রাখতে হবে যে, মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর জামিন এবং জেলমুক্তি যে কোনো একটিই দুর্বার জনতাকে আবার চরম উত্তেজনার পথে ঠেলে দিবে।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার ২৯৮ ও ৫০০ ধারাটি জামিনযোগ্য হলেও ২৯৫ ক ধারাটি জামিনযোগ্য নয়। সেক্ষেত্রে মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম এখতিয়ার বয়স্ক বিবেচনায় ২৯৫ (ক) ধারায় জামিন দেয়া হবে জনতার ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢালার শামিল।

স্মর্তব্য, বঙ্গবন্ধুর আমলেই মুরতাদ দাউদ হায়দারকে নির্বাসিত হতে হয়েছিল। নির্বাসিত হতে হয়েছে তাজলিমা নাসেরীনকে। কাজেই বাংলাদেশ দ-বিধির আওতায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া অভিযুক্ত মামলায় মাত্র ২ বছর পর মুরতাদ কাজ্জাবীর জেলমুক্তিকে মুসলিম জনতা কিছুতেই বরদাশত করবে না। এ জন্য প্রচলিত আইনে বিকল্প খুঁজতে হবে সরকারকেই।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, সূক্ষ্ম দৃষ্টি ও আইনী গভীরতার সমন্বয় করলেই অপেক্ষাকৃত কার্যকর প্রক্রিয়াটি সরকার গ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে সরকার সম্যক বিবেচনা করতে পারে যে মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর ৫৭ ধারা অনুযায়ী অপরাধ আমলে নেয়া যায়।

কারণ লতিফ কাজ্জাবীর এই অপরাধ সংগঠনে ইলেক্ট্রনিক বিন্যাস ব্যবহার করেছে। আলোচিত এ অনুষ্ঠানটি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া কভার করছিল এবং তাদের সুবাদে সবাই বিষয়টি জানতে পেরেছে। নিউইয়র্কের টাইম টেলিভিশন-এর কারণে ভিডিও ফুটেজটি সবার নিকট আসে। আর একজন মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে সাংবাদিক বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার লোক থাকবে এবং তা ধারণ ও প্রচার করবে এটা সাধারণ মানুষের চেয়েও মন্ত্রীরা ভালো জানে ও বুঝে অথবা উপস্থিত কেউ তা তার ক্যামেরায় ধারণ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রচার করবে এটাই স্বাভাবিক। এতদ্বপ্রেক্ষিত্রে এটাই প্রমাণিত হয় যে মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবী জেনে শুনে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সামনে বিষয়টি প্রকাশ ও প্রচার করেছে এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনে অপরাধ করেছে।

কিন্তু আমরা মনে করি- এতেও শেষ রক্ষা এবং সুবিচার কোনোটাই হবে না। কারণ উপরোক্ত ধারাগুলো প্রথমত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনের অবকাশ। কিন্তু ধর্মদ্রোহ বা ধর্মের অবমাননা তথা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অবমাননার ক্ষেত্রে কী সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার ফায়ছালা প্রতিফলিত হওয়া প্রাসঙ্গিক নয়? যদি না হয়, তবে তা হবে অপূর্ণ ও অগ্রহণীয়।

এ কথা ঠিক যে, প্রচলিত দ-বিধিতে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অবমাননার শাস্তি বা মুরতাদের শাস্তির বিধিবিধান নেই। কিন্তু এটি করা কি জটিল বা দুরূহ কোনো বিষয়? অন্ততঃ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অধিকারী বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য মোটেও তা নয়।

আর বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের পর থেকে এই পর্যন্ত যতবার সংশোধন করা হয়েছে তার মধ্যে আওয়ামী লীগ শাসনামলেই সংশোধন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ পর্যন্ত সংবিধানের ১৫টি সংশোধনীর মধ্যে পাঁচটিই হয়েছে আওয়ামী লীগ শাসনামলে। সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী বিল গত ইয়াওমুল আহাদ বা রোববার জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। এটা পাস হলে আওয়ামী লীগের আমলে সংশোধনের সংখ্যা দাঁড়াবে ছয়-এ। সেক্ষেত্রে মুরতাদ লতিফের শাস্তির জন্য; পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে বর্ণিত মৃত্যুদণ্ডের বিধান, দ-বিধিতে সন্নিবিষ্ট করার জন্য সংবিধান সংশোধন অনেক বেশি অনিবার্য আর লতিফ কাজ্জাবীর নিজস্ব কর্মকা-েও অপ্রাসঙ্গিক নয়।

এ প্রসঙ্গে স্মর্তব্য যে, ১৯৮৬ সালে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে রাষ্ট্র ধর্ম করার বিল পাসের জন্য জাতীয় পার্টির বাইরে আরো একজন সংসদ সদস্যের ভোটের প্রয়োজন হয়ে পড়ে এরশাদের। সংসদে তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগ বিলের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। কারাবন্দি স্বামী মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীকে মুক্তি দেয়ার শর্তে এরশাদের পক্ষে অবস্থান নেয় তার স্ত্রী লায়লা। সংসদে রাষ্ট্রধর্ম পবিত্র দ্বীন ইসলাম করার বিলে ভোট দেয় লায়লা। বিলটি পাসের পর কারামুক্ত হয় মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবী। শুধু তাই নয়, ২০০৮ সালে এবং ২০১৪ সালে পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের খিলাফ কোনো আইন প্রণয়ন হবে না- এ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অধীনে ও আলোকে নির্বাচন করে এই মুনাফিক ও মুরতাদ। কাজেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতেই পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অনুযায়ীই অবিলম্বে সংবিধানে সংশোধনী আনা উচিত। এ ধারাবাহিকতায় মুরতাদের শাস্তি মৃত্যুদ- বিধিবদ্ধ করা অনিবার্য এবং অতিসত্বর মুরতাদ লতিফ কাজ্জাবীর ফাঁসি বাস্তবায়ন করা অপরিহার্য।

মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)


-আল্লামা মুহম্মদ মাহবুবুল্লাহ

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।