নিম্ন আয়ের বেড়াজালে এদেশের ৮৬% মানুষ। দেশের মোট সম্পদের ৯০ ভাগ মাত্র ৫৫ লাখ উচ্চবিত্তের দখলে। জনবান্ধব দাবিদার সরকারের উচিত অসম অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার রাশ টেনে ধরে ধনী-গরিব বৈষম্য নির্মূল করা।

সংখ্যা: ২৫৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

দিন দিন বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বাড়লেও দেশের অধিকাংশ মানুষের আয় এখনো দৈনিক আড়াই ডলারের কম। ফলে রাস্তায় বিলাসবহুল গাড়ি, শহরে নতুন উচ্চ অট্টালিকা এসব দৃশ্যের বিস্তার ঘটলেও অধিকাংশ মানুষই নিম্ন আয়ের বেড়াজালে এখনো আটকে আছে।

এক পরিসংখ্যান জানা গিয়েছে যে, দেশের মোট সম্পদের ৯০ ভাগ রয়েছে ৫৫ লাখ উচ্চবিত্তের দখলে। অর্থাৎ ১৫ লক্ষ ৫৭ হাজার কোটি টাকা মাত্র ৫৫ লাখ লোকের দখলে। অবশিষ্ট ১ লক্ষ ৭৩ হাজার কোটি টাকা ১৯ কোটি ৪৫ লাখ লোকের আওতায়। আরো সোজা করে বলতে গেলে ঐ ৫৫ লাখ লোকের মাথাপিছু আয় ২৮ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। পক্ষান্তরে ১৯ কোটি ৪৫ লাখ লোকের মাথাপিছু আয় ১১ হাজার ২০০ টাকা। অর্থাৎ ধনী-গরিব মাথাপিছু আয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক সেটা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।

মূলত, বাংলাদেশের চলমান অর্থনীতির মূল সুফলভোগী হলো ধনীরা। ধনীরা দ্রুতগতিতে তাদের সম্পদের পাহাড় বাড়াচ্ছে। ফলে আয় বৈষম্য বেড়েই চলেছে। কোনো রকমে খড়কুটো ধরে বেঁচে থাকার মতো অবস্থা দরিদ্র মানুষগুলোর। এসব ধনী ব্যক্তিদের সম্পদ আছে কোটি টাকার বেশি। এদের মধ্যে অনেকেই আবার শত কোটি থেকে সহস্রাধিক কোটি টাকার মালিক। এরাই দেশের অর্থনীতির মূল সুবিধাভোগী। অবকাঠামো নির্মাণ থেকে শুরু করে সব সুবিধা কাজে লাগিয়ে সম্পদ সৃষ্টি করছে ধনী শ্রেণীটি। কারণ সরকারের সুবিধা ভোগ করার মতো সব ধরনের ক্ষমতা তাদেরই রয়েছে। এটাই তাদের সম্পদ বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে। যার ফলে সমাজে ব্যাপক আয় বৈষম্য ভয়াবহভাবে বিরাজ করছে।

বাংলাদেশের নীতি নির্ধারকরা প্রায়ই বলে থাকে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অচিরেই মালয়েশিয়ার কাছাকাছি পৌঁছবে। অথচ তথ্য উপাত্ত বলছে, বেশ কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশ, যেমন ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও প্রাথমিক পর্যায়ে আয় বৈষম্য বাড়েনি। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সরকারি নীতির উপর। অর্থাৎ ধনীর উপর অধিক করারোপের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়বর্ধন অর্থাৎ জীবন মান উন্নয়নে সেই সম্পদ ব্যয় করার মাধ্যমেই আয়-বৈষম্য হ্রাস পাওয়ার কথা। বাস্তবে উল্টোটা ঘটছে, যেকোনো উপায়ে সম্পদ আহরণের পথ অবারিত রাখায় এবং জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনের দায়ে অভিযুক্তরা ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে দুনীতির দায় থেকে মুক্ত হয়ে বিদেশে সম্পদ পাচারে লিপ্ত হচ্ছে। আর এজন্যই প্রতি বাজেটের সময়ই সরকার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিতে কার্পণ্য না করলেও গরিবের উপর করের বোঝা, বিশেষ করে পরোক্ষ করের মাধ্যমে পকেট কেটে নিতে কার্পণ্য করে না। শুধু তাই নয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ না বাড়ালেও ক্ষমতার স্বার্থে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ে। কারণ সরকার জনগণের মাত্র ২-৩ শতাংশ সুবিধাভোগীর সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে বাজেট চূড়ান্ত করে। বাজেট ঘোষণার সময়, ব্যাংকের কর (ট্যাক্স) হার কমা বা ধনীদের সম্পদের উপর কর ছাড় বা বিলাসবহুল গাড়ি আমদানির উপর কর কমলেও দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত পরিবার বা কৃষক-শ্রমিকের কোনো অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতির কোনো খবর নেই। শ্রমিকদের বেতন বাড়বে কিনা বা তাদের আবাসন বা সরকারি স্বাস্থ্য বা শিক্ষার কোনো উন্নতি ঘটবে কিনা- তার সুনির্দিষ্ট কোনো আলোচনা বাজেটে থাকে না। ধানের বা ফসলের ন্যায্য দাম কৃষক না পেয়ে নিঃস্ব হলেও যথাযথ ভর্তুকির ব্যবস্থা নেই; কৃষিতে সামান্য ভর্তুকি দিয়েই দায়মুক্তি পেতে চায় সরকার।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মাথাপিছু আয়ের মধ্যে অনেক ফাঁক থাকে। দেশের মোট জাতীয় আয় এবং সে সঙ্গে মাথাপিছু আয় বাড়লেই সব মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ে না। দেশে একজন কোটিপতি তৈরি হলে, তার জন্য এক হাজার মানুষকে গরিব হতে হয়। অর্থনীতির এটাই নিয়ম। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সাগরে ভাসমান অভিবাসন-প্রত্যাশী মানুষের আহাজারি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে দারিদ্র্য কত প্রকট, কর্মসংস্থানের কী দুরবস্থা- মানুষ কতটা বেপরোয়া হলে এ রকম ঝুঁকি নেয়। দেশজ উৎপাদন এবং জাতীয় আয়ের হিসাবে নানা রকম ফাঁক-ফোকর আছে। যে আয় দেখানো হয়, তা ভাগ করে দিলেও সবার পকেটে তা পৌঁছায় না। জাতীয় আয়ের হিসাবটা হয় অন্যভাবে। সামষ্টিক অর্থনীতির স্বাস্থ্য দিয়ে তৃণমূল পর্যায়ের অবস্থা বোঝা যায় না। একদিকে দেশজ উৎপাদন বাড়ছে, অন্যদিকে বাড়ছে বৈষম্য। শহরে বড় বড় শপিংমল গড়ে উঠেছে। আবার যাকাতের শাড়ি-লুঙ্গি নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানো লোকের সংখ্যাও বাড়ছে। তাই বাংলাদেশের নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে উল্লম্ফনের খবর শুনে আহ্লাদিত হওয়ার অবকাশ নেই বলে আমরা মনে করি।

মূলত, দেশের উন্নয়নতত্ত্বের প্রধান ত্রুটি হচ্ছে, এখানে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে জাতীয় আয় বৃদ্ধির উপর, বণ্টনব্যবস্থা নিয়ে ভাবা হয়নি মোটেও। ফলে জাতীয় আয় বাড়ার প্রধান সুবিধাভোগী সীমিত কিছু মানুষ, আর বিরাট অংশের সম্ভাবনা ক্রমেই মিইয়ে যাচ্ছে।

আমাদের উন্নয়ন সাফল্যে দারিদ্র্যের হার কমার কথা বলা হলেও ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বেড়েই চলেছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সমাজের একটি অংশ বড় অঙ্কের কালো টাকার মালিক বনে যাচ্ছে। কিছু লোক হঠাৎ করে কোটিপতি হয়ে যাওয়ায় সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়ছে, যা এসময়কার অস্থিতিশীলতার অন্যতম কারণ। বিষয়টির দিকে নজর দেয়ার সময় চূড়ান্ত মুহূর্ত এখন।

-আল্লামা মুহম্মদ আরিফুল্লাহ।

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।