পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, সময় ও মুহূর্তের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারামও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (৩১তম পর্ব)

সংখ্যা: ২৬৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

৩৪তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!

অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-

اِسْتِحْلَالُ الْـمَعْصِيَةِ كُفْرٌ.

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি”  প্রকাশ করা হলো।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন ও সময়ের গুরুত্ব, ফযীলত ও আহকাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফাতাওয়া-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম (রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার ফাযায়িল-ফযীলত ও গুরুত্ব

হিজরী বছর উনার মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম (রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস হচ্ছেন সমস্ত মাস উনাদের সাইয়্যিদ এবং মহান। সুবহানাল্লাহ! এজন্য এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস উনাকে বলা হয়, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ। সুবহানাল্লাহ! কেননা, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস হচ্ছেন স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট এবং সম্পৃক্ত। তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে সর্বপ্রথম সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়েছেন, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করেছেন এবং এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসেই তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক বর্ষিত হওয়ার কারণে জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সেখানে যেতে হয়েছিলো, উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) পাওয়ার জন্য বেকারর ছিলেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শকৃত সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের পবিত্রতা, মর্যাদা মূল আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) পেয়ে সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, মর্যাদাবন হয়েছেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক যদি এতো বেমেছাল হয়ে থাকে, তাহলে সাইয়্যিদু সায়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ মাস উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ!

পূর্ব প্রকাশিতের পর

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার কতিপয় বরকতময় ঐতিহাসিক বিশেষ সম্মানিত রাত ও দিন মুবারক- (২৫)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৭ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (রবীউল আউওয়াল শরীফ)

যা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

নিম্নে সংক্ষিপ্তাকারে উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করা হলো-

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়, উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)

হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার ধারাবাহিকক্রম মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছামিনাহ্ তথা অষ্টম’। এ জন্য উনাকে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। তিনি সকলের মাঝে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম’ হিসেবেই পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তবে উনার মূল নাম মুবারক হচ্ছেন- ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়াহ্ আলাইহাস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! ১৩ জন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে ৬ জন ছিলেন সম্মানিত কুরাঈশ বংশীয়। ১ জন ছিলেন বনূ আসাদ বংশীয়। ২ জন ছিলেন বনূ হিলাল বংশীয়। ২ জন ছিলেন বনূ নাযীর বংশীয়। বনূ নাযীর গোত্র ছিলেন ইহুদী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। ১ জন ছিলেন বনূ মুছ্ত্বলিক্ব বংশীয় এবং ১ জন ছিলেন মিশরের বনূ ক্বিব্ত্ব বংশীয়। বনূ মুছত্বলিক্ব এবং বনূ ক্বিব্ত্ব গোত্র ছিলেন ঈসায়ী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম। তিনি ছিলেন বনূ মুছ্ত্বলিক্ব গোত্রের সর্দার। সুতরাং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন ঈসায়ী সম্প্রদায় থেকে। উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক হচ্ছেন-

اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ جُوَيْرِيَةُ بِنْتُ الْـحَارِثِ بْنِ اَبِـىْ ضِرَارِ بْنِ حَبِيْبِ بْنِ حَارِثِ بْنِ عَائِدِ بْنِ مَالِكِ بْنِ الْـمُصْطَلِقِ خُزَيْـمَةَ بْنِ مَالِكِ بْنِ عَمْرِو بْنِ رَبِيْعَةَ بْنِ حَارِثَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ خُزَاعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَامِرِ بْنِ قَمْعَةَ بْنِ اِلْيَاسَ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ

অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়াহ্ বিনতে হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার ইবনে হাবীব ইবনে হারিছ ইবনে ‘আয়িদ ইবনে মালিক ইবনে মুছ্ত্বলিক্ব খুযাইমাহ্ ইবনে মালিক ইবনে ‘আমর ইবনে রবী‘আহ্ ইবনে হারিছাহ্ ইবনে ‘আমর ইবনে খুযা‘আহ্ ইবনে ‘আমর ইবনে ‘আমির ইবনে ক্বম্‘আহ্ ইবনে ইল্ইয়াস আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (মিরআতুল আনসাব ৫৬ পৃ:)

সাইয়্যিদুনা হযরত ইল্ইয়াস আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! উনার এখানে এসে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

কিতাবাদিতে উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র নাম মুবারক পাওয়া যায় না। আর উনারা কয় ভাই-বোন ছিলেন এ বিষয়ে সীরাতগ্রন্থগুলোতে আলোচনা নেই। তবে বিভিন্ন কিতাবের বর্ণনা থেকে উনার ৫ জন সম্মানিত ভাই  এবং ১ জন সম্মানিতা বোন উনাদের সম্মানিত নাম মুবারক পাওয়া যায়।

তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ২ বছর পূর্বে ১৩ই যিলক্বদ শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ বনূ মুছ্ত্বলিক্ব গোত্রে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সম্মানিত সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!  তিনি একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ। এছাড়া কায়িনাতের অন্য কারো মুহতাজ নন; বরং কায়িনাতের সকলেই উনার মুহতাজ। সুবহানাল্লাহ! তিনি সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনার কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক হয় স্বীয় গোত্রের মুসাফি’ ইবনে ছাফ্ওয়ান মুছত্বলিক্বী  খুযা‘য়ীর সাথে। সে একজন প্রসিদ্ধ কবি এবং অনেক বড় যোদ্ধা ছিলো। সে বনূ মুছ্ত্বলিক্বের জিহাদে কাফির অবস্থায় নিহত হয়।

৫ম হিজরী শরীফ উনার ২৮শে যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমু‘য়াহ শরীফ (জুমু‘য়াহ্ শরীফ রাত) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন হয়। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন  সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২০ বছর ১ মাস ১৫ দিন অর্থাৎ প্রায় ২০ বছর। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ বছর হিসেবে ২০ বছর আর দিন হিসেবে ২০ বছর ১ মাস ১৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!

ইমাম বাইহাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘দালাইলুন নুবুওওয়াহ শরীফ’-এ এবং হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘খছায়িছুল কুবরা শরীফ’-এ এছাড়াও আরো অন্যান্য ইমাম মুজতাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাদের স্বীয় কিতাবে বর্ণনা করেন-

قَالَتْ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلثَّامِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ جُوَيْرِيَةُ بِنْتُ الْـحَارِثِ عَلَيْهَا السَّلَامُ) رَاَيْتُ قَبْلَ قُدُوْمِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِثَلَاثِ لَيَالٍ كَاَنَّ الْقَمَرَ يَسِيْرُ مِنْ يَّثْرِبَ حَتّٰى وَقَعَ فِـىْ حِجْرِىْ فَكَرِهْتُ اَنْ اُخْبِرَ بِـهَا اَحَدًا مِّنَ النَّاسِ حَتّٰى قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا سُبِيْنَا رَجَوْتُ الرُّؤْيَا فَاَعْتَقَنِـىْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَزَوَّجَنِـىْ.

অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (বনূ মুস্ত¡লিক্বের জিহাদ-এ) সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার পূর্বে আমি (পরপর) তিন রাত একখানা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখি,  যেন সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনার দিক থেকে চাঁদখানা ছুটে এসে আমার সম্মানিত কোল মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলাটা আমি পছন্দ করিনি। অবশেষে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখলেন। সুবহানাল্লাহ! যখন আমরা বন্দী হলাম, তখন আমি আমার দেখা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার বাস্তব রূপ লাভের প্রত্যাশা করলাম। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে মুক্ত করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী ৪/৫০, মুস্তাদরকে হাকিম ৪/২৮, খছায়িছুল কুবরা শরীফ ১/৩৯১, ইমতা‘উল আসমা’ ৬/৮৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৪/৩৭৪ এবং ১১/২১১, তাফসীরে মাযহারী ৯/৩০৬, শরহুয যারক্বানী ৩/৭, তারীখে ত্ববারী ১১/৬১০, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/১৮২ ইত্যাদী)

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক ছিলেন ৫০০ দিরহাম।’ সুবহানাল্লাহ!

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এটা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ইখতিয়ার মুবারক। তিনি ইচ্ছা মুবারক করলে যেতেও পারেন, আবার ইচ্ছা মুবারক করলে থাকতেও পারেন।

তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনাকে বলেন-

فَاِنِّـــىْ قَدِ اخْتَرْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল, মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই গ্রহণ করলাম। অর্থাৎ আমি কস্মিনকালেও আপনার সাথে যাবো না; বরং আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারকেই সম্মানিত অবস্থান মুবারক করবো।” সুবহানাল্লাহ! (আল আরবা‘ঈন ফী মানাক্বিবে উম্মাহাতিল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম ১/৯৪, আত্ব ত্ববাক্বাতুল কুবরা ৮/১১৮, মারওইয়্যাতু গাযওয়াতি বানী মুছ্ত্বলিক্ব ১/১২২, মুখতাছরু তারীখে দিমাশক্ব ১/২৫০)

এই সম্মানিত ওয়াক্বেয়া মুবারক থেকে এই বিষয়টিই স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা এবং বাক্বা। সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে সাতখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। এই সাতখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্য থেকে ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একখানা এবং ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দুইখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের স্বীয় কিতাবে লিপিবদ্ধ করেছেন।” (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’)

মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার পুরো জিন্দেগী মুবারকই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। কেননা, তিনি যা করেছেন এবং উম্মতদেরকে যা করতে আদেশ মুবারক করেছেন, প্রত্যেকটাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ীই করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তবে রাবীগণ উনার থেকে মাত্র ৭ খানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতে সক্ষম হয়েছেন।”

আল্লামা হাফিয হযরত ইবনে হাজার আসক্বালানী রমহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত ইবনে ‘উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত ‘উবাইদ ইবনে সাব্বাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ভাতিজা হযরত তুফাইল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারাসহ আরো অনেকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন।‘’ সুবহানাল্লাহ! (আল ইছাবাহ্ ৮/৭২)

তিনি ৫০ হিজরী শরীফ উনার ১৭ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (রবী‘উল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৬৪ বছর ৪ মাস ৪ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ!

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন।

 

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৯

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০