পর্নোগ্রাফী রুখতে হলে পর্দার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করতেই হবে

সংখ্যা: ২০৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

স্বাধীনতার ৪০ বছর পর শুধু পর্নো আইন করলেই চলবে না।

পর্নো তৈরির পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণগুলোও নির্ণয় এবং নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খোলামেলা এবং সংক্ষিপ্ত পোশাকই পর্নোর প্রথম পর্ব। বিবস্ত্র নারী দেহই পর্নোর পণ্য। নারীবাদীরা পর্নোগ্রাফীর বিরুদ্ধে রহস্যময় নীরব।

পর্নোগ্রাফী রুখতে হলে পর্দার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করতেই হবে।

নারীবাদীদের পাশাপাশি আইন প্রণেতাদেরও উপলব্ধি করতে হবে-

“কানাডা-সুইডেনের অভিজ্ঞতায় পর্নোগ্রাফী আইন প্রণয়ন করলেই সমাধান হবে না।”

একমাত্র সমাধান পর্দা তথা ইসলাম পালনে। এ কথা বিলক্ষণ বুঝতে হবে সবাইকে।

 

 

পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গত ২ মে ২০১১ ঈসায়ী সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।

দুর্বৃত্তরা অভিনেত্রীসহ বিভিন্ন পেশার তরুণীদের ব্লাকমেইল করে পর্নোগ্রাফী সিডি তৈরি করে বাজারে ছাড়ছে। আবার অনেকেই নিজের অজান্তে বা স্বেচ্ছায় বিশেষ সুবিধার লোভে পড়ে এ ভুল পথে যাচ্ছে। নামকরা অভিনেত্রী থেকে শুরু করে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীর পর্নোগ্রাফী সিডি ল্যাপটপে, মোবাইল ফোনে ও কেউ ইন্টারনেটে দেখছে। অনেকই অভিজাত ফাস্টফুডের দোকানে বসে এ সব সিডি দেখছে। এসব পর্নোগ্রাফী সিডির প্রভাবে সমাজে অস্থিরতা ও নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় এ ধরনের প্রায় শতাধিক অভিযোগ তদন্ত করছে। এ অভিযোগের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। আর দুর্বৃত্তরা আইনি দুর্বলতার সুযোগে বছরের পর বছর ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র জানায়, দেশে পর্নোগ্রাফী সিডি কঠোরভাবে দমনের কোনো আইন নেই। আইন না থাকায় এখন দেশব্যাপী পর্নো সিডিতে সয়লাব। বিশেষ করে বাজারে নাট্য অভিনেত্রী, মডেল কন্যা, স্কুলছাত্রীসহ বিভিন্ন পেশার অনেকেই নানাভাবে পরিস্থিতির শিকার পর্নো সিডিতে জড়িয়ে পড়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দীর্ঘ অনুসন্ধান করে দেশের নামকরা ৫০ জন তরুণী, মহিলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, মহিলা সাংবাদিক, মহিলা আইনজীবী, স্কুলের ছাত্রী ও কিশোরীর পর্নো সিডির ঘটনা তদন্ত করেছে। অনেকেই পরিবারের মানসম্মান রক্ষায় ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছে। আবার কেউ কেউ তাদের অজান্তে এসব করেছে বলে নীরবে ক্ষমা চেয়ে পার পেয়েছে। আবার কেউ পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে তদবির করে ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছে।

সূত্র জানায়, গুলশানের একটি অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন ছাত্রীর এ ধরনের পর্নো সিডি বের হয়েছে। অভিজাতসহ বিভিন্ন সিডির দোকানে এসব সিডি ব্যাপক আকারে বিক্রি হয়েছে। ওই ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দেয়া তথ্য মতে জানা গেছে, তার স্কুলে একটি শাখায় ৩০ জন ছাত্রীর মধ্যে তার জানা মতে ২৬ জন বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে পর্নো সিডি নিয়ে মোবাইলে বিতরণসহ নিজেরা অজান্তে অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে বলে সে গোয়েন্দা সংস্থার কাছে স্বীকার করেছে। বিভিন্ন ইন্টারনেটের ছবি দেখে তারা প্রভাবিত হয়েছে। তারা বিভিন্ন অভিজাত রেস্টুরেন্টে বসে অনেকেই মোবাইল ফোনে পর্নো সিডি দেখে। বেইলি রোডের একটি অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণীর একজন ছাত্রী ব্লাকমেইলের খপ্পরে পড়েছে। তাকে নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা অনুসন্ধান তদন্ত করে নানা তথ্য উদঘাটন করেছে।

সূত্র জানায়, বিগত জোট সরকারের আমলে দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হোস্টেলের বাথরুমে অভিনব কৌশলে ছাত্রীদের গোসল দৃশ্যসহ বিভিন্ন দৃশ্য ভিডিও করা হয়েছে। একটি ছাত্রাবাসে ছাত্রীকে দাওয়াত দিয়ে তার পর্নো সিডি করা হয়েছে। এসব পর্নো সিডির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় অভিভাবকরা অতিষ্ঠ। তারা পরিবারের সম্মান রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে সহযোগিতা চেয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের ক্রাইম ইউনিট বাংলাদেশের ৮৪টি পর্নো ওয়েবসাইট চিহ্নিত করে এগুলো বন্ধের জন্য বিটিআরসিকে অনুরোধ করে। পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া বিভাগের এআইজি নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন বিশ্লেষণ করে বলেন, মাত্র ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ২০টি পর্নো ডাউনলোড হচ্ছে। তাহলে প্রতিদিন ৮৪টি সাইট থেকে কত পরিমাণ ডাউনলোড হয় তা সহজেই অনুমেয়। এদিকে বিটিআরসি বলছে, তাদের একার পক্ষে সাইটগুলো বন্ধ করা সম্ভব নয়। সাইটগুলো বন্ধ করতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন। মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির রশি টানাটানি যতই দীর্ঘায়িত হবে, ক্রাইম ততই বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন। সরকার পর্নোগ্রাফী আইনের একটি খসড়া তৈরি করেছে, যা পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১০ নামে অভিহিত হবে। পুলিশের অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আইন কার্যকর করা হলে সাইবার-ক্রাইম অনেকাংশে কমে যাবে।

দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে পর্নোগ্রাফী ব্যবহার বেড়ে গেছে। এর ফলে যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। বাড়ছে সন্ত্রাস, অপরাধ ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ঘটনা। অনেকেই প্রেমের ফাঁদ পেতে অশ্লীল চিত্র ধারণ করে ইন্টারনেট ও ওয়েবসাইটে ছাড়ছে। এ কারণে অনেকেই আত্মহত্যার পথও বেছে নিয়েছে। এগুলো বন্ধে সরকার কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলেও তা কাজে আসেনি। আইনের ফাঁকফোকরে বেরিয়ে পড়ছে অপরাধীরা।

এক্ষেত্রে মহাজোট সরকারের আমলে গত বছরের এপ্রিল মাসে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা (অপরাধ বিশেষজ্ঞ) দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সর্বত্র পর্নোগ্রাফী প্রদর্শনের ফলে নৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়, অপরাধ ও সামাজিক অস্থিরতা প্রতিরোধে নতুন করে পর্নোগ্রাফী আইন-২০১০ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। তারা দীর্ঘ চেষ্টা করে কানাডা, ইতালি ও সুইডেনসহ উন্নয়নশীল দেশের আদলে পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইন তৈরি করেন।

পর্নো আইনে যা আছে: পর্নোগ্রাফী অর্থ বাণিজ্যিক উদ্দেশে যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টি, ব্যক্তির ইমেজ বা মর্যাদা বিনষ্ট করার লক্ষ্যে বা অন্যায় লাভ বা ক্ষতি করার উদ্দেশে প্রস্তুতকৃত অশ্লীল সংলাপ, প্রকাশনা, পুরুষ বা নারীর নৃত্য, নগ্ন, অর্ধনগ্ন, চলচ্চিত্র বা ভিডিও চিত্র তৈরি এ আইনের আওতায় পড়বে। এসব পর্নো সিডি উৎপাদন, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ, বহন, আমদানি-রফতানি, সরবরাহ, ক্রয় বিক্রয়, প্রদর্শন অপরাধ।

সূত্র মতে, পর্নোগ্রাফীর অপরাধের আইন দ্রুত বিচার আইন-২০০২ এর ধারা-৪ সংজ্ঞানুযায়ী গঠিত ট্রাইব্যুনালে অনুষ্ঠিত হবে।

সূত্র মতে, পর্নো সিডি তৈরির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার ও তার আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে আলামত জব্দ করতে পারবে। তল্লাশিকালে জব্দকৃত সফট কপি, রূপান্তরিত হার্ডকপি, সিডি, ভিসিডি, ডিভিডি, কম্পিউটার বা অন্য কোনো ডিভাইস, এক্সেসরিজ, মোবাইল ফোনের সিম, যন্ত্রাংশ, অপরাধ কাজে ব্যবহৃত অন্য কোন যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ, সরঞ্জাম বা বস্তা আদালতে সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে।

এ আইনে শাস্তি : যদি কোনো ব্যক্তি পর্নোগ্রাফী তৈরি করেন বা তৈরি করার জন্য পারফর্মার সংগ্রহ করে চুক্তিবদ্ধ করে বা কোনো নারী বা অন্য নারী, পুরুষ, শিশুকে পারফর্ম করতে বাধ্য করে বা নারী বা শিশুকে প্রলোভন দেখিয়ে পারফর্ম করিয়ে তাদের জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে তার স্থির চিত্র, ভিডিও চিত্র বা চলচ্চিত্র ধারণ করেন । তবে ওই ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।

এছাড়াও কোনো ব্যক্তি এই আইনে পর্নোগ্রাফী বিক্রি বা প্রদর্শন বা সরবরাহ করলে তার কৃতকর্মের জন্য সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা যাবে। কোনো ব্যক্তি পর্নোগ্রাফি নিজ দখলে রাখলে তাকে সর্বোচ্চ ৩ মাস পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। আবার কোনো ব্যক্তি পর্নোগ্রাফি প্রচারণার মাধ্যমে গণউপদ্রব সৃষ্টি করলে তার ৩ মাস কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।

গ্রেফতারি  পরোয়ানা : এ আইনে গ্রেফতারি  পরোয়ানা জারির ৭ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার  করা সম্ভব না হলে আদালত একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিতে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিবে। হাজির না হলে তার অনুপস্থিতিতে বিচার হবে।

-মুহম্মদ মাহবুবুল্লাহ, ঢাকা।

 

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।