প্রসঙ্গঃ চেলসির বিয়ে। এগুলো কী তাহলে ‘মানবাধিকার’ লঙ্ঘন নয়? ‘বিয়ে’ নামক বন্ধন কী ইসলামেরই শ্রেষ্ঠত্ব তথা পর্দার অনস্বীকার্যতা প্রতিভাত করে না?

সংখ্যা: ১৯৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

জাতিসংঘ প্রণীত ‘মানবাধিকার’ সনদের সংজ্ঞায় যা বলা হয়েছে, “যেহেতু মানবিক অধিকারসমূহের প্রতি অবজ্ঞা ও ঘৃণা মানবজাতির বিবেকের পক্ষে অপমানজনক বর্বরোচিত কাযর্কলাপে পরিণতি লাভ করেছে এবং সাধারণ মানুষের সর্বোচ্চ আশা-আকাঙ্খার প্রতীক হিসেবে এমন একটি পৃথিবীর সূচনা ঘোষিত হয়েছে যেখানে মানুষ বাক ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা এবং ভয় ও অভাব থেকে নিষ্কৃতি ভোগ করবে।”

বলাবাহুল্য, ‘মানবাধিকার’ সনদের বিস্তারিত ফিরিস্তির মধ্যে ‘অভাব’ একটা স্পর্শকাতর বিষয়। এই ‘অভাব’ যে শুধু খাদ্যের অভাব তা-ই নয়।

এই অভাব যৌন অনুভূতির অভাব হতে পারে।  সুন্দরী মেয়েকে দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকে না পাওয়ার অভাবও হতে পারে।

এ অভাব একসাথে অনেকেরই বোধ হতে পারে। একটা মহাসুন্দরী মেয়েকে দেখে ভাল লাগে সবারই। কাছে পাবার অভাব বোধ করে সবাই। এটাই মানবের সহজাত প্রবণতা।

‘মানবাধিকার’ সনদের শুরুতে মানবের এই সহজাত প্রবণতার কথা আছে। বলা হয়েছে, “যেহেতু মানব পরিবারের সকল সদস্যের সহজাত মর্যাদা ও সম অবিচ্ছেদ্য অধিকার।”

বলাবাহুল্য, সহজাত মর্যাদার বা প্রবণতার ক্ষেত্রে একটি সুন্দরী নারীর প্রতি পুরুষের সহজাত আকর্ষণ অথবা সুন্দর পুরুষের আকর্ষণ বা অভাব স্বতস্ফূর্তভাবেই অন্তভুর্ক্ত হয়।

সেক্ষেত্রে বিষয়টি কী এই হয়না যে, একজন সুন্দরী নারী যে অবাধ বিচরণ করলো; লক্ষ লক্ষ পুরুষ দেখলো তাকে, আর মহাসুন্দরী বলে প্রত্যেক পুরুষ অন্তরই তার

অভাববোধ করলো; কিন্তু সে সুন্দরী কেবল সুন্দরতম পুরুষটিকেই পছন্দ করলো, তাকে বিয়ে করলো। এরকম ঘটনার বিবরণ এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের  সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন কন্যা চেলসির বিয়েতে।

পত্রিকাগুলোতে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘লাখ লাখ ভক্তের হৃদয় খান খান করে দিয়ে অবশেষে যুক্তরাষ্টে্রর সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের একমাত্র মেয়ে চেলসি ক্লিনটন রাজসিক আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দীর্ঘদিনের ছেলে বন্ধু মার্ক মেজভিনস্কিকে বিয়ে করলেন।

উল্লেখ্য, মার্ক ছাড়াও চেলসির অগণিত ছেলে বন্ধু ছাড়াও অগণিত রূপভক্ত পুরুষ ছিলো। যারা তাদের মানসপটে চেলসির অভাব প্রচণ্ডভাবে অনুভব করত অথবা মনস্তাত্ত্বিকভাবে ভোগ করে প্রচণ্ড আনন্দ পেত; কিন্তু সে চেলসির যখন বিয়ে হয়ে গেলো একজন মার্কের সাথে তখন পত্রিকার ভাষ্যমতে লক্ষ লক্ষ তরুণের হৃদয় খান খান হয়ে ভেঙ্গে গেলো, চেলসির জন্য এক তীব্র অভাববোধ তৈরি হলো।

এ অভাববোধ তো তাহলে জাতিসংঘ কৃর্তক ঘোষিত মানবাধিকারেরই চরম লঙ্ঘন।

বলাবাহুল্য, ইসলামে এ মানবাধিকারের লঙ্ঘন নেই। কারণ, ইসলামের বিধানে একজন মহিলা তিনি যত সুন্দরই হোন না কেন, তার সৌন্দর্য প্রকাশের অনুমতি নেই। কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা আইয়্যামে জাহিলিয়াতের মত তোমাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করে বেরিয়ো না।”

ইসলামের বিধানে তাই কোন সুন্দরী নারীকে দেখে তার অভাববোধ করে আহত হবার অবকাশ নেই। অর্থাৎ ইসলামে মানবাধিকার লঙ্ঘণ নেই।

বরং পর্দার বিধানের জন্য ইসলামে কোন পুরুষ কোন সুন্দরী নারীকে দেখে তাকে না পাওয়ার অভাব বোধ দ্বারা আহত হয়না। কথিত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় না। বরং উল্টো সংরক্ষিত হয়। যেমন, সবাই পর্দার মধ্যে থাকায় প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীকেই তাদের কাছে সবচেয়ে সুন্দর বলে মনে হয়। পরিতৃপ্তির আস্বাদ তারা পায়।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, চেলসি এবং মার্কের সম্পর্ক পাঁচ বছর ধরে। কথিত বয়ফ্রেন্ড দাবী করলেও তাদের মধ্যে কোন মেলামেশাই বাদ ছিলো না। এভাবেই তো চলছে তাদের জীবন। মার্ক-চেলসিরও চলতে পারত।

কিন্তু তারা যেহেতু কথিত প্রেসিডেন্ট তথা তথাকথিত অভিজাত পরিবারের লোক; তাই তাদের অভিজাত্য রক্ষার্থে তারা বিয়ে করলো।

উল্লেখ্য, ইসলাম বিয়েপূর্ব নর-নারীর দেখা-সাক্ষাত নিষেধ করেছে এবং বিয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। আর তারই মুখাপেক্ষি হয়েছে মার্ক-চেলসি। যাতে ইসলামের বিধান বিয়ের মর্যাদাই আরো একবার প্রকাশ পেলো।

কিন্তু তারপরেও চেলসি-মার্কের বিয়ে প্রসঙ্গে বেরিয়ে এসেছে ইহুদী-খ্রিস্টানদের জীবনধারার নানা অসংলগ্নতা, পারিবারিক বন্ধনহীনতা, ধর্মীয় সামঞ্জস্যহীনতা- সেই সাথে লাখ লাখ ক্ষুধার্ত আমেরিকানদের বিপরীতে প্রতি মেহমান প্রতি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ের চিত্র। এমনকি প্রেসিডেন্ট ওবামা থেকে অনেক নিকটজনকে বিয়ের দাওয়াত না দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আরেক বর্বর চিত্র।

নিম্নে ধারাবাহিকভাবে তা তুলে ধরা হলো-

পহেলা আগস্ট/২০১০ ইং রাতে নিউইয়র্ক স্টেটের নীরব নিঝুম এলাকা হিসেবে খ্যাত রিনিবেক শহরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। চেলসির বর মার্ক ইহুদী এবং চেলসি খ্রিস্টান। এজন্য বিয়ে পড়াতে নিয়ে আসা হয়েছিল ইহুদী রাববী ও খৃস্টান রেভারেন্ড।

বরের মা-বাবাও রাজনীতিবিদ। দুজনই ডেমোক্রেট দলের কংগ্রেসম্যান ছিলেন। চেলসির-মেজভিনস্কি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত একসঙ্গেই পড়েছেন। মেজভিনস্কি এখন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার। তারা ১১ ভাইবোন। মা-বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে অনেক আগেই। তার পিতা একজন সাবেক ডেমোক্র্যাট সাংসদ? আর জালিয়াতির দায়ে ২০০৩ সালে তাকে দেয়া হয় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড?

নিরামিষভোজী চেলসির বাবা বিল ক্লিনটন সাউদার্ন ব্যাপটিস্ট, মা হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন মেথলজিস্ট। বর মেজভিনস্কি ইহুদি। ইহুদিরা এরই মধ্যে শোর-চিৎকার করে জানতে চাইছে, চেলসি-মেজভিনস্কির সন্তানরা কোন ধর্মের পরিচয় দেবে। বলা হচ্ছে, চেলসি পরে ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করবেন।

মূলতঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে আসলে ইহুদীরা চালায় এটাও তার একটা প্রমাণ।

এরই মধ্যে ইহুদিরা খানিকটা ক্ষেপেছে। তারা জানতে চায় চেলসির সন্তান কোন ধর্মের পরিচয় দেবে। মূলত: ধর্মীয় সমালোচনার হাত থেকে বাঁচতেই চেলসির বিয়েতে এ গোপনীয়তা মেনে চলা হয়।

আমেরিকার এবিসি নিউজ এক তথ্যে দাবি করেছে, চেলসির বিয়েতে ক্যাটারিংয়ে সাড়ে ৭ লাখ ডলার, ফুল বাবত আড়াই লাখ ডলার, মিউজিকে ৪০ হাজার ডলার, বিয়ের পোশাক বাবত ১৫ হাজার ডলার, ফটোগ্রাফিতে ৩৫ হাজার ডলার, ভিডিওতে ২৫ হাজার ডলার, লাইটিংয়ে ১ লাখ ডলার, মেকাপে ২০ হাজার ডলার, নিমন্ত্রণে ৫০ হাজার ডলার, অনুষ্ঠান পরিকল্পনায় পৌনে ২ লাখ ডলার, নিরাপত্তায় ৩০ হাজার ডলার ও বিবিধ খাতে ৫০ হাজার ডলার ব্যয় হয়েছে।

এ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির ওপর পর্যবেক্ষণ রয়েছে এমন কয়েকটি সংস্থার অনুমান অনুযায়ী ৩ মিলিয়ন থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার (৩৫ কোটি টাকা) ব্যয় হচ্ছে চেলসির বিয়েতে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৫০০ অতিথির জন্য মাথাপিছু ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ডলার তথা ৭ লাখ টাকা করে। এত অর্থ আসছে কোত্থেকে এ প্রশ্নের জবাবে যুক্তি দেখানো হচ্ছে, ২০০০ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিল ক্লিনটন এবং হিলারি ক্লিনটনের আয় হয়েছে ১০৯ মিলিয়ন ডলার।

বিয়ে বাড়ির মধ্যে কোনো সাংবাদিকের ঢোকা একেবারেই নিষিদ্ধ। চুরি করে ঢুকতে গিয়ে এরই মধ্যে দুই বিদেশি সাংবাদিক আটক হয়েছেন। হেলিকপ্টার থেকে ছবি তোলার চিন্তাও বাদ দিতে হয়েছে পাপারাজ্জিদের। কারণ বাড়ির এলাকাকে উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়া বিশাল তাঁবুর মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। তাই কোনোভাবেই চেলসির বিয়ের ছবি তোলা সম্ভব হবে না। যদি তারা ইচ্ছা করে গণমাধ্যমের কাছে কোনো ছবি প্রকাশ করেন তবেই আমরা চেলসিকে বিয়ের সাজে দেখতে পাব। না হলে কোনোভাবেই নয়।

উল্লেখ্য, চেলসি ও মার্কের এ গোপন বিয়ের ছবি যাতে কোন প্রকারেই কেউ না উঠাতে পারে তজ্জন্য চরম-পরম ব্যবস্থা নেয়া হয়। এর দ্বারা “ছবি থাকলে যে আল্লাহ পাক উনার রহমত থাকে না; সে হাদীছ শরীফ” তারা নিজেরাই গ্রহণ করলো ও প্রমাণ করলো।

-মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।